মামুনুর রশীদ
ঈদের ছুটি কাটিয়ে আবার ঢাকায় ফিরতে শুরু করেছে মানুষ। বাড়িমুখী মানুষ ছাড়াও বেশ কয়েক বছর ধরে দেশের পর্যটন ও রিসোর্ট কেন্দ্রগুলোতে মধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্ত মানুষেরাও যেতে শুরু করেছে। ইংরেজি ‘রিট্রিট’ শব্দটাও কিছু ক্ষেত্রে প্রযোজ্য—চাকরি, ব্যবসা-বাণিজ্য জগতের একঘেয়ে জীবন থেকে মুক্তি পেয়ে মনের মতো কোথাও কয়েক দিন কাটিয়ে আবার কাজে ফেরা।
যা হোক, এবার ঈদের দীর্ঘ ছুটিতে দৈনিক পত্রিকার অনুপস্থিতি একটা অস্বস্তির কারণ হয়েছিল। পৃথিবীর কোনো দেশেই দীর্ঘদিন ধরে পত্রিকা বন্ধ থাকে বলে আমার জানা নেই। এমনিতেই আমরা যারা ছাপা পত্রিকা পড়ে অভ্যস্ত, তাদের জন্য এ একটা মহা সংকট। অবশ্য শুনেছি, অনলাইন খোলা ছিল। যা-ই হোক, এই ঈদের ছুটিতে—যে ছুটি পয়লা বৈশাখ পর্যন্ত বিস্তৃত—সেখানে কিছু সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড হয়েছে। ঈদের দিনেই আমাদের নতুন নাটক নেমেছে। প্রচুর দর্শক নাটক দেখেছে। পরপর চার দিন শিল্পকলা একাডেমির মূল মিলনায়তনে হলভর্তি দর্শকের সামনে নাটক অভিনীত হয়েছে। নববর্ষে আরও একটি দলের নাটক মঞ্চস্থ হয়েছে। দর্শকদের মধ্যে ঈদ ও নববর্ষের আনন্দের একটা চমৎকার অভিব্যক্তি দেখা গেছে।
এসব দেখে আমার সেই ছোটবেলার কথা মনে হলো। ঈদে আজ থেকে ৬০-৭০ বছর আগে গ্রামগঞ্জে, মহল্লায় নাটক হতো। কোথাও কোথাও মেলাও বসত। ঈদের দিন নামাজ আদায়ের পর বাড়ি বাড়ি গিয়ে শুভেচ্ছা বিনিময়, বিকেলবেলায় ফুটবল টুর্নামেন্ট, তারপর রাতে নাট্যাভিনয়—মানুষের একটা মিলনমেলায় পরিণত হতো। এই মিলন পরবর্তী বছরের, পরবর্তী দিনগুলোকে একটা স্মৃতির আয়নায় মুড়িয়ে দিত।
ছোটবেলায় দেখেছি, রোজার দিনের ইফতার শেষে রিহার্সাল হতো। শহর থেকে গ্রামের অভিনেতারা দু-চার দিন আগে এসে রিহার্সালে যোগ দিত। গ্রামের স্কুলঘরে সাধারণত এ কাজটি হতো। হারিকেনের এবং শেষদিকে হ্যাজাকের আলোয় অনেক রাত পর্যন্ত অভিনয়ের জন্য স্টেজ বানানো, শেষ পর্যায়ের মহড়াগুলো চলত। গাঁয়ের মানুষ এবং আমাদের মা-খালা-বোনেরা এই থিয়েটার দেখার অপেক্ষায় থাকত। যথাসময়ে রাত জেগে থিয়েটার দেখে হাসিমুখে বাড়ি এসে বেশ কিছুদিন ধরে এ নিয়ে নানা কথাবার্তা চলত। যদিও ওই সময়ে ব্রিটিশ আমলের নাট্য নিয়ন্ত্রণ আইনটি চালু ছিল, কিন্তু গ্রামবাংলায় বা মহল্লায় পুলিশ ততটা সক্রিয় ছিল না। কোথাও কোথাও পুলিশের সদস্যরাও অংশ নিত।
বেশ কিছুদিন ধরে এই সাংস্কৃতিক আয়োজনের স্থানগুলো দখল করেছে ধর্মসভা। তারাও একধরনের বিনোদন দেয়। কিন্তু এই বিনোদনের চরিত্র একেবারেই অন্য রকম। তাদের মুখ্য বিবেচনা ‘নারী’। এসব সভায় অশ্লীল সব গল্পের পরিবেশনার সঙ্গে ধর্মকে যুক্ত করে একধরনের বিনোদনের রসায়ন সৃষ্টি করা হয়। কিছু কিছু এলাকায় খোদ সংসদ সদস্যরাই পয়লা বৈশাখে ধর্মসভার আয়োজন করে থাকেন। তিন দিন ধরে ওই সব এলাকায় ধর্মসভা করে একটা সাম্প্রদায়িক সংস্কৃতির পরিবেশ সৃষ্টি করে থাকেন।
বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক চিরবসন্তের দেশ। হাজার বছর ধরে এই অঞ্চলের মানুষ যার যার ধর্ম পালন করে থাকে। ধর্মীয় উৎসবে সব ধরনের মানুষের অংশগ্রহণ থাকে। আবার পয়লা বৈশাখে সব ধরনের মানুষই একত্রে আনন্দে অবগাহন করে। নতুন জামা পরে মেলায় গিয়ে পুতুল কেনে। একটু বাংলা খাবার খেয়ে প্রচণ্ড গরমেও দিনটি উদ্যাপন করে থাকে। এই দিন সংস্কৃতির মুক্তির উৎসবে সবাই অংশ নেয়।
কিন্তু কয়েক বছর ধরে নিরাপত্তা বাহিনী এক অদ্ভুত ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। নানা ধরনের নিয়ন্ত্রণমূলক আদেশ-নির্দেশ জারি করতে শুরু করেছে। বিকেলেই সব অনুষ্ঠান শেষ করতে হবে—অমুক রাস্তা বন্ধ, তমুক রাস্তায় হাঁটো—এই সব। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, কেন? নিরাপত্তা বাহিনীর কাজটি কী? সবকিছু বন্ধ করে তারা ঘুমাতে যাবে? নিয়ম তো একটাই হবে যে সব চলবে এবং অতন্দ্রপ্রহরীর মতো নিরাপত্তা বাহিনী সেসব পাহারা দেবে। এসবের কারণ কি যশোরে উদীচীর অনুষ্ঠানে বোমা হামলা, নাকি ঢাকায় রমনার বটমূলে নাশকতা? যদিও এসবের বিচার এখনো হয়নি। বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনীর সক্ষমতা সম্পর্কে আমার কোনো সন্দেহ নেই। তারা চাইলে সব পারে।
আবার প্রশ্ন ওঠে—এই নিয়ন্ত্রণমূলক আদেশ-নির্দেশ কেন? যে শক্তি এসব উৎসব পণ্ড করতে চায় তাকে বরং একটা ভীতিকর অবস্থায় নিয়ে আসা, নাকি যারা সংস্কৃতির কাজ করবে, তাদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসা? বাঙালি সংস্কৃতির বিরুদ্ধে যারা, তাদের সরকার খুব ভালো করে চেনে। এরা শহীদ মিনারের চারদিকে লৌহ বেষ্টনী গড়েছিল। কিন্তু সে সময় তারা ছিল চিহ্নিত। সে-ও ২০০৩ সালের কথা। তারপর এত বছর ধরে তারা ঢুকে পড়েছে গ্রামবাংলায়, শহরের বিভিন্ন মহল্লায়, মাদ্রাসায়, কিছু মসজিদেও। পরিস্থিতিটা এতটাই ভয়াবহ যে মুক্তচিন্তার মানুষকে এরা হত্যা করে করে এগিয়েছে। ধর্মনিরপেক্ষতার বিষয়টি দিন দিন ‘নেই’ হয়ে যাচ্ছে। অথচ বর্তমান সরকার ধর্মনিরপেক্ষতা প্রতিষ্ঠার জন্য মুক্তিযুদ্ধে অঙ্গীকারবদ্ধ হয়েছিল।
এবার শহীদ মিনারে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট কোনো নির্দেশনা না মেনে পয়লা বৈশাখের অনুষ্ঠান রাত ৯টা পর্যন্ত প্রলম্বিত করেছে। বিপুলসংখ্যক মানুষ এখানে অংশ নিয়েছে। পুলিশের লোক বারবার নির্দেশনার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছে। কিন্তু অনুষ্ঠান বন্ধ হয়নি। এই শহীদ মিনারে আশির দশকে আমরা স্বৈরাচারবিরোধী অনুষ্ঠান করেছি। বিপুল পরিমাণ পুলিশ চারদিকে দাঁড়িয়ে থাকত। কিন্তু জনতার স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের কারণে সেসব অনুষ্ঠান বন্ধ করতে পারেনি।
