জাহীদ রেজা নূর
১৫ ডিসেম্বর ঢাকার চারদিক থেকে যৌথ বাহিনীর অগ্রযাত্রা দেখে নিয়াজীর আশা চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে পড়ল। তিনি বুঝতে পারলেন ঢাকার পতন আসন্ন। ইয়াহিয়া খানের অনুমতি নিয়ে তিনি জাতিসংঘকে অনুরোধ করলেন আত্মসমর্পণের ব্যবস্থা করতে। একই কথা তিনি জানালেন ভারতের সেনাপ্রধান জেনারেল শ্যাম মানেকশকে। কথা চলতে থাকে আত্মসমর্পণের শব্দ কী হবে এবং কোন ভাষায় তা লেখা হবে এ নিয়ে। শব্দটা ‘আত্মসমর্পণ’ হবে নাকি ‘যুদ্ধবিরতি’ হবে তা নিয়ে টালবাহানা করতে থাকেন নিয়াজী। ভারতীয় পক্ষ স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, শব্দটা হবে ‘আত্মসমর্পণ’; কোনো ধরনের যুদ্ধবিরতি নয়।
এতেও সমস্যা মেটে না। কার কাছে আত্মসমর্পণ করবে পাকিস্তানি বাহিনী? ভারতের কাছে না মুক্তিবাহিনীর কাছে? যদি মুক্তিবাহিনীর কাছে তারা আত্মসমর্পণ করে, তাহলে পরবর্তী সময়ে তাদের ভাগ্যে কী ঘটবে, সেটা নিয়ে পাকিস্তানি কর্মকর্তাদের ভয় ছিল। তবে পাকিস্তান পরে ভারত ও বাংলাদেশের যৌথ বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করতে রাজি হয়। জেনারেল মানেকশ ১৫ ডিসেম্বর বিকেল পাঁচটা থেকে ১৬ ডিসেম্বর সকাল ৯টা পর্যন্ত বিমান হামলা না করার নির্দেশ দেন। বাংলাদেশের নানা জায়গায় তখনো ছোটখাটো যুদ্ধ চলতে থাকে। এরই মধ্যে যৌথ বাহিনীর অগ্রযাত্রা দৃশ্যমান হয়।
১৪ ডিসেম্বর পোল্যান্ড জাতিসংঘে যুদ্ধবিরতির একটি প্রস্তাব উত্থাপন করে। সে প্রস্তাবে সোভিয়েত ইউনিয়নের সমর্থন ছিল বলে মনে করা হয়। কিন্তু পাকিস্তান এই প্রস্তাবে রাজি হয়নি। প্রস্তাবটি গ্রহণ করতে পাকিস্তানিরা রাজি হলে এই লজ্জাজনক পরাজয় আত্মসমর্পণ এবং যুদ্ধবন্দী হওয়ার গ্লানি থেকে তারা রেহাই পেত বলে মনে করা হয়।
১৫ ডিসেম্বর ভুট্টো নিরাপত্তা পরিষদের সভায় এসে নাটক করলেন। তিনি জাতিসংঘকে ‘ফার্স অ্যান্ড ফ্রড’ বলে হাতের কাগজগুলো ছিঁড়ে ফেলেন এবং পরিষদের সভা থেকে ওয়াকআউট করেন। এদিন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ভারতীয় দুটি বিমান থেকে ঢাকায় প্রচারপত্র বিলি করে। তাতে পাকিস্তানের পূর্বাঞ্চলের সামরিক কমান্ডকে নিঃশর্ত আত্মসমর্পণের আহ্বান জানানো হয়। আত্মসমর্পণের জন্য সময় বেঁধে দেওয়া হয় ১৬ ডিসেম্বর সকাল ৯টা।
