মাসুদ-উর রহমান
সরকারের দুটি জনগুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয় স্বাস্থ্য ও শিক্ষা এবার আশা জাগাচ্ছে। তবে সে আশা বাস্তবে পূর্ণতা পাওয়া কঠিন ব্যাপার। কেন কঠিন, সেটিও আমরা সবাই জানি। এমপি, মন্ত্রীর চারদিকে অসৎ, সুবিধাভোগী, চামচা ও চাটুকার শ্রেণি যেভাবে ওত পেতে থাকে, তাতে তাঁরা অনেক ক্ষেত্রে কিছু করতে পারেন না। তাঁরা উৎকোচ ছাড়া কোনো কাজ করেন না, সেটা হলো আশঙ্কার ব্যাপার।
এ ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর একটি বিশেষ সুবিধা যে আগে থেকেই তাঁর এমন কোনো বাহিনী ঠিক করা নেই।
তিনি আগে রাজনীতি করেননি এবং এমপি হওয়ার অভিপ্রায়ও তাঁর কখনো ছিল না। তিনি যদি সুবিধাভোগী শ্রেণিটিকে কাছে ঘেঁষতে না দিয়ে, দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে কঠোর হয়ে মন্ত্রণালয় পরিচালনা করতে পারেন, তাহলে স্বাস্থ্য খাতের সুফল হয়তো আমরা পাব। তবে তাঁর দুর্বলতা হলো রাজনৈতিক জ্ঞানের অভাব।
শিক্ষা খাতেও আশাবাদী হচ্ছি এই ভেবে, গত পাঁচ বছরে শিক্ষামন্ত্রী একই মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। গলি-ঘুপচিগুলো তাঁর চেনা। তা ছাড়া একই মন্ত্রণালয়ে একেবারে ডবল প্রমোশন পেয়ে মন্ত্রী হয়ে যাওয়াটা নিশ্চয়ই তাঁর উপমন্ত্রী হিসেবে সাফল্যের স্বীকৃতি। তা ছাড়া বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদ তথা ম্যানেজিং কমিটি যে দুর্নীতির প্রধান আখড়া, শিক্ষার মানোন্নয়নে প্রধান অন্তরায়, সেটি তিনি উপমন্ত্রী থাকাকালে যেমন অনুধাবন করেছেন, তেমনি বিভিন্ন সভায় সেসব কথা বলার চেষ্টাও করেছিলেন।
সম্পূর্ণ অবৈতনিক এই পদগুলো আঁকড়ে থাকতে স্বয়ং এমপিরাও সর্বোচ্চ চেষ্টা করে থাকেন। এখন তাঁরা থাকতে না পারলেও, তাঁদের অনুগতদের দিয়ে সেই উদ্দেশ্য হাসিল করতে তাঁরা চেষ্টা করে যাবেন বলে অনেকের ধারণা। শিক্ষায় সফল হতে হলে অবশ্যই শিক্ষাঙ্গনকে রাজনীতির ঊর্ধ্বে রাখতে হবে। স্বয়ং পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য যখন মন্ত্রীদের অভিনন্দন জানিয়ে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন, তখন ভাবনার উদ্রেক করে, এর পেছনের উদ্দেশ্যটা কী?
ব্যতিক্রম বাদ দিলে আমাদের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিনির্ধারকদের রাজনৈতিক পরিচয়ে এখন কোনো রাখঢাক দেখা যায় না। এখানে কার চেয়ে কে বেশি অনুগত এর প্রতিযোগিতা চলে। যে কারণে কিছু পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় স্বজনপ্রীতি আর স্বেচ্ছাচারিতায় পারিবারিক বিশ্ববিদ্যালয়ের তকমা পেয়ে যাচ্ছে। একবার ভাবুন তো, দেশের সর্বোচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যখন এই অবস্থা, তখন গ্রামগঞ্জে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা স্কুল-কলেজগুলোতে কী অবস্থা বিরাজ করছে?
এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য ব্লাইন্ড শুটার হওয়া ছাড়া মন্ত্রীদের সামনে কোনো পথ আছে বলে আমার মনে হয় না। রাজনীতি তাঁরা অবশ্যই করবেন। তবে চেষ্টা থাকতে হবে সুবিধাভোগীরা যেন কাছে আসতে না পারে। ‘মর্নিং শো দ্য ডে’ বলে একটি কথা আছে। এ পথেই কি হাঁটতে চাইছেন আমাদের নতুন শিক্ষামন্ত্রী এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী?
