ঝিনাইদহের পৌরসভার মধ্যে অবস্থিত অবৈধ ইটভাটাগুলো চলছেই। দেশের সব অবৈধ ইটভাটা ও ইটভাটার জ্বালানি হিসেবে কাঠের ব্যবহার হাইকোর্ট সাত দিনের মধ্যে বন্ধের নির্দেশ দিলেও তা মানছেন না ঝিনাইদহের শৈলকুপার ভাটার মালিকেরা।

ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলাজুড়ে ২২টি ইটভাটা রয়েছে। পৌরসভাসহ উপজেলার মধ্যে কীভাবে এসব ইটভাটা অবাধে চলছে এ নিয়ে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। এসব অবৈধ ইটভাটার তালিকায় শৈলকুপা পৌরসভার কাজীপাড়ার আশা ইটভাটাসহ আরও ছয়টি ইটভাটা রয়েছে। এ ছাড়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় রয়েছে ইটভাটা। নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে এসব ইটভাটা চলছে। তবে ইটভাটা মালিকেরা বলছেন, ‘আমরা নিয়মের মধ্যে আছি।’

উপজেলার বিভিন্ন ইটভাটা ঘুরে দেখা যায়, পাহাড়ের মতো উঁচু করে হাজার হাজার মণ গাছের খড়ি স্তূপ করে রেখে পোড়ানো হচ্ছে। এ ছাড়া প্রতিদিন বাজারের মধ্য দিয়ে মাটি টানা ট্রাক্টর চলায় ধুলাবালুতে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। মাটি, খড়ি, ইটবোঝাই করে ট্রাকের পর ট্রাক যাতায়াত করে ইটভাটায়। এ ছাড়া মাটি ও ইট আনা-নেওয়ার কাজে ব্যবহৃত ট্রাক্টরের শব্দ যেমন বৃদ্ধি পাচ্ছে তেমনি ধুলাবালুতে বায়ুদূষণ ব্যাপক আকার ধারণ করছে।

পৌর এলাকায় এখনো রয়েছে ছয়টি অবৈধ ইটভাটা। এ ছাড়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় কৃষিজমিতে রয়েছে ইটভাটা। মানা হয়নি সরকারি নীতিমালা। সরকারি নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে হাজার হাজার মন কাঠ দিয়ে ইট পুড়িয়ে চলেছে। একেবারেই জনাকীর্ণ আবাসিক এলাকায় আশা নামের ইটভাটার অবস্থান থাকলেও এর বিরুদ্ধ কোনো সময় আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।

পৌর এলাকার মালিপাড়া গ্রামের বাসিন্দা রেজাউল ইসলাম বলেন, পৌরসভার মধ্যে অবৈধভাবে ইটভাটাগুলো চলছে। এর মধ্যে আশা ইটভাটার অবস্থান মালিপাড়া মাদ্রাসার সন্নিকটে হওয়ায় খুব সমস্যার মধ্যে আছেন এই মাদ্রাসার শিক্ষকসহ শিক্ষার্থীরা। এ ছাড়া ভাটাটির অবস্থান জনাকীর্ণ এলাকায় হওয়ায় নানা সমস্যার মধ্যে আছে সাধারণ মানুষ। হাইকোর্টের নির্দেশ না মানা খুবই দুঃখজনক।

এ বিষয়ে পৌর মেয়র কাজী আশরাফুল আজম বলেন, ‘পৌরসভার মধ্যে এভাবে ইটভাটা চালানোর আইনগত ভিত্তি নেই। হাইকোর্টের নির্দেশ না মেনে কীভাবে চলছে আমি বলতে পারব না।’

এ বিষয়ে ঝিনাইদহ পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক শ্রীরুপ মজুমদার বলেন, ‘পৌরসভার মধ্যে এভাবে ইটভাটা পরিচালনা করার কোনো বৈধতা নেই। ইতিমধ্যে অবৈধ ইটভাটার বিষয়ে মালিকদের চিঠি দেওয়া হয়েছে। নিয়মের মধ্যে না থাকলে আমরা অবৈধ সব ইটভাটার বিরুদ্ধে অচিরেই আইনগত ব্যবস্থা নিব। তবে হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞার কোনো চিঠি আমরা অফিশিয়ালি পাইনি।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) বনি আমিন বলেন, অচিরেই অবৈধ ইটভাটায় অভিযান পরিচালনা করা হবে। নিয়মের বাইরে কোনো ইটভাটা চলতে দেওয়া যাবে না।