তানিম আহমেদ, ঢাকা
দ্বাদশ জাতীয় সংসদের সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে ব্যক্তিগত স্বার্থের সংশ্লিষ্টতা থাকা সংসদ সদস্যরাও পদ পেয়েছেন। কমিটির সভাপতিও হয়েছেন কেউ কেউ। এ ছাড়া সদ্য সাবেক সরকারের ১২ মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী হয়েছেন দায়িত্ব পালন করে আসা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এতে কমিটি গঠনে কার্যপ্রণালি বিধির নির্দেশনার ব্যত্যয় ঘটেছে। স্বার্থের সংঘাত তৈরি হয়েছে। এ ছাড়া সাবেক মন্ত্রী কমিটির সভাপতি হওয়ায় তাঁর সময়ে মন্ত্রণালয়ের প্রকল্পে অনিয়ম, দুর্নীতির অভিযোগ না-ও আসতে পারে। এতে জবাবদিহির সম্ভাবনা কমে যায়।
অবশ্য জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী বলেছেন, মন্ত্রণালয়ে কাজের অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে সদ্য সাবেক মন্ত্রীদের কমিটির সভাপতি করা হয়েছে। যে কেউ ব্যবসা করতে পারেন, তবে দেখতে হবে, ব্যবসাটি সরকারের সঙ্গে কি না।
জাতীয় সংসদের কার্যপ্রণালি বিধিতে আছে, এমন কোনো সদস্য সংসদীয় কমিটিতে নিযুক্ত হবেন না যাঁর ব্যক্তিগত, আর্থিক ও প্রত্যক্ষ স্বার্থ কমিটিতে বিবেচিত হতে পারে, এমন বিষয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা আছে। সংসদীয় কমিটির কাজ হলো বিল পরীক্ষা করে প্রতিবেদন দেওয়া এবং কমিটির আওতাধীন মন্ত্রণালয়ের কাজ পর্যালোচনা, অনিয়ম ও গুরুতর অভিযোগ তদন্ত করা।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশন শুরু হয়েছে গত ৩০ জানুয়ারি। যাত্রা শুরুর পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যেই ৫০টি সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সব কটি গঠন করা হয়েছে। ৩৯টি মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির মধ্যে ১৩টির সভাপতি হয়েছেন সদ্য বিদায়ী সরকারের মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরা। তাঁদের মধ্যে ১২ জনই দায়িত্ব পালন করে আসা মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত কমিটির সভাপতি হয়েছেন।
সংসদীয় কমিটির সদস্যদের হলফনামা ঘেঁটে দেখা যায়, কয়েকটি কমিটির সভাপতি ও সদস্যদের সংশ্লিষ্ট খাতের ব্যবসা-বাণিজ্যের সঙ্গে সম্পৃক্ততা রয়েছে।
সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সংসদ সদস্যদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট কমিটিতে থাকা গুরুতর বিষয়। আমরা আশা করি, সরকার এটা পুনর্বিবেচনা করবে এবং সংসদ সদস্য আচরণবিধি আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নেবে।’
গবেষণায় দেখা যায়, নির্বাচনের সময় দেওয়া হলফনামার তথ্য অনুযায়ী, নবম জাতীয় সংসদের ৫১টি কমিটির মধ্যে ৬টি কমিটিতে এবং দশম সংসদের ৫০টি কমিটির মধ্যে ৫টি কমিটিতে সদস্যের কমিটি-সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়িক সম্পৃক্ততা ছিল। আগে কখনো কখনো কমিটির সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত বা ব্যবসায়িক স্বার্থের অনুকূলে প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ ওঠে। কমিটিতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী পদাধিকারবলে সদস্য হওয়ায় এবং কোনো কোনো কমিটিতে পূর্বতন মন্ত্রী সংশ্লিষ্ট স্থায়ী কমিটির সভাপতি হওয়ায় জবাবদিহি নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে প্রভাব বিস্তারের অভিযোগও ওঠে।
