যশোর প্রতিনিধি
নদের নাম ‘ভৈরব’। এর অর্থ ‘ভয়াবহ’। একসময় গঙ্গা/পদ্মা নদীর মূল প্রবাহ এই নদকে প্রমত্ত রূপ দিয়েছিল। সেই থেকেই নামটির উৎপত্তি।
যে নদের এমন পরিচিতি দিয়েছে উইকিপিডিয়া, এর সেই ভৈরবী রূপ কোথায়? এর নিজেরই তো এখন মরণদশা। একে বাঁচাতে ২৭২ কোটি টাকার খনন প্রকল্প সম্প্রতি শেষ হয়েছে। কিন্তু সেই কাজে নানা অনিয়ম-অব্যবস্থাপনায় প্রবাহ ফেরানো যায়নি ভৈরবের। বরং অপরিকল্পিত ব্রিজ-কালভার্ট, দূষণ ও দখলের কবলে অস্তিত্বসংকটে পড়েছে নদটি।
ইনস্টিটিউট ফর এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (আইইডি) যশোরের ব্যবস্থাপক বিথিকা সরকার মনে করছেন, ‘নদ থেকে খালে পরিণত হয়েছে ভৈরব। কয়েক বছর পর আমরা গল্পেই শুনব এখানে একটা নদী ছিল। সেখানে মানুষ একসময় নৌকা চালাত।’
দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের নদ-নদীগুলোর অন্যতম ভৈরব। চুয়াডাঙ্গা, ঝিনাইদহ, যশোর ও নড়াইল হয়ে এটি খুলনা শহরের অদূরে রূপসা নদীতে পড়েছে। সব মিলিয়ে দৈর্ঘ্য আড়াই শ কিলোমিটারের মতো। এসব হিসাব খাতা-কলমে। বাস্তবে বড় একটি অংশ এখন বইয়ের গল্পে স্থান পেতে চলেছে। অনেকটা জায়গাজুড়ে একে আর এখন নদ বলে চেনার উপায় নেই, যেন শীর্ণ খাল। সেটাও কত দিন টিকবে, রয়েছে সেই অনিশ্চয়তা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ২০১৬ সালে ২৭২ কোটি টাকায় ৯২ কিলোমিটার নদ খনন প্রকল্প গ্রহণ করে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। শুরু হয় পাঁচ বছর মেয়াদি ‘ভৈরব রিভার বেসিন এলাকার জলাবদ্ধতা দূরীকরণ ও টেকসই পানি ব্যবস্থাপনা উন্নয়ন প্রকল্প’। যশোর শহর অংশের চার কিলোমিটার এলাকায় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ ছাড়া খননকাজ সম্ভব ছিল না। ২০১৯ সালের ২৮ মার্চ ৮৪টি স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। বাকি দেড় শতাধিক অবৈধ স্থাপনা আজও উচ্ছেদ হয়নি। সেই সব দখলদার রেখেই চলতি বছরের জুনে ভৈরব নদের খননকাজ শেষ করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। এখন নদের দুই ধারে হাঁটা ও সৌন্দর্যবর্ধন করার কাজ চলছে দখলদার রেখেই।
বর্তমানে ম্যাপ অনুযায়ী নদের প্রস্থ শহরে ১৫০ মিটার এবং শহরের বাইরে ৩০০ মিটার। কিন্তু বাস্তবে নদ পরিণত হয়েছে খালে। খননের মাটি পাড়ে রাখায় নদের প্রস্থ আরও কমে গেছে। এর মধ্যে আবার নদের বুকে অপরিকল্পিত ৫১টি ব্রিজ-কালভার্ট গলার কাঁটায় পরিণত হয়েছে। খাতা-কলমে প্রকল্প শেষ হলেও প্রাণ ফেরেনি ভৈরবের।
নদ সংস্কার আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড সরকারের নীতির প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে ডিজাইন অনুযায়ী নদ খনন করেনি। বরং প্রভাবশালী মহলের যোগসাজশে প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ড দখলকারীদের স্থাপনা রক্ষা করতে গিয়ে খননের নামে নদ উল্টো খালে পরিণত করেছে। এ জন্য এই খনন কাজে আসবে না বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন তাঁরা।
‘ভৈরব নদ বাঁচাও’ আন্দোলনের উপদেষ্টা ইকবাল কবীর জাহিদ বলেন, ‘আন্দোলনের ভেতর দিয়েই ভৈরব নদ খননের প্রকল্প গৃহীত হয়। এটি দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রধান নদীপ্রবাহ। সেই দিক থেকে এই নদ যথাযথ খনন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা শুরু থেকেই সংশয়ে ছিলাম সঠিকভাবে এই নদ খনন হবে কি না। আমাদের সেই সংশয় সত্যি হয়েছে।’
