ইজাজুল হক
সু ফিসাধক হজরত শাহ আলী বাগদাদি (রহ.)-এর জন্ম ইরাকের বাগদাদে। তাঁর বংশপরম্পরা হজরত আলী (রা.) ও ফাতেমা (রা.) হয়ে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর সঙ্গে মিলিত হয়।
হজরত হোসাইন (রা.) তাঁর ১৭তম পূর্বপুরুষ। তাঁর ১২তম পূর্বপুরুষ সৈয়দ সোলতান আলী থেকে শুরু করে পরের পূর্বপুরুষগণ বাগদাদেরই বাসিন্দা ছিলেন। বর্তমানে ফরিদপুরের গেরদাসহ আশপাশের বিভিন্ন জেলায় শাহ আলী বাগদাদি (রহ.)-এর বংশধরদের বসবাস রয়েছে। (ফরিদপুরের ইতিহাস, আ ন ম আবদুস সোবহান, আফসার ব্রাদার্স, ২০১৭, পৃ. ৩৭৮-৩৮০)
ফরিদপুর আগমন
হজরত শাহ আলী বাগদাদি (রহ.) ১৫ শতকের প্রথম দিকে বাগদাদ থেকে ভারতবর্ষে আসেন। তাঁর শিষ্যদের একটি দল নিয়ে তিনি ৮১৩-১৪ হিজরিতে (১৪১২ খ্রিষ্টাব্দ) দিল্লি আসেন। পরে তিনি তৎকালীন ফতেহাবাদ পরগনার (ফরিদপুর জেলা) কসবা গেরদায় আসেন। সোলতান জালালুদ্দিন মুহাম্মদ শাহের আমলে এই অঞ্চল মুসলমানরা জয় করেন। শাহ আলী (রহ.) গেরদা ও আশপাশে ইসলাম প্রচার করেন। অসংখ্য মানুষ তাঁর আচার-আচারে মুগ্ধ হয়ে ইসলাম গ্রহণ করেন। পরে তিনি ঢাকায় রওনা হন। সেখানেই তাঁর মাজার অবস্থিত। (বাংলাপিডিয়া)
ফতেহাবাদের আওলিয়া কাহিনি (মূল: সৈয়দ ইনায়েত হোসেইন বিহারি লিখিত উর্দু বই, গোলাম হামদানি কোরাইশি অনূদিত, মূল পাণ্ডুলিপির নাম পাওয়া যায়নি) থেকে জানা যায়, বাদশা তৈমুরের রাজত্বকালে চারজন আল্লাহর অলির মাধ্যমে কসবা গেরদায় ইসলাম প্রচারিত হয়। হজরত মাখদুম শাহ আলী বাগদাদি (রহ.) তাঁদের একজন। ১০১৩ হিজরিতে এ এলাকায় একটি পাথরের মসজিদ নির্মাণ করেন সোলতান শাহ বাহাদুর খান। (ফরিদপুরের ইতিহাস, আনন্দনাথ রায়, ড. তপন বাগচী সম্পাদিত, পৃ. ৮০)
গেরদা দরগাবাড়ি মসজিদ
শাহ আলী বাগদাদি (রহ.)-কে তৎকালীন সুলতান গেরদায় ১২ হাজার বিঘা জমি দেন। গেরদা দরগাবাড়ি মসজিদেই ছিল তাঁর দরবার। সেখান থেকেই তিনি আধ্যাত্মিক কাজ পরিচালনা করতেন।
স্থানীয় ভূমি জরিপ অনুযায়ী, গেরদার শাহ আলীর এলাকা পদ্মার ভাঙনে বিলীন হয়ে যায় এবং তিনি ঢাকায় চলে আসেন। এর আনুমানিক ১০০ বছর পর ১০১৩ হিজরিতে শাহ আলী (রহ.)-এর স্মরণে সোলতান বাহাদুর খান একটি মসজিদ নির্মাণ করে দেন। সেটিও কালের পরিক্রমায় ধ্বংস হয়ে যায়। তবে মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তরের শিলা ও কয়েকটি পিলার এখনো অক্ষত রয়েছে এবং তা ১৯৭৮ সালে নতুনভাবে নির্মিত মসজিদের অবকাঠামোর সঙ্গে যোগ করে দেওয়া হয়। (বর্ণে শব্দে চিত্রে ফরিদপুর, ড. মোহাম্মদ আলী খান, নয়নজুলি, ঢাকা, পৃ. ১৫২-১৫৩ এবং লেখকের সরেজমিন পরিদর্শন)
স্মৃতিচিহ্ন নিয়ে কথা
গেরদা দরগাবাড়ি মসজিদের উত্তর পাশের একটি মিউজিয়াম রুমে হজরত শাহ আলী (রহ.)-এর আনীত কিছু স্মৃতিচিহ্ন সংরক্ষিত রয়েছে। যেখানে মহানবী (সা.), আলী (রা.)সহ অনেক মহান ব্যক্তির নিদর্শন রয়েছে, যা আজকের পত্রিকায় গুরুত্বের সঙ্গে প্রকাশিত হয়। সরেজমিন পরিদর্শনে জানা যায়, এসব স্মৃতিচিহ্নের কথা এ এলাকায় অনেক আগে থেকেই প্রসিদ্ধ। ফরিদপুরের নির্ভরযোগ্য ইতিহাসের বইগুলোতেও এসব স্মৃতিচিহ্নের কথা উল্লেখ আছে। বর্তমান মসজিদের ভিত্তিফলকেও এসব নিদর্শনের কথা উল্লেখ আছে। (বিস্তারিত দেখুন—বর্ণে শব্দে চিত্রে ফরিদপুর, ড. মোহাম্মদ আলী খান, নয়নজুলি, ঢাকা, পৃ. ১৫২-১৫৩ এবং বৃহত্তর ফরিদপুরের ইতিহাস, পৃ. ২৩৪-২৩৬)
উত্তরসূরিদের প্রচারবিমুখতা
বর্তমানে মসজিদটির রক্ষণাবেক্ষণ করছেন শাহ আলী বাগদাদি (রহ.)-এর ১০ম ও ১১তম বংশধরেরা। তাঁদের কয়েকজনের সঙ্গে এ লেখকের কথা হয়। তাঁরা হলেন মসজিদের প্রধান উপদেষ্টা সাবেক অধ্যক্ষ সৈয়দ আবু সালাম মো. আলম, সভাপতি সৈয়দ আবু হোসেন মো. আরশাদ এবং সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সেলিম আলী। তাঁরা জানান, আমাদের পূর্বপুরুষেরা ইসলাম প্রচারের কাজ করতেন। কিন্তু কালের পরিক্রমায় আমরা তা ধরে রাখতে পারিনি। আমাদের আব্বার দাদা ছিলেন পীর মদন মিঞা (রহ.)। তার পর আর কেউ এ পথে আগাননি।
বংশধরেরা আরও জানান, এসব স্মৃতিচিহ্ন ঘিরে মানুষের মধ্যে কোনো ধরনের বেদাত-শিরক চালু হোক, তা তাঁরা চান না। এবং নিজেদের বংশের ঐতিহ্যও প্রকাশ করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন না।
তবে এই স্মৃতিচিহ্নগুলোর প্রতি অগাধ বিশ্বাস রাখেন এবং বছরের নির্ধারিত সময়ে সাধারণ মানুষের জন্য দেখার সুযোগ রেখেছেন।
সু ফিসাধক হজরত শাহ আলী বাগদাদি (রহ.)-এর জন্ম ইরাকের বাগদাদে। তাঁর বংশপরম্পরা হজরত আলী (রা.) ও ফাতেমা (রা.) হয়ে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর সঙ্গে মিলিত হয়।
হজরত হোসাইন (রা.) তাঁর ১৭তম পূর্বপুরুষ। তাঁর ১২তম পূর্বপুরুষ সৈয়দ সোলতান আলী থেকে শুরু করে পরের পূর্বপুরুষগণ বাগদাদেরই বাসিন্দা ছিলেন। বর্তমানে ফরিদপুরের গেরদাসহ আশপাশের বিভিন্ন জেলায় শাহ আলী বাগদাদি (রহ.)-এর বংশধরদের বসবাস রয়েছে। (ফরিদপুরের ইতিহাস, আ ন ম আবদুস সোবহান, আফসার ব্রাদার্স, ২০১৭, পৃ. ৩৭৮-৩৮০)
ফরিদপুর আগমন
হজরত শাহ আলী বাগদাদি (রহ.) ১৫ শতকের প্রথম দিকে বাগদাদ থেকে ভারতবর্ষে আসেন। তাঁর শিষ্যদের একটি দল নিয়ে তিনি ৮১৩-১৪ হিজরিতে (১৪১২ খ্রিষ্টাব্দ) দিল্লি আসেন। পরে তিনি তৎকালীন ফতেহাবাদ পরগনার (ফরিদপুর জেলা) কসবা গেরদায় আসেন। সোলতান জালালুদ্দিন মুহাম্মদ শাহের আমলে এই অঞ্চল মুসলমানরা জয় করেন। শাহ আলী (রহ.) গেরদা ও আশপাশে ইসলাম প্রচার করেন। অসংখ্য মানুষ তাঁর আচার-আচারে মুগ্ধ হয়ে ইসলাম গ্রহণ করেন। পরে তিনি ঢাকায় রওনা হন। সেখানেই তাঁর মাজার অবস্থিত। (বাংলাপিডিয়া)
ফতেহাবাদের আওলিয়া কাহিনি (মূল: সৈয়দ ইনায়েত হোসেইন বিহারি লিখিত উর্দু বই, গোলাম হামদানি কোরাইশি অনূদিত, মূল পাণ্ডুলিপির নাম পাওয়া যায়নি) থেকে জানা যায়, বাদশা তৈমুরের রাজত্বকালে চারজন আল্লাহর অলির মাধ্যমে কসবা গেরদায় ইসলাম প্রচারিত হয়। হজরত মাখদুম শাহ আলী বাগদাদি (রহ.) তাঁদের একজন। ১০১৩ হিজরিতে এ এলাকায় একটি পাথরের মসজিদ নির্মাণ করেন সোলতান শাহ বাহাদুর খান। (ফরিদপুরের ইতিহাস, আনন্দনাথ রায়, ড. তপন বাগচী সম্পাদিত, পৃ. ৮০)
গেরদা দরগাবাড়ি মসজিদ
শাহ আলী বাগদাদি (রহ.)-কে তৎকালীন সুলতান গেরদায় ১২ হাজার বিঘা জমি দেন। গেরদা দরগাবাড়ি মসজিদেই ছিল তাঁর দরবার। সেখান থেকেই তিনি আধ্যাত্মিক কাজ পরিচালনা করতেন।
স্থানীয় ভূমি জরিপ অনুযায়ী, গেরদার শাহ আলীর এলাকা পদ্মার ভাঙনে বিলীন হয়ে যায় এবং তিনি ঢাকায় চলে আসেন। এর আনুমানিক ১০০ বছর পর ১০১৩ হিজরিতে শাহ আলী (রহ.)-এর স্মরণে সোলতান বাহাদুর খান একটি মসজিদ নির্মাণ করে দেন। সেটিও কালের পরিক্রমায় ধ্বংস হয়ে যায়। তবে মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তরের শিলা ও কয়েকটি পিলার এখনো অক্ষত রয়েছে এবং তা ১৯৭৮ সালে নতুনভাবে নির্মিত মসজিদের অবকাঠামোর সঙ্গে যোগ করে দেওয়া হয়। (বর্ণে শব্দে চিত্রে ফরিদপুর, ড. মোহাম্মদ আলী খান, নয়নজুলি, ঢাকা, পৃ. ১৫২-১৫৩ এবং লেখকের সরেজমিন পরিদর্শন)
স্মৃতিচিহ্ন নিয়ে কথা
গেরদা দরগাবাড়ি মসজিদের উত্তর পাশের একটি মিউজিয়াম রুমে হজরত শাহ আলী (রহ.)-এর আনীত কিছু স্মৃতিচিহ্ন সংরক্ষিত রয়েছে। যেখানে মহানবী (সা.), আলী (রা.)সহ অনেক মহান ব্যক্তির নিদর্শন রয়েছে, যা আজকের পত্রিকায় গুরুত্বের সঙ্গে প্রকাশিত হয়। সরেজমিন পরিদর্শনে জানা যায়, এসব স্মৃতিচিহ্নের কথা এ এলাকায় অনেক আগে থেকেই প্রসিদ্ধ। ফরিদপুরের নির্ভরযোগ্য ইতিহাসের বইগুলোতেও এসব স্মৃতিচিহ্নের কথা উল্লেখ আছে। বর্তমান মসজিদের ভিত্তিফলকেও এসব নিদর্শনের কথা উল্লেখ আছে। (বিস্তারিত দেখুন—বর্ণে শব্দে চিত্রে ফরিদপুর, ড. মোহাম্মদ আলী খান, নয়নজুলি, ঢাকা, পৃ. ১৫২-১৫৩ এবং বৃহত্তর ফরিদপুরের ইতিহাস, পৃ. ২৩৪-২৩৬)
