বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলের ভরাডুবির ময়নাতদন্ত চলছে এখন। ব্যর্থতার পেছনে দেশের দুর্বল ক্রিকেট-কাঠামো, ভঙ্গুর সংস্কৃতি, চন্ডিকা হাথুরুসিংহের ভূমিকা, বিশ্বকাপের আগে করা সাকিব-তামিমের বিস্ফোরক সব মন্তব্যসহ অনেক বিষয়ই এসেছে। তবে টেকনিক্যাল বিষয়গুলো একটু কমই আসছে। সেটিই গতকাল সবিস্তারে বিশ্লেষণ করলেন শ্রীধরন শ্রীরাম, যিনি এবার দলে কাজ করেছেন কনসালট্যান্ট হিসেবে। তাঁর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন রানা আব্বাস।
প্রশ্ন: ২০২৩ বিশ্বকাপে ব্যর্থতার ব্যাখ্যা কী?
শ্রীধরন শ্রীরাম: ভারতীয় কন্ডিশনে আপনাকে অনেক রান করতে হবে, বড় স্কোর গড়তে হবে। যারা সেমিফাইনালে উঠেছে, প্রতিটি দল বড় বড় স্কোর গড়েছে। তাদের ব্যাটাররা শুধু সেঞ্চুরি করেই থামেননি, ১২০, ১৪০ কিংবা তারও বেশি রানের ইনিংস খেলেছেন। এখানে বাংলাদেশকে কাজ করতে হবে, কীভাবে আমাদের ব্যাটাররা এই ইনিংস খেলতে পারেন। ৩০-৪০ রানে খুশি হওয়া যাবে না। এটা কীভাবে বড় ইনিংসে রূপান্তর করা যায়, কীভাবে সেঞ্চুরিতে রূপ দেওয়া যায়।
প্রশ্ন: দেশে নিয়মিত ভালো উইকেটে না খেলার ফল এটা?
শ্রীরাম: আমি বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেট সম্পর্কে খুব একটা অবগত নই। খুব একটা অভিজ্ঞতা নেই তাদের ঘরোয়া ক্রিকেটে কাজ করার। কাজ করেছি শুধু বাংলাদেশ দলের সঙ্গে এবং অ্যাসাইনমেন্টগুলোও ছিল সব বাংলাদেশের বাইরে। তবে বলতে চাই, দেশের বাইরে জয়ের অভ্যাসটা তৈরি করতে হবে। দেশের বাইরে যখন জয়ের অভ্যাস তৈরি হবে, তখনই আমাদের মধ্যে বিশ্বাস তৈরি হবে যে আমরা বিশ্বকাপেও ভালো করতে পারব। ভারতকে দেখুন, তারা যখন দেশের বাইরে জেতার অভ্যাস তৈরি করল, তখনই নিয়মিত বিশ্বকাপের শিরোপার দাবিদার হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠা করল।
প্রশ্ন: এবার ব্যাটিং অর্ডারে যে পরীক্ষা-নিরীক্ষা বা পজিশনে অদলবদল হয়েছে, বিশ্বকাপের মঞ্চে এটা কি খুব জরুরি ছিল?
শ্রীরাম: এটা আসলে বিশ্বকাপের আগে আলোচনার বিষয়। আমি জানি না, বিষয়টি নিয়ে বিশ্বকাপের আগে কী ধরনের আলোচনা হয়েছিল। তবে আমার যেটা মনে হয়েছে, এখানে মেহেদী হাসান মিরাজের ব্যাটিং সম্ভাবনাটা সর্বোচ্চ কাজে লাগানোর চেষ্টা করা হয়েছে, যেহেতু সে ৮ নম্বরে খুব ভালো পাওয়ার হিটার নয়। কিন্তু সে যদি ওপরে খেলে, তাহলে একটা ভালো জুটি গড়তে পারবে, তাতে দলের চাপটা কমবে। স্ট্রাইক রোটেট করতে পারবে। এই কাজ সে ভালো করতে পারে। টিম ম্যানেজমেন্টের ভাবনা ছিল তার সম্ভাবনা সর্বোচ্চ কাজে লাগাতে। এতে আমাদের ব্যাটিংয়ের গভীরতা বাড়াতে সহায়তা করবে। পরের দিকে তাওহীদ হৃদয় ছিল, মাহমুদউল্লাহর মতো অভিজ্ঞ ব্যাটার ছিল। আসলে মিরাজের ব্যাটিং সম্ভাবনা সর্বোচ্চ কাজে লাগাতে এই চিন্তা করা হয়েছিল। কারণ, সে একজন ভালো অলরাউন্ডার।
প্রশ্ন: এই বিশ্বকাপে শর্ট বলে সবচেয়ে বেশি উইকেট দিয়েছেন বাংলাদেশের ব্যাটাররা। এটার ব্যাখ্যা কী?
শ্রীরাম: আমি ফুটেজ দেখেছি, মনে হয়েছে অর্ধেকই শর্ট বল নয়। বিশেষ করে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে আউটের ধরনগুলো দেখে মনে হলো ঠিক শর্ট বল নয়, ব্যাক অব লেংথের বলে আউট হয়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকা, নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়ার বোলারদের মূল শক্তিই এটা, যারা বুক উচ্চতায় বল করতে পারদর্শী। এ ধরনের বোলারদের বিপক্ষে শুধু টিকে থাকাই নয়, রান করাও জানতে হবে। আমি নিশ্চিত, এই দুর্বলতা নিয়ে টিম ম্যানেজমেন্ট কাজ করবে। এ কারণে বলছি, শীর্ষ দলগুলোর সঙ্গে নিয়মিত অ্যাওয়ে কন্ডিশনে খেলতে হবে এবং জেতার অভ্যাস তৈরি করতে হবে। যখন দক্ষিণ আফ্রিকা, নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়ার মতো দলগুলোর সঙ্গে দেশের বাইরে বেশি বেশি খেলবে... তবে মনে করি দলের সবাই শর্ট বলে দুর্বল নয়। মুশফিক, শান্তর মতো আরও অনেক ব্যাটার আছে দলে, যারা শর্ট বলের বিপক্ষে ভালো ব্যাটিং করে।
প্রশ্ন: সাকিব আল হাসানও এই বিশ্বকাপে চার-পাঁচবার শর্ট বলে আউট হয়েছেন।
শ্রীরাম: কখনো কখনো দ্রুত লেংথ পড়তে একটু সমস্যা হয়। এটার মানে এই নয় যে শর্ট বলে দুর্বল। এটা কিছুটা টেকনিক অ্যাডজাস্টমেন্টের ব্যাপার। সাকিব অনেক দিন ধরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলছে, শর্ট বল তার কাছে বড় সমস্যা হওয়ার কথা নয়।
প্রশ্ন: গত দুই বছরে বাংলাদেশের পেস বোলিং আক্রমণ দুর্দান্ত ছিল। অথচ তারাও এবার হতাশ করল। প্রথম পাওয়ার প্লেতে সবচেয়ে কম উইকেট নিতে পেরেছেন বাংলাদেশের বোলাররাই। এটার ব্যাখ্যা কী?
শ্রীরাম: খুব বেশি দল কিন্তু পাওয়ার প্লেতে প্রচুর উইকেট পায়নি। দক্ষিণ আফ্রিকা সবচেয়ে বেশি পাওয়ার প্লেতে উইকেট পেয়েছে। কিন্তু তারা দেখুন বেশির ভাগ সময় বোলিং করেছে ফ্লাড লাইটের আলোয়। কারণ, তাদের ছুড়ে দেওয়া বড় স্কোর তাড়া করতে হয়েছে বেশির ভাগ দলকে। তারা ৪০০, ৩৫০ রানের স্কোর গড়ে তবেই বোলারদের হাতে বল দিয়েছে। আপনি যখন বোর্ডে এত বড় স্কোর গড়বেন আর ফ্লাড লাইটের আলোয় বল করবেন এবং সুইং পাবেন, তখন পাওয়ার প্লেতে সবচেয়ে বেশি উইকেট পাবেনই। যখন অস্ট্রেলিয়া প্রথমে বোলিং করেছে, মিচেল স্টার্ক একটাও উইকেট পায়নি।
বাংলাদেশের বোলারদের ক্ষেত্রে দেখুন, আমরা বড় স্কোর ডিফেন্ড করার পরিস্থিতি তৈরি করতে পারিনি। ২২০–২৫০ রানের লক্ষ্য দিলে প্রতিপক্ষের ব্যাটাররা জানে, এই রান পেতে খুব একটা বেগ পেতে হবে না। চেন্নাইতে দেখুন, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে আমরা শুরুতে কী দারুণ বোলিং করলাম। রাচিন রবীন্দ্র, ডেভন কনওয়েকে আউট করলাম ২০ ওভারের মধ্যে। তবু নিউজিল্যান্ডের ওপর তেমন কোনো চাপই তৈরি হলো না। যদি আমরা ৩০০ কিংবা ৩২০ রানের স্কোর গড়তে পারতাম, এটা অন্যরকম একটা ম্যাচ হতো।
পেসারদের দোষারোপ করার আগে দেখুন ভারতের মতো কন্ডিশনে দুপুর ২টায় দ্রুত কিছু উইকেট তুলে নেওয়া মোটেও সহজ নয়। একই সঙ্গে সন্ধ্যা ৬-৭টায় বোলিং করতে নেমে আমাদের পেসারদের সেই সুযোগটা করে দিতে পারিনি বড় স্কোর না হওয়ায়। কোনো দলকে ৩২০-৩৫০ রানের লক্ষ্য দিলে তাদের সেটি তাড়া করতে হলে শুরু থেকেই মেরে খেলতে হবে। আর মেরে খেলতে গেলেই তো ঝুঁকি নিতে হবে। প্রতিপক্ষের ঝুঁকি নেওয়া মানে আপনার বোলারের সুযোগ বেড়ে যাওয়া। ব্যাটাররা যদি বড় স্কোর গড়তে পারে, তখন দলের বোলারদের মানসিকতা অন্যরকম হয়ে যায়।
প্রশ্ন: চন্ডিকা হাথুরুসিংহে বলছিলেন, স্কিল কোথাও যায়নি। তবে আশপাশের নয়েজ বা হইচইয়ের অনেক প্রভাব পড়েছে দলে। আপনি কি এটার সঙ্গে একমত?