দশম সংসদ নির্বাচনের পর ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) সংসদীয় কমিটি গঠন নিয়ে কিছু সুপারিশ করেছিল। এগুলোর মধ্যে ছিল কমিটির সভাপতি ও সদস্যদের বাণিজ্যিক, আর্থিক সম্পৃক্ততার তথ্য প্রতিবছর হালনাগাদ করে তা জনসমক্ষে প্রকাশ বাধ্যতামূলক করা, কমিটির সদস্য নির্বাচনের ক্ষেত্রে স্বার্থের দ্বন্দ্বসম্পর্কিত তথ্য সম্পূর্ণ যাচাই করা এবং কোনো সদস্য কমিটিতে অন্তর্ভুক্তির পর কমিটি-সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়িক স্বার্থসংক্রান্ত কোনো তথ্য পাওয়া গেলে প্রমাণ সাপেক্ষে তাঁকে কমিটি থেকে বাদ দেওয়ার বিধান করা। বর্তমান বা পূর্বতন কোনো মন্ত্রীকে সংশ্লিষ্ট কমিটির সভাপতি/সদস্যপদ না দেওয়ার বিধান করার সুপারিশও করা হয়েছিল।
তথ্য অনুযায়ী, দ্বাদশ সংসদের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি করা হয়েছে সদ্য সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশিকে। তাঁর পেশা ব্যবসা, তৈরি পোশাকশিল্প ও অন্যান্য ব্যবসা আছে। কমিটির এক সদস্য শেখ আফিল উদ্দিন ও তাঁর পরিবার বিভিন্ন ব্যবসা-বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত। আরেক সদস্য সুলতানা নাদিরা মধুমতি টাইলসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক।
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি হয়েছেন নোয়াখালী-১ আসনের সরকারদলীয় এমপি এইচ এম ইব্রাহীম। তিনি তৈরি পোশাকশিল্প (ব্লমিংডেল লি. ও রয়েল ড্রেসেস ইন্টারন্যাশনাল), বিদ্যুৎ, আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং শিপিং ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। এই কমিটির সদস্য শামীম ওসমানেরও তৈরি পোশাকশিল্পের (উইসডম নিটিং মিলস) ব্যবসা রয়েছে। আরেক সদস্য এস এম আল মামুনের রয়েছে শিপ ব্রেকিং ব্যবসা।
অবশ্য এইচ এম ইব্রাহীম গতকাল রোববার গণমাধ্যমকে বলেন, ২০০৭ সালের পর তৈরি পোশাকশিল্প ব্যবসা ছেড়ে দিয়েছেন। তবে তাঁর নির্বাচনী হলফনামায় কোম্পানির নাম আছে।
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সদস্য গোলাম কিবরিয়া টিপুর পারিবারিক লঞ্চ ব্যবসা রয়েছে। প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারী জনশক্তি রপ্তানি ব্যবসায় যুক্ত আছেন বলে জানা গেছে। এই কমিটির সভাপতি হয়েছেন মন্ত্রণালয়টির সদ্য সাবেক মন্ত্রী ইমরান আহমদ। দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি আগেও এ-সংক্রান্ত কোনো ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিলাম না, এখনো কোনো ব্যবসা করি না। তাই স্বার্থের সংঘাত নেই।’ তাঁর আমলের কোনো অনিয়ম নিয়ে আলোচনা হলে প্রভাব বিস্তারের সুযোগ তো থাকবে—এমন কথায় তিনি কোনো মন্তব্য করতে অপারগতা জানান।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিম মাহমুদ আন্তর্জাতিক আইন ও জ্বালানিবিষয়ক পরামর্শক। আরেক সদস্য আবদুর রউফের পেট্রলপাম্পের ব্যবসা আছে। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য মোহাম্মদ আলী ঠিকাদারি ব্যবসা করেন।
টিপু মুনশি ও ইমরান আহমদ ছাড়াও সদ্য সাবেক আরও ১০ মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী ছেড়ে আসা মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি হয়েছেন। তাঁরা হলেন এ কে আব্দুল মোমেন (পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত কমিটি), আ হ ম মুস্তফা কামাল (অর্থ মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি), এম এ মান্নান (পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত কমিটি), আব্দুর রাজ্জাক (কৃষি মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত কমিটি), শ ম রেজাউল করিম (মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত কমিটি), গোলাম দস্তগীর গাজী (বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত কমিটি), সাইফুজ্জামান চৌধুরী (ভূমি মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত কমিটি), বীর বাহাদুর উশৈসিং (পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত কমিটি), শরীফ আহমেদ (গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত কমিটি) এবং জাহিদ আহসান (যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত কমিটি)।