রেজোয়ান হক, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক
আলোচিত ব্যাটারিচালিত রিকশার বিরুদ্ধে বড় দুটি অভিযোগের একটি হলো ব্যাটারি চার্জ দেওয়া হয় অবৈধ বিদ্যুতে, যা বিদ্যুৎ-সংকট বাড়াচ্ছে। কিন্তু স্বয়ং বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ গত ফেব্রুয়ারি মাসে সংসদে বক্তৃতায় দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি এই রিকশাকে ‘বাংলার টেসলা’ নাম দিয়ে বলেন, এই যানবাহন সাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব, রাষ্ট্রীয়ভাবে এই বাহনকে উৎসাহিত করা হবে। টেসলা হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রে বেশ জনপ্রিয় ব্যাটারিচালিত বৈদ্যুতিক গাড়ি।
এর ১৩ সপ্তাহের মাথায় ১৫ মে সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) উপদেষ্টা পরিষদের সভায় ‘ঢাকার রাস্তায় ব্যাটারিচালিত রিকশা নিষিদ্ধ’ করার সিদ্ধান্ত দেন সড়কমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, পুলিশ অভিযান শুরু করে, চার দিনের মাথায় এই রিকশাচালকেরা টানা দুই দিন আন্দোলন করে রাজধানীর যোগাযোগব্যবস্থা ধরে টান দিলে সেই ওবায়দুল কাদেরই ২০ মে জানান, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে রিকশা বন্ধের সিদ্ধান্ত বাতিল করা হয়েছে।
সিদ্ধান্ত ঘোষণা, আন্দোলন এবং সিদ্ধান্ত বাতিল—মাত্র পাঁচ দিনের মধ্যে ঘটল। এর সঙ্গে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীর বক্তব্য যোগ করলে দেখা যায়, এই ইস্যুতে মন্ত্রীদের কথাবার্তা, সরকারের অবস্থানের মধ্যে কোনো মিল নেই। টানা চতুর্থ মেয়াদে ক্ষমতাসীন অভিজ্ঞ একটি সরকারের জন্য এটা খুবই বেমানান।
আন্দোলনকারী রিকশাচালকেরা নিতান্তই সাধারণ মানুষ, তাঁদের বড় বড় কোনো নেতা নেই, বিদেশি উসকানিদাতা নেই। তারপরও মাত্র দুই দিনের আন্দোলনে সরকার তাঁদের দাবি মানতে বাধ্য হয়েছে। এত দ্রুত সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের কারণ—সরকার বুঝতে পেরেছে সিদ্ধান্তটি ভুল ছিল।
এ ক্ষেত্রে ভুল আসলে আগে থেকেই হয়ে আসছে। রাজধানীতে এই বাহনের সংখ্যা এখন প্রায় আড়াই লাখ, যা অল্প থেকে শুরু করে সবার চোখের সামনে দিনে দিনে বেড়েছে। গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর জানাচ্ছে—নীতিমালা না থাকায় এ বাহনটি ঘিরে প্রতি মাসে প্রায় ৫০ কোটি টাকার অবৈধ বাণিজ্য চলছে। রিকশা রাস্তায় নামাতে হলে টাকার বিনিময়ে টোকেন নিতে হয়। তাতেও নির্বিঘ্নে চলাচলের নিশ্চয়তা নেই। নানা অজুহাতে পুলিশি অভিযান থেকে বাঁচতে নিয়মিত টাকা দিতে হয়। রাজধানীতে ব্যাটারিচালিত রিকশার এই মধুচক্রে পুলিশ ছাড়াও স্থানীয় কিছু রাজনৈতিক নেতা ও পাড়া-মহল্লার মাস্তানেরা জড়িত।
এটাও সত্যি, এসব রিকশার চলাচল খুবই ঝুঁকিপূর্ণ, প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে, বাইকারদের একাংশের কারণে মোটরসাইকেলও যে দোষে দুষ্ট। কিন্তু এটাও ঠিক—চলাচল বন্ধ করে দিয়ে এই সমস্যার সমাধান হবে না, বেকারত্ব বাড়ানোসহ সামাজিক নানা সমস্যা বরং বাড়বে। দীর্ঘদিন গণপরিবহনে চলাচলের অভিজ্ঞতা থেকে আমার মনে হয়েছে, বিশৃঙ্খলাই এ খাতের মূল সমস্যা, কোনো সরকারই যা দূর করতে চায়নি বা পারেনি, বিপুল ক্ষমতাধর বর্তমান সরকারও নয়; বরং পরিবহন খাতের পান্ডারা কিছুটা প্রশ্রয়ই পেয়ে আসছে।
