জাজিরায় জমি নিয়ে বিরোধের জেরে প্রতিবেশীদের মারধরে এক বৃদ্ধা নিহত হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গতকাল শনিবার জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে হনুফা বেগম (৬৫) নামের ওই বৃদ্ধার মৃত্যু হয়। গত বছর একই বিরোধে তাঁর নাতি খুন হন।

জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে হনুফা বেগমের পরিবারের সঙ্গে সিন্টু মাতবরের পরিবারের জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। এরই জেরে সিন্টু পরিবারের হাতে হনুফা বেগমের এক নাতি গত বছর খুন হন। এ ঘটনায় একটি মামলা চলমান। এই মামলার সাক্ষী ছিলেন নিহত হনুফা বেগম এবং বাদী তাঁর ছেলে লিটন মাতবর। সিন্টু পরিবারের পক্ষে স্থানীয় সেনেরচর ইউনিয়নের মেম্বার (ইউপি সদস্যা) রাজ্জাক মাতবর (৬৫) মামলাটি তুলে নিতে লিটন মাতবরকে চাপ দেন। কিন্তু লিটন মাতবর মামলা তুলে না নিতে চাইলে গত শুক্রবার সন্ধ্যায় হনুফা বেগমের পরিবারের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এতে হনুফা বেগম গুরুতর আহত হন। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার সকালে তাঁর মৃত্যু হয়। মেম্বার রাজ্জাক মাতবরের নেতৃত্বে সিন্টু পরিবার রাজ্জাক মাতবরের ছেলেরা এই হামলা চালান বলে অভিযোগ রয়েছে।

স্থানীয় এমদাদ মাতবর জানান, রাজ্জাক মাতবর তার ছেলেদের নিয়ে হনুফা বেগমের পরিবারের ওপর হামলা চালিয়েছে। এতে হনুফা বেগম ও তার এক ছেলেকে গুরুতর আহত হয়েছেন।

নিহত হনুফা বেগমের ছেলে লিটন মাতবর বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে তাদের দীর্ঘদিন ধরে বিবাদ রয়েছে। গত বছর আমার ছেলেকে হত্যা করেছে। এই ঘটনায় দায়ের মামলার বাদী-সাক্ষী কাউকে জীবিত রাখবে না বলে হুমকি-ধমকি দেন আসামিরা। এবার আমার মাকে হত্যা করল। আমি এর বিচার চাই।’

প্রতিবেশী সম্রাট মাতবর বলেন, ‘হঠাৎ দেখি মারামারি শুরু হয়েছে। রাজ্জাক মাতবরের ছেলে ইমরান (২৫) একটি ছুড়ি নিয়ে হনুফা বেগমের এক নাতিকে পোচ মারতে গেলে হনুফা বেগম তার নাতিকে বাঁচাতে এগিয়ে যায়। এ সময় রাজ্জাক মাতবর পক্ষ হনুফা বেগমের ওপর আক্রমণ চালায়।’ তিনি বলেন, ‘হনুফা বেগমকে মাটিতে ফেলে এলোপাতাড়িভাবে মারধর করতে থাকলে একপর্যায়ে হনুফা বেগম অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং আমরা স্থানীয়রা এগিয়ে আসলে রাজ্জাক মাতবর ও তার লোকজন চলে যায়। আমরা নিহত হনুফা বেগমকে সঙ্গে সঙ্গে জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাই। সকালে হনুফা বেগম হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।’

ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত রাজ্জাক মাতবর ও তাঁর পরিবারের লোকজন পলাতক রয়েছেন। তাঁদের সঙ্গে বিভিন্নভাবে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁদের পাওয়া যায়নি।

জাজিরা থানার ওসি মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। মামলা প্রক্রিয়াধীন। লাশ মর্গে পাঠানো হয়েছে।’