শ্রীরাম: ঠিক জানি না কোন বিষয়ে বলছেন। নয়েজ বলতে?
প্রশ্ন: এই যে দলকে ঘিরে নানা আলোচনা, সমালোচনা, বিতর্ক। দল যখন টানা হারে, তখন এটা আরও বাড়ে। ক্রিকেট তো মেন্টাল গেমও।
শ্রীরাম: ঠিক জানি না। দলের বাইরের নয়েজ সম্পর্কেও খুব ভালো ধারণা নেই, যেটা প্রভাবিত করতে পারে। বিশ্বকাপ অনেক বড় টুর্নামেন্ট। এখানে কিছু ম্যাচ হারবেন, কিছু জিতবেন। এটা কোনো দ্বিপক্ষীয় সিরিজ নয়। একেক প্রতিপক্ষ, একেক ভেন্যু, একেক কন্ডিশন। আপনাকে শুধু সামনে এগিয়ে যেতে হবে। কেউ তো আপনার চাপ চাপিয়ে দেবে না। চাপে চ্যাপ্টা হন নিজে নিজেই। দলে অভিজ্ঞ ও তরুণ—দুই ধরনের খেলোয়াড়ই থাকে। অভিজ্ঞরা এটা খুব ভালোভাবে সামলাতে পারে। কিন্তু তরুণেরা অনেক সময় বড় মঞ্চে ভেঙে পড়তে পারে। তারা এখান থেকেই শেখে। যেমন—তানজিদ তামিমের কথাই বলি, অনেক সম্ভাবনা আছে ছেলেটার।
প্রশ্ন: জুনিয়র তামিম অনেক হতাশ করেছেন। তিনি যেহেতু অভিজ্ঞ তামিম ইকবালের জায়গায় খেলেছেন, সিনিয়র তামিমের প্রসঙ্গ বারবার এসেছে। আপনিও কি এখানে তামিমের অভিজ্ঞতা মিস করেছেন?
শ্রীরাম: সত্যি বলতে, আমি কখনো তামিম ইকবালের সঙ্গে কাজ করিনি। তবে আমরা জানি সে বাংলাদেশ ক্রিকেটের অন্যতম সেরা ক্রিকেটার। তানজিদ তামিমের জায়গায় সে থাকলে ভালো করতে পারত কি না, এটা আসলে আমরা কেউ জানি না। এই উত্তরটা আমি দিতে পারছি না। যে ছিল না, তাকে নিয়ে কথাও বলতে পারি না। কীভাবে বলব যে বিশ্বকাপে তামিমকে মিস করেছি কি করিন? আপনার হাতে যে খেলোয়াড় থাকবে, তাদের নিয়েই তো খেলতে হবে, ভালো করতে হবে। যে নেই তাকে নিয়ে আমরা চিন্তা করতে পারি না।
প্রশ্ন: বাংলাদেশ দলে আপনার কাজের ধরনটা কী ছিল এবার? হাথুরুর সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?
শ্রীরাম: হেড কোচই (হাথুরু) আমাকে চেয়েছিলেন এই দলে। গত এশিয়া কাপে শ্রীলঙ্কায় ধারাভাষ্য দিতে গিয়ে দেখা হতেই প্রস্তাব দিলেন বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলে কাজ করার। আমি শুধু তাঁকে সহায়তা করতে চেয়েছি ঠিকঠাকভাবে। ভারতীয় কন্ডিশন, মাঠ ইত্যাদি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য-উপাত্ত, সম্ভাব্য কৌশল সম্পর্কে অবগত করাই ছিল আমার কাজ। আমি সেটা শতভাগ ঠিকঠাক করার চেষ্টা করেছি। তাঁর (হাথুরু) প্রতি আমি অনুগত এবং সৎ থেকেছি। তিনিও আমার ওপর অনেক ভরসা করেছেন। আমার কাজের পরিধি আসলে খুব বড় ছিল না। দলে যেহেতু আলাদা আলাদা ব্যাটিং, ফিল্ডিং, বোলিং কোচ ছিল।
প্রশ্ন: কোচিং স্টাফ সদস্যদের সঙ্গে হাথুরুর দূরত্বের একটা প্রসঙ্গ এসেছে। এ কারণেই প্রশ্নটা জিজ্ঞেস করা।
শ্রীরাম: নিজের কথা শুধু বলতে পারি, তাঁর সঙ্গে আমার কোনো সমস্যা ছিল না। কাজের জায়গায় একে অন্যকে খুব ভালো পেয়েছি। পারস্পরিক সম্মান ছিল। তাঁর অনেক অভিজ্ঞতা, বাংলাদেশ ক্রিকেটের সঙ্গে অনেক দিন জড়িয়ে আছেন। আমি তাঁকে অনেক শ্রদ্ধা করি।
প্রশ্ন: আইসিসির ইভেন্টে ব্যর্থতার বৃত্ত থেকে বের হতে আপনার পরামর্শ কী থাকবে?