সড়ক পরিবহন আইন তার একটি উদাহরণ। ২০১৮ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর আইনটি পাস হয়। পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের বাধার কারণে আইনটি কার্যকর হয় এক বছরের বেশি সময় পর। বিধিমালা জারি হয় আরও তিন বছর পর, ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে। আর মূলত পরিবহনশ্রমিকদের দাবির মুখে গত মার্চে আইনের অন্তত ১২টি ধারায় পরিবর্তন এনে চালক ও হেলপারদের জেল, জরিমানা ও শাস্তি কমিয়ে আইনটি সংশোধনের প্রস্তাব অনুমোদন করেছে মন্ত্রিসভা।
সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে সরকারের অবাস্তব এবং অবিবেচনাপ্রসূত সিদ্ধান্তের সর্বশেষ উদাহরণ ৮ মে সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) ‘মোটরযান গতিসীমা নির্দেশিকা ২০২৪’ জারি। একদিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দেশের সড়কে বেশি গতির ৩৫০ সিসি পর্যন্ত মোটরসাইকেল চলাচলের অনুমতি দিয়েছে, অন্যদিকে সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ের অধীন বিআরটিএ গতিসীমা বেঁধে দিয়েছে। এর মধ্যেও চিন্তাভাবনার কোনো ছাপ নেই। এই নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, মহানগরে গাড়ি চলবে সর্বোচ্চ ৪০ এবং অটোরিকশা ও মোটরসাইকেল ৩০ কিলোমিটার গতিতে। কিন্তু কম বা বেশি গতির যানবাহনের জন্য লেন নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়নি।
ফিরে আসি ব্যাটারিচালিত রিকশা ইস্যুতে। রাস্তায় নানা ডিজাইনের ব্যাটারিচালিত রিকশা চলতে দেখা যায়, যেগুলোর সবই যান্ত্রিকভাবে ত্রুটিপূর্ণ। এটা এ কারণেই হয়েছে যে, এগুলো বানাতে কারও কোনো অনুমোদন দরকার হয়নি। দেশে এখন এ ধরনের রিকশার সংখ্যা প্রায় ৪০ লাখ। ঢাকার বাইরে সাধারণ মানুষের চলাচলের প্রধান বাহন হয়ে উঠেছে এই রিকশা, বহু মানুষের কর্মসংস্থানও হয়েছে। তাই এগুলো রি-ডিজাইন করে একটি মডেলে নিয়ে আসা যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে বুয়েটের বিশেষজ্ঞদের সাহায্য নেওয়া যায়।
বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী সেদিন সংসদে আরও জানিয়েছিলেন, এসব রিকশা লেড-অ্যাসিড ব্যাটারি ব্যবহার করে, যা চার্জ করতে সাত-আট ঘণ্টা সময় লাগে। এগুলোর যদি লিথিয়াম ব্যাটারি হয়, তাহলে সময় লাগবে মাত্র আধা ঘণ্টা, বিদ্যুতের ব্যবহারও অনেক কমবে। লেড ব্যাটারি নিয়ে তাদের লিথিয়াম ব্যাটারি দেওয়ার প্রকল্পও হাতে নিয়েছেন তাঁরা। তিনি আরও বলেন, সারা বিশ্বে এখন বৈদ্যুতিক গাড়ির বিপ্লব চলছে। তেলচালিত গাড়ির ইঞ্জিনের দক্ষতার মাত্রা হলো ২০ শতাংশ, অন্যদিকে ইলেকট্রিক যন্ত্রের দক্ষতা ৮০ শতাংশ। বাজারে যত দ্রুত সম্ভব ইলেকট্রিক গাড়ি আনতে আমরা উৎসাহ দিচ্ছি। দেশে রাস্তায় যত গণপরিবহন চলে, সেগুলো দ্রুততার সঙ্গে বৈদ্যুতিক করা উচিত। এগুলো পরিবেশবান্ধব এবং খরচও কম।
আমি বিশেষজ্ঞ নই, তাই এর সত্যতা সম্পর্কেও নিশ্চিত নই। তবে একটা কথা মনে পড়ছে। আমদানিনির্ভর জ্বালানি তেলের ওপর চাপ কমাতে একসময় সব যানবাহনকে গ্যাসে চালানোর উপযোগী করে কনভার্ট করতে উৎসাহ, ক্ষেত্রবিশেষে চাপও দেওয়া হয়েছিল। বেশির ভাগ গাড়ি সেভাবে কনভার্ট করাও হয়। কিন্তু দেশে গ্যাসসংকট দেখা দেওয়ার পর থেকে দিনের বড় একটা সময় পাম্পে গ্যাস দেওয়া বন্ধ থাকে, বাকি সময়টাতেও প্রেশার কম থাকার অভিযোগ হরহামেশাই শোনা যায়। তাই গ্যাস নিতে পাম্পে গাড়ির লাইন লেগেই থাকে, সময়ও নষ্ট হয়।
দেশে তো বিদ্যুতেরও সংকট দেখা দিয়েছে। গাড়িগুলো বিদ্যুতে চলা শুরু করলে কী হয়, কে জানে!
সিদ্ধান্তগুলো নেওয়া উচিত ভেবেচিন্তে, বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে পরামর্শ করে। সেটা করা হলে ব্যাটারিচালিত রিকশা নিয়ে আন্দোলনের দুই দিনের মাথায় সরকারকে পিছু হটতে হতো না। আবার দেখুন, চালুর অল্পদিনের মধ্যেই জনপ্রিয় হয়ে ওঠা মেট্রোরেলের ভাড়া, যা বেশি বলে আগে থেকেই সমালোচনা রয়েছে, তার ওপর ভ্যাট বসাতে চায় রাজস্ব বোর্ড, ফলে ভাড়া আরও বাড়বে। এতে অসন্তুষ্ট সড়কমন্ত্রী, এটা যাতে না করা হয়, সে জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রীর শরণাপন্ন হয়েছেন। রাজস্ব বোর্ড কি সরকারের বাইরের কেউ? তারা কি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে না জানিয়ে এভাবে ভ্যাট বসানোর সিদ্ধান্ত নিতে পারে? কী একটা অবস্থা!
আলোচিত ব্যাটারিচালিত রিকশার বিরুদ্ধে বড় দুটি অভিযোগের একটি হলো ব্যাটারি চার্জ দেওয়া হয় অবৈধ বিদ্যুতে, যা বিদ্যুৎ-সংকট বাড়াচ্ছে। কিন্তু স্বয়ং বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ গত ফেব্রুয়ারি মাসে সংসদে বক্তৃতায় দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি এই রিকশাকে ‘বাংলার টেসলা’ নাম দিয়ে বলেন, এই যানবাহন সাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব, রাষ্ট্রীয়ভাবে এই বাহনকে উৎসাহিত করা হবে। টেসলা হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রে বেশ জনপ্রিয় ব্যাটারিচালিত বৈদ্যুতিক গাড়ি।
এর ১৩ সপ্তাহের মাথায় ১৫ মে সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) উপদেষ্টা পরিষদের সভায় ‘ঢাকার রাস্তায় ব্যাটারিচালিত রিকশা নিষিদ্ধ’ করার সিদ্ধান্ত দেন সড়কমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, পুলিশ অভিযান শুরু করে, চার দিনের মাথায় এই রিকশাচালকেরা টানা দুই দিন আন্দোলন করে রাজধানীর যোগাযোগব্যবস্থা ধরে টান দিলে সেই ওবায়দুল কাদেরই ২০ মে জানান, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে রিকশা বন্ধের সিদ্ধান্ত বাতিল করা হয়েছে।
সিদ্ধান্ত ঘোষণা, আন্দোলন এবং সিদ্ধান্ত বাতিল—মাত্র পাঁচ দিনের মধ্যে ঘটল। এর সঙ্গে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীর বক্তব্য যোগ করলে দেখা যায়, এই ইস্যুতে মন্ত্রীদের কথাবার্তা, সরকারের অবস্থানের মধ্যে কোনো মিল নেই। টানা চতুর্থ মেয়াদে ক্ষমতাসীন অভিজ্ঞ একটি সরকারের জন্য এটা খুবই বেমানান।
আন্দোলনকারী রিকশাচালকেরা নিতান্তই সাধারণ মানুষ, তাঁদের বড় বড় কোনো নেতা নেই, বিদেশি উসকানিদাতা নেই। তারপরও মাত্র দুই দিনের আন্দোলনে সরকার তাঁদের দাবি মানতে বাধ্য হয়েছে। এত দ্রুত সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের কারণ—সরকার বুঝতে পেরেছে সিদ্ধান্তটি ভুল ছিল।
এ ক্ষেত্রে ভুল আসলে আগে থেকেই হয়ে আসছে। রাজধানীতে এই বাহনের সংখ্যা এখন প্রায় আড়াই লাখ, যা অল্প থেকে শুরু করে সবার চোখের সামনে দিনে দিনে বেড়েছে। গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর জানাচ্ছে—নীতিমালা না থাকায় এ বাহনটি ঘিরে প্রতি মাসে প্রায় ৫০ কোটি টাকার অবৈধ বাণিজ্য চলছে। রিকশা রাস্তায় নামাতে হলে টাকার বিনিময়ে টোকেন নিতে হয়। তাতেও নির্বিঘ্নে চলাচলের নিশ্চয়তা নেই। নানা অজুহাতে পুলিশি অভিযান থেকে বাঁচতে নিয়মিত টাকা দিতে হয়। রাজধানীতে ব্যাটারিচালিত রিকশার এই মধুচক্রে পুলিশ ছাড়াও স্থানীয় কিছু রাজনৈতিক নেতা ও পাড়া-মহল্লার মাস্তানেরা জড়িত।
এটাও সত্যি, এসব রিকশার চলাচল খুবই ঝুঁকিপূর্ণ, প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে, বাইকারদের একাংশের কারণে মোটরসাইকেলও যে দোষে দুষ্ট। কিন্তু এটাও ঠিক—চলাচল বন্ধ করে দিয়ে এই সমস্যার সমাধান হবে না, বেকারত্ব বাড়ানোসহ সামাজিক নানা সমস্যা বরং বাড়বে। দীর্ঘদিন গণপরিবহনে চলাচলের অভিজ্ঞতা থেকে আমার মনে হয়েছে, বিশৃঙ্খলাই এ খাতের মূল সমস্যা, কোনো সরকারই যা দূর করতে চায়নি বা পারেনি, বিপুল ক্ষমতাধর বর্তমান সরকারও নয়; বরং পরিবহন খাতের পান্ডারা কিছুটা প্রশ্রয়ই পেয়ে আসছে।
সড়ক পরিবহন আইন তার একটি উদাহরণ। ২০১৮ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর আইনটি পাস হয়। পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের বাধার কারণে আইনটি কার্যকর হয় এক বছরের বেশি সময় পর। বিধিমালা জারি হয় আরও তিন বছর পর, ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে। আর মূলত পরিবহনশ্রমিকদের দাবির মুখে গত মার্চে আইনের অন্তত ১২টি ধারায় পরিবর্তন এনে চালক ও হেলপারদের জেল, জরিমানা ও শাস্তি কমিয়ে আইনটি সংশোধনের প্রস্তাব অনুমোদন করেছে মন্ত্রিসভা।
সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে সরকারের অবাস্তব এবং অবিবেচনাপ্রসূত সিদ্ধান্তের সর্বশেষ উদাহরণ ৮ মে সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) ‘মোটরযান গতিসীমা নির্দেশিকা ২০২৪’ জারি। একদিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দেশের সড়কে বেশি গতির ৩৫০ সিসি পর্যন্ত মোটরসাইকেল চলাচলের অনুমতি দিয়েছে, অন্যদিকে সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ের অধীন বিআরটিএ গতিসীমা বেঁধে দিয়েছে। এর মধ্যেও চিন্তাভাবনার কোনো ছাপ নেই। এই নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, মহানগরে গাড়ি চলবে সর্বোচ্চ ৪০ এবং অটোরিকশা ও মোটরসাইকেল ৩০ কিলোমিটার গতিতে। কিন্তু কম বা বেশি গতির যানবাহনের জন্য লেন নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়নি।
ফিরে আসি ব্যাটারিচালিত রিকশা ইস্যুতে। রাস্তায় নানা ডিজাইনের ব্যাটারিচালিত রিকশা চলতে দেখা যায়, যেগুলোর সবই যান্ত্রিকভাবে ত্রুটিপূর্ণ। এটা এ কারণেই হয়েছে যে, এগুলো বানাতে কারও কোনো অনুমোদন দরকার হয়নি। দেশে এখন এ ধরনের রিকশার সংখ্যা প্রায় ৪০ লাখ। ঢাকার বাইরে সাধারণ মানুষের চলাচলের প্রধান বাহন হয়ে উঠেছে এই রিকশা, বহু মানুষের কর্মসংস্থানও হয়েছে। তাই এগুলো রি-ডিজাইন করে একটি মডেলে নিয়ে আসা যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে বুয়েটের বিশেষজ্ঞদের সাহায্য নেওয়া যায়।
বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী সেদিন সংসদে আরও জানিয়েছিলেন, এসব রিকশা লেড-অ্যাসিড ব্যাটারি ব্যবহার করে, যা চার্জ করতে সাত-আট ঘণ্টা সময় লাগে। এগুলোর যদি লিথিয়াম ব্যাটারি হয়, তাহলে সময় লাগবে মাত্র আধা ঘণ্টা, বিদ্যুতের ব্যবহারও অনেক কমবে। লেড ব্যাটারি নিয়ে তাদের লিথিয়াম ব্যাটারি দেওয়ার প্রকল্পও হাতে নিয়েছেন তাঁরা। তিনি আরও বলেন, সারা বিশ্বে এখন বৈদ্যুতিক গাড়ির বিপ্লব চলছে। তেলচালিত গাড়ির ইঞ্জিনের দক্ষতার মাত্রা হলো ২০ শতাংশ, অন্যদিকে ইলেকট্রিক যন্ত্রের দক্ষতা ৮০ শতাংশ। বাজারে যত দ্রুত সম্ভব ইলেকট্রিক গাড়ি আনতে আমরা উৎসাহ দিচ্ছি। দেশে রাস্তায় যত গণপরিবহন চলে, সেগুলো দ্রুততার সঙ্গে বৈদ্যুতিক করা উচিত। এগুলো পরিবেশবান্ধব এবং খরচও কম।
আমি বিশেষজ্ঞ নই, তাই এর সত্যতা সম্পর্কেও নিশ্চিত নই। তবে একটা কথা মনে পড়ছে। আমদানিনির্ভর জ্বালানি তেলের ওপর চাপ কমাতে একসময় সব যানবাহনকে গ্যাসে চালানোর উপযোগী করে কনভার্ট করতে উৎসাহ, ক্ষেত্রবিশেষে চাপও দেওয়া হয়েছিল। বেশির ভাগ গাড়ি সেভাবে কনভার্ট করাও হয়। কিন্তু দেশে গ্যাসসংকট দেখা দেওয়ার পর থেকে দিনের বড় একটা সময় পাম্পে গ্যাস দেওয়া বন্ধ থাকে, বাকি সময়টাতেও প্রেশার কম থাকার অভিযোগ হরহামেশাই শোনা যায়। তাই গ্যাস নিতে পাম্পে গাড়ির লাইন লেগেই থাকে, সময়ও নষ্ট হয়।
দেশে তো বিদ্যুতেরও সংকট দেখা দিয়েছে। গাড়িগুলো বিদ্যুতে চলা শুরু করলে কী হয়, কে জানে!
সিদ্ধান্তগুলো নেওয়া উচিত ভেবেচিন্তে, বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে পরামর্শ করে। সেটা করা হলে ব্যাটারিচালিত রিকশা নিয়ে আন্দোলনের দুই দিনের মাথায় সরকারকে পিছু হটতে হতো না। আবার দেখুন, চালুর অল্পদিনের মধ্যেই জনপ্রিয় হয়ে ওঠা মেট্রোরেলের ভাড়া, যা বেশি বলে আগে থেকেই সমালোচনা রয়েছে, তার ওপর ভ্যাট বসাতে চায় রাজস্ব বোর্ড, ফলে ভাড়া আরও বাড়বে। এতে অসন্তুষ্ট সড়কমন্ত্রী, এটা যাতে না করা হয়, সে জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রীর শরণাপন্ন হয়েছেন। রাজস্ব বোর্ড কি সরকারের বাইরের কেউ? তারা কি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে না জানিয়ে এভাবে ভ্যাট বসানোর সিদ্ধান্ত নিতে পারে? কী একটা অবস্থা!
জমির মালিক হযরত শাহ্ আলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। তবে ওই জমিতে ৩৯১টি দোকান নির্মাণ করে কয়েক বছর ধরে ভাড়া নিচ্ছে হযরত শাহ্ আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজ। দোকানগুলোর ভাড়া থেকে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ৭০ লাখ টাকা ভ্যাটও দেওয়া হয়নি। বিষয়টি উঠে এসেছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) তদন্তে।
১ দিন আগেকুড়িগ্রাম পৌর শহরে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী ছোট ভাই নিহত ও বড় ভাই আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে মৎস্য খামারের কাছে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
৪ দিন আগেবৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগের মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১৮ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত শনিবার রাতে ও গতকাল রোববার তাঁরা গ্রেপ্তার হন।
৪ দিন আগেএক অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটেছে শিল্পকলা একাডেমিতে। শিল্পকলা একাডেমির তিনটি হলেই কিছুদিন আগেও নাটক চলত। নাট্যকর্মীদের সৃজনশীলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটত সেখানে। বহু পরিশ্রমে মাসের পর মাস নিজের খেয়ে, নিজের গাড়িভাড়া দিয়ে নাট্যকর্মীরা একেবারেই স্বেচ্ছাশ্রমে একটি শিল্প তিপ্পান্ন বছর ধরে গড়ে তুলেছেন। শিল্পকলা একাডেমি এখন
৮ দিন আগে