চবিতে তিন মাসেও শেষ হয়নি পূর্ণাঙ্গ ভর্তি

মিনহাজ তুহিন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
প্রকাশ : ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০৮: ১৯

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষার তিন মাস পরও মনোনীত সকল শিক্ষার্থীর ভর্তি কার্যক্রম শেষ হয়নি। ফলে এখনো শুরু হয়নি পাঠদান। এতে সেশনজটে পড়ার আশঙ্কা করছেন শিক্ষার্থীরা। এদিকে ভর্তি প্রক্রিয়ায় দীর্ঘসূত্রতার জন্য আইসিটি সেল ও ডিনরা এক পক্ষ অপর পক্ষকে দোষারোপ করছেন।

গত বছরের ৫ নভেম্বর চবির ভর্তি পরীক্ষা শেষ হয়। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে পূর্ণাঙ্গ ভর্তি শুরু হতে পারে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ও ‘এ’ ইউনিটের কো-অর্ডিনেটর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ নাসিম হাসান বলেন, ভর্তি প্রক্রিয়াগুলো যেভাবে শুরু হয়েছে কার্যক্রম সেভাবেই চলছে। এগুলো মিটিংয়ের মাধ্যমে হয়। কারও একার সিদ্ধান্ত নয়। এর মধ্যে বিষয় পছন্দক্রম দিতে ১০ দিন বেশি সময় নষ্ট হয়েছে। আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৭ ফেব্রুয়ারির মধ্যে পূর্ণাঙ্গ ভর্তির কার্যক্রম চলবে। ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে ক্লাস শুরু হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষার আবেদন থেকে শুরু করে বিষয় পছন্দক্রম নির্বাচনসহ প্রায় সব প্রক্রিয়াতেই পদে পদে সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন শিক্ষার্থীরা। চারটি ইউনিট ও দুইটি উপ-ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা গত বছর ২৭ অক্টোবর শুরু হয়। যা চলে ৫ নভেম্বর পর্যন্ত।

পরীক্ষা শেষ হওয়ার ২৩ দিন পর বিষয় পছন্দক্রম নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু হয়। যদিও ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষা শেষ হওয়ার তিন দিন পরই এই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। এ ছাড়া চলতি শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষার আবেদনের শুরু থেকে প্রাথমিক ভর্তি পর্যন্ত বেশ কয়েকটি অনিয়মের ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে এক শিক্ষার্থী ভর্তি পরীক্ষা না দিয়েই উত্তীর্ণ হন। এ ছাড়া জালিয়াতির মাধ্যমে দুই শিক্ষার্থীর উত্তীর্ণ হওয়ার খবর পাওয়া যায়।

সেশনজটের শঙ্কা: একে তো করোনাভাইরাসের কারণে এক বছর দেরিতে হয় চবির ভর্তি পরীক্ষা। এর পর তিন মাসেও ক্লাস শুরু না হওয়ায় দীর্ঘমেয়াদি সেশনজটের আশঙ্কা করছেন নতুন শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা।

লোকপ্রশাসন বিভাগে প্রাথমিক ভর্তি সম্পন্ন করা সারওয়ার মাহমুদ বলেন, ‘আমরা একেবারেই হতাশ। আমাদের পরে আরও দুইটা ব্যাচ আছে। ভর্তি পরীক্ষা শেষ হওয়ার তিন মাসেও আমাদের ক্লাস শুরু হয়নি। আমদের তিন ব্যাচের শিক্ষার্থীরাও সেশনজটের আশঙ্কায় আছি।’

কলা অনুষদের একটি বিভাগে প্রাথমিক ভর্তি সম্পন্ন করা রহিম উল্লাহ বলেন, চবির অল্প কিছুদিন আগে শেষ হয় ঢাবির ভর্তি পরীক্ষা। সেখানে উত্তীর্ণরা জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে ক্লাস শুরু করেছেন। কিন্তু চবি তিন মাসেও শুরু করতে পারেনি।

আসন খালি: এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তিন দফা অপেক্ষমাণ তালিকা দিলেও সব আসন পূর্ণ হয়নি। এ ছাড়া অনেকে ভর্তি হয়েও তা বাতিল করেছেন। অপেক্ষমাণদের তৃতীয় তালিকার ভর্তি শেষ হওয়ার পরও কোনো ইউনিটে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত আসন খালি রয়েছে। এ ছাড়া কোনো ইউনিটে ১৫ শতাংশ, কোনো ইউনিটে ২০ শতাংশ আসন খালি রয়েছে।

নাম প্রকাশ না করা শর্তে একজন ডিন বলেন, ‘আমরা পরীক্ষা গ্রহণ ও ফলাফল যথা সময়ে দিয়েছি। আইসিটি সেল বিষয় পছন্দক্রম দিতে এক মাসের মতো সময় নিয়েছে।’ তাঁদের অভিজ্ঞতা কম বলে সবকিছুতে দেরি হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

তবে এসব নাকচ করে দেন আইসিটি সেলের পরিচালক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ খাইরুল ইসলাম। তিনি বলেন, এটা সম্পূর্ণ মিথ্যাচার। ডিনরা যেভাবে শিডিউল ঠিক করে দেন আইসিটি সে অনুযায়ী কাজ করে। এর বাইরে যাওয়ার সুযোগ আইসিটির নেই৷

খাইরুল ইসলামের দাবি, ভর্তি পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর ফলাফল পাঠাতে ডিনরা দেরি করেছেন। কোনো কোনো ইউনিটের ফলাফল কয়েকবারও পাঠিয়েছেন। ‘এর দায়ভার কী আমাদের?’ প্রশ্ন ছুড়ে দেন তিনি।

জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য অধ্যাপক বেণু কুমার দে বলেন, তৃতীয় অপেক্ষমাণ তালিকার শিক্ষার্থীদের ভর্তি শেষ হওয়ার পর ক্লাসের তারিখ দেওয়া হয়েছে। করোনার কারণে বিভিন্ন কোটার সাক্ষাৎকার নেওয়া যায়নি। যে কারণে দেরি হয়েছে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তিতুমীরের শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ থেকে ট্রেনে হামলা, কয়েকজন জখম, ট্রেন চলাচল বন্ধ

স্বামীও জানতেন না স্ত্রী ঢাকা মেডিকেলের ছাত্রী নন

ঢাকার যানজট নিরসনে ৫ কোটির সিগন্যাল ব্যবস্থা, বাস্তবায়নে লাগবে ৬ মাস

১১ সদস্যের গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন গঠন, আছেন যাঁরা

এস আলমের ঋণ জালিয়াতি: বাংলাদেশ ব্যাংকের ১৩ কর্মকর্তাকে দুদকে তলব

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত