তাপস মজুমদার
নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির মধ্যে যদি সারবত্তা কিছু থাকে তাহলে তা ভোটারদের মনোযোগ আকর্ষণ করে। সেটা কখনো কখনো চমক আকারেও উত্থাপিত হয়। কিন্তু রাজশাহীর রানিং মেয়রের প্রতিশ্রুতিকে নিছক চমক ভাবার কিছু নেই। একসময় রাজশাহীতে ঘোড়ার গাড়ি চলত। পথঘাট ধূলিধূসরিত হয়ে থাকত। পদ্মা নদীর চরের মিহি বালু বাতাসে ভেসে থাকত, যা আকাশকে মেঘাচ্ছন্ন ধূসর করে রাখত। একটু হাঁ করলেই মুখে বালুর স্বাদ। সরু সরু পথ। ছোট ছোট রাস্তায় সড়ক বিভাজকের তো প্রশ্নই নেই। কোনো ফুটপাতও নেই। রাস্তার মোড়গুলো সংকুচিত। যেখানে-সেখানে বাড়ির বর্জ্য। রাস্তার পাশে নর্দমাগুলো সরু অথবা নর্দমা নেই। হাইরাইজ বিল্ডিং বলতে একমাত্র সাধারণ বিমার ১০তলা ভবন। সেসব এখন বাসি খবর।
২০০৯ সাল থেকে রাজশাহীর সেই চিত্র বদলাতে থাকে। এখন সেই রাজশাহীকে কল্পনায় আনা কিছুটা কঠিন। সড়ক বিভাজক, ফুটপাত, সড়কদ্বীপ, মোড়ে মোড়ে চত্বর, ম্যুরাল, নানা প্রজাতির স্থায়ী বৃক্ষ, ১০ লক্ষাধিক সৌন্দর্যবর্ধক হেজজাতীয় বৃক্ষ। এখন বাড়ি থেকে বর্জ্য সংগ্রহ করা হয় নিয়মিত। দিনে এবং রাতে রাস্তাঘাট ঝাড়ু দেওয়া হয়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে রাতেই বর্জ্য অপসারণ করা হয়। ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে বিনা মূল্যে ডাস্টবিন দেওয়া হয় (যদিও সচেতনতার অভাবে অনেকে সেই ডাস্টবিন ব্যবহার করেন না)। বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অংশ হিসেবে রাজশাহী শহরে ১২টি সেকেন্ডারি ট্রান্সফার স্টেশন (এসটিএস) স্থাপিত হয়েছে। মহানগরীতে চার লেন সড়কের এখন ছড়াছড়ি। কোনো কোনোটি-বা ছয় লেনের। ইতিমধ্যে দুটো ফ্লাইওভার তৈরি হয়েছে। পাড়া-মহল্লার গলির রাস্তা ও মোড়গুলো প্রশস্ত হয়েছে। বঙ্গবন্ধু নভোথিয়েটার, শেখ রাসেল শিশুপার্ক, এ এইচ এম কামারুজ্জামান কেন্দ্রীয় উদ্যান ও চিড়িয়াখানার সংস্কার, পদ্মা নদীর তীর ঘিরে দৃষ্টিনন্দন সেতু ও ওয়াকওয়ে, বিচ বাইক ও বিচ চেয়ার সংযোজন, পদ্মার তীর ঘেঁষে কয়েকটি খোলামঞ্চ, লালন পার্ক ও ভুবন মোহন পার্ক সংস্কারের মাধ্যমে বিনোদনকেন্দ্রগুলোর উন্নয়ন করা হয়েছে।
শিক্ষা নগরী রাজশাহীতে নতুন করে একটি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, যে প্রকল্পের কাজ চলমান। পক্ষাঘাতগ্রস্তদের পুনর্বাসন কেন্দ্র সিআরপি প্রতিষ্ঠা করার জন্য মেয়র লিটন ১৫ বিঘা জমি দান করেছেন। নগরীর গুরুত্বপূর্ণ ১৯টি মোড়ে হাই মাস্ট পোলে এলইডি বাতির সংযোগ করে শহরকে আলোকিত করা হয়েছে। ফোর লেন সড়কগুলোতে