খুলনা-৬ (পাইকগাছা-কয়রা) আসনের সংসদ সদস্য মো. রশীদুজ্জামান স্কুল থেকে উপহার পাওয়া স্বর্ণের নৌকা তিনি ফিরিয়ে দিয়েছেন। উল্টো ব্যক্তিগতভাবে আরও ৫ হাজার টাকার আর্থিক সহায়তার সঙ্গে তাঁকে দেওয়া উপহারটি বিদ্যালয়ের কৃতী ছাত্রীদের কল্যাণে কাজে লাগানোর জন্য কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা দিয়েছেন। তাঁর এমন মহানুভবতা আমাদের আশান্বিত করছে।
নবনিযুক্ত প্রতিমন্ত্রী বেগম রুমানা আলীর ভাষায়, ‘মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষার লক্ষ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় নিরন্তর কাজ করে যাচ্ছে। এখন স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। শিক্ষা একটি সামগ্রিক প্রক্রিয়া। মাধ্যমিকের সঙ্গে সমন্বয় করে এখানে কাজ করতে হবে। পারস্পরিক সহযোগিতার ভিত্তিতে শিক্ষার সব কর্মসূচি বাস্তবায়নের মাধ্যমে লক্ষ্য অর্জন করতে হবে। ফুল নেওয়া নয়, ফুল ফোটানোর লক্ষ্যে কাজ করতে হবে।’
এই লেখা শেষ করছি শিক্ষামন্ত্রীর উদ্ধৃতি তুলে ধরে, ‘এই মুহূর্তে আমি কোনো ধরনের ফুলেল শুভেচ্ছা ও সংবর্ধনা না দেওয়ার জন্য সকলের প্রতি বিনীতভাবে অনুরোধ জানাচ্ছি। আমাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করার জন্য চট্টগ্রামের সর্বসাধারণের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছি। দলীয় নেতা-কর্মী ও সর্বস্তরের জনগণের সঙ্গে পর্যায়ক্রমে মতবিনিময় ও শুভেচ্ছাবিনিময় করে এলাকাবাসীর সমস্যার কথা শুনব এবং সমস্যাগুলো সমাধানের চেষ্টা করব। এ বিষয়ে আপনাদের সকলের সহযোগিতা কামনা করছি।’ এ কথাগুলোর বাস্তবায়ন হলেই আমরা সামনে এগিয়ে যাব।
লেখক: কলেজশিক্ষক ও সাংস্কৃতিক কর্মী
সরকারের দুটি জনগুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয় স্বাস্থ্য ও শিক্ষা এবার আশা জাগাচ্ছে। তবে সে আশা বাস্তবে পূর্ণতা পাওয়া কঠিন ব্যাপার। কেন কঠিন, সেটিও আমরা সবাই জানি। এমপি, মন্ত্রীর চারদিকে অসৎ, সুবিধাভোগী, চামচা ও চাটুকার শ্রেণি যেভাবে ওত পেতে থাকে, তাতে তাঁরা অনেক ক্ষেত্রে কিছু করতে পারেন না। তাঁরা উৎকোচ ছাড়া কোনো কাজ করেন না, সেটা হলো আশঙ্কার ব্যাপার।
এ ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর একটি বিশেষ সুবিধা যে আগে থেকেই তাঁর এমন কোনো বাহিনী ঠিক করা নেই।
তিনি আগে রাজনীতি করেননি এবং এমপি হওয়ার অভিপ্রায়ও তাঁর কখনো ছিল না। তিনি যদি সুবিধাভোগী শ্রেণিটিকে কাছে ঘেঁষতে না দিয়ে, দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে কঠোর হয়ে মন্ত্রণালয় পরিচালনা করতে পারেন, তাহলে স্বাস্থ্য খাতের সুফল হয়তো আমরা পাব। তবে তাঁর দুর্বলতা হলো রাজনৈতিক জ্ঞানের অভাব।
শিক্ষা খাতেও আশাবাদী হচ্ছি এই ভেবে, গত পাঁচ বছরে শিক্ষামন্ত্রী একই মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। গলি-ঘুপচিগুলো তাঁর চেনা। তা ছাড়া একই মন্ত্রণালয়ে একেবারে ডবল প্রমোশন পেয়ে মন্ত্রী হয়ে যাওয়াটা নিশ্চয়ই তাঁর উপমন্ত্রী হিসেবে সাফল্যের স্বীকৃতি। তা ছাড়া বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদ তথা ম্যানেজিং কমিটি যে দুর্নীতির প্রধান আখড়া, শিক্ষার মানোন্নয়নে প্রধান অন্তরায়, সেটি তিনি উপমন্ত্রী থাকাকালে যেমন অনুধাবন করেছেন, তেমনি বিভিন্ন সভায় সেসব কথা বলার চেষ্টাও করেছিলেন।
সম্পূর্ণ অবৈতনিক এই পদগুলো আঁকড়ে থাকতে স্বয়ং এমপিরাও সর্বোচ্চ চেষ্টা করে থাকেন। এখন তাঁরা থাকতে না পারলেও, তাঁদের অনুগতদের দিয়ে সেই উদ্দেশ্য হাসিল করতে তাঁরা চেষ্টা করে যাবেন বলে অনেকের ধারণা। শিক্ষায় সফল হতে হলে অবশ্যই শিক্ষাঙ্গনকে রাজনীতির ঊর্ধ্বে রাখতে হবে। স্বয়ং পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য যখন মন্ত্রীদের অভিনন্দন জানিয়ে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন, তখন ভাবনার উদ্রেক করে, এর পেছনের উদ্দেশ্যটা কী?
