নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
রাজধানীর পোস্তগোলায় জামিয়া আরাবিয়া ইমদাদুল উলুম ফরিদাবাদ মাদ্রাসায় সাড়ে তিন হাজার শিক্ষার্থী। কওমি ধারার এই প্রতিষ্ঠানে তারা পড়াশোনা করে নুরানি বা মক্তব, হেফজ ও কিতাব বিভাগে। নার্সারি থেকে শুরু করে মাস্টার্স সমমানের তিন ধাপে শিক্ষার্থীরা পূর্ণাঙ্গ ইসলাম ধর্মীয় শিক্ষা অর্জন করে। এখানেই আছে ইসলামের নির্দিষ্ট কোনো বিষয়ের ওপর উচ্চতর শিক্ষা গ্রহণ বা গবেষণার সুযোগও। মহান স্বাধীনতা দিবস সামনে রেখে মাদ্রাসাটির বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, বিভিন্ন দিবস উপলক্ষে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হলেও এক দিনের জন্যও পরিবেশন করা হয় না জাতীয় সংগীত।
জানা যায়, জাতীয় সংগীত গাওয়াকে হারাম এমনকি পরোক্ষভাবে শিরক মনে করেন ওই মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা। জাতীয় সংগীত নিয়ে তাদের মনে অনেক ভুল ধারণা। এ ছাড়া আরও কিছু মাদ্রাসায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ওইসব মাদ্রাসার নুরানি পর্যায়ের খুদে শিক্ষার্থীরা জানেই না জাতীয় সংগীত কী।
জামিয়া আরাবিয়া ইমদাদুল উলুম ফরিদাবাদ মাদ্রাসার তাখাছছুস ফিলহ ফিকহ অর্থাৎ ইসলামি আইন শাস্ত্রে উচ্চতর শিক্ষা নিচ্ছেন মো. আলাউদ্দিন আব্দুল্লাহ (২৭)। তিনি জানান, কিতাব বিভাগ ও উচ্চতর শিক্ষা গ্রহণসহ এই প্রতিষ্ঠানে তাঁর ১৫ বছরের শিক্ষাজীবন। এই সময়ে কোনো দিনই তিনি জাতীয় সংগীত গাননি।
তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এই সংগীত লিখেছেন আসামের কোনো এক জায়গায় বসে। তাই এটা বাংলাদেশ নিয়ে লেখা নয়। এই লেখায় পুরোপুরি বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবি নেই। আমরা মনে করি, এই লেখায় পরোক্ষভাবে শিরক করা হয়েছে। তাই এটা থেকে আমরা বিরত থাকি। আর এটা জাতীয়তাবোধ থেকে গাওয়া হয়। আমরা মুসলমানরা জাতীয়তাবোধে বিশ্বাসী নই।’
কামরাঙ্গীরচর দারুস সুন্নাহ কোরআন মাদ্রাসায় ৫০০ শিক্ষার্থী। এখানে নজরানা শাখায় পড়াশোনা করছে আট বছর বয়সী তাহমিদুর রহমান আলিফ। তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, জাতীয় সংগীত কী, সেটা সে জানেই না। আলিফ বলল, ‘জাতীয় সংগীত কী জানি না।
আমাদের মাদ্রাসায় জাতীয় সংগীত গাওয়া হয় না, পতাকাও উত্তোলন করে না।’
শুধু এই দুটি মাদ্রাসা নয়, রাজধানী ও আশপাশের বেশ কিছু কওমি ও হাফিজিয়া মাদ্রাসা ঘুরে একই চিত্র দেখা গেছে। তবে কোনো কোনো আলিয়া মাদ্রাসায় অ্যাসেম্বলির সময় গাওয়া হয় জাতীয় সংগীত। সেটাও নির্ভর করে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের ইচ্ছা-অনিচ্ছার ওপর। টঙ্গীর হোসেন মার্কেট এলাকার তামিরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসার ইবতেদায়ি শিক্ষার্থী শেখ ওয়াসিকা করিম জানায়, ‘শীতকালে আমাদের মাদ্রাসায় পিটি করার সময় পতাকা উত্তোলন ও জাতীয় সংগীত গাওয়া হতো। এখন গরমের কারণে পিটি হয় না, জাতীয় সংগীতও গাওয়া হয় না।’
