আব্দুর রাজ্জাক
সমাজে একটি প্রচলিত ব্যবস্থাপনা আছে, যদি কোনো প্রতিষ্ঠানের কোনো একটি কাজের জন্য নিজের ব্যবস্থাপনা, সম্পদ বা স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের ঘাটতি থাকে, তাহলে আউটসোর্সিং করা হয়। এটা দোষের কিছু না। হরহামেশা বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, করপোরেট হাউস বা বহুজাতিক কোম্পানিগুলোও আউটসোর্সিং করে থাকে।
বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে অনেক দারোয়ান-পিয়ন নিয়োগ থেকে শুরু করে ছোটখাটো কাজের জন্য আউটসোর্সিং হয়। আউটসোর্সিংয়ের সুবিধা আছে—খণ্ডকালীন বেতন দিয়ে প্রয়োজনীয় কাজ করানো যায়। সময় যখন ফুরিয়ে যাবে অথবা তার কাজ যদি অপছন্দ হয়, সঙ্গে সঙ্গে বহিষ্কার করা যাবে। তাই এখন আমরা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে আউটসোর্সিংয়ের একটা হিড়িক দেখি।
নানা ধরনের সাহায্য-সহযোগিতা প্রত্যাশিত অঞ্চলগুলোতে বা সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছানোর জন্য বিভিন্ন এনজিও আউটসোর্সিং করে। অনেক ক্ষেত্রে এই আউটসোর্সিং সফল হয়েছে। কর্মসংস্থান হয়েছে আমাদের দেশের অনেক লোকের। তবে এই সব আউটসোর্সিংয়ে যারা কাজ করেন, তাঁদের মনে সব সময় একটা দুশ্চিন্তা থেকে যায় যে তাঁদের কাজটি স্থায়ী নয়, কর্তাব্যক্তিদের একটু কুনজড়ে পড়লেই গাট্টি-বোঁচকাসহ বাড়িতে যেতে হবে।
রাজনীতির ক্ষেত্রেও আমাদের দেশে আউটসোর্সিং শুরু হয়েছিল ১৯৭৫-এর পর থেকে। সামরিক শাসকেরা তাঁদের কাঙ্ক্ষিত বা স্বপ্নের দল গড়ার জন্য আউটসোর্সিং শুরু করেন। প্রথম শাসক জিয়াউর রহমান জাগোদল নামে একটি দল গঠন করেন। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অতিবাম নকশাল আন্ডারগ্রাউন্ড কমিউনিস্ট, পলাতক রাজাকার মুসলিম লীগার ও কিছু কিছু সামরিক এবং বেসামরিক আমলা আউটসোর্সিং করে জাগোদলকে বিএনপিতে রূপদান করেন।
এই আউটসোর্সিংয়ের লোকজন বিএনপিতে এসে কর্তার মনকে সন্তুষ্ট করার জন্য প্রয়োজনের তুলনায় অধিকতর সময় ও শ্রম দিয়ে সামরিক শাসকের মন জয় করার চেষ্টা করেছিলেন। তাঁদের সব সময় চিন্তা ছিল নিয়োগদাতাকে সন্তুষ্ট রাখা। নিয়োগদাতা এই আউটসোর্সিংয়ের মানুষদের ভালোভাবেই মোটাতাজা করেছিলেন। দিন ভালোই কাটছিল কিন্তু তার শেষ রক্ষা হয়নি। আউটসোর্সিংয়ের নেতা-কর্মীরা স্থায়ীভাবে কর্তাব্যক্তির আদর্শ বা কর্মপন্থা টিকিয়ে রাখার জন্য খুব বেশি দূর এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেননি।