শ্রীরাম: বাস্তবসম্মত প্রত্যাশা থাকা উচিত। আগেই বলেছি, দেশের বাইরে ভালো দলের বিপক্ষে আপনাকে নিয়মিত শুধু ম্যাচ নয়, সিরিজ জেতার অভ্যাস তৈরি করতে হবে আগে। তখন বড় বিশ্বাস তৈরি হবে মনে। সেই বিশ্বাস তৈরি হলে বিশ্বকাপে ভালো করতে পারবেন। সেমিফাইনালের প্রতিদ্বন্দ্বী হতে পারবেন। অনেকে মনে করছে, ভারত বোধ হয় বাংলাদেশের কাছাকাছি কন্ডিশন। মোটেও তা নয়। গত পাঁচ-ছয় বছরে ভারতের কন্ডিশন অনেক বদলে গেছে। এখন উইকেট অবিশ্বাস্য রকমের ভালো। ফিঙ্গার স্পিনারদের জন্য এখানে তেমন কিছু থাকে না। রিস্ট স্পিনাররা এখানে ভালো করতে পারে। আগে ব্যাটিং করলে ৩৪০–৩৫০ করতে হবে। নতুন বলে উইকেট নেওয়া, মাঝের ওভারগুলোয় উইকেট নেওয়া খুব গুরুত্বপূর্ণ। এখান থেকে বাংলাদেশকে সাদা বলের ক্রিকেট নিয়ে নতুন করে ভাবতে হবে। যখন এই মঞ্চে বড় দলগুলোকে হারানোর বিশ্বাস তৈরি হবে, তখন সেমিফাইনাল খেলার অভিজ্ঞতা হবে। আর সেমিফাইনাল খেলার অভিজ্ঞতা হলে তখন ফাইনালের স্বপ্ন দেখা যাবে। আচ্ছা, এবার দলকে নিয়ে আসলে মানুষের প্রত্যাশাটা কী ছিল, বলুন তো?
প্রশ্ন: সেমিফাইনালে খেলার লক্ষ্যটা কিন্তু প্রধান কোচ, অধিনায়কই আগে বলেছেন। তবে দর্শক প্রতিটি ম্যাচে বাংলাদেশকে এভাবে অসহায় আত্মসমর্পণ করা দেখতে চায়নি। নেদারল্যান্ডসের কাছে হারটা ছিল সবচেয়ে হতাশার।
শ্রীরাম: শতভাগ ঠিক। নেদারল্যান্ডসের ম্যাচটা আমাদের জেতার কথা। ওদের ৬৩ রানে ৪ উইকেট ফেলে দেওয়ার পর ক্যাচ হাতছাড়া হলো। তবু ওই রানটা আমাদের তাড়া করা উচিত ছিল। আমরা ৭০ রানেই ৬ উইকেট হারিয়ে ফেললাম। কেউ ৭০-৮০ রান করলেই ম্যাচটা হারি না আমরা। এতে আসলে পুরো দলই অনেক হতাশ। এই ব্যর্থতায় কোনো অজুহাত দেওয়া যাবে না।
প্রশ্ন: ভবিষ্যতেও বাংলাদেশ দলে কাজ করতে চান?
শ্রীরাম: ঠিক জানি না। পাপন ভাই, জালাল ভাই বা বিসিবি এ ব্যাপারে আমার সঙ্গে এ নিয়ে এখনো কথা বলেনি। তবে বাংলাদেশ ক্রিকেটকে আমার অনেক ভালো লাগে। হৃদয়ে বাংলাদেশের জন্য আলাদা একটা জায়গা আছে আমার। দারুণ সব ক্রিকেটার, মানুষ আছে এই দলে। তারা অনেক পরিশ্রম করে, শিখতে আগ্রহী। সাকিবের সঙ্গে সব সময়ই আমার খুব ভালো যোগাযোগ থাকে।
বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলের ভরাডুবির ময়নাতদন্ত চলছে এখন। ব্যর্থতার পেছনে দেশের দুর্বল ক্রিকেট-কাঠামো, ভঙ্গুর সংস্কৃতি, চন্ডিকা হাথুরুসিংহের ভূমিকা, বিশ্বকাপের আগে করা সাকিব-তামিমের বিস্ফোরক সব মন্তব্যসহ অনেক বিষয়ই এসেছে। তবে টেকনিক্যাল বিষয়গুলো একটু কমই আসছে। সেটিই গতকাল সবিস্তারে বিশ্লেষণ করলেন শ্রীধরন শ্রীরাম, যিনি এবার দলে কাজ করেছেন কনসালট্যান্ট হিসেবে। তাঁর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন রানা আব্বাস।
প্রশ্ন: ২০২৩ বিশ্বকাপে ব্যর্থতার ব্যাখ্যা কী?