যশোর সরকারি মাইকেল মধুসূদন কলেজের ভূগোল ও পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ছোলজার রহমান বলেন, ‘খনন শেষ হলেও নদের নাব্যতা ফেরেনি।
নদের ওপর বিদ্যমান ব্রিজগুলোর জন্য জোয়ার-ভাটা আসতে পারছে না। নদ খননে যে গভীরতা থাকার কথা ছিল; সেটা বাস্তবায়ন হয়নি। ফলে খনন নিয়ে আমরা যতটা আশা করেছিলাম; ততটা উপকার পাচ্ছি না। সব মিলিয়ে নদ কেটে যেন খাল তৈরি করা হয়েছে।’
তবে এসব অভিযোগ মানতে রাজি নন যশোর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী তাওহিদুল ইসলাম। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘নিয়ম মেনেই প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছে। প্রকল্পের সুফলও পেতে শুরু করেছে জনগণ। দখলদারদের আমরা নিয়ম অনুযায়ী উচ্ছেদ করেছি। দূষণের বিষয়ে আমরা সোচ্চার রয়েছি। দুই পাড়ের ভবনমালিক ও ব্যবসায়ীদের সময় দেওয়া হয়েছে। দ্রুত আমরা ব্যবস্থা নেব।’
নদের নাম ‘ভৈরব’। এর অর্থ ‘ভয়াবহ’। একসময় গঙ্গা/পদ্মা নদীর মূল প্রবাহ এই নদকে প্রমত্ত রূপ দিয়েছিল। সেই থেকেই নামটির উৎপত্তি।
যে নদের এমন পরিচিতি দিয়েছে উইকিপিডিয়া, এর সেই ভৈরবী রূপ কোথায়? এর নিজেরই তো এখন মরণদশা। একে বাঁচাতে ২৭২ কোটি টাকার খনন প্রকল্প সম্প্রতি শেষ হয়েছে। কিন্তু সেই কাজে নানা অনিয়ম-অব্যবস্থাপনায় প্রবাহ ফেরানো যায়নি ভৈরবের। বরং অপরিকল্পিত ব্রিজ-কালভার্ট, দূষণ ও দখলের কবলে অস্তিত্বসংকটে পড়েছে নদটি।
ইনস্টিটিউট ফর এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (আইইডি) যশোরের ব্যবস্থাপক বিথিকা সরকার মনে করছেন, ‘নদ থেকে খালে পরিণত হয়েছে ভৈরব। কয়েক বছর পর আমরা গল্পেই শুনব এখানে একটা নদী ছিল। সেখানে মানুষ একসময় নৌকা চালাত।’
দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের নদ-নদীগুলোর অন্যতম ভৈরব। চুয়াডাঙ্গা, ঝিনাইদহ, যশোর ও নড়াইল হয়ে এটি খুলনা শহরের অদূরে রূপসা নদীতে পড়েছে। সব মিলিয়ে দৈর্ঘ্য আড়াই শ কিলোমিটারের মতো। এসব হিসাব খাতা-কলমে। বাস্তবে বড় একটি অংশ এখন বইয়ের গল্পে স্থান পেতে চলেছে। অনেকটা জায়গাজুড়ে একে আর এখন নদ বলে চেনার উপায় নেই, যেন শীর্ণ খাল। সেটাও কত দিন টিকবে, রয়েছে সেই অনিশ্চয়তা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ২০১৬ সালে ২৭২ কোটি টাকায় ৯২ কিলোমিটার নদ খনন প্রকল্প গ্রহণ করে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। শুরু হয় পাঁচ বছর মেয়াদি ‘ভৈরব রিভার বেসিন এলাকার জলাবদ্ধতা দূরীকরণ ও টেকসই পানি ব্যবস্থাপনা উন্নয়ন প্রকল্প’। যশোর শহর অংশের চার কিলোমিটার এলাকায় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ ছাড়া খননকাজ সম্ভব ছিল না। ২০১৯ সালের ২৮ মার্চ ৮৪টি স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। বাকি দেড় শতাধিক অবৈধ স্থাপনা আজও উচ্ছেদ হয়নি। সেই সব দখলদার রেখেই চলতি বছরের জুনে ভৈরব নদের খননকাজ শেষ করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। এখন নদের দুই ধারে হাঁটা ও সৌন্দর্যবর্ধন করার কাজ চলছে দখলদার রেখেই।
বর্তমানে ম্যাপ অনুযায়ী নদের প্রস্থ শহরে ১৫০ মিটার এবং শহরের বাইরে ৩০০ মিটার। কিন্তু বাস্তবে নদ পরিণত হয়েছে খালে। খননের মাটি পাড়ে রাখায় নদের প্রস্থ আরও কমে গেছে। এর মধ্যে আবার নদের বুকে অপরিকল্পিত ৫১টি ব্রিজ-কালভার্ট গলার কাঁটায় পরিণত হয়েছে। খাতা-কলমে প্রকল্প শেষ হলেও প্রাণ ফেরেনি ভৈরবের।