পরে আরও একজন সামরিক শাসক একনায়কতন্ত্র কায়েম করেছিলেন। তিনি ক্ষমতায় এসেও একই রকম আউটসোর্সিং আরম্ভ করলেন। তাঁর প্রথমেই নজর পড়ল তাঁর পূর্বসূরির আউটসোর্সিং করা নেতাদের ওপর। সেখান থেকে বেশ কিছু বাঘা বাঘা নেতা নিয়ে এলেন। অন্যান্য জায়গা থেকেও নিয়ে আসা হলো বেশ কিছু হোমরাচোমরা নেতাকে। এভাবেই দিন কাটতে লাগল স্বৈরশাসকের, একে একে নয় বছর পার করে দিলেন। তিনি ভেবেছিলেন এভাবে যুগের পর যুগ চলে যাবে।
এ রকম স্বৈরশাসকদের আউটসোর্সিং করা পার্টি বেশি দিন স্থায়ী হয় না, সারা বিশ্বে এর বহু উদাহরণ আছে। তিনি ক্ষমতা থেকে চলে যাওয়ার পরে তাঁর আউটসোর্সিংয়ের লোকজন আবার পিপীলিকার মতো যেখানে সুবিধা পেয়েছেন, সেখানেই আস্তানা গেড়েছেন। এ ক্ষেত্রে আদর্শ, সততা, মায়া-মমতা বা ন্যায়-নিষ্ঠার কোনো বালাই নেই।
এখন আসি বর্তমান অবস্থার প্রেক্ষাপটে। বেশ কয়েক বছর যাবৎ, বিশেষ করে ২০১৪ সালের নির্বাচনের পর থেকে আন্দোলন জমানোর জন্য বিরোধী দলগুলো আউটসোর্সিং করে। আন্দোলন-সংগ্রাম জমানোর জন্য একটি রাজনৈতিক কর্মসূচি ঘোষণা করে। এই কর্মসূচির মধ্যে থাকে ধর্মঘট ও অবরোধ। কর্মসূচি সফল করার জন্য নেতা-কর্মীদের রাজপথে খুব একটা আন্দোলন-সংগ্রাম করতে হয় না।
কর্মসূচি গ্রহণ করে, তারপর কর্মসূচির আগের দিন বা কর্মসূচির দিনে সারা দেশে কয়েকটি গাড়িতে আগুন জ্বালিয়ে দিতে হবে—এটাই থাকে তাদের কর্মসূচির সফল করার মোক্ষম পন্থা। এই কর্মসূচি সফল করার জন্য বিভিন্ন জায়গা থেকে পাঁচ থেকে দশ হাজার টাকার বিনিময়ে কিছু লোককে নিয়ে আসা হয়। এই আউটসোর্সিং করা টোকাই বা নেশাগ্রস্ত লোকজনকে সামান্য কিছু পারিশ্রমিক দিলে নিষ্ঠার সঙ্গে কাজগুলো করে যায়; অর্থাৎ সম্পদ ধ্বংস করে, অগ্নিসংযোগ করে, কোনো কোনো ক্ষেত্রে সাধারণ জনগণের প্রাণহানি ঘটায়। সাময়িকভাবে মনে হয়, আন্দোলন কিছুটা সফল হয়েছে!
সাধারণ মানুষ সুসংগঠিত নয়, আমাদের সম্পদ সীমিত। এই সম্পদ ও নিজের জীবন রক্ষার জন্য মানুষ ঘর থেকে বের হয় কম, গাড়ি-ঘোড়া কম বের করে। আর রাজনৈতিক দলগুলো মনে করে তাদের আন্দোলন সফল! এসব আউটসোর্সিংয়ে প্রতিদিন যদি এক থেকে দুই লাখ টাকা খরচ করা হয়, তাহলে এই নেতারা ঘরে বসে বসে আনন্দের ঢেকুর তুলে মনে মনে ভাবেন জনগণ তাঁদের কথায়, তাঁদের আন্দোলনে সাড়া দিয়ে অবরোধ বা হরতাল সফল করেছেন!