আজ সময় এসেছে একটা সাংস্কৃতিক বোঝাপড়ার। দেশটা কি বাঙালির সংস্কৃতির হবে, নাকি বিজাতীয় সংস্কৃতির সেবাদাস হবে? আমরা কোন পথে হাঁটলে দেশটা অসাম্প্রদায়িক হবে? সে পথেই যদি যেতে চাই, তবে ধর্মের রাজনৈতিক ব্যবহারকে বন্ধ করতে হবে। আর সরকারের মধ্যে ঘাপটি মেরে থাকা ক্ষমতাবানদের চিহ্নিত করতে হবে। কারিকুলামে শিল্প-সংস্কৃতি বলে একটা বিষয় চালু করেছে সরকার, কিন্তু তার মধ্যে ‘নাটক’ নেই। শিক্ষা সপ্তাহের প্রতিযোগিতায় ‘অভিনয়’ নেই। খোঁজ নিয়ে দেখা গেল, কোনো এক ঘাপটি মারা আমলা এ কাজটি করেছেন। নিশ্চয়ই তিনি বর্তমান সরকারের কারও না কারও আশীর্বাদপুষ্ট। আমরা চাই, এসব ঘাপটি মারা আমলা, মন্ত্রী বা সংসদ সদস্য যাঁরা এসব সংকোচনমূলক কাজের সঙ্গে যুক্ত, তাঁরা চিহ্নিত হোক এবং বাংলার অসাম্প্রদায়িক চরিত্র আবার জেগে উঠুক।
লেখক: মামুনুর রশীদ, নাট্যব্যক্তিত্ব
ঈদের ছুটি কাটিয়ে আবার ঢাকায় ফিরতে শুরু করেছে মানুষ। বাড়িমুখী মানুষ ছাড়াও বেশ কয়েক বছর ধরে দেশের পর্যটন ও রিসোর্ট কেন্দ্রগুলোতে মধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্ত মানুষেরাও যেতে শুরু করেছে। ইংরেজি ‘রিট্রিট’ শব্দটাও কিছু ক্ষেত্রে প্রযোজ্য—চাকরি, ব্যবসা-বাণিজ্য জগতের একঘেয়ে জীবন থেকে মুক্তি পেয়ে মনের মতো কোথাও কয়েক দিন কাটিয়ে আবার কাজে ফেরা।
যা হোক, এবার ঈদের দীর্ঘ ছুটিতে দৈনিক পত্রিকার অনুপস্থিতি একটা অস্বস্তির কারণ হয়েছিল। পৃথিবীর কোনো দেশেই দীর্ঘদিন ধরে পত্রিকা বন্ধ থাকে বলে আমার জানা নেই। এমনিতেই আমরা যারা ছাপা পত্রিকা পড়ে অভ্যস্ত, তাদের জন্য এ একটা মহা সংকট। অবশ্য শুনেছি, অনলাইন খোলা ছিল। যা-ই হোক, এই ঈদের ছুটিতে—যে ছুটি পয়লা বৈশাখ পর্যন্ত বিস্তৃত—সেখানে কিছু সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড হয়েছে। ঈদের দিনেই আমাদের নতুন নাটক নেমেছে। প্রচুর দর্শক নাটক দেখেছে। পরপর চার দিন শিল্পকলা একাডেমির মূল মিলনায়তনে হলভর্তি দর্শকের সামনে নাটক অভিনীত হয়েছে। নববর্ষে আরও একটি দলের নাটক মঞ্চস্থ হয়েছে। দর্শকদের মধ্যে ঈদ ও নববর্ষের আনন্দের একটা চমৎকার অভিব্যক্তি দেখা গেছে।
এসব দেখে আমার সেই ছোটবেলার কথা মনে হলো। ঈদে আজ থেকে ৬০-৭০ বছর আগে গ্রামগঞ্জে, মহল্লায় নাটক হতো। কোথাও কোথাও মেলাও বসত। ঈদের দিন নামাজ আদায়ের পর বাড়ি বাড়ি গিয়ে শুভেচ্ছা বিনিময়, বিকেলবেলায় ফুটবল টুর্নামেন্ট, তারপর রাতে নাট্যাভিনয়—মানুষের একটা মিলনমেলায় পরিণত হতো। এই মিলন পরবর্তী বছরের, পরবর্তী দিনগুলোকে একটা স্মৃতির আয়নায় মুড়িয়ে দিত।
ছোটবেলায় দেখেছি, রোজার দিনের ইফতার শেষে রিহার্সাল হতো। শহর থেকে গ্রামের অভিনেতারা দু-চার দিন আগে এসে রিহার্সালে যোগ দিত। গ্রামের স্কুলঘরে সাধারণত এ কাজটি হতো। হারিকেনের এবং শেষদিকে হ্যাজাকের আলোয় অনেক রাত পর্যন্ত অভিনয়ের জন্য স্টেজ বানানো, শেষ পর্যায়ের মহড়াগুলো চলত। গাঁয়ের মানুষ এবং আমাদের মা-খালা-বোনেরা এই থিয়েটার দেখার অপেক্ষায় থাকত। যথাসময়ে রাত জেগে থিয়েটার দেখে হাসিমুখে বাড়ি এসে বেশ কিছুদিন ধরে এ নিয়ে নানা কথাবার্তা চলত। যদিও ওই সময়ে ব্রিটিশ আমলের নাট্য নিয়ন্ত্রণ আইনটি চালু ছিল, কিন্তু গ্রামবাংলায় বা মহল্লায় পুলিশ ততটা সক্রিয় ছিল না। কোথাও কোথাও পুলিশের সদস্যরাও অংশ নিত।