অথচ ২০০৯ সালে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন দিয়ে বলা হয়েছে, দেশের সব স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সব ধারার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে তাদের দৈনন্দিন শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করবে। কিন্তু কওমি মাদ্রাসাগুলো সেই নির্দেশনা মানছে না। অধিকাংশ আলিয়া মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষও এই নির্দেশনা পালন করছে নিজেদের মর্জিমতো।
এ বিষয়ে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. জাকির হোসাইন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কওমি মাদ্রাসাগুলো স্বতন্ত্র বোর্ডের আওতায় হওয়ায় এ ক্ষেত্রে কিছু করার থাকে না। এ নিয়ে আমাদের আলাদা কোনো পর্যবেক্ষণও নেই।’
চট্টগ্রামে আইনজীবীর উদ্যোগ
চট্টগ্রামে দীর্ঘদিন ধরে কওমি মাদ্রাসাগুলোতে জাতীয় সংগীত গাওয়ার জন্য স্বেচ্ছায় ক্যাম্পেইন বা প্রচারাভিযান চালিয়ে আসছেন অ্যাডভোকেট জিনাত সোহানা চৌধুরী। এই কাজে সুচিন্তা নামে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান তাঁকে সহায়তা করছে। এই আইনজীবী জানান, অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে তিনি কিছুটা সফল হলেও কাজটা প্রথমে সহজ ছিল না মোটেই। জিনাত সোহানা চৌধুরী বলেন, ‘চট্টগ্রামের মাদ্রাসাগুলোতে প্রথমে ক্যাম্পেইন করার জন্য যেতে দিলেও কর্তৃপক্ষ আমাকে বলত, তাঁরা জাতীয় সংগীত গাইবে না। অনেকেই জাতীয় সংগীত গাওয়ার সময় দাঁড়িয়ে সম্মান জানানোকে শিরক মনে করেন। আমি দেখেছি, জাতীয় সংগীত গাওয়ার সময় দাঁড়াতে হবে বলে অনেক মাদ্রাসার হুজুরেরা দৌড়ে পালিয়েছেন।’
নতুন করে ভাবার তাগিদ
সার্বিক বিষয়ে কথা হয় কওমি মাদ্রাসার সবচেয়ে বড় শিক্ষা বোর্ড বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের সাবেক মহাপরিচালক মাওলানা মুহাম্মদ যুবায়েরের সঙ্গে। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘জাতীয় সংগীত গাওয়ার বিষয়ে সরকারি আইন আছে। কিন্তু কওমি মাদ্রাসাগুলোতে সেটা মানা হয় না। এসব মাদ্রাসায় জাতীয় সংগীত গাওয়া হয় না। এগুলো নিয়ে নতুন করে ভাবতে হবে। বর্তমান দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা এগুলো নিয়ে কী ভাবছেন আমি জানি না।’
রাজধানীর পোস্তগোলায় জামিয়া আরাবিয়া ইমদাদুল উলুম ফরিদাবাদ মাদ্রাসায় সাড়ে তিন হাজার শিক্ষার্থী। কওমি ধারার এই প্রতিষ্ঠানে তারা পড়াশোনা করে নুরানি বা মক্তব, হেফজ ও কিতাব বিভাগে। নার্সারি থেকে শুরু করে মাস্টার্স সমমানের তিন ধাপে শিক্ষার্থীরা পূর্ণাঙ্গ ইসলাম ধর্মীয় শিক্ষা অর্জন করে। এখানেই আছে ইসলামের নির্দিষ্ট কোনো বিষয়ের ওপর উচ্চতর শিক্ষা গ্রহণ বা গবেষণার সুযোগও। মহান স্বাধীনতা দিবস সামনে রেখে মাদ্রাসাটির বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, বিভিন্ন দিবস উপলক্ষে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হলেও এক দিনের জন্যও পরিবেশন করা হয় না জাতীয় সংগীত।