যৌথ বাহিনী এদিন পাকিস্তানিদের নাভিশ্বাস তুলে ফেলেছিল। জয়দেবপুরে মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমণে দিশেহারা হয়ে পড়ে পাকিস্তানিরা। টঙ্গী, ডেমরা, গোদনাইল ও নারায়ণগঞ্জে মিত্রবাহিনীর গোলন্দাজদের আক্রমণে বিপর্যস্ত হয় তারা। এই রাতে মিত্রবাহিনী সাভারের দিক থেকে ঢাকায় আসতে থাকে। এদিন কুমিল্লার আরও কয়েকটি স্থান হানাদারমুক্ত হয়। এদিন বগুড়া ও খাগড়াছড়ি শত্রুমুক্ত হয়। চট্টগ্রামের ভাটিয়ারিতে সারা রাত যুদ্ধ চলে। পাকিস্তানি দালাল জামায়াতে ইসলামী, পিডিপি, নেজামী ইসলামীর নেতা-কর্মীরা পালাতে থাকে। কোথাও কোথাও তাদের কেউ কেউ ধরা পড়ে মুক্তিবাহিনীর হাতে।
যুদ্ধ প্রায় শেষ পর্যায়ে এসে দাঁড়ায়।
সূত্র: গোলাম মুরশিদ, মুক্তিযুদ্ধ ও তারপর, একটি নির্দলীয় ইতিহাস; ১৬ ডিসেম্বরের আনন্দবাজার পত্রিকা। মহিউদ্দিন আহমদ, যুদ্ধদিনের কথা ১৯৭১।
১৫ ডিসেম্বর ঢাকার চারদিক থেকে যৌথ বাহিনীর অগ্রযাত্রা দেখে নিয়াজীর আশা চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে পড়ল। তিনি বুঝতে পারলেন ঢাকার পতন আসন্ন। ইয়াহিয়া খানের অনুমতি নিয়ে তিনি জাতিসংঘকে অনুরোধ করলেন আত্মসমর্পণের ব্যবস্থা করতে। একই কথা তিনি জানালেন ভারতের সেনাপ্রধান জেনারেল শ্যাম মানেকশকে। কথা চলতে থাকে আত্মসমর্পণের শব্দ কী হবে এবং কোন ভাষায় তা লেখা হবে এ নিয়ে। শব্দটা ‘আত্মসমর্পণ’ হবে নাকি ‘যুদ্ধবিরতি’ হবে তা নিয়ে টালবাহানা করতে থাকেন নিয়াজী। ভারতীয় পক্ষ স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, শব্দটা হবে ‘আত্মসমর্পণ’; কোনো ধরনের যুদ্ধবিরতি নয়।
এতেও সমস্যা মেটে না। কার কাছে আত্মসমর্পণ করবে পাকিস্তানি বাহিনী? ভারতের কাছে না মুক্তিবাহিনীর কাছে? যদি মুক্তিবাহিনীর কাছে তারা আত্মসমর্পণ করে, তাহলে পরবর্তী সময়ে তাদের ভাগ্যে কী ঘটবে, সেটা নিয়ে পাকিস্তানি কর্মকর্তাদের ভয় ছিল। তবে পাকিস্তান পরে ভারত ও বাংলাদেশের যৌথ বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করতে রাজি হয়। জেনারেল মানেকশ ১৫ ডিসেম্বর বিকেল পাঁচটা থেকে ১৬ ডিসেম্বর সকাল ৯টা পর্যন্ত বিমান হামলা না করার নির্দেশ দেন। বাংলাদেশের নানা জায়গায় তখনো ছোটখাটো যুদ্ধ চলতে থাকে। এরই মধ্যে যৌথ বাহিনীর অগ্রযাত্রা দৃশ্যমান হয়।
১৪ ডিসেম্বর পোল্যান্ড জাতিসংঘে যুদ্ধবিরতির একটি প্রস্তাব উত্থাপন করে। সে প্রস্তাবে সোভিয়েত ইউনিয়নের সমর্থন ছিল বলে মনে করা হয়। কিন্তু পাকিস্তান এই প্রস্তাবে রাজি হয়নি। প্রস্তাবটি গ্রহণ করতে পাকিস্তানিরা রাজি হলে এই লজ্জাজনক পরাজয় আত্মসমর্পণ এবং যুদ্ধবন্দী হওয়ার গ্লানি থেকে তারা রেহাই পেত বলে মনে করা হয়।
১৫ ডিসেম্বর ভুট্টো নিরাপত্তা পরিষদের সভায় এসে নাটক করলেন। তিনি জাতিসংঘকে ‘ফার্স অ্যান্ড ফ্রড’ বলে হাতের কাগজগুলো ছিঁড়ে ফেলেন এবং পরিষদের সভা থেকে ওয়াকআউট করেন। এদিন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ভারতীয় দুটি বিমান থেকে ঢাকায় প্রচারপত্র বিলি করে। তাতে পাকিস্তানের পূর্বাঞ্চলের সামরিক কমান্ডকে নিঃশর্ত আত্মসমর্পণের আহ্বান জানানো হয়। আত্মসমর্পণের জন্য সময় বেঁধে দেওয়া হয় ১৬ ডিসেম্বর সকাল ৯টা।