ডেকোরেটিভ ও দৃষ্টিনন্দন বিদ্যুৎসাশ্রয়ী সড়কবাতি স্থাপন করা হয়েছে। রাজশাহী শহর রাতেও এখন দিনের মতো আলোকিত হয়ে থাকে। বাতাসে ক্ষতিকারক ধূলিকণা ও কার্বন ডাই-অক্সাইড কমানোয় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে এই নগরী সেরা নগরীর স্বীকৃতি পেয়েছে এবং এশিয়ার অন্যতম পরিচ্ছন্ন শহরের স্বীকৃতি অর্জন করেছে। এ রকম অজস্র কাজ এক দশকের বেশি সময় ধরে রাজশাহীতে সম্পন্ন হয়েছে, যা রাজশাহীবাসীর জীবনযাপনকে অনেক স্বচ্ছন্দ ও আনন্দময় করেছে।
এসবের অবদান রানিং মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটনের—এ কথা বলতে রাজশাহীবাসী দ্বিধা করেন না। খায়রুজ্জামান লিটনের একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য রয়েছে, তিনি বছরে বেশ কয়েকবার নগরীর বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। ব্যবসায়ী, সংস্কৃতিকর্মী, খেলোয়াড়, ব্যাংকার, সাংবাদিক, রাজনীতিবিদ, পেশাজীবী—সবার সঙ্গে। কোনো সন্দেহ নেই যে একটি নগরীর উন্নয়নের জন্য এটা অত্যন্ত কার্যকর ও আধুনিক উদ্যোগ। যদিও শুভবুদ্ধির কিছু মানুষ প্রত্যাশা করেন প্রতি তিন মাসে জনগণকে নিয়ে নিয়মিত এ ধরনের মতবিনিময়ের মাধ্যমে উন্নয়ন কার্যক্রমের পর্যালোচনা করলে আরও ভালো হয়।
মোটাদাগে ইশতেহার পর্যালোচনা করলে, খায়রুজ্জামান লিটন সামনে আবারও মেয়র নির্বাচিত হলে যা যা করতে চান তার মধ্যে এক নম্বরে রেখেছেন ব্যাপক কর্মসংস্থান, বেকারত্ব হ্রাস ও উদ্যোক্তা সৃষ্টি। বলা বাহুল্য, নগরী সুসজ্জিত হওয়ার পাশাপাশি মানুষের কর্মসংস্থানের প্রশ্নটি খুবই প্রাসঙ্গিক। রাজশাহী বা এর আশপাশে তেমন কোনো শিল্প কলকারখানা গড়ে ওঠেনি, যেখানে ব্যাপকসংখ্যক মানুষের কর্মসংস্থান হতে পারে। আমরা জানি, এখানকার পাটকল, রেশম কারখানা এবং চিনিকল ইতিমধ্যে বন্ধ হয়ে আছে।
তিনি তাঁর ইশতেহারে আরও কিছু কাজ করার ঘোষণা দিয়েছেন। অর্থনৈতিক, সামাজিক, মানবিক, শান্তিময় ও সমৃদ্ধ মহানগরী গড়ে তোলার অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছেন। বরেন্দ্র অঞ্চলভিত্তিক আকর্ষণীয় পর্যটনকেন্দ্র প্রতিষ্ঠা, শিক্ষা ও সংস্কৃতিসমৃদ্ধ মহানগরীর বিশেষত্ব অর্জন, মহানগরীর ক্ষেত্র ৯৬ থেকে বাড়িয়ে ৩৫০ বর্গকিলোমিটার করা, পদ্মার চরে রিভার সিটি নির্মাণ, রাজশাহী থেকে কলকাতায় সরাসরি বিমান, বাস, ট্রেন এবং নদীপথে চলাচলের ব্যবস্থা করা ইত্যাদি।
