অর্চি হক, ঢাকা
‘হাসপাতাল মানেই তো খরচ। পরথম বাইচ্চাডার সময় একবারও ডাক্তারের কাছে যাই নাই। বাড়ির পাশের খালাম্মা (ধাত্রী) কয়দিন পরপর আইয়া দেইখা যাইত। কিন্তু বাইচ্চাডারে বাঁচাইতে পারলো না।’
গর্ভধারণের পর এই অভিজ্ঞতা পটুয়াখালীর বাউফলের গৃহকর্মী নাজমুন আরার। তাঁর স্বামী দিনমজুর। নাজমুন আরা জানান, খরচের কথা চিন্তা করে প্রথমবার অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পর তিনি হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যাননি। কিন্তু দ্বিতীয়বার গর্ভধারণের পর আর সেই ভুল করেননি। সে সময় তিনি নিয়মিত স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গেছেন এবং কোনো জটিলতা ছাড়াই সন্তান প্রসব করেছেন। নাজমুন আরা এবং তাঁর সন্তান—দুজনেই বর্তমানে সুস্থ।
নাজমুন আরার মতো দেশে দরিদ্র শ্রেণির নারীদের মধ্যে প্রসবকালীন সেবা নেওয়ার হার বাড়ছে। কমে আসছে প্রসবসেবা গ্রহণে ধনী-দরিদ্রের ব্যবধান। গত এপ্রিলে প্রকাশিত ‘জনমিতি এবং স্বাস্থ্য জরিপ ২০২২’ অনুযায়ী, দেশে বর্তমানে প্রতি দুজন ধনী পরিবারের নারীর বিপরীতে একজন দরিদ্র পরিবারের নারী প্রসবকালীন স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণ করেন। ২০১১ সালে এই হার ছিল প্রতি ছয়জনে একজন, ২০১৪ সালে চারজনে একজন এবং ২০১৭-১৮ তে তিনজনে একজন। অর্থাৎ প্রসবকালীন সেবায় ধনী-দরিদ্রের ব্যবধান খুব দ্রুতই কমে আসছে।
এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ বিভাগের সাবেক পরিচালক ডা. বে-নজীর আহমেদ বলেন, ‘দেশের আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নতি, শিক্ষার হার বৃদ্ধি এবং সচেতনতার কারণে প্রসবকালীন সেবা গ্রহণের হার বাড়ছে। এটা অবশ্যই ইতিবাচক। তবে অনাকাঙ্ক্ষিত মাতৃমৃত্যু আমরা এখনো প্রতিহত করতে পারিনি।’
দেশে প্রসবকালীন সেবায় ধনী-দরিদ্রের ব্যবধান কমে এলেও সাম্প্রতিক সময়ে মাতৃমৃত্যুর হার কিছুটা বেড়েছে। গত মার্চে প্রকাশিত বাংলাদেশ স্যাম্পল ভাইটাল স্ট্যাটিসটিকস ২০২১ অনুযায়ী, প্রতি ১ লাখ শিশু জন্মের বিপরীতে মৃত্যু হয়েছে ১৬৮ জন প্রসূতির। ২০২০ সালে এই হার ছিল ১৬৩। তবে এক দশক আগের তুলনায় বর্তমানে মাতৃমৃত্যুর হার অনেকটাই কম। ২০০৯ সালে প্রতি ১ লাখ শিশু জন্মের বিপরীতে ২৫৯ জন মায়ের মৃত্যু হতো। অর্থাৎ এ যুগের ব্যবধানে মাতৃমৃত্যুর হার কমেছে ১ লাখে ৯১ জন।
এমন প্রেক্ষাপটে আজ পালিত হচ্ছে নিরাপদ মাতৃত্ব দিবস। ১৯৯৮ সাল থেকে দেশব্যাপী জাতীয়ভাবে দিবসটি পালিত হয়ে আসছে। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য, ‘গর্ভকালে চারবার সেবা গ্রহণ করি, নিরাপদ মাতৃত্ব নিশ্চিত করি’।
মাতৃমৃত্যুর বয়সভিত্তিক পর্যালোচনায় দেখা যায়, কিশোরী প্রসূতি অর্থাৎ ১৫ থেকে ১৯ বছর বয়সীদের মধ্যে মৃত্যুহার অনেক বেশি। প্রতি ১ লাখ জীবিত শিশু জন্মের বিপরীতে ১৫ থেকে ১৯ বছর বয়সী ১১৬ জন প্রসূতির মৃত্যু হয়। ২০ থেকে ২৪ বছর বয়সী প্রসূতিদের মধ্যে এই হার ৬৯ জন।
