সৈয়দা সাদিয়া শাহরীন
মাইকেল জ্যাকসনের কথা বলব। তার আগে শহরের কথা বলি। পরিবেশটা এখন আর আগের মতো নেই। কেমন যেন দমবন্ধ লাগে। চারদিকে কলের যানের কালো ধোঁয়া আপনাকে-আমাকে এই শহরে নিশ্বাস নিতে দেয় না ঠিকমতো। গ্রামের দিকেও নাকি হাওয়া বদলে যাচ্ছে? সবুজে আর বুঝি বাঁচা হলো না আমাদের।
পরের প্রজন্ম কী করে বাঁচবে, সেই ভাবনা তো আমরা আর ভাবিই না। যারা ভাবেন, তাঁরা হয়তো একটু সচেতনতা বাড়ানোর জন্য ওই সব সিনেমা নির্মাণ করেন, যেখানে দেখানো হয় সবুজ ছাড়া মানুষের বেঁচে থাকা অসম্ভব। সেই সিনেমাগুলো অবশ্য আমাদের দেশে তৈরি হতে দেখি না।
আমাদের দেশে একসময় দেখতাম, ‘গাছ লাগান পরিবেশ বাঁচান’। কথাটা এখন আর যেখানে-সেখানে লেখা দেখি না। আপনারা দেখেন? এখন মনে হয় আমাদের কোনো রকম খেয়েপরে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত বেঁচে থাকাটাই মুখ্য। গাছ লাগানোর সময় কোথায়? শহরে তো গাছ লাগাতে মাটি খুঁজে বের করতে হয়। আর সময়? সময় কীভাবে পার হয় আমাদের? অঙ্ক করেই বের করতে পারবেন, জীবনের কতশত ঘণ্টা ট্রাফিক সিগনালে বা যানজটে বসে কাটিয়ে দিচ্ছেন।
আজ কিংবদন্তি পপসম্রাট মাইকেল জ্যাকসনের জন্মদিন। তাঁকে নিয়ে একবার বিস্তর পড়াশোনা করতে হয়েছিল। তাঁর অনেক ইন্টারভিউ দেখেছি, পড়েছি। তারপর তাঁকে নিয়ে লিখেছি। আপনাদের মতো আমিও তাঁর একজন ভক্ত। শুধু এ জন্য না যে তিনি খুব ভালো গায়ক ছিলেন বা দারুণ নাচতেন। তাঁর অনেক গান দেখা ও শোনা সত্ত্বেও একটি গানের জন্যই তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জেগে ওঠে, ‘আর্থ সং’।
হ্যাঁ, একেবারেই পৃথিবীর পরিবর্তন নিয়ে গানটি—‘আমরা কী করেছি পৃথিবীটার? দেখো, আমরা কী করেছি।’ মাইকেল জ্যাকসনের সুরে আছে পৃথিবীকে বাঁচানোর আর্তি। গানের ভিডিওটাও সে রকম। সেই কবে, ১৯৯৫ সালে গানটির জন্ম। তখন খ্যাতির তুঙ্গে মাইকেল। তিনি যে পৃথিবীকে বাঁচাতে চেয়েছিলেন, সেই বিষাক্ত পৃথিবী ছেড়ে একদিন চলেও গেলেন। বেঁচে রইল শুধু তাঁর গান। বেঁচে রইল ‘আর্থ সং’।
তবু আমরা কেন যে এমন গান থেকে অনুপ্রেরণা পাই না! হলিউডে হাজার পরিবেশবাদী সিনেমা কিংবা গান মুক্তি পেলেও হয়তো এই অনুপ্রেরণা আর জাগবে না। আমরা কলের যানের কালো ধোঁয়ায় নিজেদের অন্তর কলুষিত করতেই থাকব, গাছ কেটে রাস্তা আর পাহাড়সম দালান বানাতেই থাকব, যেখানে-সেখানে বর্জ্য ফেলতেই থাকব।
তাই যে আলোচনা করছি আপনাদের সঙ্গে, সেটা যে খুব কার্যকরী হবে, সে ব্যাপারে সন্দেহ আছে। এটাকে বলতে পারেন, মনের আক্ষেপ ভাগ করে নেওয়া শুধু।
যা-ই হোক, মাইকেলের জীবনে ফিরে আসা যাক। মাইকেল জ্যাকসন পরিবেশ সচেতন তো ছিলেনই, সেই সঙ্গে ছিলেন সমাজকর্মী। ১৯৮৫ সালে আফ্রিকা ও আমেরিকার দরিদ্র তহবিল গঠনের জন্য লিওনেল রিচির সঙ্গে মিলে লিখেছিলেন ‘উই আর দ্য ওয়ার্ল্ড’ গানটি। তাঁর ‘ম্যান ইন দ্য মিরর’ গানটির সব আয় দান করে দিয়েছিলেন। মাইকেলের গাওয়া আরেকটি গানের শিরোনাম ‘হিল দ্য ওয়ার্ল্ড’, একই শিরোনামে তিনি ১৯৯২ সালে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন ‘হিল দ্য ওয়ার্ল্ড ফাউন্ডেশন’। কিন্তু একা আর সামলাতে পারেননি। ২০০২ সালে বন্ধ হয়ে যায় প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম।