উত্তরসূরিদের প্রচারবিমুখতা
বর্তমানে মসজিদটির রক্ষণাবেক্ষণ করছেন শাহ আলী বাগদাদি (রহ.)-এর ১০ম ও ১১তম বংশধরেরা। তাঁদের কয়েকজনের সঙ্গে এ লেখকের কথা হয়। তাঁরা হলেন মসজিদের প্রধান উপদেষ্টা সাবেক অধ্যক্ষ সৈয়দ আবু সালাম মো. আলম, সভাপতি সৈয়দ আবু হোসেন মো. আরশাদ এবং সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সেলিম আলী। তাঁরা জানান, আমাদের পূর্বপুরুষেরা ইসলাম প্রচারের কাজ করতেন। কিন্তু কালের পরিক্রমায় আমরা তা ধরে রাখতে পারিনি। আমাদের আব্বার দাদা ছিলেন পীর মদন মিঞা (রহ.)। তার পর আর কেউ এ পথে আগাননি।
বংশধরেরা আরও জানান, এসব স্মৃতিচিহ্ন ঘিরে মানুষের মধ্যে কোনো ধরনের বেদাত-শিরক চালু হোক, তা তাঁরা চান না। এবং নিজেদের বংশের ঐতিহ্যও প্রকাশ করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন না।
তবে এই স্মৃতিচিহ্নগুলোর প্রতি অগাধ বিশ্বাস রাখেন এবং বছরের নির্ধারিত সময়ে সাধারণ মানুষের জন্য দেখার সুযোগ রেখেছেন।
জমির মালিক হযরত শাহ্ আলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। তবে ওই জমিতে ৩৯১টি দোকান নির্মাণ করে কয়েক বছর ধরে ভাড়া নিচ্ছে হযরত শাহ্ আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজ। দোকানগুলোর ভাড়া থেকে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ৭০ লাখ টাকা ভ্যাটও দেওয়া হয়নি। বিষয়টি উঠে এসেছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) তদন্তে।
১ দিন আগেকুড়িগ্রাম পৌর শহরে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী ছোট ভাই নিহত ও বড় ভাই আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে মৎস্য খামারের কাছে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
৫ দিন আগেবৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগের মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১৮ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত শনিবার রাতে ও গতকাল রোববার তাঁরা গ্রেপ্তার হন।
৫ দিন আগেএক অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটেছে শিল্পকলা একাডেমিতে। শিল্পকলা একাডেমির তিনটি হলেই কিছুদিন আগেও নাটক চলত। নাট্যকর্মীদের সৃজনশীলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটত সেখানে। বহু পরিশ্রমে মাসের পর মাস নিজের খেয়ে, নিজের গাড়িভাড়া দিয়ে নাট্যকর্মীরা একেবারেই স্বেচ্ছাশ্রমে একটি শিল্প তিপ্পান্ন বছর ধরে গড়ে তুলেছেন। শিল্পকলা একাডেমি এখন
৮ দিন আগে