জানা যায়, জাতীয় সংগীত গাওয়াকে হারাম এমনকি পরোক্ষভাবে শিরক মনে করেন ওই মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা। জাতীয় সংগীত নিয়ে তাদের মনে অনেক ভুল ধারণা। এ ছাড়া আরও কিছু মাদ্রাসায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ওইসব মাদ্রাসার নুরানি পর্যায়ের খুদে শিক্ষার্থীরা জানেই না জাতীয় সংগীত কী।
জামিয়া আরাবিয়া ইমদাদুল উলুম ফরিদাবাদ মাদ্রাসার তাখাছছুস ফিলহ ফিকহ অর্থাৎ ইসলামি আইন শাস্ত্রে উচ্চতর শিক্ষা নিচ্ছেন মো. আলাউদ্দিন আব্দুল্লাহ (২৭)। তিনি জানান, কিতাব বিভাগ ও উচ্চতর শিক্ষা গ্রহণসহ এই প্রতিষ্ঠানে তাঁর ১৫ বছরের শিক্ষাজীবন। এই সময়ে কোনো দিনই তিনি জাতীয় সংগীত গাননি।
তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এই সংগীত লিখেছেন আসামের কোনো এক জায়গায় বসে। তাই এটা বাংলাদেশ নিয়ে লেখা নয়। এই লেখায় পুরোপুরি বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবি নেই। আমরা মনে করি, এই লেখায় পরোক্ষভাবে শিরক করা হয়েছে। তাই এটা থেকে আমরা বিরত থাকি। আর এটা জাতীয়তাবোধ থেকে গাওয়া হয়। আমরা মুসলমানরা জাতীয়তাবোধে বিশ্বাসী নই।’
কামরাঙ্গীরচর দারুস সুন্নাহ কোরআন মাদ্রাসায় ৫০০ শিক্ষার্থী। এখানে নজরানা শাখায় পড়াশোনা করছে আট বছর বয়সী তাহমিদুর রহমান আলিফ। তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, জাতীয় সংগীত কী, সেটা সে জানেই না। আলিফ বলল, ‘জাতীয় সংগীত কী জানি না।
আমাদের মাদ্রাসায় জাতীয় সংগীত গাওয়া হয় না, পতাকাও উত্তোলন করে না।’
শুধু এই দুটি মাদ্রাসা নয়, রাজধানী ও আশপাশের বেশ কিছু কওমি ও হাফিজিয়া মাদ্রাসা ঘুরে একই চিত্র দেখা গেছে। তবে কোনো কোনো আলিয়া মাদ্রাসায় অ্যাসেম্বলির সময় গাওয়া হয় জাতীয় সংগীত। সেটাও নির্ভর করে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের ইচ্ছা-অনিচ্ছার ওপর। টঙ্গীর হোসেন মার্কেট এলাকার তামিরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসার ইবতেদায়ি শিক্ষার্থী শেখ ওয়াসিকা করিম জানায়, ‘শীতকালে আমাদের মাদ্রাসায় পিটি করার সময় পতাকা উত্তোলন ও জাতীয় সংগীত গাওয়া হতো। এখন গরমের কারণে পিটি হয় না, জাতীয় সংগীতও গাওয়া হয় না।’
অথচ ২০০৯ সালে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন দিয়ে বলা হয়েছে, দেশের সব স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সব ধারার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে তাদের দৈনন্দিন শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করবে। কিন্তু কওমি মাদ্রাসাগুলো সেই নির্দেশনা মানছে না। অধিকাংশ আলিয়া মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষও এই নির্দেশনা পালন করছে নিজেদের মর্জিমতো।
এ বিষয়ে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. জাকির হোসাইন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কওমি মাদ্রাসাগুলো স্বতন্ত্র বোর্ডের আওতায় হওয়ায় এ ক্ষেত্রে কিছু করার থাকে না। এ নিয়ে আমাদের আলাদা কোনো পর্যবেক্ষণও নেই।’
