তৌফিকুল ইসলাম, ঢাকা
সাত ভাই, দুই বোন দাঁড়িয়ে ছিলেন রাস্তার পাশে। তাঁদের মধ্যে পাঁচ ভাইকে চাপা দিয়ে মারে দ্রুতগতির পিকআপ। এ ঘটনা গত মঙ্গলবার, কক্সবাজারের চকরিয়ায়। পরদিন গতকাল বুধবার চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় স্কুল থেকে হেঁটে বাড়ি ফেরার সময় চাঁদের গাড়িতে পিষ্ট হয়েছে দুই স্কুলছাত্রী। এ ঘটনা পাশের জেলা চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায়।
এই সাতজনের কারও ভুল বা দোষ ছিল না। তাঁরা রাস্তায় নেমেছিলেন প্রয়োজনে। প্রতিদিন পথে নেমে এমন বহু পথাচারীর মৃত্যু হচ্ছে সড়ক দুর্ঘটনায়। তথ্য বলছে প্রতিবছর সড়ক দুর্ঘটনায় যত মানুষের মৃত্যু হচ্ছে তাঁর ২৭ শতাংশ পথচারী। দিনের ২৪ ঘণ্টার হিসাবে সকাল ও বিকেলের সময়টাতেই মৃত্যু বেশি। কেননা, মানুষ প্রয়োজনের তাগিদে এই সময়টাতেই বেশি পথে থাকে।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের তথ্য বলছে, সারা দেশে ২০১৯ সালে সড়ক দুর্ঘটনায় পথচারী নিহত হয় ১ হাজার ৪৮৭ জন, যা ওই বছরের মোট দুর্ঘটনার প্রায় ২৯ শতাংশ। ২০২০ সালে ১ হাজার ৫১২ জন, শতাংশে ২৮ এবং ২০২১ সালে ১ হাজার ৫২৩ জন, শতাংশে ২৪।
সড়কে পথচারী নিহত হওয়ার ঘটনা বিশ্লেষণ করে দেখে গেছে গত বছর নিহত ১ হাজার ৫২৩ জনের মধ্যে ৫৪ শতাংশের মৃত্যু হয় রাস্তায় হাঁটার সময়।
বাকি ৪৬ শতাংশ নিহত হয় রাস্তা পারাপারের সময়। তা ছাড়া ৬২ শতাংশ দুর্ঘটনা ঘটেছে যানবাহনের বেপরোয়া গতির কারণে এবং ৩৮ দশমিক ১৯ শতাংশ দুর্ঘটনা ঘটেছে পথচারীদের অসতর্কতার কারণে। সড়ক দুর্ঘটনায় পথচারী নিহত হওয়ার ঘটনা বেশি হয়েছে মহাসড়কে, ৩১ শতাংশ। এরপর আঞ্চলিক সড়কে, ২৪ শতাংশ। তারপর গ্রামীণ সড়কে, ২৯ শতাংশ এবং শহরের সড়কে ১৪ শতাংশ।
আবার দিনের ২৪ ঘণ্টার হিসাবে দেখা যাচ্ছে সকাল ও বিকেলের দিকে বেশি পথচারীর মৃত্যু হচ্ছে। হিসাবটা এমন—সকালে ২৮ শতাংশ, দুপুরে ২০ শতাংশ, বিকেলে ২২ শতাংশ, রাতে ১৫ শতাংশ ও ভোরে ৩ শতাংশ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমান বলেন, ‘সকালে মানুষের কর্মক্ষেত্রে যাওয়ার তাড়া থাকে। বারবার সময় দেখে গন্তব্যে যেতে হয় ফলে দুর্ঘটনার শিকার হন। বিকেলের দিকেও দুর্ঘটনা বেশি হচ্ছে। কারণ, এই সময়টাতে মানুষের ঘরে ফেরার তাড়া থাকে। তা ছাড়া বিকেলে মোটরসাইকেল নিয়ে বেশির ভাগ মানুষ ঘুরতে বের হয়। ফলে এ সময়টিতেও দুর্ঘটনা বেশি হচ্ছে।’
সড়কে পথচারী মারা যাওয়ার পেছনে অনেকগুলো কারণের কথা বলছেন সড়কসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। তার মধ্যে রয়েছে, যানবাহনের অতিরিক্ত গতি, সড়কের সাইন-মার্কিং-জেব্রা ক্রসিং চালক এবং পথচারীদের না মানার প্রবণতা, যথাস্থানে সঠিকভাবে ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ না করা এবং ব্যবহার উপযোগী না থাকা, রাস্তায় হাঁটা ও পারাপারের সময় মোবাইল ফোনে কথা বলা, হেডফোনে গান শোনা, চ্যাটিং করা এবং সড়ক ঘেঁষে বসতবাড়ি নির্মাণ ও সড়কের ওপরে হাটবাজার গড়ে ওঠা ইত্যাদি কারণে পথচারী নিহত হওয়ার ঘটনা বাড়ছে।
আইন না মানার বিষয়ে হাইওয়ে পুলিশ কুমিল্লা বিভাগের পুলিশ সুপার মুহাম্মদ রহমতউল্লাহ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে অনেকগুলো ফুটওভার ব্রিজ আছে। কিন্তু ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহারে মানুষের আগ্রহ কম। জোর করে পথচারীদের ফুটওভার ব্রিজে ওঠানো লাগে।
