ব্যাটারিচালিত শত শত অবৈধ অটোরিকশার কারণে অতিষ্ঠ লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ শহরবাসী। এসব অটোরিকশার কারণে শহরের প্রায় সর্বত্র ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজট লেগে থাকে। এসব সড়ক দিয়ে হাঁটাচলা করাও দায় বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। তা ছাড়া সরকারি কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে যত্রতত্র গড়ে উঠেছে অটোরিকশা গ্যারাজ।

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী জাহীদ হাসান পাবেল বলেন, ‘অধিকাংশ অটোরিকশাচালকেরই লাইসেন্স নেই। আর যতদূর জানি, এদের উপজেলা প্রশাসন, থানা-পুলিশ বা পৌর কর্তৃপক্ষ লাইসেন্স দেওয়ারও ক্ষমতা রাখে না। অটোরিকশা চলতে কোনো বাধা না থাকায় অপ্রাপ্তবয়স্ক শিশুরাও এখন অটোরিকশা চালাচ্ছে। শহরে সড়কগুলোতে শত শত অটোরিকশা।’

এ সময় তিনি দাবি করেন, একটি মহল অবৈধভাবে রিকশা সমিতি বা অটোরিকশা সমিতির নামে টাকা উত্তোলন করে একদিকে নিজেদের পকেট ভরে, অন্যদিকে চালকদের শক্তি জোগায়।

রাসেল মাহমুদ মাসুম নামের একজন বলেন, ‘গত শনিবার সকালে ঢাকা থেকে রামগঞ্জ শহরের সোনাপুর চৌরাস্তায় এসে যানজটের কবলে পড়ি। শত শত ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, সিএনজিচালিত অটোরিকশা আর বালুর ট্রাক। সব মিলিয়ে প্রায় ঘণ্টাখানেক গাড়িতেই বসে ছিলাম। বাধ্য হয়ে গাড়ি থেকে নেমে বাকি পথ হেঁটে বাড়ি গেছি।’

আবদুর রশিকদ নামের এক ব্যবসায়ীদের দাবি, রামগঞ্জে কত শত অটোরিকশা তা মনে হয় রামগঞ্জ পৌর কর্তৃপক্ষও জানে না। একটি মহলকে মাসিক মাসোহারা দিয়ে অটোরিকশা সড়কে চলতে অনুমতি দেওয়া হয়। সমিতির মাধ্যমে তোলা এসব টাকার ভাগ পাচ্ছে ক্ষমতাসীন দলের কিছু নেতা।

সরেজমিন রামগঞ্জ শহরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, রামগঞ্জ পুলিশ বক্স চত্বর, খাদ্যগুদাম গেট, বাইপাস সড়কের প্রতিটি হাসপাতালের সামনে, নুর প্লাজা চত্বর, জিয়া শপিং কমপ্লেক্স গেট, দক্ষিণ বাজার, মাছবাজার, পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় গেট, পুরোনো মাছ ও কাঁচা বাজার, সাবরেজিস্ট্রি অফিস গেট, মডেল স্কুল চৌরাস্তা, সোনাপুর মৌলভী বাজার, সোনাপুর চৌরাস্তা, সোনাপুর পুরোনো বাজার, মোরগ হাঁটা এলাকাসহ অর্ধশতাধিক এলাকায় অটোরিকশা পার্কিং এলাকা।

রামগঞ্জে কর্মরত ট্রাফিক পরিদর্শক আশরাফুল আলম বলেন, ‘আমার জানা নেই কীভাবে অটোরিকশা বা ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা সড়কে চলছে। তবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

রামগঞ্জ পৌরসভার মেয়র ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল খায়ের পাটোয়ারী বলেন, ‘আমরা পায়ে চালিত রিকশার ব্যাপারেও কোনো ব্যবস্থা নিইনি। ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা কীভাবে বাজারজাত করা হচ্ছে বা কীভাবে সড়কে চলছে সে ব্যাপারে আমি কিছুই জানি না।’

রামগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. এমদাদুল হক বলেন, ‘আমি কয়েক দিন আগে রামগঞ্জ থানায় যোগদান করেছি। খোঁজখবর নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও মেয়র মহোদয়ের সঙ্গে সমন্বয় করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাপ্তি চাকমা আজকের পত্রিকাকে জানান, শহরে প্রচুর অটোরিকশা। বেশির ভাগই ব্যাটারিচালিত। শিগগিরই এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।