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, কোনো মন্ত্রণালয়ের সাবেক মন্ত্রী ওই মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত কমিটির সভাপতি বা সদস্য হলে তাঁর সময়ে নেওয়া প্রকল্পের অনিয়ম, দুর্নীতি নিয়ে অভিযোগ না-ও আসতে পারে। আবার এলেও লোকদেখানো আলোচনা হতে পারে। তাই এমন কমিটির কাছে প্রাপ্তির সম্ভাবনা বাস্তবসম্মত নয়।
তবে সাবেক মন্ত্রীদের কমিটির সভাপতি করাকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী। তিনি বলেন, সদ্য সাবেক মন্ত্রীদের মন্ত্রণালয়ে কাজের অভিজ্ঞতা আছে। তাঁরা অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে সংসদীয় কমিটিকে গতিশীল করতে পারবেন। ব্যবসা অনেকের আছে, যে কেউ ব্যবসা করতে পারেন। দেখতে হবে তাঁরা সরকারের সঙ্গে ব্যবসা করছেন কি না।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদের সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে ব্যক্তিগত স্বার্থের সংশ্লিষ্টতা থাকা সংসদ সদস্যরাও পদ পেয়েছেন। কমিটির সভাপতিও হয়েছেন কেউ কেউ। এ ছাড়া সদ্য সাবেক সরকারের ১২ মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী হয়েছেন দায়িত্ব পালন করে আসা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এতে কমিটি গঠনে কার্যপ্রণালি বিধির নির্দেশনার ব্যত্যয় ঘটেছে। স্বার্থের সংঘাত তৈরি হয়েছে। এ ছাড়া সাবেক মন্ত্রী কমিটির সভাপতি হওয়ায় তাঁর সময়ে মন্ত্রণালয়ের প্রকল্পে অনিয়ম, দুর্নীতির অভিযোগ না-ও আসতে পারে। এতে জবাবদিহির সম্ভাবনা কমে যায়।
অবশ্য জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী বলেছেন, মন্ত্রণালয়ে কাজের অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে সদ্য সাবেক মন্ত্রীদের কমিটির সভাপতি করা হয়েছে। যে কেউ ব্যবসা করতে পারেন, তবে দেখতে হবে, ব্যবসাটি সরকারের সঙ্গে কি না।
জাতীয় সংসদের কার্যপ্রণালি বিধিতে আছে, এমন কোনো সদস্য সংসদীয় কমিটিতে নিযুক্ত হবেন না যাঁর ব্যক্তিগত, আর্থিক ও প্রত্যক্ষ স্বার্থ কমিটিতে বিবেচিত হতে পারে, এমন বিষয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা আছে। সংসদীয় কমিটির কাজ হলো বিল পরীক্ষা করে প্রতিবেদন দেওয়া এবং কমিটির আওতাধীন মন্ত্রণালয়ের কাজ পর্যালোচনা, অনিয়ম ও গুরুতর অভিযোগ তদন্ত করা।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশন শুরু হয়েছে গত ৩০ জানুয়ারি। যাত্রা শুরুর পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যেই ৫০টি সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সব কটি গঠন করা হয়েছে। ৩৯টি মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির মধ্যে ১৩টির সভাপতি হয়েছেন সদ্য বিদায়ী সরকারের মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরা। তাঁদের মধ্যে ১২ জনই দায়িত্ব পালন করে আসা মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত কমিটির সভাপতি হয়েছেন।
সংসদীয় কমিটির সদস্যদের হলফনামা ঘেঁটে দেখা যায়, কয়েকটি কমিটির সভাপতি ও সদস্যদের সংশ্লিষ্ট খাতের ব্যবসা-বাণিজ্যের সঙ্গে সম্পৃক্ততা রয়েছে।
সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সংসদ সদস্যদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট কমিটিতে থাকা গুরুতর বিষয়। আমরা আশা করি, সরকার এটা পুনর্বিবেচনা করবে এবং সংসদ সদস্য আচরণবিধি আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নেবে।’