চট্টগ্রামে আইনজীবীর উদ্যোগ
চট্টগ্রামে দীর্ঘদিন ধরে কওমি মাদ্রাসাগুলোতে জাতীয় সংগীত গাওয়ার জন্য স্বেচ্ছায় ক্যাম্পেইন বা প্রচারাভিযান চালিয়ে আসছেন অ্যাডভোকেট জিনাত সোহানা চৌধুরী। এই কাজে সুচিন্তা নামে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান তাঁকে সহায়তা করছে। এই আইনজীবী জানান, অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে তিনি কিছুটা সফল হলেও কাজটা প্রথমে সহজ ছিল না মোটেই। জিনাত সোহানা চৌধুরী বলেন, ‘চট্টগ্রামের মাদ্রাসাগুলোতে প্রথমে ক্যাম্পেইন করার জন্য যেতে দিলেও কর্তৃপক্ষ আমাকে বলত, তাঁরা জাতীয় সংগীত গাইবে না। অনেকেই জাতীয় সংগীত গাওয়ার সময় দাঁড়িয়ে সম্মান জানানোকে শিরক মনে করেন। আমি দেখেছি, জাতীয় সংগীত গাওয়ার সময় দাঁড়াতে হবে বলে অনেক মাদ্রাসার হুজুরেরা দৌড়ে পালিয়েছেন।’
নতুন করে ভাবার তাগিদ
সার্বিক বিষয়ে কথা হয় কওমি মাদ্রাসার সবচেয়ে বড় শিক্ষা বোর্ড বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের সাবেক মহাপরিচালক মাওলানা মুহাম্মদ যুবায়েরের সঙ্গে। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘জাতীয় সংগীত গাওয়ার বিষয়ে সরকারি আইন আছে। কিন্তু কওমি মাদ্রাসাগুলোতে সেটা মানা হয় না। এসব মাদ্রাসায় জাতীয় সংগীত গাওয়া হয় না। এগুলো নিয়ে নতুন করে ভাবতে হবে। বর্তমান দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা এগুলো নিয়ে কী ভাবছেন আমি জানি না।’
জমির মালিক হযরত শাহ্ আলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। তবে ওই জমিতে ৩৯১টি দোকান নির্মাণ করে কয়েক বছর ধরে ভাড়া নিচ্ছে হযরত শাহ্ আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজ। দোকানগুলোর ভাড়া থেকে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ৭০ লাখ টাকা ভ্যাটও দেওয়া হয়নি। বিষয়টি উঠে এসেছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) তদন্তে।
১ দিন আগেকুড়িগ্রাম পৌর শহরে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী ছোট ভাই নিহত ও বড় ভাই আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে মৎস্য খামারের কাছে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
৫ দিন আগেবৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগের মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১৮ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত শনিবার রাতে ও গতকাল রোববার তাঁরা গ্রেপ্তার হন।
৫ দিন আগেএক অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটেছে শিল্পকলা একাডেমিতে। শিল্পকলা একাডেমির তিনটি হলেই কিছুদিন আগেও নাটক চলত। নাট্যকর্মীদের সৃজনশীলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটত সেখানে। বহু পরিশ্রমে মাসের পর মাস নিজের খেয়ে, নিজের গাড়িভাড়া দিয়ে নাট্যকর্মীরা একেবারেই স্বেচ্ছাশ্রমে একটি শিল্প তিপ্পান্ন বছর ধরে গড়ে তুলেছেন। শিল্পকলা একাডেমি এখন
৯ দিন আগে