একটি পৌরসভা ও ১০টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলা। এখানকার মানুষের প্রধান কষ্ট পৌর শহরের যানজট। এর থেকে রেহাই পাওয়ার একমাত্র উপায় হচ্ছে বাইপাস সড়ক নির্মাণ। এ জন্য উপজেলাবাসী অনেক বছর ধরে বাইপাস সড়ক নির্মাণের দাবি করছেন। দাবি বাস্তবায়িত না হওয়ায় দিন দিন তাঁদের ভোগান্তি বাড়ছে।

বদরগঞ্জ পৌর শহরে গিয়ে দেখা গেছে, পৌর শহরের প্রধান সড়কগুলো অবৈধভাবে দখল করে গড়ে তোলা হয়েছে স্থাপনা। সড়কে কোনো কোনো স্থানে অটোরিকশার স্ট্যান্ড করা হয়েছে। এতে সড়ক সংকুচিত হয়ে পড়ছে। সড়কগুলো দিয়ে শত শত যানবাহন চলাচল করছে। যানজট সৃষ্টি হয়ে যানবাহনের সারি দীর্ঘ হচ্ছে। হেঁটেও গন্তব্যস্থলে পৌঁছাতে বেগ পেতে হচ্ছে পথচারীদের।

পথচারীরা জানান, জিতেনদত্ত বিজয় মঞ্চ থেকে উপজেলা পরিষদ সড়কে অটোরিকশার স্ট্যান্ড করা হয়েছে। ওই সড়ক দিয়ে রংপুর যাতায়াতে প্রতিদিন শত শত যানবাহন চলাচল করছে। এ ছাড়া উপজেলার ৭০টি ইটভাটার পাঁচ শতাধিক ট্রাক ও ট্রাক্টর ইট ও মাটি আনা-নেওয়ার কাজে ওই সড়ক ব্যবহার করছে। এতে অসহনীয় যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে।

এদিকে পৌর শহরের বড় মসজিদ থেকে হাসপাতাল সড়কের দুধারে অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে স্থাপনা। ওই সড়ক দিয়ে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি চলাচল করছেন বদরগঞ্জ মহিলা ডিগ্রি কলেজ, বদরগঞ্জ মডেল বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয়, বদরগঞ্জ মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বদরগঞ্জ বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, বদরগঞ্জ কথাকলি বিদ্যা নিকেতনসহ বেশ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের হাজারো শিক্ষার্থী ও শিক্ষকেরা। ওই সব স্থাপনার কারণে সড়কে যানজট সৃষ্টি হওয়ায় নির্ধারিত সময়ে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকেরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পৌঁছাতে পারেন না।

বদরগঞ্জ হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্সচালক রফিকুল ইসলাম বলেন, দুই মিনিটের সড়ক পার হতে সময় লাগে ১৫-২০ মিনিট। কয়েক বছরে এই সড়ক পার হতেই আশঙ্কাজনক কিছু রোগী অ্যাম্বুলেন্সেই মারা গেছে।

বদরগঞ্জ পৌরসভার পাশে বাইপাস সড়ক নির্মাণ করা সম্ভব নয় জানিয়ে পৌর মেয়র আহসানুল হক চৌধুরী টুটুল বলেন, ‘যানজট নিয়ন্ত্রণ করতে আমাদের নিজেদের প্রচেষ্টায় চারজন চৌকিদারকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। হাটের দিন সোম ও বৃহস্পতিবার পৌর শহরের ভেতরে কোনো ব্যবসায়ী মালামাল ওঠাতে-নামাতে পারবেন না। অনেকেই এটি কথা মানছে না।’

রংপুর-২ (বদরগঞ্জ-তারাগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য আবুল কালাম মো. আহসানুল হক চৌধুরী ডিউক বলেন, ‘সত্যিই বদরগঞ্জবাসী যানজটের ভোগান্তিতে পড়েছেন। এ নিয়ে জাতীয় সংসদে তিনবার বাইপাস সড়ক নির্মাণে দাবি তুলে ধরেছি। আশা করি দ্রুত কাজ হবে।’