তারাগঞ্জের বিভিন্ন সড়কে এই শুষ্ক মৌসুমে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ধুলোর মেঘ উড়িয়ে চলাচল করছে বালুবাহী ট্রাক্টর। খোলা অবস্থায় এভাবে বালু পরিবহন করায় দুর্ভোগে পড়ছেন পথচারী ও এলাকাবাসী। এ ছাড়া বেপরোয়া গতির এসব যানের কারণে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। সড়কগুলো ভরে উঠেছে খানাখন্দে।

স্থানীয় লোকজন জানান, বালু ব্যবসায়ীরা দীর্ঘদিন ধরে বাহাগিলী বেইলি ব্রিজের কাছে যমুনেশ্বরী নদী থেকে বালু তুলে তারাগঞ্জ উপজেলা সদরের সড়কগুলো দিয়ে বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করছেন। সড়কগুলো রিকশাসহ হালকা যান চলাচলের জন্য নির্মিত হলেও এখন ট্রাক্টরের চাকার আঘাতে খানাখন্দে ভরে গেছে। প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ২০ থেকে ৩০টি ট্রাক্টর খোলাভাবে বালু বহন করছে।

তারাগঞ্জ থেকে কিশোরগঞ্জ, বদরগঞ্জ ও কাজীরহাট সড়ক এবং রংপুর-দিনাজপুর মহাসড়কে গত মঙ্গলবার ঘুরে দেখা গেছে, নদী ও খাল থেকে ট্রাক্টর ও ট্রলিগুলো বালু নিয়ে জেলা সদরসহ বিভিন্ন স্থানে যাচ্ছে। বালু ঢাকার জন্য ব্যবহার করা হয়নি কোনো ত্রিপল। চলন্ত গাড়ি থেকে উড়ে পড়ছে বালু।

তারাগঞ্জ-কিশোরগঞ্জ সড়কে কথা পাশের ব্যবসায়ী মাজেদুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘বালুবাহী ট্রলির দাপটে সড়কের ধারে দাঁড়ে থাকা যায় না। বাতাসে ট্রলির বালু চোখে এসে পড়ে। দীর্ঘ বছর ধরে এ সড়ক দিয়ে খোলা অবস্থায় বালু বহন করছে। প্রশাসনের কোনো নজরদারি নেই।’

তারাগঞ্জ ও/এ সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলতাফ হোসেন জানান, বালুবাহী যানগুলো বেপরোয়াভাবে চলাচল করায় দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষার্থীরা স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসায় যাতায়াত করতে গিয়ে ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। তারা সড়কগুলো দিয়ে ঠিকমতো চলাচল করতে পারছে না। এখন ফের বিদ্যালয় খুলেছে। এই শুষ্ক মৌসুমে বালুবাহী ট্রাক্টর-ট্রলি ঢাকনা দিয়ে বালু বহন না করলে শিক্ষার্থী ও পথচারীদের দুর্ভোগ বাড়বে।

কুর্শা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আফজালুল হক জানান, উপজেলা সদরের সড়কগুলো দিয়ে খোলা অবস্থায় বালু পরিবহন করায় তা ছিটকে মানুষের চোখেমুখে পড়ছে। বিষয়টি নিয়ে কয়েকবার আইনশৃঙ্খলা কমিটিতে এবং উপজেলা উন্নয়ন ও সমন্বয়ন সভায় আলোচনা করা হয়েছে।

উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান বায়েজিদ বোস্তামী বলেন, ‘শুধু বাহাগিলী এলাকা থেকে নয়, তারাগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে দীর্ঘদিন ধরে ট্রলিতে খোলা অবস্থায় বালু পরিবহন করা হচ্ছে। আমরা নিষেধ করলেও চালকেরা শুনছেন না। বরং উপজেলা সদরে এলে ট্রলির গতি চালকেরা বাড়িয়ে দেন। এতে ট্রলির বালু উড়াতে উড়াতে অন্ধকার করে ফেলে সদরের সড়ক-মহাসড়ক। পথচারীদের তখন চোখমুখ ঢেকে কোনো রকমে চলতে হয়।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাসেল মিয়া বলেন, ‘খোলা অবস্থায় বালু পরিবহন অবৈধ। খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’