তিনি উল্লিখিত প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করতে পারবেন—জনগণের মধ্যে এ রকম বিশ্বাস জন্মানোর যথেষ্ট কারণ আছে। তবে বাংলাদেশের শহরগুলোর মধ্যে মডেল হিসেবে স্থান পাওয়া রাজশাহীতে আবার দায়িত্ব পেলে মননশীল মানুষ গড়ে তোলার জন্য ‘ক্রীড়া-সংস্কৃতি ও মননচর্চার ক্ষেত্র সম্প্রসারণের’ আট নম্বর পয়েন্টে—নগরীর প্রতিটি ওয়ার্ডে একটি করে বহুমুখী সুবিধাসম্পন্ন ‘নাগরিক কেন্দ্র’ গড়ে তোলার যে প্রতিশ্রুতি তিনি দিয়েছেন, যেখানে অডিটোরিয়াম ও কমিউনিটি সেন্টারের ব্যবস্থা থাকবে, এটা বাস্তবায়ন করে বাংলাদেশে আরেকটি মডেল স্থাপন করবেন বলে আমরা বিশ্বাস করতে চাই। কেননা আমরা লক্ষ করছি, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক দিক থেকে যত এগোচ্ছে মানবিক, সামাজিক, দায়িত্বশীলতা ও জ্ঞানচর্চার দিকে ততটাই বিমুখ থাকছে। ওই সব নাগরিক কেন্দ্রে নিয়মিতভাবে শিশু-কিশোরদের বই পড়া, ছবি আঁকা, কবিতা আবৃত্তি, নাটক, সংগীত, সাঁতারসহ খেলাধুলার চর্চা করার মাধ্যমে সৎ, সহজ ও বলিষ্ঠ জীবনযাপনে উদ্বুদ্ধ করা গেলে সমাজের মৌলিক উন্নয়ন গতি পাবে। একটি বিবেকবান, অসাম্প্রদায়িক, দরদি ও অর্থপূর্ণ সমাজ গড়ে উঠবে।
উন্নয়ন চাহিদার কোনো শেষ নেই। এটা ক্রম চলমান। তবে ২০০৮ থেকে ২০১৩ এবং ২০১৮ থেকে ২০২৩ এই দুই মেয়াদে খাররুজ্জামান লিটন মেয়র হিসেবে যে সামর্থ্য ও সক্ষমতা দেখিয়েছেন তাতে মানুষের মনে তাঁর পারঙ্গমতা সম্পর্কে আস্থা এবং বিশ্বাস তৈরি হয়েছে। জনপ্রতিনিধি যে মূলত জনগণের কাজের জন্য এবং চাইলে যে কাজ করে এলাকার উন্নয়ন ঘটানো যায়, সে কথা তিনি স্পষ্ট করে বুঝিয়ে দিতে পেরেছেন।
রাজশাহীতে চারজন মেয়র প্রার্থী আছেন। সবাই চাইবেন জয়ী হতে। এবার হোক আর ভবিষ্যতে—দায়িত্ব যাঁরাই গ্রহণ করবেন, বাস্তবভিত্তিক প্রতিশ্রুতি দিয়ে এবং সেগুলো বাস্তবায়নের দৃষ্টান্ত স্থাপন করে মানুষের হৃদয় জয় করবেন, এই প্রত্যাশা এবং সবার জন্য আমাদের শুভকামনা থাকবে।
লেখক: সংস্কৃতিকর্মী ও সাবেক ব্যাংকার
নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির মধ্যে যদি সারবত্তা কিছু থাকে তাহলে তা ভোটারদের মনোযোগ আকর্ষণ করে। সেটা কখনো কখনো চমক আকারেও উত্থাপিত হয়। কিন্তু রাজশাহীর রানিং মেয়রের প্রতিশ্রুতিকে নিছক চমক ভাবার কিছু নেই। একসময় রাজশাহীতে ঘোড়ার গাড়ি চলত। পথঘাট ধূলিধূসরিত হয়ে থাকত। পদ্মা নদীর চরের মিহি বালু বাতাসে ভেসে থাকত, যা আকাশকে মেঘাচ্ছন্ন ধূসর করে রাখত। একটু হাঁ করলেই মুখে বালুর স্বাদ। সরু সরু পথ। ছোট ছোট রাস্তায় সড়ক বিভাজকের তো প্রশ্নই নেই। কোনো ফুটপাতও নেই। রাস্তার মোড়গুলো সংকুচিত। যেখানে-সেখানে বাড়ির বর্জ্য। রাস্তার পাশে নর্দমাগুলো সরু অথবা নর্দমা নেই। হাইরাইজ বিল্ডিং বলতে একমাত্র সাধারণ বিমার ১০তলা ভবন। সেসব এখন বাসি খবর।
