জালে ইলিশ, খুশি জেলে

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৬: ৩৮
আপডেট : ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৩: ৩৫

লক্ষ্মীপুরের মেঘনা নদীতে ১০ দিন আগেও তেমন ইলিশ পায়নি জেলেরা। কিন্তু তিন দিন ধরে জেলেদের জালে ধরা পড়ছে ইলিশ। তাতে জেলে, ঘাটের শ্রমিক, আড়তদার ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে যেমন চাঞ্চল্য ফিরেছে, তেমনি ফিরেছে স্বস্তিও। মৎস্য কর্মকর্তারা বলছেন, উপযুক্ত আবহাওয়া ও জাটকা নিধনবিরোধী অভিযান সফল হওয়ায় এর সুফল মিলছে।

জেলা মৎস্য অধিদপ্তর জানায়, এ জেলায় প্রায় ৫২ হাজার জেলে রয়েছে। এদের মধ্যে নিবন্ধিত রয়েছেন ৪২ হাজার জেলে। এদের সবাই মেঘনা নদীতে মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করেন। লক্ষ্মীপুরের রামগতির আলেকজান্ডার থেকে চাঁদপুরের ষাটনল এলাকার ১০০ কিলোমিটার পর্যন্ত মেঘনা নদীতে মাছ শিকার করে থাকেন এখানকার জেলেরা। এসব এলাকার ছোট-বড় প্রায় ৩০টি মাছ ঘাট রয়েছে।

সদর উপজেলার মজুচৌধুরীরহাট, মতিরহাট, লুধুয়া, আলেকজান্ডার, সাহেবেরহাট, চেয়ারম্যানঘাটসহ ছোট-বড় প্রায় ৩০টি মাছঘাটে রয়েছে ক্রেতা-বিক্রেতার ভিড়। এসব ঘাটে ব্যস্ত সময় পার করছেন জেলে ও আড়তদারেরা। আগামী কয়েক দিনে প্রচুর পরিমাণ মাছ ধরা পড়বে বলে আশা করেন জেলে ও আড়তদারেরা। এক সপ্তাহে আগে এক কেজি ওজনের এক হালি ইলিশ বিক্রি হতো ৫-৭ হাজার টাকায়। এখন তা বিক্রি হচ্ছে ৩-৪ হাজার টাকায়। এক কেজি ওজনের নিচে এক হালি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে দুই-আড়াই হাজার টাকায়।

মজুচৌধুরীরহাট এলাকার জেলে রফিকুল ইসলাম, মোহন মাঝি সরাফত উল্যাহসহ কয়েকজন জেলে জানান, মেঘনায় ইলিশ কম পাওয়া গেলেও মূলত দক্ষিণে সাগরে ধরা পড়া ইলিশ এখনো আনা হচ্ছে। মাছের আমদানি বাড়ায় দামও কিছুটা কমতে শুরু করেছে।

গত কয়েক দিনের তুলনায় নদীতে ইলিশ ধরা পড়ছে। বিশেষ করে কয়েক দিন ধরে মাছের সরবরাহ অনেক বেড়েছে। দামও নাগালের ভেতরে। তবে সাগরে ভারতের জেলেরাও মাছ শিকার করছে। যে কারণে এর কিছুটা নেতিবাচক প্রভাব রয়েছে।

মতিরহাট এলাকার আড়তদার লিটন বলেন, গত পাঁচ দিন ধরেই মাছের সরবরাহ ভালো। নদীতে জেলেরাও মাছ পাচ্ছেন। ৪শ-৭শ গ্রাম ওজনের ইলিশ প্রতি মণ পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ১৭ হাজার টাকায়। আর এক-দুই কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৪০-৪২ হাজার টাকায়।

এদিকে আগামী ৪ থেকে ২৬ অক্টোবর পর্যন্ত লক্ষ্মীপুরের আলেকজান্ডার থেকে চাঁদপুরের ষাটনল এলাকার ১০০ কিলোমিটারজুড়ে ইলিশসহ সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে সরকার। মা ইলিশ রক্ষায় মৎস্য উৎপাদন বাড়াতে এ ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। এ সময় মাছ ধরা, বিক্রি, মজুত, আহরণ করা যাবে না। যারা এ নিষেধাজ্ঞা অমান্য করবে, তাদের বিরুদ্ধে জেল-জরিমানার বিধান রয়েছে।

লক্ষ্মীপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. বিল্লাল হোসেন বলেন, উপযুক্ত আবহাওয়া ও জাটকা নিধন বিরোধী অভিযান সফল হওয়ায় এর সুফল মিলছে। বর্তমানে জেলেদের জালে ইলিশ ধরা পড়েছে। গত বছর ইলিশের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২০ হাজার মেট্রিক টন। এবার ৫ হাজার মেট্রিক টন বাড়িয়ে ২৫ হাজার মেট্রক টন নির্ধারণ করা হয়েছে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত