হবিগঞ্জে মাসব্যাপী ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প পণ্য মেলার স্টল বরাদ্দে নির্ধারিত টাকার চেয়ে কয়েক গুণ বেশি নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে সংশ্লিষ্টের বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, লঙ্ঘন করা হচ্ছে প্রশাসনের বেঁধে দেওয়া শর্তও। এতে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে ক্ষুদ্র শিল্প উদ্যোক্তাদের মধ্যে।

বিসিক কর্তৃপক্ষ বলছে, হবিগঞ্জে নিবন্ধিত কোনো শিল্প উদ্যোক্তা পাওয়া যায়নি। মেলায় স্টল নিচ্ছেন জেলার বাইরের উদ্যোক্তারা। তবে স্টল বরাদ্দের নামে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের বিষয়টি অস্বীকার করেন তাঁরা।

বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) হবিগঞ্জ কার্যালয় থেকে জানা যায়, হবিগঞ্জ শহরের নিউপিল্ড মাঠে মাসব্যাপী ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প পণ্য মেলা। মেলাটি ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পেয়েছে ‘তৃণমূল নারী উদ্যোক্তা সোসাইটি’।

ইতিমধ্যে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। এখন চলছে স্টল বরাদ্দের কাজ। অভিযোগ উঠেছে স্টল বরাদ্দে নির্ধারিত টাকার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি টাকা নিচ্ছেন আয়োজকেরা।

নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক একাধিক ক্ষুদ্র শিল্প উদ্যোক্তা জানান, নিয়ম অনুযায়ী প্রকারভেদে প্রতিটি স্টল সর্বোচ্চ ১৬ হাজার টাকার বেশি হওয়ার কথা নয়। অথচ আয়োজকেরা কোনো কোনো স্টল বরাদ্দে ৯০ হাজার করেও টাকা নিচ্ছে। তাঁদের অভিযোগ, ইতিমধ্যে প্রস্তুত করা হয়েছে দুই শতাধিক স্টল। যার সিংহভাগ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। অথচ নিয়ম অনুযায়ী ৫০টির বেশি স্টল বরাদ্দ দেওয়ার কথা নয়।

অনুসন্ধানে জানা যায়, জেলা প্রশাসনের দেওয়া অনুমতিপত্রের ১০ নম্বর শর্তে উল্লেখ আছে, ‘মেলা এবং এর আশপাশ এলাকায় জুয়ার আসর বসানো কিংবা মদপান, গাঁজাসেবন, যাত্রাগান, পালাগান, পতুল নাচ, ভ্যারাইটি শো, অশ্লীল নৃত্য প্রদর্শনসহ কোনো অনৈতিক কর্মকাণ্ড করা যাবে না।’ অথচ সরেজমিনে দেখা যায়, এসব আয়োজনের সকল সরঞ্জাম ইতিমধ্যে প্রস্তুত করা হয়েছে।

এ ছাড়া ১৫ নম্বর শর্তে উল্লেখ আছে, ‘এ অনুমতিপত্রের বৈধতা শুধু আগামী ১৪ ডিসেম্বর ২০২১ থেকে ১২ জানুয়ারি ২০২২ পর্যন্ত বলবৎ থাকবে এবং কোনোক্রমেই সময় বর্ধিত করা হবে না।’ সে অনুযায়ী আয়োজকদের প্রচার লিফলেটেও উদ্বোধনের তারিখ উল্লেখ করা হয়েছিল ১৫ ডিসেম্বর ২০২১। অথচ ১৫ ডিসেম্বর পেরিয়ে গেলেও কৌশলে আনুষ্ঠানিকতা পিছিয়ে দিয়েছেন আয়োজকেরা। তাঁদের দাবি, ২৩ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন হবে এবং চলবে পরবর্তী ৩০ দিন।

বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) হবিগঞ্জ কার্যালয় এজিএম নাজমুল হোসেন বলেন, ‘হবিগঞ্জে নিবন্ধিত কোনো শিল্প উদ্যোক্তাই খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। মেলায় যাঁরা স্টল বরাদ্দ নিচ্ছেন তাঁরা সকলেই জেলার বাইরের।’

স্টল বরাদ্দের নামে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের বিষয়টি অস্বীকার করে তিনি বলেন, ‘এমন কোনো অভিযোগ থাকলে আমার কাছে নিয়ে আসতে পারেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত আমার কাছে কোনো উদ্যোক্তা এমন অভিযোগ করেননি।’