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ ও বুয়েটের অ্যাকসিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউট (এআরআই)-এর পরিচালক অধ্যাপক ড. হাদিউজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, বাংলাদেশে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি যেমন বেড়েছে, পাল্লা দিয়ে বেড়েছে যানবাহনের সংখ্যা। এসব গাড়ি চলাচলের জন্য অনেক বিনিয়োগ হচ্ছে। অবকাঠামো তৈরি হচ্ছে। কিন্তু পথচারীদের চলাচলের জন্য যে ধরনের অবকাঠামো থাকার দরকার, তা এখনো গড়ে ওঠেনি।
হাদিউজ্জামান আরও বলেন, মহাসড়কে যেখানে পথচারীদের পারাপারের প্রয়োজন সেখানে পার হওয়ার কোনো সুবিধা রাখা হচ্ছে না। ফলে মানুষ পারাপার হতে গিয়ে মারা যাচ্ছে। পরিকল্পনাতেও একটা গলদ আছে। সরকার অনেক কিছু করে ফেলছে। কিন্তু পথচারীদের নিরাপত্তার বিষয়টিতে গুরুত্ব দিচ্ছে না।
সড়ক দুর্ঘটনা সম্পর্কিত আরও পড়ুন:
সাত ভাই, দুই বোন দাঁড়িয়ে ছিলেন রাস্তার পাশে। তাঁদের মধ্যে পাঁচ ভাইকে চাপা দিয়ে মারে দ্রুতগতির পিকআপ। এ ঘটনা গত মঙ্গলবার, কক্সবাজারের চকরিয়ায়। পরদিন গতকাল বুধবার চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় স্কুল থেকে হেঁটে বাড়ি ফেরার সময় চাঁদের গাড়িতে পিষ্ট হয়েছে দুই স্কুলছাত্রী। এ ঘটনা পাশের জেলা চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায়।
এই সাতজনের কারও ভুল বা দোষ ছিল না। তাঁরা রাস্তায় নেমেছিলেন প্রয়োজনে। প্রতিদিন পথে নেমে এমন বহু পথাচারীর মৃত্যু হচ্ছে সড়ক দুর্ঘটনায়। তথ্য বলছে প্রতিবছর সড়ক দুর্ঘটনায় যত মানুষের মৃত্যু হচ্ছে তাঁর ২৭ শতাংশ পথচারী। দিনের ২৪ ঘণ্টার হিসাবে সকাল ও বিকেলের সময়টাতেই মৃত্যু বেশি। কেননা, মানুষ প্রয়োজনের তাগিদে এই সময়টাতেই বেশি পথে থাকে।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের তথ্য বলছে, সারা দেশে ২০১৯ সালে সড়ক দুর্ঘটনায় পথচারী নিহত হয় ১ হাজার ৪৮৭ জন, যা ওই বছরের মোট দুর্ঘটনার প্রায় ২৯ শতাংশ। ২০২০ সালে ১ হাজার ৫১২ জন, শতাংশে ২৮ এবং ২০২১ সালে ১ হাজার ৫২৩ জন, শতাংশে ২৪।
সড়কে পথচারী নিহত হওয়ার ঘটনা বিশ্লেষণ করে দেখে গেছে গত বছর নিহত ১ হাজার ৫২৩ জনের মধ্যে ৫৪ শতাংশের মৃত্যু হয় রাস্তায় হাঁটার সময়।
বাকি ৪৬ শতাংশ নিহত হয় রাস্তা পারাপারের সময়। তা ছাড়া ৬২ শতাংশ দুর্ঘটনা ঘটেছে যানবাহনের বেপরোয়া গতির কারণে এবং ৩৮ দশমিক ১৯ শতাংশ দুর্ঘটনা ঘটেছে পথচারীদের অসতর্কতার কারণে। সড়ক দুর্ঘটনায় পথচারী নিহত হওয়ার ঘটনা বেশি হয়েছে মহাসড়কে, ৩১ শতাংশ। এরপর আঞ্চলিক সড়কে, ২৪ শতাংশ। তারপর গ্রামীণ সড়কে, ২৯ শতাংশ এবং শহরের সড়কে ১৪ শতাংশ।
আবার দিনের ২৪ ঘণ্টার হিসাবে দেখা যাচ্ছে সকাল ও বিকেলের দিকে বেশি পথচারীর মৃত্যু হচ্ছে। হিসাবটা এমন—সকালে ২৮ শতাংশ, দুপুরে ২০ শতাংশ, বিকেলে ২২ শতাংশ, রাতে ১৫ শতাংশ ও ভোরে ৩ শতাংশ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমান বলেন, ‘সকালে মানুষের কর্মক্ষেত্রে যাওয়ার তাড়া থাকে। বারবার সময় দেখে গন্তব্যে যেতে হয় ফলে দুর্ঘটনার শিকার হন। বিকেলের দিকেও দুর্ঘটনা বেশি হচ্ছে। কারণ, এই সময়টাতে মানুষের ঘরে ফেরার তাড়া থাকে। তা ছাড়া বিকেলে মোটরসাইকেল নিয়ে বেশির ভাগ মানুষ ঘুরতে বের হয়। ফলে এ সময়টিতেও দুর্ঘটনা বেশি হচ্ছে।’