গবেষণায় দেখা যায়, নির্বাচনের সময় দেওয়া হলফনামার তথ্য অনুযায়ী, নবম জাতীয় সংসদের ৫১টি কমিটির মধ্যে ৬টি কমিটিতে এবং দশম সংসদের ৫০টি কমিটির মধ্যে ৫টি কমিটিতে সদস্যের কমিটি-সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়িক সম্পৃক্ততা ছিল। আগে কখনো কখনো কমিটির সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত বা ব্যবসায়িক স্বার্থের অনুকূলে প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ ওঠে। কমিটিতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী পদাধিকারবলে সদস্য হওয়ায় এবং কোনো কোনো কমিটিতে পূর্বতন মন্ত্রী সংশ্লিষ্ট স্থায়ী কমিটির সভাপতি হওয়ায় জবাবদিহি নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে প্রভাব বিস্তারের অভিযোগও ওঠে।
দশম সংসদ নির্বাচনের পর ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) সংসদীয় কমিটি গঠন নিয়ে কিছু সুপারিশ করেছিল। এগুলোর মধ্যে ছিল কমিটির সভাপতি ও সদস্যদের বাণিজ্যিক, আর্থিক সম্পৃক্ততার তথ্য প্রতিবছর হালনাগাদ করে তা জনসমক্ষে প্রকাশ বাধ্যতামূলক করা, কমিটির সদস্য নির্বাচনের ক্ষেত্রে স্বার্থের দ্বন্দ্বসম্পর্কিত তথ্য সম্পূর্ণ যাচাই করা এবং কোনো সদস্য কমিটিতে অন্তর্ভুক্তির পর কমিটি-সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়িক স্বার্থসংক্রান্ত কোনো তথ্য পাওয়া গেলে প্রমাণ সাপেক্ষে তাঁকে কমিটি থেকে বাদ দেওয়ার বিধান করা। বর্তমান বা পূর্বতন কোনো মন্ত্রীকে সংশ্লিষ্ট কমিটির সভাপতি/সদস্যপদ না দেওয়ার বিধান করার সুপারিশও করা হয়েছিল।
তথ্য অনুযায়ী, দ্বাদশ সংসদের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি করা হয়েছে সদ্য সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশিকে। তাঁর পেশা ব্যবসা, তৈরি পোশাকশিল্প ও অন্যান্য ব্যবসা আছে। কমিটির এক সদস্য শেখ আফিল উদ্দিন ও তাঁর পরিবার বিভিন্ন ব্যবসা-বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত। আরেক সদস্য সুলতানা নাদিরা মধুমতি টাইলসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক।
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি হয়েছেন নোয়াখালী-১ আসনের সরকারদলীয় এমপি এইচ এম ইব্রাহীম। তিনি তৈরি পোশাকশিল্প (ব্লমিংডেল লি. ও রয়েল ড্রেসেস ইন্টারন্যাশনাল), বিদ্যুৎ, আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং শিপিং ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। এই কমিটির সদস্য শামীম ওসমানেরও তৈরি পোশাকশিল্পের (উইসডম নিটিং মিলস) ব্যবসা রয়েছে। আরেক সদস্য এস এম আল মামুনের রয়েছে শিপ ব্রেকিং ব্যবসা।
অবশ্য এইচ এম ইব্রাহীম গতকাল রোববার গণমাধ্যমকে বলেন, ২০০৭ সালের পর তৈরি পোশাকশিল্প ব্যবসা ছেড়ে দিয়েছেন। তবে তাঁর নির্বাচনী হলফনামায় কোম্পানির নাম আছে।
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সদস্য গোলাম কিবরিয়া টিপুর পারিবারিক লঞ্চ ব্যবসা রয়েছে। প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারী জনশক্তি রপ্তানি ব্যবসায় যুক্ত আছেন বলে জানা গেছে। এই কমিটির সভাপতি হয়েছেন মন্ত্রণালয়টির সদ্য সাবেক মন্ত্রী ইমরান আহমদ। দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি আগেও এ-সংক্রান্ত কোনো ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিলাম না, এখনো কোনো ব্যবসা করি না। তাই স্বার্থের সংঘাত নেই।’ তাঁর আমলের কোনো অনিয়ম নিয়ে আলোচনা হলে প্রভাব বিস্তারের সুযোগ তো থাকবে—এমন কথায় তিনি কোনো মন্তব্য করতে অপারগতা জানান।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিম মাহমুদ আন্তর্জাতিক আইন ও জ্বালানিবিষয়ক পরামর্শক। আরেক সদস্য আবদুর রউফের পেট্রলপাম্পের ব্যবসা আছে। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য মোহাম্মদ আলী ঠিকাদারি ব্যবসা করেন।
