চাঁপাইনবাবগঞ্জে প্রায়ই ঘটছে পুলিশ পরিচয়ে ছিনতাইয়ের ঘটনা। দুই মাসে পুলিশ পরিচয়ে টাকা ছিনতাইয়ের তিনটি ঘটনার খবর পাওয়া গেছে। সর্বশেষ গতকাল শুক্রবার একইভাবে ছিনতাইয়ের শিকার হয়েছেন একজন। এসব ঘটনায় থানায় অভিযোগ করা হয়েছে।

তবে ভুক্তভোগীরা বলছেন, অভিযোগের তদন্তে অগ্রগতি নেই। ফলে থামছে না ছিনতাইয়ের ঘটনা। এসব ঘটনায় কোন চক্র জড়িত তাও পরিষ্কার করতে পারছে না আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল শুক্রবার সকাল সাড়ে আটটার দিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলাকার হুজরাপুরে পুলিশ পরিচয়ে মো. সুমন নামের এক অটোচালকের ৩৭ হাজার টাকা ছিনতাই হয়েছে। তিনি সদর উপজেলার গোবরাতলা ইউনিয়নের চাঁপাই-মহেশপুর থেকে মুদিদোকানের মালামাল কিনতে এসেছিলেন।

ছিনতাইয়ের শিকার সুমন বলেন, ‘আমি শহরের হুজরাপুরে চাঁপাই-মহেশপুর গণির মোড়ের মুদিদোকানি মাসুম আলীর জন্য তেল কিনতে গিয়েছিলাম। দোকান বন্ধ থাকায় অটো নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলাম। এ সময় এক ব্যক্তি মোটরসাইকেলে এসে নিজেকে পুলিশ পরিচয় দিয়ে আমাকে তল্লাশি করতে চান। তল্লাশি করে কিছু না পেয়ে আমার টাকাগুলো জাল বলে চ্যালেঞ্জ করেন। পরে টাকাগুলো হাত থেকে নিয়ে অটো তল্লাশির কথা বলেন তিনি। আমি অটোতে উঠতেই ছিনতাইকারী মোটরসাইকেল নিয়ে পালিয়ে যান।’

মুদিদোকানি মাসুম বলেন, ‘আমার দোকানের জন্য অটোচালক সুমনকে ৩৭ হাজার ৭০০ টাকা দিয়ে তেল কিনতে পাঠিয়েছিলাম। সকাল সাড়ে আটটার দিকে আমাকে ফোন করে জানায়, তাঁর কাছে থাকা টাকা ছিনতাই হয়ে গেছে। বিষয়টি শুনে আমি শহরে গিয়েছিলাম। পুলিশ কোনো অভিযোগ না নিয়ে আগামীকাল (শনিবার) থানায় যেতে বলেছে।’

এর আগে গত ১০ অক্টোবর চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের ঢাকা বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে পুলিশ পরিচয়ে জাহাঙ্গীর আলম (৪৬) নামের এক ডাব ব্যবসায়ীর ১০ হাজার টাকা ছিনতাই করা হয়। এ ঘটনায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানায় অভিযোগ করেন আলম।

জাহাঙ্গীর আলম বলেন, এ ঘটনায় সদর থানায় অভিযোগ করেছিলাম। সদর পুলিশ ফাঁড়ির এসআই জাহাঙ্গীর আলম অভিযোগটি তদন্ত শুরু করেন। কিন্তু দেড় মাসেও ছিনতাইকারীকে শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ।

এ ছাড়া ২১ নভেম্বর চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের সদর উপজেলা ভূমি অফিসের পাশ থেকে পুলিশ পরিচয়ে রোমান আলী নামের এক কলেজছাত্রের পাঁচ হাজার টাকা ছিনতাই হয়। রোমান আলী বলেন, ‘বিষয়টি আমি সদর মডেল থানার ওসিকে জানিয়েছিলাম। ওসি এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছিলেন। তবে কোনো অগ্রগতির খবর পাইনি।’

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম আলমগীর জাহান বলেন, ‘এটা ছিনতাই নয়। জাল টাকা আছে বলে সুমনকে  ভয় দেখিয়ে চেয়ে টাকাগুলো নিয়ে পালিয়ে যান ওই লোক। এটা প্রতারণা। হুজরাপুর রোডের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে অপরাধীকে শনাক্তের চেষ্টা চলছে।’