সড়কে পথচারী মারা যাওয়ার পেছনে অনেকগুলো কারণের কথা বলছেন সড়কসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। তার মধ্যে রয়েছে, যানবাহনের অতিরিক্ত গতি, সড়কের সাইন-মার্কিং-জেব্রা ক্রসিং চালক এবং পথচারীদের না মানার প্রবণতা, যথাস্থানে সঠিকভাবে ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ না করা এবং ব্যবহার উপযোগী না থাকা, রাস্তায় হাঁটা ও পারাপারের সময় মোবাইল ফোনে কথা বলা, হেডফোনে গান শোনা, চ্যাটিং করা এবং সড়ক ঘেঁষে বসতবাড়ি নির্মাণ ও সড়কের ওপরে হাটবাজার গড়ে ওঠা ইত্যাদি কারণে পথচারী নিহত হওয়ার ঘটনা বাড়ছে।
আইন না মানার বিষয়ে হাইওয়ে পুলিশ কুমিল্লা বিভাগের পুলিশ সুপার মুহাম্মদ রহমতউল্লাহ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে অনেকগুলো ফুটওভার ব্রিজ আছে। কিন্তু ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহারে মানুষের আগ্রহ কম। জোর করে পথচারীদের ফুটওভার ব্রিজে ওঠানো লাগে।
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ ও বুয়েটের অ্যাকসিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউট (এআরআই)-এর পরিচালক অধ্যাপক ড. হাদিউজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, বাংলাদেশে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি যেমন বেড়েছে, পাল্লা দিয়ে বেড়েছে যানবাহনের সংখ্যা। এসব গাড়ি চলাচলের জন্য অনেক বিনিয়োগ হচ্ছে। অবকাঠামো তৈরি হচ্ছে। কিন্তু পথচারীদের চলাচলের জন্য যে ধরনের অবকাঠামো থাকার দরকার, তা এখনো গড়ে ওঠেনি।
হাদিউজ্জামান আরও বলেন, মহাসড়কে যেখানে পথচারীদের পারাপারের প্রয়োজন সেখানে পার হওয়ার কোনো সুবিধা রাখা হচ্ছে না। ফলে মানুষ পারাপার হতে গিয়ে মারা যাচ্ছে। পরিকল্পনাতেও একটা গলদ আছে। সরকার অনেক কিছু করে ফেলছে। কিন্তু পথচারীদের নিরাপত্তার বিষয়টিতে গুরুত্ব দিচ্ছে না।
সড়ক দুর্ঘটনা সম্পর্কিত আরও পড়ুন:
জমির মালিক হযরত শাহ্ আলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। তবে ওই জমিতে ৩৯১টি দোকান নির্মাণ করে কয়েক বছর ধরে ভাড়া নিচ্ছে হযরত শাহ্ আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজ। দোকানগুলোর ভাড়া থেকে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ৭০ লাখ টাকা ভ্যাটও দেওয়া হয়নি। বিষয়টি উঠে এসেছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) তদন্তে।
১ দিন আগেকুড়িগ্রাম পৌর শহরে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী ছোট ভাই নিহত ও বড় ভাই আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে মৎস্য খামারের কাছে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
৫ দিন আগেবৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগের মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১৮ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত শনিবার রাতে ও গতকাল রোববার তাঁরা গ্রেপ্তার হন।
৫ দিন আগেএক অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটেছে শিল্পকলা একাডেমিতে। শিল্পকলা একাডেমির তিনটি হলেই কিছুদিন আগেও নাটক চলত। নাট্যকর্মীদের সৃজনশীলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটত সেখানে। বহু পরিশ্রমে মাসের পর মাস নিজের খেয়ে, নিজের গাড়িভাড়া দিয়ে নাট্যকর্মীরা একেবারেই স্বেচ্ছাশ্রমে একটি শিল্প তিপ্পান্ন বছর ধরে গড়ে তুলেছেন। শিল্পকলা একাডেমি এখন
৯ দিন আগে