আমাদের দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর বিচক্ষণতা এত কম যে বর্তমান সময়ে কোনো মানুষই এই হরতাল-অবরোধ কর্মসূচিকে স্বাগত জানায় না; বরং মনে মনে ঘৃণা করে।
বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে যে আউটসোর্সিং করা হয়, সেগুলো করা হয় প্রকাশ্যে, কোনো একটি নিয়মনীতি বা আইনের মধ্য থেকে। তাই এই আউটসোর্সিং সফল হয়। গুপ্ত হামলা চালানোর জন্য আউটসোর্সিং করলে, অসৎ কাজে বা সম্পদ ধ্বংস করার জন্য আউটসোর্সিং করলে, রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থের জন্য আউটসোর্সিং করলে, সেই আউটসোর্সিংয়ের ফলাফল হয় বিপরীত। এটা এর আগেও প্রমাণিত হয়েছে। বর্তমানে যে হরতাল-অবরোধ চলছে, এটাও আগের মতো ধুকে ধুকে নিস্তেজ হয়ে যাবে। নেতারা উপলব্ধি করতে পারছেন না যে এসব আউটসোর্সিং কাজে লাগবে না।
শাসকদল যদি কোনো অন্যায্য, অন্যায় কাজ করে যেতে থাকে, তার বিরুদ্ধে সাধারণ জনগণকে উদ্বুদ্ধ করতে হয়, সঠিক কর্মপন্থা নিয়ে। সঠিক কর্মসূচি প্রণয়ন করার পরে নিজের দলের নেতা-কর্মীরা সম্পৃক্ত হবেন। সেই সঙ্গে সম্পৃক্ত করতে হবে সাধারণ জনগণকে, বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনকে। সাধারণ মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে ঘর থেকে বেরিয়ে আসবে, লাখ লাখ জনতা সারা দেশের প্রতিটি শহর-বন্দরে নেমে এসে সমস্বরে চিৎকার করবে, ‘এই শাসন চাই না’; তখনই সফল হবে আন্দোলন-সংগ্রাম। যত দ্রুত এ ব্যাপারটা আমাদের রাজনৈতিক দলগুলো উপলব্ধি করতে পারবে, তত দ্রুত জাতির মঙ্গল হবে। এ রকম আউটসোর্সিংয়ের চোরাগোপ্তা হামলা করে আন্দোলন সফল করা যাবে না। এটা জাতির জীবনে শুধু বিপর্যয় নামাবে।
ধীরে ধীরে ক্ষয়িষ্ণু দলে পরিণত হবে এসব রাজনৈতিক দল। যেমন অতীতে বিলুপ্ত হয়ে গেছে অনেক বড় বড় রাজনৈতিক দল, তাদের অস্তিত্ব আজ আমাদের এ বাংলায় নেই।
আন্দোলন-সংগ্রাম করতে হবে, অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে হবে, দেশকে সঠিক পথে নিয়ে আসতে হবে। তবে সেটা করতে হবে সাধারণ জনগণকে সঙ্গে নিয়ে, সঠিক কর্মসূচি দিয়ে। এটাই হোক আজকের দিনের সব রাজনৈতিক দলের উপলব্ধি।
সমাজে একটি প্রচলিত ব্যবস্থাপনা আছে, যদি কোনো প্রতিষ্ঠানের কোনো একটি কাজের জন্য নিজের ব্যবস্থাপনা, সম্পদ বা স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের ঘাটতি থাকে, তাহলে আউটসোর্সিং করা হয়। এটা দোষের কিছু না। হরহামেশা বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, করপোরেট হাউস বা বহুজাতিক কোম্পানিগুলোও আউটসোর্সিং করে থাকে।
বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে অনেক দারোয়ান-পিয়ন নিয়োগ থেকে শুরু করে ছোটখাটো কাজের জন্য আউটসোর্সিং হয়। আউটসোর্সিংয়ের সুবিধা আছে—খণ্ডকালীন বেতন দিয়ে প্রয়োজনীয় কাজ করানো যায়। সময় যখন ফুরিয়ে যাবে অথবা তার কাজ যদি অপছন্দ হয়, সঙ্গে সঙ্গে বহিষ্কার করা যাবে। তাই এখন আমরা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে আউটসোর্সিংয়ের একটা হিড়িক দেখি।