বেশ কিছুদিন ধরে এই সাংস্কৃতিক আয়োজনের স্থানগুলো দখল করেছে ধর্মসভা। তারাও একধরনের বিনোদন দেয়। কিন্তু এই বিনোদনের চরিত্র একেবারেই অন্য রকম। তাদের মুখ্য বিবেচনা ‘নারী’। এসব সভায় অশ্লীল সব গল্পের পরিবেশনার সঙ্গে ধর্মকে যুক্ত করে একধরনের বিনোদনের রসায়ন সৃষ্টি করা হয়। কিছু কিছু এলাকায় খোদ সংসদ সদস্যরাই পয়লা বৈশাখে ধর্মসভার আয়োজন করে থাকেন। তিন দিন ধরে ওই সব এলাকায় ধর্মসভা করে একটা সাম্প্রদায়িক সংস্কৃতির পরিবেশ সৃষ্টি করে থাকেন।
বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক চিরবসন্তের দেশ। হাজার বছর ধরে এই অঞ্চলের মানুষ যার যার ধর্ম পালন করে থাকে। ধর্মীয় উৎসবে সব ধরনের মানুষের অংশগ্রহণ থাকে। আবার পয়লা বৈশাখে সব ধরনের মানুষই একত্রে আনন্দে অবগাহন করে। নতুন জামা পরে মেলায় গিয়ে পুতুল কেনে। একটু বাংলা খাবার খেয়ে প্রচণ্ড গরমেও দিনটি উদ্যাপন করে থাকে। এই দিন সংস্কৃতির মুক্তির উৎসবে সবাই অংশ নেয়।
কিন্তু কয়েক বছর ধরে নিরাপত্তা বাহিনী এক অদ্ভুত ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। নানা ধরনের নিয়ন্ত্রণমূলক আদেশ-নির্দেশ জারি করতে শুরু করেছে। বিকেলেই সব অনুষ্ঠান শেষ করতে হবে—অমুক রাস্তা বন্ধ, তমুক রাস্তায় হাঁটো—এই সব। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, কেন? নিরাপত্তা বাহিনীর কাজটি কী? সবকিছু বন্ধ করে তারা ঘুমাতে যাবে? নিয়ম তো একটাই হবে যে সব চলবে এবং অতন্দ্রপ্রহরীর মতো নিরাপত্তা বাহিনী সেসব পাহারা দেবে। এসবের কারণ কি যশোরে উদীচীর অনুষ্ঠানে বোমা হামলা, নাকি ঢাকায় রমনার বটমূলে নাশকতা? যদিও এসবের বিচার এখনো হয়নি। বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনীর সক্ষমতা সম্পর্কে আমার কোনো সন্দেহ নেই। তারা চাইলে সব পারে।
আবার প্রশ্ন ওঠে—এই নিয়ন্ত্রণমূলক আদেশ-নির্দেশ কেন? যে শক্তি এসব উৎসব পণ্ড করতে চায় তাকে বরং একটা ভীতিকর অবস্থায় নিয়ে আসা, নাকি যারা সংস্কৃতির কাজ করবে, তাদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসা? বাঙালি সংস্কৃতির বিরুদ্ধে যারা, তাদের সরকার খুব ভালো করে চেনে। এরা শহীদ মিনারের চারদিকে লৌহ বেষ্টনী গড়েছিল। কিন্তু সে সময় তারা ছিল চিহ্নিত। সে-ও ২০০৩ সালের কথা। তারপর এত বছর ধরে তারা ঢুকে পড়েছে গ্রামবাংলায়, শহরের বিভিন্ন মহল্লায়, মাদ্রাসায়, কিছু মসজিদেও। পরিস্থিতিটা এতটাই ভয়াবহ যে মুক্তচিন্তার মানুষকে এরা হত্যা করে করে এগিয়েছে। ধর্মনিরপেক্ষতার বিষয়টি দিন দিন ‘নেই’ হয়ে যাচ্ছে। অথচ বর্তমান সরকার ধর্মনিরপেক্ষতা প্রতিষ্ঠার জন্য মুক্তিযুদ্ধে অঙ্গীকারবদ্ধ হয়েছিল।