শ্রীধরন শ্রীরাম: ভারতীয় কন্ডিশনে আপনাকে অনেক রান করতে হবে, বড় স্কোর গড়তে হবে। যারা সেমিফাইনালে উঠেছে, প্রতিটি দল বড় বড় স্কোর গড়েছে। তাদের ব্যাটাররা শুধু সেঞ্চুরি করেই থামেননি, ১২০, ১৪০ কিংবা তারও বেশি রানের ইনিংস খেলেছেন। এখানে বাংলাদেশকে কাজ করতে হবে, কীভাবে আমাদের ব্যাটাররা এই ইনিংস খেলতে পারেন। ৩০-৪০ রানে খুশি হওয়া যাবে না। এটা কীভাবে বড় ইনিংসে রূপান্তর করা যায়, কীভাবে সেঞ্চুরিতে রূপ দেওয়া যায়।
প্রশ্ন: দেশে নিয়মিত ভালো উইকেটে না খেলার ফল এটা?
শ্রীরাম: আমি বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেট সম্পর্কে খুব একটা অবগত নই। খুব একটা অভিজ্ঞতা নেই তাদের ঘরোয়া ক্রিকেটে কাজ করার। কাজ করেছি শুধু বাংলাদেশ দলের সঙ্গে এবং অ্যাসাইনমেন্টগুলোও ছিল সব বাংলাদেশের বাইরে। তবে বলতে চাই, দেশের বাইরে জয়ের অভ্যাসটা তৈরি করতে হবে। দেশের বাইরে যখন জয়ের অভ্যাস তৈরি হবে, তখনই আমাদের মধ্যে বিশ্বাস তৈরি হবে যে আমরা বিশ্বকাপেও ভালো করতে পারব। ভারতকে দেখুন, তারা যখন দেশের বাইরে জেতার অভ্যাস তৈরি করল, তখনই নিয়মিত বিশ্বকাপের শিরোপার দাবিদার হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠা করল।
প্রশ্ন: এবার ব্যাটিং অর্ডারে যে পরীক্ষা-নিরীক্ষা বা পজিশনে অদলবদল হয়েছে, বিশ্বকাপের মঞ্চে এটা কি খুব জরুরি ছিল?
শ্রীরাম: এটা আসলে বিশ্বকাপের আগে আলোচনার বিষয়। আমি জানি না, বিষয়টি নিয়ে বিশ্বকাপের আগে কী ধরনের আলোচনা হয়েছিল। তবে আমার যেটা মনে হয়েছে, এখানে মেহেদী হাসান মিরাজের ব্যাটিং সম্ভাবনাটা সর্বোচ্চ কাজে লাগানোর চেষ্টা করা হয়েছে, যেহেতু সে ৮ নম্বরে খুব ভালো পাওয়ার হিটার নয়। কিন্তু সে যদি ওপরে খেলে, তাহলে একটা ভালো জুটি গড়তে পারবে, তাতে দলের চাপটা কমবে। স্ট্রাইক রোটেট করতে পারবে। এই কাজ সে ভালো করতে পারে। টিম ম্যানেজমেন্টের ভাবনা ছিল তার সম্ভাবনা সর্বোচ্চ কাজে লাগাতে। এতে আমাদের ব্যাটিংয়ের গভীরতা বাড়াতে সহায়তা করবে। পরের দিকে তাওহীদ হৃদয় ছিল, মাহমুদউল্লাহর মতো অভিজ্ঞ ব্যাটার ছিল। আসলে মিরাজের ব্যাটিং সম্ভাবনা সর্বোচ্চ কাজে লাগাতে এই চিন্তা করা হয়েছিল। কারণ, সে একজন ভালো অলরাউন্ডার।
প্রশ্ন: এই বিশ্বকাপে শর্ট বলে সবচেয়ে বেশি উইকেট দিয়েছেন বাংলাদেশের ব্যাটাররা। এটার ব্যাখ্যা কী?