নানা ধরনের সাহায্য-সহযোগিতা প্রত্যাশিত অঞ্চলগুলোতে বা সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছানোর জন্য বিভিন্ন এনজিও আউটসোর্সিং করে। অনেক ক্ষেত্রে এই আউটসোর্সিং সফল হয়েছে। কর্মসংস্থান হয়েছে আমাদের দেশের অনেক লোকের। তবে এই সব আউটসোর্সিংয়ে যারা কাজ করেন, তাঁদের মনে সব সময় একটা দুশ্চিন্তা থেকে যায় যে তাঁদের কাজটি স্থায়ী নয়, কর্তাব্যক্তিদের একটু কুনজড়ে পড়লেই গাট্টি-বোঁচকাসহ বাড়িতে যেতে হবে।
রাজনীতির ক্ষেত্রেও আমাদের দেশে আউটসোর্সিং শুরু হয়েছিল ১৯৭৫-এর পর থেকে। সামরিক শাসকেরা তাঁদের কাঙ্ক্ষিত বা স্বপ্নের দল গড়ার জন্য আউটসোর্সিং শুরু করেন। প্রথম শাসক জিয়াউর রহমান জাগোদল নামে একটি দল গঠন করেন। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অতিবাম নকশাল আন্ডারগ্রাউন্ড কমিউনিস্ট, পলাতক রাজাকার মুসলিম লীগার ও কিছু কিছু সামরিক এবং বেসামরিক আমলা আউটসোর্সিং করে জাগোদলকে বিএনপিতে রূপদান করেন।
এই আউটসোর্সিংয়ের লোকজন বিএনপিতে এসে কর্তার মনকে সন্তুষ্ট করার জন্য প্রয়োজনের তুলনায় অধিকতর সময় ও শ্রম দিয়ে সামরিক শাসকের মন জয় করার চেষ্টা করেছিলেন। তাঁদের সব সময় চিন্তা ছিল নিয়োগদাতাকে সন্তুষ্ট রাখা। নিয়োগদাতা এই আউটসোর্সিংয়ের মানুষদের ভালোভাবেই মোটাতাজা করেছিলেন। দিন ভালোই কাটছিল কিন্তু তার শেষ রক্ষা হয়নি। আউটসোর্সিংয়ের নেতা-কর্মীরা স্থায়ীভাবে কর্তাব্যক্তির আদর্শ বা কর্মপন্থা টিকিয়ে রাখার জন্য খুব বেশি দূর এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেননি।
পরে আরও একজন সামরিক শাসক একনায়কতন্ত্র কায়েম করেছিলেন। তিনি ক্ষমতায় এসেও একই রকম আউটসোর্সিং আরম্ভ করলেন। তাঁর প্রথমেই নজর পড়ল তাঁর পূর্বসূরির আউটসোর্সিং করা নেতাদের ওপর। সেখান থেকে বেশ কিছু বাঘা বাঘা নেতা নিয়ে এলেন। অন্যান্য জায়গা থেকেও নিয়ে আসা হলো বেশ কিছু হোমরাচোমরা নেতাকে। এভাবেই দিন কাটতে লাগল স্বৈরশাসকের, একে একে নয় বছর পার করে দিলেন। তিনি ভেবেছিলেন এভাবে যুগের পর যুগ চলে যাবে।
এ রকম স্বৈরশাসকদের আউটসোর্সিং করা পার্টি বেশি দিন স্থায়ী হয় না, সারা বিশ্বে এর বহু উদাহরণ আছে। তিনি ক্ষমতা থেকে চলে যাওয়ার পরে তাঁর আউটসোর্সিংয়ের লোকজন আবার পিপীলিকার মতো যেখানে সুবিধা পেয়েছেন, সেখানেই আস্তানা গেড়েছেন। এ ক্ষেত্রে আদর্শ, সততা, মায়া-মমতা বা ন্যায়-নিষ্ঠার কোনো বালাই নেই।
এখন আসি বর্তমান অবস্থার প্রেক্ষাপটে। বেশ কয়েক বছর যাবৎ, বিশেষ করে ২০১৪ সালের নির্বাচনের পর থেকে আন্দোলন জমানোর জন্য বিরোধী দলগুলো আউটসোর্সিং করে। আন্দোলন-সংগ্রাম জমানোর জন্য একটি রাজনৈতিক কর্মসূচি ঘোষণা করে। এই কর্মসূচির মধ্যে থাকে ধর্মঘট ও অবরোধ। কর্মসূচি সফল করার জন্য নেতা-কর্মীদের রাজপথে খুব একটা আন্দোলন-সংগ্রাম করতে হয় না।
কর্মসূচি গ্রহণ করে, তারপর কর্মসূচির আগের দিন বা কর্মসূচির দিনে সারা দেশে কয়েকটি গাড়িতে আগুন জ্বালিয়ে দিতে হবে—এটাই থাকে তাদের কর্মসূচির সফল করার মোক্ষম পন্থা। এই কর্মসূচি সফল করার জন্য বিভিন্ন জায়গা থেকে পাঁচ থেকে দশ হাজার টাকার বিনিময়ে কিছু লোককে নিয়ে আসা হয়। এই আউটসোর্সিং করা টোকাই বা নেশাগ্রস্ত লোকজনকে সামান্য কিছু পারিশ্রমিক দিলে নিষ্ঠার সঙ্গে কাজগুলো করে যায়; অর্থাৎ সম্পদ ধ্বংস করে, অগ্নিসংযোগ করে, কোনো কোনো ক্ষেত্রে সাধারণ জনগণের প্রাণহানি ঘটায়। সাময়িকভাবে মনে হয়, আন্দোলন কিছুটা সফল হয়েছে!