টিপু মুনশি ও ইমরান আহমদ ছাড়াও সদ্য সাবেক আরও ১০ মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী ছেড়ে আসা মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি হয়েছেন। তাঁরা হলেন এ কে আব্দুল মোমেন (পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত কমিটি), আ হ ম মুস্তফা কামাল (অর্থ মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি), এম এ মান্নান (পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত কমিটি), আব্দুর রাজ্জাক (কৃষি মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত কমিটি), শ ম রেজাউল করিম (মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত কমিটি), গোলাম দস্তগীর গাজী (বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত কমিটি), সাইফুজ্জামান চৌধুরী (ভূমি মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত কমিটি), বীর বাহাদুর উশৈসিং (পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত কমিটি), শরীফ আহমেদ (গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত কমিটি) এবং জাহিদ আহসান (যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত কমিটি)।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, কোনো মন্ত্রণালয়ের সাবেক মন্ত্রী ওই মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত কমিটির সভাপতি বা সদস্য হলে তাঁর সময়ে নেওয়া প্রকল্পের অনিয়ম, দুর্নীতি নিয়ে অভিযোগ না-ও আসতে পারে। আবার এলেও লোকদেখানো আলোচনা হতে পারে। তাই এমন কমিটির কাছে প্রাপ্তির সম্ভাবনা বাস্তবসম্মত নয়।
তবে সাবেক মন্ত্রীদের কমিটির সভাপতি করাকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী। তিনি বলেন, সদ্য সাবেক মন্ত্রীদের মন্ত্রণালয়ে কাজের অভিজ্ঞতা আছে। তাঁরা অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে সংসদীয় কমিটিকে গতিশীল করতে পারবেন। ব্যবসা অনেকের আছে, যে কেউ ব্যবসা করতে পারেন। দেখতে হবে তাঁরা সরকারের সঙ্গে ব্যবসা করছেন কি না।
জমির মালিক হযরত শাহ্ আলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। তবে ওই জমিতে ৩৯১টি দোকান নির্মাণ করে কয়েক বছর ধরে ভাড়া নিচ্ছে হযরত শাহ্ আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজ। দোকানগুলোর ভাড়া থেকে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ৭০ লাখ টাকা ভ্যাটও দেওয়া হয়নি। বিষয়টি উঠে এসেছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) তদন্তে।
১ দিন আগেকুড়িগ্রাম পৌর শহরে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী ছোট ভাই নিহত ও বড় ভাই আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে মৎস্য খামারের কাছে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
৫ দিন আগেবৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগের মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১৮ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত শনিবার রাতে ও গতকাল রোববার তাঁরা গ্রেপ্তার হন।
৫ দিন আগেএক অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটেছে শিল্পকলা একাডেমিতে। শিল্পকলা একাডেমির তিনটি হলেই কিছুদিন আগেও নাটক চলত। নাট্যকর্মীদের সৃজনশীলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটত সেখানে। বহু পরিশ্রমে মাসের পর মাস নিজের খেয়ে, নিজের গাড়িভাড়া দিয়ে নাট্যকর্মীরা একেবারেই স্বেচ্ছাশ্রমে একটি শিল্প তিপ্পান্ন বছর ধরে গড়ে তুলেছেন। শিল্পকলা একাডেমি এখন
৮ দিন আগে