শ্রীরাম: আমি ফুটেজ দেখেছি, মনে হয়েছে অর্ধেকই শর্ট বল নয়। বিশেষ করে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে আউটের ধরনগুলো দেখে মনে হলো ঠিক শর্ট বল নয়, ব্যাক অব লেংথের বলে আউট হয়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকা, নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়ার বোলারদের মূল শক্তিই এটা, যারা বুক উচ্চতায় বল করতে পারদর্শী। এ ধরনের বোলারদের বিপক্ষে শুধু টিকে থাকাই নয়, রান করাও জানতে হবে। আমি নিশ্চিত, এই দুর্বলতা নিয়ে টিম ম্যানেজমেন্ট কাজ করবে। এ কারণে বলছি, শীর্ষ দলগুলোর সঙ্গে নিয়মিত অ্যাওয়ে কন্ডিশনে খেলতে হবে এবং জেতার অভ্যাস তৈরি করতে হবে। যখন দক্ষিণ আফ্রিকা, নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়ার মতো দলগুলোর সঙ্গে দেশের বাইরে বেশি বেশি খেলবে... তবে মনে করি দলের সবাই শর্ট বলে দুর্বল নয়। মুশফিক, শান্তর মতো আরও অনেক ব্যাটার আছে দলে, যারা শর্ট বলের বিপক্ষে ভালো ব্যাটিং করে।
প্রশ্ন: সাকিব আল হাসানও এই বিশ্বকাপে চার-পাঁচবার শর্ট বলে আউট হয়েছেন।
শ্রীরাম: কখনো কখনো দ্রুত লেংথ পড়তে একটু সমস্যা হয়। এটার মানে এই নয় যে শর্ট বলে দুর্বল। এটা কিছুটা টেকনিক অ্যাডজাস্টমেন্টের ব্যাপার। সাকিব অনেক দিন ধরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলছে, শর্ট বল তার কাছে বড় সমস্যা হওয়ার কথা নয়।
প্রশ্ন: গত দুই বছরে বাংলাদেশের পেস বোলিং আক্রমণ দুর্দান্ত ছিল। অথচ তারাও এবার হতাশ করল। প্রথম পাওয়ার প্লেতে সবচেয়ে কম উইকেট নিতে পেরেছেন বাংলাদেশের বোলাররাই। এটার ব্যাখ্যা কী?
শ্রীরাম: খুব বেশি দল কিন্তু পাওয়ার প্লেতে প্রচুর উইকেট পায়নি। দক্ষিণ আফ্রিকা সবচেয়ে বেশি পাওয়ার প্লেতে উইকেট পেয়েছে। কিন্তু তারা দেখুন বেশির ভাগ সময় বোলিং করেছে ফ্লাড লাইটের আলোয়। কারণ, তাদের ছুড়ে দেওয়া বড় স্কোর তাড়া করতে হয়েছে বেশির ভাগ দলকে। তারা ৪০০, ৩৫০ রানের স্কোর গড়ে তবেই বোলারদের হাতে বল দিয়েছে। আপনি যখন বোর্ডে এত বড় স্কোর গড়বেন আর ফ্লাড লাইটের আলোয় বল করবেন এবং সুইং পাবেন, তখন পাওয়ার প্লেতে সবচেয়ে বেশি উইকেট পাবেনই। যখন অস্ট্রেলিয়া প্রথমে বোলিং করেছে, মিচেল স্টার্ক একটাও উইকেট পায়নি।
বাংলাদেশের বোলারদের ক্ষেত্রে দেখুন, আমরা বড় স্কোর ডিফেন্ড করার পরিস্থিতি তৈরি করতে পারিনি। ২২০–২৫০ রানের লক্ষ্য দিলে প্রতিপক্ষের ব্যাটাররা জানে, এই রান পেতে খুব একটা বেগ পেতে হবে না। চেন্নাইতে দেখুন, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে আমরা শুরুতে কী দারুণ বোলিং করলাম। রাচিন রবীন্দ্র, ডেভন কনওয়েকে আউট করলাম ২০ ওভারের মধ্যে। তবু নিউজিল্যান্ডের ওপর তেমন কোনো চাপই তৈরি হলো না। যদি আমরা ৩০০ কিংবা ৩২০ রানের স্কোর গড়তে পারতাম, এটা অন্যরকম একটা ম্যাচ হতো।
পেসারদের দোষারোপ করার আগে দেখুন ভারতের মতো কন্ডিশনে দুপুর ২টায় দ্রুত কিছু উইকেট তুলে নেওয়া মোটেও সহজ নয়। একই সঙ্গে সন্ধ্যা ৬-৭টায় বোলিং করতে নেমে আমাদের পেসারদের সেই সুযোগটা করে দিতে পারিনি বড় স্কোর না হওয়ায়। কোনো দলকে ৩২০-৩৫০ রানের লক্ষ্য দিলে তাদের সেটি তাড়া করতে হলে শুরু থেকেই মেরে খেলতে হবে। আর মেরে খেলতে গেলেই তো ঝুঁকি নিতে হবে। প্রতিপক্ষের ঝুঁকি নেওয়া মানে আপনার বোলারের সুযোগ বেড়ে যাওয়া। ব্যাটাররা যদি বড় স্কোর গড়তে পারে, তখন দলের বোলারদের মানসিকতা অন্যরকম হয়ে যায়।
প্রশ্ন: চন্ডিকা হাথুরুসিংহে বলছিলেন, স্কিল কোথাও যায়নি। তবে আশপাশের নয়েজ বা হইচইয়ের অনেক প্রভাব পড়েছে দলে। আপনি কি এটার সঙ্গে একমত?
শ্রীরাম: ঠিক জানি না কোন বিষয়ে বলছেন। নয়েজ বলতে?