স্যাম্পল ভাইটাল স্ট্যাটিসটিকস বলছে, শহরের তুলনায় গ্রামাঞ্চলে মাতৃমৃত্যুর হার বেশি ৷ শহরাঞ্চলে এটি প্রতি লাখে ১৪০ জন মায়ের মৃত্যু হয়, আর গ্রামাঞ্চলে এই সংখ্যা ১৭৬। এ ছাড়া ক্লিনিকে সেবা গ্রহণকারী প্রসূতিদের মধ্যে মাতৃমৃত্যুর হার কম। ক্লিনিকে সেবা গ্রহণকারীদের মধ্যে প্রতি ১ লাখ জন্মের বিপরীতে ১২ জন মায়ের মৃত্যু হয়। আর বাড়িতে প্রসূতিসেবা গ্রহণকারীদের মধ্যে এ হার ৭৩ জন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, সম্প্রতি মাতৃমৃত্যু বেড়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ হলো করোনাকাল এবং বাল্যবিবাহ বেড়ে যাওয়া। শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অবস অ্যান্ড গাইনি বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক মুনিরা ফেরদৌসী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘করোনাকালে অনেক প্রসূতিই স্বাস্থ্যসেবা নিতে হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যেতে পারেনি। আমরা এমনও শুনেছি, এক্টোপিক প্রেগন্যান্সির (জরায়ুর বাইরে গর্ভধারণ) কারণে অনেকের রক্তক্ষরণ হতে হতে হাসপাতালে আসার আগেই মৃত্যু হয়েছে। তবে এটাই সামগ্রিক চিত্র নয় বলে মনে করেন তিনি। ডা. মুনিরা ফেরদৌসী বলেন, করোনাকালটা বাদ দিলে দেশে মাতৃমৃত্যুর হার ধীরে ধীরে কমছে। কারণ, স্বাস্থ্যসেবা এখন মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে গেছে।
‘হাসপাতাল মানেই তো খরচ। পরথম বাইচ্চাডার সময় একবারও ডাক্তারের কাছে যাই নাই। বাড়ির পাশের খালাম্মা (ধাত্রী) কয়দিন পরপর আইয়া দেইখা যাইত। কিন্তু বাইচ্চাডারে বাঁচাইতে পারলো না।’
গর্ভধারণের পর এই অভিজ্ঞতা পটুয়াখালীর বাউফলের গৃহকর্মী নাজমুন আরার। তাঁর স্বামী দিনমজুর। নাজমুন আরা জানান, খরচের কথা চিন্তা করে প্রথমবার অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পর তিনি হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যাননি। কিন্তু দ্বিতীয়বার গর্ভধারণের পর আর সেই ভুল করেননি। সে সময় তিনি নিয়মিত স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গেছেন এবং কোনো জটিলতা ছাড়াই সন্তান প্রসব করেছেন। নাজমুন আরা এবং তাঁর সন্তান—দুজনেই বর্তমানে সুস্থ।
নাজমুন আরার মতো দেশে দরিদ্র শ্রেণির নারীদের মধ্যে প্রসবকালীন সেবা নেওয়ার হার বাড়ছে। কমে আসছে প্রসবসেবা গ্রহণে ধনী-দরিদ্রের ব্যবধান। গত এপ্রিলে প্রকাশিত ‘জনমিতি এবং স্বাস্থ্য জরিপ ২০২২’ অনুযায়ী, দেশে বর্তমানে প্রতি দুজন ধনী পরিবারের নারীর বিপরীতে একজন দরিদ্র পরিবারের নারী প্রসবকালীন স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণ করেন। ২০১১ সালে এই হার ছিল প্রতি ছয়জনে একজন, ২০১৪ সালে চারজনে একজন এবং ২০১৭-১৮ তে তিনজনে একজন। অর্থাৎ প্রসবকালীন সেবায় ধনী-দরিদ্রের ব্যবধান খুব দ্রুতই কমে আসছে।
এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ বিভাগের সাবেক পরিচালক ডা. বে-নজীর আহমেদ বলেন, ‘দেশের আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নতি, শিক্ষার হার বৃদ্ধি এবং সচেতনতার কারণে প্রসবকালীন সেবা গ্রহণের হার বাড়ছে। এটা অবশ্যই ইতিবাচক। তবে অনাকাঙ্ক্ষিত মাতৃমৃত্যু আমরা এখনো প্রতিহত করতে পারিনি।’
দেশে প্রসবকালীন সেবায় ধনী-দরিদ্রের ব্যবধান কমে এলেও সাম্প্রতিক সময়ে মাতৃমৃত্যুর হার কিছুটা বেড়েছে। গত মার্চে প্রকাশিত বাংলাদেশ স্যাম্পল ভাইটাল স্ট্যাটিসটিকস ২০২১ অনুযায়ী, প্রতি ১ লাখ শিশু জন্মের বিপরীতে মৃত্যু হয়েছে ১৬৮ জন প্রসূতির। ২০২০ সালে এই হার ছিল ১৬৩। তবে এক দশক আগের তুলনায় বর্তমানে মাতৃমৃত্যুর হার অনেকটাই কম। ২০০৯ সালে প্রতি ১ লাখ শিশু জন্মের বিপরীতে ২৫৯ জন মায়ের মৃত্যু হতো। অর্থাৎ এ যুগের ব্যবধানে মাতৃমৃত্যুর হার কমেছে ১ লাখে ৯১ জন।