২০০৯ সাল থেকে রাজশাহীর সেই চিত্র বদলাতে থাকে। এখন সেই রাজশাহীকে কল্পনায় আনা কিছুটা কঠিন। সড়ক বিভাজক, ফুটপাত, সড়কদ্বীপ, মোড়ে মোড়ে চত্বর, ম্যুরাল, নানা প্রজাতির স্থায়ী বৃক্ষ, ১০ লক্ষাধিক সৌন্দর্যবর্ধক হেজজাতীয় বৃক্ষ। এখন বাড়ি থেকে বর্জ্য সংগ্রহ করা হয় নিয়মিত। দিনে এবং রাতে রাস্তাঘাট ঝাড়ু দেওয়া হয়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে রাতেই বর্জ্য অপসারণ করা হয়। ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে বিনা মূল্যে ডাস্টবিন দেওয়া হয় (যদিও সচেতনতার অভাবে অনেকে সেই ডাস্টবিন ব্যবহার করেন না)। বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অংশ হিসেবে রাজশাহী শহরে ১২টি সেকেন্ডারি ট্রান্সফার স্টেশন (এসটিএস) স্থাপিত হয়েছে। মহানগরীতে চার লেন সড়কের এখন ছড়াছড়ি। কোনো কোনোটি-বা ছয় লেনের। ইতিমধ্যে দুটো ফ্লাইওভার তৈরি হয়েছে। পাড়া-মহল্লার গলির রাস্তা ও মোড়গুলো প্রশস্ত হয়েছে। বঙ্গবন্ধু নভোথিয়েটার, শেখ রাসেল শিশুপার্ক, এ এইচ এম কামারুজ্জামান কেন্দ্রীয় উদ্যান ও চিড়িয়াখানার সংস্কার, পদ্মা নদীর তীর ঘিরে দৃষ্টিনন্দন সেতু ও ওয়াকওয়ে, বিচ বাইক ও বিচ চেয়ার সংযোজন, পদ্মার তীর ঘেঁষে কয়েকটি খোলামঞ্চ, লালন পার্ক ও ভুবন মোহন পার্ক সংস্কারের মাধ্যমে বিনোদনকেন্দ্রগুলোর উন্নয়ন করা হয়েছে।
শিক্ষা নগরী রাজশাহীতে নতুন করে একটি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, যে প্রকল্পের কাজ চলমান। পক্ষাঘাতগ্রস্তদের পুনর্বাসন কেন্দ্র সিআরপি প্রতিষ্ঠা করার জন্য মেয়র লিটন ১৫ বিঘা জমি দান করেছেন। নগরীর গুরুত্বপূর্ণ ১৯টি মোড়ে হাই মাস্ট পোলে এলইডি বাতির সংযোগ করে শহরকে আলোকিত করা হয়েছে। ফোর লেন সড়কগুলোতে ডেকোরেটিভ ও দৃষ্টিনন্দন বিদ্যুৎসাশ্রয়ী সড়কবাতি স্থাপন করা হয়েছে। রাজশাহী শহর রাতেও এখন দিনের মতো আলোকিত হয়ে থাকে। বাতাসে ক্ষতিকারক ধূলিকণা ও কার্বন ডাই-অক্সাইড কমানোয় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে এই নগরী সেরা নগরীর স্বীকৃতি পেয়েছে এবং এশিয়ার অন্যতম পরিচ্ছন্ন শহরের স্বীকৃতি অর্জন করেছে। এ রকম অজস্র কাজ এক দশকের বেশি সময় ধরে রাজশাহীতে সম্পন্ন হয়েছে, যা রাজশাহীবাসীর জীবনযাপনকে অনেক স্বচ্ছন্দ ও আনন্দময় করেছে।