প্রশ্ন: এই যে দলকে ঘিরে নানা আলোচনা, সমালোচনা, বিতর্ক। দল যখন টানা হারে, তখন এটা আরও বাড়ে। ক্রিকেট তো মেন্টাল গেমও।
শ্রীরাম: ঠিক জানি না। দলের বাইরের নয়েজ সম্পর্কেও খুব ভালো ধারণা নেই, যেটা প্রভাবিত করতে পারে। বিশ্বকাপ অনেক বড় টুর্নামেন্ট। এখানে কিছু ম্যাচ হারবেন, কিছু জিতবেন। এটা কোনো দ্বিপক্ষীয় সিরিজ নয়। একেক প্রতিপক্ষ, একেক ভেন্যু, একেক কন্ডিশন। আপনাকে শুধু সামনে এগিয়ে যেতে হবে। কেউ তো আপনার চাপ চাপিয়ে দেবে না। চাপে চ্যাপ্টা হন নিজে নিজেই। দলে অভিজ্ঞ ও তরুণ—দুই ধরনের খেলোয়াড়ই থাকে। অভিজ্ঞরা এটা খুব ভালোভাবে সামলাতে পারে। কিন্তু তরুণেরা অনেক সময় বড় মঞ্চে ভেঙে পড়তে পারে। তারা এখান থেকেই শেখে। যেমন—তানজিদ তামিমের কথাই বলি, অনেক সম্ভাবনা আছে ছেলেটার।
প্রশ্ন: জুনিয়র তামিম অনেক হতাশ করেছেন। তিনি যেহেতু অভিজ্ঞ তামিম ইকবালের জায়গায় খেলেছেন, সিনিয়র তামিমের প্রসঙ্গ বারবার এসেছে। আপনিও কি এখানে তামিমের অভিজ্ঞতা মিস করেছেন?
শ্রীরাম: সত্যি বলতে, আমি কখনো তামিম ইকবালের সঙ্গে কাজ করিনি। তবে আমরা জানি সে বাংলাদেশ ক্রিকেটের অন্যতম সেরা ক্রিকেটার। তানজিদ তামিমের জায়গায় সে থাকলে ভালো করতে পারত কি না, এটা আসলে আমরা কেউ জানি না। এই উত্তরটা আমি দিতে পারছি না। যে ছিল না, তাকে নিয়ে কথাও বলতে পারি না। কীভাবে বলব যে বিশ্বকাপে তামিমকে মিস করেছি কি করিন? আপনার হাতে যে খেলোয়াড় থাকবে, তাদের নিয়েই তো খেলতে হবে, ভালো করতে হবে। যে নেই তাকে নিয়ে আমরা চিন্তা করতে পারি না।
প্রশ্ন: বাংলাদেশ দলে আপনার কাজের ধরনটা কী ছিল এবার? হাথুরুর সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?
শ্রীরাম: হেড কোচই (হাথুরু) আমাকে চেয়েছিলেন এই দলে। গত এশিয়া কাপে শ্রীলঙ্কায় ধারাভাষ্য দিতে গিয়ে দেখা হতেই প্রস্তাব দিলেন বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলে কাজ করার। আমি শুধু তাঁকে সহায়তা করতে চেয়েছি ঠিকঠাকভাবে। ভারতীয় কন্ডিশন, মাঠ ইত্যাদি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য-উপাত্ত, সম্ভাব্য কৌশল সম্পর্কে অবগত করাই ছিল আমার কাজ। আমি সেটা শতভাগ ঠিকঠাক করার চেষ্টা করেছি। তাঁর (হাথুরু) প্রতি আমি অনুগত এবং সৎ থেকেছি। তিনিও আমার ওপর অনেক ভরসা করেছেন। আমার কাজের পরিধি আসলে খুব বড় ছিল না। দলে যেহেতু আলাদা আলাদা ব্যাটিং, ফিল্ডিং, বোলিং কোচ ছিল।
প্রশ্ন: কোচিং স্টাফ সদস্যদের সঙ্গে হাথুরুর দূরত্বের একটা প্রসঙ্গ এসেছে। এ কারণেই প্রশ্নটা জিজ্ঞেস করা।
শ্রীরাম: নিজের কথা শুধু বলতে পারি, তাঁর সঙ্গে আমার কোনো সমস্যা ছিল না। কাজের জায়গায় একে অন্যকে খুব ভালো পেয়েছি। পারস্পরিক সম্মান ছিল। তাঁর অনেক অভিজ্ঞতা, বাংলাদেশ ক্রিকেটের সঙ্গে অনেক দিন জড়িয়ে আছেন। আমি তাঁকে অনেক শ্রদ্ধা করি।
প্রশ্ন: আইসিসির ইভেন্টে ব্যর্থতার বৃত্ত থেকে বের হতে আপনার পরামর্শ কী থাকবে?