এমন প্রেক্ষাপটে আজ পালিত হচ্ছে নিরাপদ মাতৃত্ব দিবস। ১৯৯৮ সাল থেকে দেশব্যাপী জাতীয়ভাবে দিবসটি পালিত হয়ে আসছে। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য, ‘গর্ভকালে চারবার সেবা গ্রহণ করি, নিরাপদ মাতৃত্ব নিশ্চিত করি’।
মাতৃমৃত্যুর বয়সভিত্তিক পর্যালোচনায় দেখা যায়, কিশোরী প্রসূতি অর্থাৎ ১৫ থেকে ১৯ বছর বয়সীদের মধ্যে মৃত্যুহার অনেক বেশি। প্রতি ১ লাখ জীবিত শিশু জন্মের বিপরীতে ১৫ থেকে ১৯ বছর বয়সী ১১৬ জন প্রসূতির মৃত্যু হয়। ২০ থেকে ২৪ বছর বয়সী প্রসূতিদের মধ্যে এই হার ৬৯ জন।
স্যাম্পল ভাইটাল স্ট্যাটিসটিকস বলছে, শহরের তুলনায় গ্রামাঞ্চলে মাতৃমৃত্যুর হার বেশি ৷ শহরাঞ্চলে এটি প্রতি লাখে ১৪০ জন মায়ের মৃত্যু হয়, আর গ্রামাঞ্চলে এই সংখ্যা ১৭৬। এ ছাড়া ক্লিনিকে সেবা গ্রহণকারী প্রসূতিদের মধ্যে মাতৃমৃত্যুর হার কম। ক্লিনিকে সেবা গ্রহণকারীদের মধ্যে প্রতি ১ লাখ জন্মের বিপরীতে ১২ জন মায়ের মৃত্যু হয়। আর বাড়িতে প্রসূতিসেবা গ্রহণকারীদের মধ্যে এ হার ৭৩ জন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, সম্প্রতি মাতৃমৃত্যু বেড়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ হলো করোনাকাল এবং বাল্যবিবাহ বেড়ে যাওয়া। শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অবস অ্যান্ড গাইনি বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক মুনিরা ফেরদৌসী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘করোনাকালে অনেক প্রসূতিই স্বাস্থ্যসেবা নিতে হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যেতে পারেনি। আমরা এমনও শুনেছি, এক্টোপিক প্রেগন্যান্সির (জরায়ুর বাইরে গর্ভধারণ) কারণে অনেকের রক্তক্ষরণ হতে হতে হাসপাতালে আসার আগেই মৃত্যু হয়েছে। তবে এটাই সামগ্রিক চিত্র নয় বলে মনে করেন তিনি। ডা. মুনিরা ফেরদৌসী বলেন, করোনাকালটা বাদ দিলে দেশে মাতৃমৃত্যুর হার ধীরে ধীরে কমছে। কারণ, স্বাস্থ্যসেবা এখন মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে গেছে।
জমির মালিক হযরত শাহ্ আলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। তবে ওই জমিতে ৩৯১টি দোকান নির্মাণ করে কয়েক বছর ধরে ভাড়া নিচ্ছে হযরত শাহ্ আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজ। দোকানগুলোর ভাড়া থেকে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ৭০ লাখ টাকা ভ্যাটও দেওয়া হয়নি। বিষয়টি উঠে এসেছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) তদন্তে।
১ দিন আগেকুড়িগ্রাম পৌর শহরে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী ছোট ভাই নিহত ও বড় ভাই আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে মৎস্য খামারের কাছে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
৫ দিন আগেবৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগের মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১৮ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত শনিবার রাতে ও গতকাল রোববার তাঁরা গ্রেপ্তার হন।
৫ দিন আগেএক অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটেছে শিল্পকলা একাডেমিতে। শিল্পকলা একাডেমির তিনটি হলেই কিছুদিন আগেও নাটক চলত। নাট্যকর্মীদের সৃজনশীলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটত সেখানে। বহু পরিশ্রমে মাসের পর মাস নিজের খেয়ে, নিজের গাড়িভাড়া দিয়ে নাট্যকর্মীরা একেবারেই স্বেচ্ছাশ্রমে একটি শিল্প তিপ্পান্ন বছর ধরে গড়ে তুলেছেন। শিল্পকলা একাডেমি এখন
৮ দিন আগে