যৌথ বাহিনী এদিন পাকিস্তানিদের নাভিশ্বাস তুলে ফেলেছিল। জয়দেবপুরে মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমণে দিশেহারা হয়ে পড়ে পাকিস্তানিরা। টঙ্গী, ডেমরা, গোদনাইল ও নারায়ণগঞ্জে মিত্রবাহিনীর গোলন্দাজদের আক্রমণে বিপর্যস্ত হয় তারা। এই রাতে মিত্রবাহিনী সাভারের দিক থেকে ঢাকায় আসতে থাকে। এদিন কুমিল্লার আরও কয়েকটি স্থান হানাদারমুক্ত হয়। এদিন বগুড়া ও খাগড়াছড়ি শত্রুমুক্ত হয়। চট্টগ্রামের ভাটিয়ারিতে সারা রাত যুদ্ধ চলে। পাকিস্তানি দালাল জামায়াতে ইসলামী, পিডিপি, নেজামী ইসলামীর নেতা-কর্মীরা পালাতে থাকে। কোথাও কোথাও তাদের কেউ কেউ ধরা পড়ে মুক্তিবাহিনীর হাতে।
যুদ্ধ প্রায় শেষ পর্যায়ে এসে দাঁড়ায়।
সূত্র: গোলাম মুরশিদ, মুক্তিযুদ্ধ ও তারপর, একটি নির্দলীয় ইতিহাস; ১৬ ডিসেম্বরের আনন্দবাজার পত্রিকা। মহিউদ্দিন আহমদ, যুদ্ধদিনের কথা ১৯৭১।
জমির মালিক হযরত শাহ্ আলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। তবে ওই জমিতে ৩৯১টি দোকান নির্মাণ করে কয়েক বছর ধরে ভাড়া নিচ্ছে হযরত শাহ্ আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজ। দোকানগুলোর ভাড়া থেকে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ৭০ লাখ টাকা ভ্যাটও দেওয়া হয়নি। বিষয়টি উঠে এসেছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) তদন্তে।
১ দিন আগেকুড়িগ্রাম পৌর শহরে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী ছোট ভাই নিহত ও বড় ভাই আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে মৎস্য খামারের কাছে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
৫ দিন আগেবৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগের মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১৮ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত শনিবার রাতে ও গতকাল রোববার তাঁরা গ্রেপ্তার হন।
৫ দিন আগেএক অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটেছে শিল্পকলা একাডেমিতে। শিল্পকলা একাডেমির তিনটি হলেই কিছুদিন আগেও নাটক চলত। নাট্যকর্মীদের সৃজনশীলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটত সেখানে। বহু পরিশ্রমে মাসের পর মাস নিজের খেয়ে, নিজের গাড়িভাড়া দিয়ে নাট্যকর্মীরা একেবারেই স্বেচ্ছাশ্রমে একটি শিল্প তিপ্পান্ন বছর ধরে গড়ে তুলেছেন। শিল্পকলা একাডেমি এখন
৯ দিন আগে