এবার শহীদ মিনারে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট কোনো নির্দেশনা না মেনে পয়লা বৈশাখের অনুষ্ঠান রাত ৯টা পর্যন্ত প্রলম্বিত করেছে। বিপুলসংখ্যক মানুষ এখানে অংশ নিয়েছে। পুলিশের লোক বারবার নির্দেশনার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছে। কিন্তু অনুষ্ঠান বন্ধ হয়নি। এই শহীদ মিনারে আশির দশকে আমরা স্বৈরাচারবিরোধী অনুষ্ঠান করেছি। বিপুল পরিমাণ পুলিশ চারদিকে দাঁড়িয়ে থাকত। কিন্তু জনতার স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের কারণে সেসব অনুষ্ঠান বন্ধ করতে পারেনি।
আজ সময় এসেছে একটা সাংস্কৃতিক বোঝাপড়ার। দেশটা কি বাঙালির সংস্কৃতির হবে, নাকি বিজাতীয় সংস্কৃতির সেবাদাস হবে? আমরা কোন পথে হাঁটলে দেশটা অসাম্প্রদায়িক হবে? সে পথেই যদি যেতে চাই, তবে ধর্মের রাজনৈতিক ব্যবহারকে বন্ধ করতে হবে। আর সরকারের মধ্যে ঘাপটি মেরে থাকা ক্ষমতাবানদের চিহ্নিত করতে হবে। কারিকুলামে শিল্প-সংস্কৃতি বলে একটা বিষয় চালু করেছে সরকার, কিন্তু তার মধ্যে ‘নাটক’ নেই। শিক্ষা সপ্তাহের প্রতিযোগিতায় ‘অভিনয়’ নেই। খোঁজ নিয়ে দেখা গেল, কোনো এক ঘাপটি মারা আমলা এ কাজটি করেছেন। নিশ্চয়ই তিনি বর্তমান সরকারের কারও না কারও আশীর্বাদপুষ্ট। আমরা চাই, এসব ঘাপটি মারা আমলা, মন্ত্রী বা সংসদ সদস্য যাঁরা এসব সংকোচনমূলক কাজের সঙ্গে যুক্ত, তাঁরা চিহ্নিত হোক এবং বাংলার অসাম্প্রদায়িক চরিত্র আবার জেগে উঠুক।
লেখক: মামুনুর রশীদ, নাট্যব্যক্তিত্ব
জমির মালিক হযরত শাহ্ আলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। তবে ওই জমিতে ৩৯১টি দোকান নির্মাণ করে কয়েক বছর ধরে ভাড়া নিচ্ছে হযরত শাহ্ আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজ। দোকানগুলোর ভাড়া থেকে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ৭০ লাখ টাকা ভ্যাটও দেওয়া হয়নি। বিষয়টি উঠে এসেছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) তদন্তে।
১ দিন আগেকুড়িগ্রাম পৌর শহরে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী ছোট ভাই নিহত ও বড় ভাই আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে মৎস্য খামারের কাছে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
৫ দিন আগেবৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগের মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১৮ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত শনিবার রাতে ও গতকাল রোববার তাঁরা গ্রেপ্তার হন।
৫ দিন আগেএক অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটেছে শিল্পকলা একাডেমিতে। শিল্পকলা একাডেমির তিনটি হলেই কিছুদিন আগেও নাটক চলত। নাট্যকর্মীদের সৃজনশীলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটত সেখানে। বহু পরিশ্রমে মাসের পর মাস নিজের খেয়ে, নিজের গাড়িভাড়া দিয়ে নাট্যকর্মীরা একেবারেই স্বেচ্ছাশ্রমে একটি শিল্প তিপ্পান্ন বছর ধরে গড়ে তুলেছেন। শিল্পকলা একাডেমি এখন
৮ দিন আগে