এসবের অবদান রানিং মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটনের—এ কথা বলতে রাজশাহীবাসী দ্বিধা করেন না। খায়রুজ্জামান লিটনের একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য রয়েছে, তিনি বছরে বেশ কয়েকবার নগরীর বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। ব্যবসায়ী, সংস্কৃতিকর্মী, খেলোয়াড়, ব্যাংকার, সাংবাদিক, রাজনীতিবিদ, পেশাজীবী—সবার সঙ্গে। কোনো সন্দেহ নেই যে একটি নগরীর উন্নয়নের জন্য এটা অত্যন্ত কার্যকর ও আধুনিক উদ্যোগ। যদিও শুভবুদ্ধির কিছু মানুষ প্রত্যাশা করেন প্রতি তিন মাসে জনগণকে নিয়ে নিয়মিত এ ধরনের মতবিনিময়ের মাধ্যমে উন্নয়ন কার্যক্রমের পর্যালোচনা করলে আরও ভালো হয়।
মোটাদাগে ইশতেহার পর্যালোচনা করলে, খায়রুজ্জামান লিটন সামনে আবারও মেয়র নির্বাচিত হলে যা যা করতে চান তার মধ্যে এক নম্বরে রেখেছেন ব্যাপক কর্মসংস্থান, বেকারত্ব হ্রাস ও উদ্যোক্তা সৃষ্টি। বলা বাহুল্য, নগরী সুসজ্জিত হওয়ার পাশাপাশি মানুষের কর্মসংস্থানের প্রশ্নটি খুবই প্রাসঙ্গিক। রাজশাহী বা এর আশপাশে তেমন কোনো শিল্প কলকারখানা গড়ে ওঠেনি, যেখানে ব্যাপকসংখ্যক মানুষের কর্মসংস্থান হতে পারে। আমরা জানি, এখানকার পাটকল, রেশম কারখানা এবং চিনিকল ইতিমধ্যে বন্ধ হয়ে আছে।
তিনি তাঁর ইশতেহারে আরও কিছু কাজ করার ঘোষণা দিয়েছেন। অর্থনৈতিক, সামাজিক, মানবিক, শান্তিময় ও সমৃদ্ধ মহানগরী গড়ে তোলার অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছেন। বরেন্দ্র অঞ্চলভিত্তিক আকর্ষণীয় পর্যটনকেন্দ্র প্রতিষ্ঠা, শিক্ষা ও সংস্কৃতিসমৃদ্ধ মহানগরীর বিশেষত্ব অর্জন, মহানগরীর ক্ষেত্র ৯৬ থেকে বাড়িয়ে ৩৫০ বর্গকিলোমিটার করা, পদ্মার চরে রিভার সিটি নির্মাণ, রাজশাহী থেকে কলকাতায় সরাসরি বিমান, বাস, ট্রেন এবং নদীপথে চলাচলের ব্যবস্থা করা ইত্যাদি।
তিনি উল্লিখিত প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করতে পারবেন—জনগণের মধ্যে এ রকম বিশ্বাস জন্মানোর যথেষ্ট কারণ আছে। তবে বাংলাদেশের শহরগুলোর মধ্যে মডেল হিসেবে স্থান পাওয়া রাজশাহীতে আবার দায়িত্ব পেলে মননশীল মানুষ গড়ে তোলার জন্য ‘ক্রীড়া-সংস্কৃতি ও মননচর্চার ক্ষেত্র সম্প্রসারণের’ আট নম্বর পয়েন্টে—নগরীর প্রতিটি ওয়ার্ডে একটি করে বহুমুখী সুবিধাসম্পন্ন ‘নাগরিক কেন্দ্র’ গড়ে তোলার যে প্রতিশ্রুতি তিনি দিয়েছেন, যেখানে অডিটোরিয়াম ও কমিউনিটি সেন্টারের ব্যবস্থা থাকবে, এটা বাস্তবায়ন করে বাংলাদেশে আরেকটি মডেল স্থাপন করবেন বলে আমরা বিশ্বাস করতে চাই। কেননা আমরা লক্ষ করছি, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক দিক থেকে যত এগোচ্ছে মানবিক, সামাজিক, দায়িত্বশীলতা ও জ্ঞানচর্চার দিকে ততটাই বিমুখ থাকছে। ওই সব নাগরিক কেন্দ্রে নিয়মিতভাবে শিশু-কিশোরদের বই পড়া, ছবি আঁকা, কবিতা আবৃত্তি, নাটক, সংগীত, সাঁতারসহ খেলাধুলার চর্চা করার মাধ্যমে সৎ, সহজ ও বলিষ্ঠ জীবনযাপনে উদ্বুদ্ধ করা গেলে সমাজের মৌলিক উন্নয়ন গতি পাবে। একটি বিবেকবান, অসাম্প্রদায়িক, দরদি ও অর্থপূর্ণ সমাজ গড়ে উঠবে।
