ভুট্টা চাষে এবার বাম্পার ফলনের আশা করছেন কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার কৃষকেরা। অন্য ফসলের তুলনায় বেশি লাভজনক হওয়ায় ভুট্টা চাষে ঝুঁকছেন কৃষকেরা।

এদিকে চলতি মৌসুমে বৃষ্টি কম হয়, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শে ভুট্টার খেতে সেচের ব্যবস্থা করেন কৃষকেরা। এতে ভালো ফলন হবে বলে আশা কৃষকদের। বর্তমানে ভুট্টাখেতে সেচ ও পরিচর্যার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন তাঁরা।

রৌমারী কৃষি কার্যালয়ের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আবুল হাসেম জানান, এবার উপজেলার ৩ হাজার ৯৬১ হেক্টর জমিতে ভুট্টার চাষ হয়েছে। গত বছরের নভেম্বর থেকে ডিসেম্বরের মাঝামাঝি উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় আগাম জাতের ভুট্টার বীজ বপন করা হয়। প্রতি একর জমিতে প্রায় ২৫ কেজি করে উন্নত জাতের বিভিন্ন ভুট্টার বীজ বপন করেন কৃষকেরা। এরই মধ্যে গাছে ফলন এসেছে। সবকিছু ঠিক থাকলে ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে খেত থেকে ভুট্টা মাড়াই করে ঘরে তুলবে কৃষকেরা।

উপজেলার দাঁতভাঙ্গা ইউনিয়নের হরিণধরা গ্রামের কৃষক লাল মিয়া বলেন, ‘ধানের তুলনায় ভুট্টা চাষ করতে খরচ কম। ফলে ভুট্টা চাষ লাভজনক। এক একর জমিতে আগাম জাতের ভুট্টা চাষ করেছি তাতে আমার খরচ হয়েছে প্রায় ৩২ হাজার টাকা। ফলন হবে প্রায় ১৩০ মণ। গত বছর ভুট্টা বিক্রি করেছি ৭০০ টাকা, এবার দাম একটু বেশি আশা করছি।’

রৌমারী সদর ইউনিয়নের শুতিরপার গ্রামের কৃষক আব্দুল হাই বলেন, ‘কয়েক দফা বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে জমিতে আগাম জাতের ভুট্টার চাষ করেছি। প্রতি বছরই ধানের দরপতনের কারণে অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। তাই অল্প খরচে ভুট্টা চাষ লাভজনক হওয়ায় বিকল্প হিসেবে অন্য ফসলের পাশাপাশি ভুট্টা চাষ করেছি। আশা করছি বাম্পার ফলন পাব।’

রৌমারী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, ‘ভুট্টার আয়ুকাল ১০৫ থেকে ১১০ দিন, জাত ভেদে ৩০ দিনও হতে পারে। ফলন ও চাহিদা থাকায় এই ফসলটির আবাদ দিন দিন বাড়ছে। এ ছাড়াও রৌমারীর কৃষকদের বিভিন্ন ফসল চাষের প্রশিক্ষণ ও সরকারিভাবে প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে।’

আব্দুল কাইয়ুম জানান, উপজেলায় ৩ হাজার ৯৬১ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষ হয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এবার ভুট্টার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে।