ভালোবেসে বিয়ে করেন কেশতা বানু ও আশরাফুল ইসলাম। সংসার জীবনের শুরুর দিকটা ভালোই কাটছিল তাঁদের। বিপত্তি ঘটে কেশতার কোলজুড়ে যখন ফুটফুটে কন্যাসন্তান আসে। কন্যাসন্তান জন্ম নেওয়ায় নানাভাবে নির্যাতন শুরু করেন আশরাফুল। একসময় যৌতুকের জন্য চাপ দিতে থাকেন। অস্বীকৃতি জানালে কেশতার ওপর চলে নির্যাতন।

ভালোবাসার মানুষের এমন নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে গত বুধবার রাতে থানায় মামলা দেন কেশতা। এ ঘটনায় পুলিশ আশরাফুলকে গতকাল বৃহস্পতিবার গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে পাঠিয়েছে।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, তারাগঞ্জের আলমপুর ইউনিয়নের পূর্বপাড়া গ্রামের কামরুল ইসলামের মেয়ে কেশতা ও আমির উদ্দিনের ছেলে আশরাফুলের ছয় বছর আগে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। একপর্যায়ে বিষয়টি পরিবারে লোকজন জানতে পারলে তাঁদের বিয়ে দেন। বিয়ের সময় কোনো যৌতুক লেনদেন হয়নি।

বিয়ের তিন বছর পরে সংসারে আসে আশরাফী খাতুন নামে এক কন্যা সন্তান। আশরাফী জন্মের পর থেকে কেশতাকে কারণে-অকারণে নির্যাতন করতেন আশরাফুল। বিভিন্ন সময় বাবার বাড়ি থেকে যৌতুক আনার জন্য চাপ দিতেন।

আশরাফুল ১৮ জানুয়ারি কেশতাকে তাঁর বাবার বাড়ি থেকে ১ লাখ টাকা যৌতুক বাবদ আনার জন্য চাপ দেন। এতে অস্বীকৃতি জানালে ওই দিন দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কেশতাকে মারধর করে মাথা ফাটিয়ে দেন আশরাফুল। স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় তারাগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন কেশতা।

এ ঘটনায় ভুক্তভোগী বুধবার রাতে বাদী হয়ে আশরাফুলকে আসামি করে তারাগঞ্জ থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। পুলিশ গতকাল সকালে আসামিকে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে থানাহাজতে আটক থাকার সময় আশরাফুল বলেন, ‘ভালোবাসার মানুষকে কি কেউ মারে? খুব টেনশনে ছিলাম, তাই একটু মারছি। আসলে এটা করা আমার ঠিক হয় নাই। ভুল বুঝতে পারছি।’

তারাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফারুক আহম্মেদ জানান, মামলাটি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে। আসামিকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।