উন্নয়ন চাহিদার কোনো শেষ নেই। এটা ক্রম চলমান। তবে ২০০৮ থেকে ২০১৩ এবং ২০১৮ থেকে ২০২৩ এই দুই মেয়াদে খাররুজ্জামান লিটন মেয়র হিসেবে যে সামর্থ্য ও সক্ষমতা দেখিয়েছেন তাতে মানুষের মনে তাঁর পারঙ্গমতা সম্পর্কে আস্থা এবং বিশ্বাস তৈরি হয়েছে। জনপ্রতিনিধি যে মূলত জনগণের কাজের জন্য এবং চাইলে যে কাজ করে এলাকার উন্নয়ন ঘটানো যায়, সে কথা তিনি স্পষ্ট করে বুঝিয়ে দিতে পেরেছেন।
রাজশাহীতে চারজন মেয়র প্রার্থী আছেন। সবাই চাইবেন জয়ী হতে। এবার হোক আর ভবিষ্যতে—দায়িত্ব যাঁরাই গ্রহণ করবেন, বাস্তবভিত্তিক প্রতিশ্রুতি দিয়ে এবং সেগুলো বাস্তবায়নের দৃষ্টান্ত স্থাপন করে মানুষের হৃদয় জয় করবেন, এই প্রত্যাশা এবং সবার জন্য আমাদের শুভকামনা থাকবে।
লেখক: সংস্কৃতিকর্মী ও সাবেক ব্যাংকার
জমির মালিক হযরত শাহ্ আলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। তবে ওই জমিতে ৩৯১টি দোকান নির্মাণ করে কয়েক বছর ধরে ভাড়া নিচ্ছে হযরত শাহ্ আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজ। দোকানগুলোর ভাড়া থেকে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ৭০ লাখ টাকা ভ্যাটও দেওয়া হয়নি। বিষয়টি উঠে এসেছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) তদন্তে।
১ দিন আগেকুড়িগ্রাম পৌর শহরে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী ছোট ভাই নিহত ও বড় ভাই আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে মৎস্য খামারের কাছে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
৫ দিন আগেবৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগের মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১৮ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত শনিবার রাতে ও গতকাল রোববার তাঁরা গ্রেপ্তার হন।
৫ দিন আগেএক অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটেছে শিল্পকলা একাডেমিতে। শিল্পকলা একাডেমির তিনটি হলেই কিছুদিন আগেও নাটক চলত। নাট্যকর্মীদের সৃজনশীলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটত সেখানে। বহু পরিশ্রমে মাসের পর মাস নিজের খেয়ে, নিজের গাড়িভাড়া দিয়ে নাট্যকর্মীরা একেবারেই স্বেচ্ছাশ্রমে একটি শিল্প তিপ্পান্ন বছর ধরে গড়ে তুলেছেন। শিল্পকলা একাডেমি এখন
৯ দিন আগে