একবার ‘আর্থ সং’ লেখার পেছনের কাহিনি বলেছিলেন তিনি, এভাবে: ‘আমার মনে আছে, অস্ট্রিয়ার এক হোটেলে বসে যখন আমি আর্থ সং লিখছিলাম, তখন আমার খুব কষ্ট হচ্ছিল—এই পৃথিবী নামের গ্রহটির দুর্দশা দেখে। আমার জন্য এটি পৃথিবীর গান। কারণ, আমি মনে করি পৃথিবীর মানুষ এর যে ক্ষতি করছে, সেটার জরিমানা দেওয়ার খুব চেষ্টা করছে প্রকৃতি। আমার ধারণা, পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট এবং আরও নানা সমস্যার কারণেই পৃথিবী কষ্ট পাচ্ছে, সে ব্যথিত। তাই গানটা পৃথিবীর কিছু আনন্দ নিয়েও। কিন্তু এটা আমার জন্যও একটা বড় সুযোগ যে পৃথিবীর কণ্ঠ আমি মানুষকে শোনাতে পেরেছি।’
এ রকম অনুভূতি থেকেই গানটির জন্ম দিয়েছিলেন মাইকেল জ্যাকসন। আহা, তাঁর মতো যদি আমাদের মনেও পৃথিবীর জন্য ভালোবাসা জাগত!
লেখক: সহসম্পাদক, আজকের পত্রিকা
মাইকেল জ্যাকসনের কথা বলব। তার আগে শহরের কথা বলি। পরিবেশটা এখন আর আগের মতো নেই। কেমন যেন দমবন্ধ লাগে। চারদিকে কলের যানের কালো ধোঁয়া আপনাকে-আমাকে এই শহরে নিশ্বাস নিতে দেয় না ঠিকমতো। গ্রামের দিকেও নাকি হাওয়া বদলে যাচ্ছে? সবুজে আর বুঝি বাঁচা হলো না আমাদের।
পরের প্রজন্ম কী করে বাঁচবে, সেই ভাবনা তো আমরা আর ভাবিই না। যারা ভাবেন, তাঁরা হয়তো একটু সচেতনতা বাড়ানোর জন্য ওই সব সিনেমা নির্মাণ করেন, যেখানে দেখানো হয় সবুজ ছাড়া মানুষের বেঁচে থাকা অসম্ভব। সেই সিনেমাগুলো অবশ্য আমাদের দেশে তৈরি হতে দেখি না।
আমাদের দেশে একসময় দেখতাম, ‘গাছ লাগান পরিবেশ বাঁচান’। কথাটা এখন আর যেখানে-সেখানে লেখা দেখি না। আপনারা দেখেন? এখন মনে হয় আমাদের কোনো রকম খেয়েপরে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত বেঁচে থাকাটাই মুখ্য। গাছ লাগানোর সময় কোথায়? শহরে তো গাছ লাগাতে মাটি খুঁজে বের করতে হয়। আর সময়? সময় কীভাবে পার হয় আমাদের? অঙ্ক করেই বের করতে পারবেন, জীবনের কতশত ঘণ্টা ট্রাফিক সিগনালে বা যানজটে বসে কাটিয়ে দিচ্ছেন।
আজ কিংবদন্তি পপসম্রাট মাইকেল জ্যাকসনের জন্মদিন। তাঁকে নিয়ে একবার বিস্তর পড়াশোনা করতে হয়েছিল। তাঁর অনেক ইন্টারভিউ দেখেছি, পড়েছি। তারপর তাঁকে নিয়ে লিখেছি। আপনাদের মতো আমিও তাঁর একজন ভক্ত। শুধু এ জন্য না যে তিনি খুব ভালো গায়ক ছিলেন বা দারুণ নাচতেন। তাঁর অনেক গান দেখা ও শোনা সত্ত্বেও একটি গানের জন্যই তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জেগে ওঠে, ‘আর্থ সং’।
হ্যাঁ, একেবারেই পৃথিবীর পরিবর্তন নিয়ে গানটি—‘আমরা কী করেছি পৃথিবীটার? দেখো, আমরা কী করেছি।’ মাইকেল জ্যাকসনের সুরে আছে পৃথিবীকে বাঁচানোর আর্তি। গানের ভিডিওটাও সে রকম। সেই কবে, ১৯৯৫ সালে গানটির জন্ম। তখন খ্যাতির তুঙ্গে মাইকেল। তিনি যে পৃথিবীকে বাঁচাতে চেয়েছিলেন, সেই বিষাক্ত পৃথিবী ছেড়ে একদিন চলেও গেলেন। বেঁচে রইল শুধু তাঁর গান। বেঁচে রইল ‘আর্থ সং’।
তবু আমরা কেন যে এমন গান থেকে অনুপ্রেরণা পাই না! হলিউডে হাজার পরিবেশবাদী সিনেমা কিংবা গান মুক্তি পেলেও হয়তো এই অনুপ্রেরণা আর জাগবে না। আমরা কলের যানের কালো ধোঁয়ায় নিজেদের অন্তর কলুষিত করতেই থাকব, গাছ কেটে রাস্তা আর পাহাড়সম দালান বানাতেই থাকব, যেখানে-সেখানে বর্জ্য ফেলতেই থাকব।