শ্রীরাম: বাস্তবসম্মত প্রত্যাশা থাকা উচিত। আগেই বলেছি, দেশের বাইরে ভালো দলের বিপক্ষে আপনাকে নিয়মিত শুধু ম্যাচ নয়, সিরিজ জেতার অভ্যাস তৈরি করতে হবে আগে। তখন বড় বিশ্বাস তৈরি হবে মনে। সেই বিশ্বাস তৈরি হলে বিশ্বকাপে ভালো করতে পারবেন। সেমিফাইনালের প্রতিদ্বন্দ্বী হতে পারবেন। অনেকে মনে করছে, ভারত বোধ হয় বাংলাদেশের কাছাকাছি কন্ডিশন। মোটেও তা নয়। গত পাঁচ-ছয় বছরে ভারতের কন্ডিশন অনেক বদলে গেছে। এখন উইকেট অবিশ্বাস্য রকমের ভালো। ফিঙ্গার স্পিনারদের জন্য এখানে তেমন কিছু থাকে না। রিস্ট স্পিনাররা এখানে ভালো করতে পারে। আগে ব্যাটিং করলে ৩৪০–৩৫০ করতে হবে। নতুন বলে উইকেট নেওয়া, মাঝের ওভারগুলোয় উইকেট নেওয়া খুব গুরুত্বপূর্ণ। এখান থেকে বাংলাদেশকে সাদা বলের ক্রিকেট নিয়ে নতুন করে ভাবতে হবে। যখন এই মঞ্চে বড় দলগুলোকে হারানোর বিশ্বাস তৈরি হবে, তখন সেমিফাইনাল খেলার অভিজ্ঞতা হবে। আর সেমিফাইনাল খেলার অভিজ্ঞতা হলে তখন ফাইনালের স্বপ্ন দেখা যাবে। আচ্ছা, এবার দলকে নিয়ে আসলে মানুষের প্রত্যাশাটা কী ছিল, বলুন তো?
প্রশ্ন: সেমিফাইনালে খেলার লক্ষ্যটা কিন্তু প্রধান কোচ, অধিনায়কই আগে বলেছেন। তবে দর্শক প্রতিটি ম্যাচে বাংলাদেশকে এভাবে অসহায় আত্মসমর্পণ করা দেখতে চায়নি। নেদারল্যান্ডসের কাছে হারটা ছিল সবচেয়ে হতাশার।
শ্রীরাম: শতভাগ ঠিক। নেদারল্যান্ডসের ম্যাচটা আমাদের জেতার কথা। ওদের ৬৩ রানে ৪ উইকেট ফেলে দেওয়ার পর ক্যাচ হাতছাড়া হলো। তবু ওই রানটা আমাদের তাড়া করা উচিত ছিল। আমরা ৭০ রানেই ৬ উইকেট হারিয়ে ফেললাম। কেউ ৭০-৮০ রান করলেই ম্যাচটা হারি না আমরা। এতে আসলে পুরো দলই অনেক হতাশ। এই ব্যর্থতায় কোনো অজুহাত দেওয়া যাবে না।
প্রশ্ন: ভবিষ্যতেও বাংলাদেশ দলে কাজ করতে চান?
শ্রীরাম: ঠিক জানি না। পাপন ভাই, জালাল ভাই বা বিসিবি এ ব্যাপারে আমার সঙ্গে এ নিয়ে এখনো কথা বলেনি। তবে বাংলাদেশ ক্রিকেটকে আমার অনেক ভালো লাগে। হৃদয়ে বাংলাদেশের জন্য আলাদা একটা জায়গা আছে আমার। দারুণ সব ক্রিকেটার, মানুষ আছে এই দলে। তারা অনেক পরিশ্রম করে, শিখতে আগ্রহী। সাকিবের সঙ্গে সব সময়ই আমার খুব ভালো যোগাযোগ থাকে।
জমির মালিক হযরত শাহ্ আলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। তবে ওই জমিতে ৩৯১টি দোকান নির্মাণ করে কয়েক বছর ধরে ভাড়া নিচ্ছে হযরত শাহ্ আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজ। দোকানগুলোর ভাড়া থেকে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ৭০ লাখ টাকা ভ্যাটও দেওয়া হয়নি। বিষয়টি উঠে এসেছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) তদন্তে।
১ দিন আগেকুড়িগ্রাম পৌর শহরে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী ছোট ভাই নিহত ও বড় ভাই আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে মৎস্য খামারের কাছে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
৫ দিন আগেবৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগের মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১৮ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত শনিবার রাতে ও গতকাল রোববার তাঁরা গ্রেপ্তার হন।
৫ দিন আগেএক অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটেছে শিল্পকলা একাডেমিতে। শিল্পকলা একাডেমির তিনটি হলেই কিছুদিন আগেও নাটক চলত। নাট্যকর্মীদের সৃজনশীলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটত সেখানে। বহু পরিশ্রমে মাসের পর মাস নিজের খেয়ে, নিজের গাড়িভাড়া দিয়ে নাট্যকর্মীরা একেবারেই স্বেচ্ছাশ্রমে একটি শিল্প তিপ্পান্ন বছর ধরে গড়ে তুলেছেন। শিল্পকলা একাডেমি এখন
৯ দিন আগে