বিজন সাহা
ইউক্রেনের সঙ্গে রাশিয়াকে যুদ্ধে নামানোর ক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্ররোচনার অনেকগুলো কারণের একটি ছিল নর্ড স্ট্রিম-২। (রাশিয়া থেকে জার্মানিতে প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহের পাইপলাইন) গত শতাব্দীর সত্তরের দশকে জার্মানি আর সোভিয়েত ইউনিয়নের মধ্যে গ্যাস সরবরাহের চুক্তি হলে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এর বিপক্ষে ছিল। কেননা, সোভিয়েত ইউনিয়নের সস্তা গ্যাস জার্মানির শিল্প বিকাশে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতা করার পথ খুলে দেয়। ফলে যখনই রাশিয়া ও জার্মানির সঙ্গে কোনো রকম অর্থনৈতিক, বিশেষ করে তেল ও গ্যাসের ব্যাপারে চুক্তি হয়েছে, তখনই বিভিন্নভাবে সেটা বন্ধ করার চেষ্টা করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। নর্থ স্ট্রিম-১ এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম ছিল না। কিন্তু তখন জার্মানির শাসকেরা যথেষ্ট সাহসের পরিচয় দিয়েছেন আর এর ফলে সে সময় পাইপলাইন তৈরি হয়েছে বাল্টিক সাগরের নিচ দিয়ে। ইউক্রেন আর বেলারুশ সোভিয়েত ইউনিয়নের অংশ বিধায় সে সময় পাইপলাইনগুলো এসব দেশের ওপর দিয়েই তৈরি করা হয়। কিন্তু সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর ইউক্রেন ও বেলারুশ সুযোগ পেলেই ট্রানজিট নিয়ে ঝামেলা করত। এমনকি ইউক্রেন ইউরোপের অন্য সব দেশের জন্য সরবরাহকৃত গ্যাস চুরি করত।
শিল্পের বিকাশের ফলে ইউরোপ, বিশেষ করে জার্মানি আরও বেশি বেশি গ্যাস কিনতে শুরু করে। আর এ জন্য ট্রানজিটের ক্ষেত্রে ইউক্রেনের স্যাবোটাজ মিনিমাইজ করতে বাল্টিক ও ব্ল্যাক সির নিচ দিয়ে যথাক্রমে নর্ড ও সাউথ স্ট্রিমের প্রকল্প গ্রহণ করে রাশিয়া। অন্য দিকে ‘শেল’ গ্যাসের উৎপাদন বাড়লে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও ইউরোপের বাজারের জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে। একসময় বুলগেরিয়ার মাধ্যমে সাউথ স্ট্রিমের কাজ স্থগিত রাখা হয়। কিন্তু জার্মানি নিজের স্বার্থে নর্ড স্ট্রিম কিছুতেই বন্ধ করতে রাজি হয় না। ফলে দরকার ছিল এমন কিছু করা, যাতে এই প্রকল্প বন্ধ হয়ে যায়। তাই রাশিয়াকে যুদ্ধে নামানো হয়। এ ছাড়া বাইডেন হুমকি পর্যন্ত দেন যে নর্ড স্ট্রিম-২ কিছুতেই চালু হতে দেবেন না।
২০২২ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর নর্ড স্ট্রিমে সন্ত্রাসী হামলা হয়। এর অর্থনৈতিক ও ইকোলজিক্যাল বা বাস্তুসংস্থানের ক্ষতি অপরিসীম ছিল। ফলে ওই এলাকার সামুদ্রিক প্রাণীর অর্ধেক ধ্বংস হয়ে যায়। এ কারণে পরিবেশের ওপর এর সুদূরপ্রসারী প্রভাব দেখবে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম। তবে এ নিয়ে পরিবেশবাদীদের মাথাব্যথা নেই। কারণ, ওয়াশিংটন থেকে অর্ডার আসেনি। প্রবলতার দিক থেকে এটা টুইন টাওয়ারের বিস্ফোরণকে ছাড়িয়ে গেছে।
ঘটনার পরপরই পশ্চিমা বিশ্ব রাশিয়ার ওপর দায় চাপানোর চেষ্টা করেছে। ইউরোপকে গ্যাস থেকে বঞ্চিত করতে রাশিয়া নিজেদের পাইপলাইন নিজেরাই ধ্বংস করেছে। তবে যুক্তিবাদী মানুষ সেটা প্রত্যাখ্যান করেছে। রাশিয়া থেকে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ হওয়ার ফলে সবচেয়ে বেশি লাভবান হয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। রাজনৈতিক, সামরিক ও অর্থনৈতিক নির্ভরতার পাশাপাশি জ্বালানি যোগ হওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওপর ইউরোপের নির্ভরতা আরও বেড়েছে। ফলে এই হামলার পেছনে তার স্বার্থ ও হাত দুটোই জড়িত—এমন ভাষ্য আগেই ছিল।
কিছুদিন আগে পুলিৎজার বিজয়ী সাংবাদিক সেইমুর হেরস দাবি করেছেন, বাইডেন ও তাঁর ঘনিষ্ঠ চক্র এই সন্ত্রাসী হামলার সঙ্গে জড়িত। তিনি তথ্য-প্রমাণসহ এই অভিযোগ তুলেছেন। যদিও কে তাঁকে এ খবর দিয়েছে, সেটা প্রকাশ করেননি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সেটা স্বাভাবিক কারণেই অস্বীকার করেছে। কিন্তু দুই দিন আগে তারা ইউক্রেনকে দোষী করেছে। বলেছে, ইউক্রেনকে সমর্থনকারী এক বা একাধিক গ্রুপ এর সঙ্গে জড়িত। তবে তাদের সঙ্গে জেলেনস্কির সম্পর্ক নেই। বাইডেন নিজেও এই সমর্থনকারীদের একজন। সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জানাল, অনেক আগেই তাদের কাছে এসব তথ্য ছিল। তারা এমনকি হামলার আগে জার্মানিকে হুঁশিয়ার করে দিয়েছিল। এসব থেকে একটা সত্যই বেরিয়ে আসে–অনেক কিছুর মতোই মিথ্যে বলাতেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আজকাল খুব একটা সুবিধা করতে পারছে না, মিথ্যাটাও দুই নম্বরি হয়ে যাচ্ছে বিশ্ববাসীর কাছে। আর একেই বলে পতন।
বিজন সাহা, শিক্ষক ও গবেষক
ইউক্রেনের সঙ্গে রাশিয়াকে যুদ্ধে নামানোর ক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্ররোচনার অনেকগুলো কারণের একটি ছিল নর্ড স্ট্রিম-২। (রাশিয়া থেকে জার্মানিতে প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহের পাইপলাইন) গত শতাব্দীর সত্তরের দশকে জার্মানি আর সোভিয়েত ইউনিয়নের মধ্যে গ্যাস সরবরাহের চুক্তি হলে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এর বিপক্ষে ছিল। কেননা, সোভিয়েত ইউনিয়নের সস্তা গ্যাস জার্মানির শিল্প বিকাশে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতা করার পথ খুলে দেয়। ফলে যখনই রাশিয়া ও জার্মানির সঙ্গে কোনো রকম অর্থনৈতিক, বিশেষ করে তেল ও গ্যাসের ব্যাপারে চুক্তি হয়েছে, তখনই বিভিন্নভাবে সেটা বন্ধ করার চেষ্টা করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। নর্থ স্ট্রিম-১ এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম ছিল না। কিন্তু তখন জার্মানির শাসকেরা যথেষ্ট সাহসের পরিচয় দিয়েছেন আর এর ফলে সে সময় পাইপলাইন তৈরি হয়েছে বাল্টিক সাগরের নিচ দিয়ে। ইউক্রেন আর বেলারুশ সোভিয়েত ইউনিয়নের অংশ বিধায় সে সময় পাইপলাইনগুলো এসব দেশের ওপর দিয়েই তৈরি করা হয়। কিন্তু সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর ইউক্রেন ও বেলারুশ সুযোগ পেলেই ট্রানজিট নিয়ে ঝামেলা করত। এমনকি ইউক্রেন ইউরোপের অন্য সব দেশের জন্য সরবরাহকৃত গ্যাস চুরি করত।
শিল্পের বিকাশের ফলে ইউরোপ, বিশেষ করে জার্মানি আরও বেশি বেশি গ্যাস কিনতে শুরু করে। আর এ জন্য ট্রানজিটের ক্ষেত্রে ইউক্রেনের স্যাবোটাজ মিনিমাইজ করতে বাল্টিক ও ব্ল্যাক সির নিচ দিয়ে যথাক্রমে নর্ড ও সাউথ স্ট্রিমের প্রকল্প গ্রহণ করে রাশিয়া। অন্য দিকে ‘শেল’ গ্যাসের উৎপাদন বাড়লে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও ইউরোপের বাজারের জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে। একসময় বুলগেরিয়ার মাধ্যমে সাউথ স্ট্রিমের কাজ স্থগিত রাখা হয়। কিন্তু জার্মানি নিজের স্বার্থে নর্ড স্ট্রিম কিছুতেই বন্ধ করতে রাজি হয় না। ফলে দরকার ছিল এমন কিছু করা, যাতে এই প্রকল্প বন্ধ হয়ে যায়। তাই রাশিয়াকে যুদ্ধে নামানো হয়। এ ছাড়া বাইডেন হুমকি পর্যন্ত দেন যে নর্ড স্ট্রিম-২ কিছুতেই চালু হতে দেবেন না।