তাই যে আলোচনা করছি আপনাদের সঙ্গে, সেটা যে খুব কার্যকরী হবে, সে ব্যাপারে সন্দেহ আছে। এটাকে বলতে পারেন, মনের আক্ষেপ ভাগ করে নেওয়া শুধু।
যা-ই হোক, মাইকেলের জীবনে ফিরে আসা যাক। মাইকেল জ্যাকসন পরিবেশ সচেতন তো ছিলেনই, সেই সঙ্গে ছিলেন সমাজকর্মী। ১৯৮৫ সালে আফ্রিকা ও আমেরিকার দরিদ্র তহবিল গঠনের জন্য লিওনেল রিচির সঙ্গে মিলে লিখেছিলেন ‘উই আর দ্য ওয়ার্ল্ড’ গানটি। তাঁর ‘ম্যান ইন দ্য মিরর’ গানটির সব আয় দান করে দিয়েছিলেন। মাইকেলের গাওয়া আরেকটি গানের শিরোনাম ‘হিল দ্য ওয়ার্ল্ড’, একই শিরোনামে তিনি ১৯৯২ সালে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন ‘হিল দ্য ওয়ার্ল্ড ফাউন্ডেশন’। কিন্তু একা আর সামলাতে পারেননি। ২০০২ সালে বন্ধ হয়ে যায় প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম।
একবার ‘আর্থ সং’ লেখার পেছনের কাহিনি বলেছিলেন তিনি, এভাবে: ‘আমার মনে আছে, অস্ট্রিয়ার এক হোটেলে বসে যখন আমি আর্থ সং লিখছিলাম, তখন আমার খুব কষ্ট হচ্ছিল—এই পৃথিবী নামের গ্রহটির দুর্দশা দেখে। আমার জন্য এটি পৃথিবীর গান। কারণ, আমি মনে করি পৃথিবীর মানুষ এর যে ক্ষতি করছে, সেটার জরিমানা দেওয়ার খুব চেষ্টা করছে প্রকৃতি। আমার ধারণা, পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট এবং আরও নানা সমস্যার কারণেই পৃথিবী কষ্ট পাচ্ছে, সে ব্যথিত। তাই গানটা পৃথিবীর কিছু আনন্দ নিয়েও। কিন্তু এটা আমার জন্যও একটা বড় সুযোগ যে পৃথিবীর কণ্ঠ আমি মানুষকে শোনাতে পেরেছি।’
এ রকম অনুভূতি থেকেই গানটির জন্ম দিয়েছিলেন মাইকেল জ্যাকসন। আহা, তাঁর মতো যদি আমাদের মনেও পৃথিবীর জন্য ভালোবাসা জাগত!
লেখক: সহসম্পাদক, আজকের পত্রিকা
জমির মালিক হযরত শাহ্ আলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। তবে ওই জমিতে ৩৯১টি দোকান নির্মাণ করে কয়েক বছর ধরে ভাড়া নিচ্ছে হযরত শাহ্ আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজ। দোকানগুলোর ভাড়া থেকে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ৭০ লাখ টাকা ভ্যাটও দেওয়া হয়নি। বিষয়টি উঠে এসেছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) তদন্তে।
১ দিন আগেকুড়িগ্রাম পৌর শহরে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী ছোট ভাই নিহত ও বড় ভাই আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে মৎস্য খামারের কাছে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
৫ দিন আগেবৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগের মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১৮ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত শনিবার রাতে ও গতকাল রোববার তাঁরা গ্রেপ্তার হন।
৫ দিন আগেএক অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটেছে শিল্পকলা একাডেমিতে। শিল্পকলা একাডেমির তিনটি হলেই কিছুদিন আগেও নাটক চলত। নাট্যকর্মীদের সৃজনশীলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটত সেখানে। বহু পরিশ্রমে মাসের পর মাস নিজের খেয়ে, নিজের গাড়িভাড়া দিয়ে নাট্যকর্মীরা একেবারেই স্বেচ্ছাশ্রমে একটি শিল্প তিপ্পান্ন বছর ধরে গড়ে তুলেছেন। শিল্পকলা একাডেমি এখন
৮ দিন আগে