ব্যতিক্রম বাদ দিলে আমাদের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিনির্ধারকদের রাজনৈতিক পরিচয়ে এখন কোনো রাখঢাক দেখা যায় না। এখানে কার চেয়ে কে বেশি অনুগত এর প্রতিযোগিতা চলে। যে কারণে কিছু পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় স্বজনপ্রীতি আর স্বেচ্ছাচারিতায় পারিবারিক বিশ্ববিদ্যালয়ের তকমা পেয়ে যাচ্ছে। একবার ভাবুন তো, দেশের সর্বোচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যখন এই অবস্থা, তখন গ্রামগঞ্জে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা স্কুল-কলেজগুলোতে কী অবস্থা বিরাজ করছে?
এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য ব্লাইন্ড শুটার হওয়া ছাড়া মন্ত্রীদের সামনে কোনো পথ আছে বলে আমার মনে হয় না। রাজনীতি তাঁরা অবশ্যই করবেন। তবে চেষ্টা থাকতে হবে সুবিধাভোগীরা যেন কাছে আসতে না পারে। ‘মর্নিং শো দ্য ডে’ বলে একটি কথা আছে। এ পথেই কি হাঁটতে চাইছেন আমাদের নতুন শিক্ষামন্ত্রী এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী?
খুলনা-৬ (পাইকগাছা-কয়রা) আসনের সংসদ সদস্য মো. রশীদুজ্জামান স্কুল থেকে উপহার পাওয়া স্বর্ণের নৌকা তিনি ফিরিয়ে দিয়েছেন। উল্টো ব্যক্তিগতভাবে আরও ৫ হাজার টাকার আর্থিক সহায়তার সঙ্গে তাঁকে দেওয়া উপহারটি বিদ্যালয়ের কৃতী ছাত্রীদের কল্যাণে কাজে লাগানোর জন্য কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা দিয়েছেন। তাঁর এমন মহানুভবতা আমাদের আশান্বিত করছে।
নবনিযুক্ত প্রতিমন্ত্রী বেগম রুমানা আলীর ভাষায়, ‘মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষার লক্ষ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় নিরন্তর কাজ করে যাচ্ছে। এখন স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। শিক্ষা একটি সামগ্রিক প্রক্রিয়া। মাধ্যমিকের সঙ্গে সমন্বয় করে এখানে কাজ করতে হবে। পারস্পরিক সহযোগিতার ভিত্তিতে শিক্ষার সব কর্মসূচি বাস্তবায়নের মাধ্যমে লক্ষ্য অর্জন করতে হবে। ফুল নেওয়া নয়, ফুল ফোটানোর লক্ষ্যে কাজ করতে হবে।’
এই লেখা শেষ করছি শিক্ষামন্ত্রীর উদ্ধৃতি তুলে ধরে, ‘এই মুহূর্তে আমি কোনো ধরনের ফুলেল শুভেচ্ছা ও সংবর্ধনা না দেওয়ার জন্য সকলের প্রতি বিনীতভাবে অনুরোধ জানাচ্ছি। আমাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করার জন্য চট্টগ্রামের সর্বসাধারণের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছি। দলীয় নেতা-কর্মী ও সর্বস্তরের জনগণের সঙ্গে পর্যায়ক্রমে মতবিনিময় ও শুভেচ্ছাবিনিময় করে এলাকাবাসীর সমস্যার কথা শুনব এবং সমস্যাগুলো সমাধানের চেষ্টা করব। এ বিষয়ে আপনাদের সকলের সহযোগিতা কামনা করছি।’ এ কথাগুলোর বাস্তবায়ন হলেই আমরা সামনে এগিয়ে যাব।
লেখক: কলেজশিক্ষক ও সাংস্কৃতিক কর্মী
জমির মালিক হযরত শাহ্ আলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। তবে ওই জমিতে ৩৯১টি দোকান নির্মাণ করে কয়েক বছর ধরে ভাড়া নিচ্ছে হযরত শাহ্ আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজ। দোকানগুলোর ভাড়া থেকে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ৭০ লাখ টাকা ভ্যাটও দেওয়া হয়নি। বিষয়টি উঠে এসেছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) তদন্তে।
১ দিন আগেকুড়িগ্রাম পৌর শহরে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী ছোট ভাই নিহত ও বড় ভাই আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে মৎস্য খামারের কাছে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
৫ দিন আগেবৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগের মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১৮ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত শনিবার রাতে ও গতকাল রোববার তাঁরা গ্রেপ্তার হন।
৫ দিন আগেএক অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটেছে শিল্পকলা একাডেমিতে। শিল্পকলা একাডেমির তিনটি হলেই কিছুদিন আগেও নাটক চলত। নাট্যকর্মীদের সৃজনশীলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটত সেখানে। বহু পরিশ্রমে মাসের পর মাস নিজের খেয়ে, নিজের গাড়িভাড়া দিয়ে নাট্যকর্মীরা একেবারেই স্বেচ্ছাশ্রমে একটি শিল্প তিপ্পান্ন বছর ধরে গড়ে তুলেছেন। শিল্পকলা একাডেমি এখন
৮ দিন আগে