২০২২ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর নর্ড স্ট্রিমে সন্ত্রাসী হামলা হয়। এর অর্থনৈতিক ও ইকোলজিক্যাল বা বাস্তুসংস্থানের ক্ষতি অপরিসীম ছিল। ফলে ওই এলাকার সামুদ্রিক প্রাণীর অর্ধেক ধ্বংস হয়ে যায়। এ কারণে পরিবেশের ওপর এর সুদূরপ্রসারী প্রভাব দেখবে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম। তবে এ নিয়ে পরিবেশবাদীদের মাথাব্যথা নেই। কারণ, ওয়াশিংটন থেকে অর্ডার আসেনি। প্রবলতার দিক থেকে এটা টুইন টাওয়ারের বিস্ফোরণকে ছাড়িয়ে গেছে।
ঘটনার পরপরই পশ্চিমা বিশ্ব রাশিয়ার ওপর দায় চাপানোর চেষ্টা করেছে। ইউরোপকে গ্যাস থেকে বঞ্চিত করতে রাশিয়া নিজেদের পাইপলাইন নিজেরাই ধ্বংস করেছে। তবে যুক্তিবাদী মানুষ সেটা প্রত্যাখ্যান করেছে। রাশিয়া থেকে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ হওয়ার ফলে সবচেয়ে বেশি লাভবান হয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। রাজনৈতিক, সামরিক ও অর্থনৈতিক নির্ভরতার পাশাপাশি জ্বালানি যোগ হওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওপর ইউরোপের নির্ভরতা আরও বেড়েছে। ফলে এই হামলার পেছনে তার স্বার্থ ও হাত দুটোই জড়িত—এমন ভাষ্য আগেই ছিল।
কিছুদিন আগে পুলিৎজার বিজয়ী সাংবাদিক সেইমুর হেরস দাবি করেছেন, বাইডেন ও তাঁর ঘনিষ্ঠ চক্র এই সন্ত্রাসী হামলার সঙ্গে জড়িত। তিনি তথ্য-প্রমাণসহ এই অভিযোগ তুলেছেন। যদিও কে তাঁকে এ খবর দিয়েছে, সেটা প্রকাশ করেননি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সেটা স্বাভাবিক কারণেই অস্বীকার করেছে। কিন্তু দুই দিন আগে তারা ইউক্রেনকে দোষী করেছে। বলেছে, ইউক্রেনকে সমর্থনকারী এক বা একাধিক গ্রুপ এর সঙ্গে জড়িত। তবে তাদের সঙ্গে জেলেনস্কির সম্পর্ক নেই। বাইডেন নিজেও এই সমর্থনকারীদের একজন। সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জানাল, অনেক আগেই তাদের কাছে এসব তথ্য ছিল। তারা এমনকি হামলার আগে জার্মানিকে হুঁশিয়ার করে দিয়েছিল। এসব থেকে একটা সত্যই বেরিয়ে আসে–অনেক কিছুর মতোই মিথ্যে বলাতেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আজকাল খুব একটা সুবিধা করতে পারছে না, মিথ্যাটাও দুই নম্বরি হয়ে যাচ্ছে বিশ্ববাসীর কাছে। আর একেই বলে পতন।
বিজন সাহা, শিক্ষক ও গবেষক
জমির মালিক হযরত শাহ্ আলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। তবে ওই জমিতে ৩৯১টি দোকান নির্মাণ করে কয়েক বছর ধরে ভাড়া নিচ্ছে হযরত শাহ্ আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজ। দোকানগুলোর ভাড়া থেকে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ৭০ লাখ টাকা ভ্যাটও দেওয়া হয়নি। বিষয়টি উঠে এসেছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) তদন্তে।
২ দিন আগেকুড়িগ্রাম পৌর শহরে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী ছোট ভাই নিহত ও বড় ভাই আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে মৎস্য খামারের কাছে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
৫ দিন আগেবৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগের মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১৮ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত শনিবার রাতে ও গতকাল রোববার তাঁরা গ্রেপ্তার হন।
৫ দিন আগেএক অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটেছে শিল্পকলা একাডেমিতে। শিল্পকলা একাডেমির তিনটি হলেই কিছুদিন আগেও নাটক চলত। নাট্যকর্মীদের সৃজনশীলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটত সেখানে। বহু পরিশ্রমে মাসের পর মাস নিজের খেয়ে, নিজের গাড়িভাড়া দিয়ে নাট্যকর্মীরা একেবারেই স্বেচ্ছাশ্রমে একটি শিল্প তিপ্পান্ন বছর ধরে গড়ে তুলেছেন। শিল্পকলা একাডেমি এখন
৯ দিন আগে