সাধারণ মানুষ সুসংগঠিত নয়, আমাদের সম্পদ সীমিত। এই সম্পদ ও নিজের জীবন রক্ষার জন্য মানুষ ঘর থেকে বের হয় কম, গাড়ি-ঘোড়া কম বের করে। আর রাজনৈতিক দলগুলো মনে করে তাদের আন্দোলন সফল! এসব আউটসোর্সিংয়ে প্রতিদিন যদি এক থেকে দুই লাখ টাকা খরচ করা হয়, তাহলে এই নেতারা ঘরে বসে বসে আনন্দের ঢেকুর তুলে মনে মনে ভাবেন জনগণ তাঁদের কথায়, তাঁদের আন্দোলনে সাড়া দিয়ে অবরোধ বা হরতাল সফল করেছেন!
আমাদের দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর বিচক্ষণতা এত কম যে বর্তমান সময়ে কোনো মানুষই এই হরতাল-অবরোধ কর্মসূচিকে স্বাগত জানায় না; বরং মনে মনে ঘৃণা করে।
বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে যে আউটসোর্সিং করা হয়, সেগুলো করা হয় প্রকাশ্যে, কোনো একটি নিয়মনীতি বা আইনের মধ্য থেকে। তাই এই আউটসোর্সিং সফল হয়। গুপ্ত হামলা চালানোর জন্য আউটসোর্সিং করলে, অসৎ কাজে বা সম্পদ ধ্বংস করার জন্য আউটসোর্সিং করলে, রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থের জন্য আউটসোর্সিং করলে, সেই আউটসোর্সিংয়ের ফলাফল হয় বিপরীত। এটা এর আগেও প্রমাণিত হয়েছে। বর্তমানে যে হরতাল-অবরোধ চলছে, এটাও আগের মতো ধুকে ধুকে নিস্তেজ হয়ে যাবে। নেতারা উপলব্ধি করতে পারছেন না যে এসব আউটসোর্সিং কাজে লাগবে না।
শাসকদল যদি কোনো অন্যায্য, অন্যায় কাজ করে যেতে থাকে, তার বিরুদ্ধে সাধারণ জনগণকে উদ্বুদ্ধ করতে হয়, সঠিক কর্মপন্থা নিয়ে। সঠিক কর্মসূচি প্রণয়ন করার পরে নিজের দলের নেতা-কর্মীরা সম্পৃক্ত হবেন। সেই সঙ্গে সম্পৃক্ত করতে হবে সাধারণ জনগণকে, বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনকে। সাধারণ মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে ঘর থেকে বেরিয়ে আসবে, লাখ লাখ জনতা সারা দেশের প্রতিটি শহর-বন্দরে নেমে এসে সমস্বরে চিৎকার করবে, ‘এই শাসন চাই না’; তখনই সফল হবে আন্দোলন-সংগ্রাম। যত দ্রুত এ ব্যাপারটা আমাদের রাজনৈতিক দলগুলো উপলব্ধি করতে পারবে, তত দ্রুত জাতির মঙ্গল হবে। এ রকম আউটসোর্সিংয়ের চোরাগোপ্তা হামলা করে আন্দোলন সফল করা যাবে না। এটা জাতির জীবনে শুধু বিপর্যয় নামাবে।
ধীরে ধীরে ক্ষয়িষ্ণু দলে পরিণত হবে এসব রাজনৈতিক দল। যেমন অতীতে বিলুপ্ত হয়ে গেছে অনেক বড় বড় রাজনৈতিক দল, তাদের অস্তিত্ব আজ আমাদের এ বাংলায় নেই।
আন্দোলন-সংগ্রাম করতে হবে, অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে হবে, দেশকে সঠিক পথে নিয়ে আসতে হবে। তবে সেটা করতে হবে সাধারণ জনগণকে সঙ্গে নিয়ে, সঠিক কর্মসূচি দিয়ে। এটাই হোক আজকের দিনের সব রাজনৈতিক দলের উপলব্ধি।
ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
৪ ঘণ্টা আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
৫ ঘণ্টা আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
৫ ঘণ্টা আগেসপ্তাহখানেক আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অনেকের ওয়াল বিষাদময় হয়ে উঠেছিল ফুলের মতো ছোট্ট শিশু মুনতাহাকে হত্যার ঘটনায়। ৫ বছর বয়সী সিলেটের এই শিশুকে অপহরণের পর হত্যা করে লাশ গুম করতে ডোবায় ফেলে রাখা হয়েছিল। প্রতিবেশী গৃহশিক্ষকের পরিকল্পনায় অপহরণের পর তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়...
৬ ঘণ্টা আগে