রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলার চাঁদপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে উপজেলা  পরিষদের সামনে দিয়ে যাওয়া কালুখালী থানা পর্যন্ত সড়কের উন্নয়নকাজ ধীরগতিতে হওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ মানুষ ও শিক্ষার্থীরা। ধুলাবালির কারণে সড়কের পাশের এলাকাগুলো বিবর্ণ হয়ে গেছে। এই অবস্থায় দূষণ বন্ধের পদক্ষেপসহ সড়কের উন্নয়নকাজ দ্রুত শেষ করার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার চাঁদপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে উপজেলা কমপ্লেক্সের সামনে দিয়ে কালুখালী থানা পর্যন্ত সড়কটি খোয়া ও বালু দিয়ে রোলার করা। সড়কটি দিয়ে প্রতিদিন ডাম্প ট্রাক, ইটভাটার গাড়ি ও ভারী পণ্যবাহী ট্রাক চলাচল করায় খোয়া বের হয়ে ধুলার সৃষ্টি হয়।

গাড়ি চলাচলের সময় ওড়া ধুলায় সড়কের পাশের বাড়িঘর ও গাছপালা বিবর্ণ হয়ে গেছে। সড়কের পাশে থাকা ঘরবাড়ির চালায় লাল ধুলার আস্তর পড়েছে। প্রতিটি গাছ মনে হচ্ছে লাল পাতার গাছ। আশপাশের সব ধরনের দোকানিরা আছেন বিপদে। ধুলায় ক্রেতা দোকানে সামনে দাঁড়াতে পারছেন না। দোকানের মালামাল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

সড়কের পাশের বাসিন্দা বাচ্চু, হামিদ, আলমসহ কয়েকজন বলেন, কাজটি শুরু থেকেই ধীরগতিতে করা হচ্ছে। এটা উপজেলার প্রধান সড়ক। এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন উপজেলা পরিষদ, বাসস্ট্যান্ড, থানা, শহরের প্রধান বাজার, রেলস্টেশন, দুটি কলেজ, একটি সরকারি উচ্চবিদ্যালয়, প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাদ্রাসা, কিন্ডারগার্টেনসহ বেশ কয়েকটি বিদ্যালয়ের শত শত শিক্ষার্থী যাতায়াত করে।

তাঁরা আরও বলেন, প্রথমে সড়কটি খনন করে অনেক দিন ফেলে রাখা হয়েছিল। মাস দুয়েক আগে খোয়া ও বালু দিয়ে রোলার করা হয়েছে। ছোট-বড় গাড়ি যাতায়াতের সময় প্রচণ্ড ধুলাবালির সৃষ্টি হচ্ছে। রোগী ও স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের বেশি ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। সড়কটি দ্রুত কার্পেটিং করে এই দূষণ থেকে রক্ষার দাবি জানান তাঁরা।

স্থানীয়রা বলেন, উপজেলা শহরের প্রধান সড়ক এটি। উপজেলা পরিষদের সামনের সড়কে এই অবস্থা হলে গ্রামের মধ্যের রাস্তার কী অবস্থা হবে? 
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ফারজানা ইসলাম বলেন, সড়কের ধুলাবালি একধরনের ডাস্ট। এটি সব বয়সের মানুষের দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি করে। এতে হাঁপানি, চর্মসহ বিভিন্ন রোগের সৃষ্টি হয়। এ ছাড়া ফুসফুসের কার্যক্ষমতা কমিয়ে দেয়। ধুলাবালিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয় শিশু ও বৃদ্ধদের।
সড়ক উন্নয়নকাজের ঠিকাদার হাসেম মাহমুদ ছোটন বলেন, এ কাজের মেয়াদ আরও তিন মাস রয়েছে। সরকারি দরের চেয়ে বর্তমানে পাথরের মূল্য অনেক বেশি। ফেব্রুয়ারি মাসে রোলার দিয়ে সুরকি ও বালুর কাজ শেষ করা হয়েছে। শিগগিরই কার্পেটিংয়ের কাজ শেষ হবে।

উপজেলা প্রকৌশলী মো. তৌহিদুল হক জোয়াদ্দার বলেন, সড়কটির কাজের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। আবার ১৫ দিনের জন্য বৃদ্ধি করা হয়েছে। এর মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান যাতে দ্রুত কাজটি শেষ করে, সে বিষয়ে তাগাদা দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি মানুষের ভোগান্তি লাঘবে সড়কে পানি ছিটাতে বলা হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আতিকুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি নিয়ে তিনি ইতিমধ্যে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও উপজেলা প্রকৌশলীর সঙ্গে কথা বলেছেন, যাতে কাজটি দ্রুত সম্পন্ন করা হয়, সে বিষয়ে তাগিদ দেওয়া হয়েছে। কাজ দ্রুত সম্পন্ন করার জন্য প্রয়োজনে আবার বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বসা হবে।

রাজবাড়ী এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রবিউল ইসলাম বলেন, সড়কের উন্নয়নকাজে ধীরগতি হলে মানুষের দুর্ভোগ হয়। কাজটি দ্রুত শেষ করার জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বলা হয়েছে।