নদ সংস্কার আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড সরকারের নীতির প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে ডিজাইন অনুযায়ী নদ খনন করেনি। বরং প্রভাবশালী মহলের যোগসাজশে প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ড দখলকারীদের স্থাপনা রক্ষা করতে গিয়ে খননের নামে নদ উল্টো খালে পরিণত করেছে। এ জন্য এই খনন কাজে আসবে না বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন তাঁরা।
‘ভৈরব নদ বাঁচাও’ আন্দোলনের উপদেষ্টা ইকবাল কবীর জাহিদ বলেন, ‘আন্দোলনের ভেতর দিয়েই ভৈরব নদ খননের প্রকল্প গৃহীত হয়। এটি দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রধান নদীপ্রবাহ। সেই দিক থেকে এই নদ যথাযথ খনন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা শুরু থেকেই সংশয়ে ছিলাম সঠিকভাবে এই নদ খনন হবে কি না। আমাদের সেই সংশয় সত্যি হয়েছে।’
যশোর সরকারি মাইকেল মধুসূদন কলেজের ভূগোল ও পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ছোলজার রহমান বলেন, ‘খনন শেষ হলেও নদের নাব্যতা ফেরেনি।
নদের ওপর বিদ্যমান ব্রিজগুলোর জন্য জোয়ার-ভাটা আসতে পারছে না। নদ খননে যে গভীরতা থাকার কথা ছিল; সেটা বাস্তবায়ন হয়নি। ফলে খনন নিয়ে আমরা যতটা আশা করেছিলাম; ততটা উপকার পাচ্ছি না। সব মিলিয়ে নদ কেটে যেন খাল তৈরি করা হয়েছে।’
তবে এসব অভিযোগ মানতে রাজি নন যশোর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী তাওহিদুল ইসলাম। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘নিয়ম মেনেই প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছে। প্রকল্পের সুফলও পেতে শুরু করেছে জনগণ। দখলদারদের আমরা নিয়ম অনুযায়ী উচ্ছেদ করেছি। দূষণের বিষয়ে আমরা সোচ্চার রয়েছি। দুই পাড়ের ভবনমালিক ও ব্যবসায়ীদের সময় দেওয়া হয়েছে। দ্রুত আমরা ব্যবস্থা নেব।’
জমির মালিক হযরত শাহ্ আলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। তবে ওই জমিতে ৩৯১টি দোকান নির্মাণ করে কয়েক বছর ধরে ভাড়া নিচ্ছে হযরত শাহ্ আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজ। দোকানগুলোর ভাড়া থেকে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ৭০ লাখ টাকা ভ্যাটও দেওয়া হয়নি। বিষয়টি উঠে এসেছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) তদন্তে।
১ দিন আগেকুড়িগ্রাম পৌর শহরে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী ছোট ভাই নিহত ও বড় ভাই আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে মৎস্য খামারের কাছে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
৫ দিন আগেবৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগের মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১৮ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত শনিবার রাতে ও গতকাল রোববার তাঁরা গ্রেপ্তার হন।
৫ দিন আগেএক অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটেছে শিল্পকলা একাডেমিতে। শিল্পকলা একাডেমির তিনটি হলেই কিছুদিন আগেও নাটক চলত। নাট্যকর্মীদের সৃজনশীলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটত সেখানে। বহু পরিশ্রমে মাসের পর মাস নিজের খেয়ে, নিজের গাড়িভাড়া দিয়ে নাট্যকর্মীরা একেবারেই স্বেচ্ছাশ্রমে একটি শিল্প তিপ্পান্ন বছর ধরে গড়ে তুলেছেন। শিল্পকলা একাডেমি এখন
৯ দিন আগে