ঝালকাঠির সড়ক ও অলিগলিতে বৈদ্যুতিক ও টেলিফোনের খুঁটিতে ডিশ ও ইন্টারনেটের তারের জঞ্জাল। প্রায়ই শর্টসার্কিটে খুঁটিতে আগুন লেগে যায়। ঝুঁকিপূর্ণভাবে প্যাঁচানো তারে যেকোনো সময় ঘটতে পারে দুর্ঘটনা। প্রভাবশালী ডিশ ও ইন্টারনেট ব্যবসায়ীদের কারণে স্থানীয় বাসিন্দারা এ বিষয়ে কোথাও অভিযোগ দিতেও সাহস পান না। পৌরসভা কর্তৃপক্ষও এ বিষয়ে ব্যবস্থাও নেয়নি।

সরেজমিনে দেখা গেছে, ঝালকাঠিতে বিদ্যুৎ ও টেলিফোনের খুঁটিতে ঝুলে রয়েছে ডিশ, ইন্টারনেটের তার। অবৈধভাবে ঝুলে থাকা তারের জটলার কোনটা কার তা বোঝা দায়। শহরজুড়ে থাকা এসব তারের জঞ্জালের কারণে যেমন শহরের সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছে, তেমনি দুর্ঘটনার আশঙ্কাও বাড়ছে। অতিরিক্ত ভারে ঝুলে পড়ছে তার। ফলে ফুটপাত দিয়ে হাঁটা পথচারীদের মাথায় লাগছে তার। এতে নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়েছেন সাধারণ মানুষ ও পথচারীরা। নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা করে বিদ্যুৎ ও টেলিফোনের খুঁটিতে ডিশ লাইন ও ইন্টারনেট ব্যবসায়ীর এই তারের সংযোগ দিয়েছেন।

যদিও স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে ডিশ ও ইন্টারনেট সংযোগকারীদের বলা হয়েছে, তারা যেন তার সংযোগের ক্ষেত্রে নিজস্ব খুঁটি ব্যবহার করে। কিন্তু তাতে কর্ণপাতই করেনি ডিশ ও ইন্টারনেট ব্যবসায়ীরা। শহরের জেলা প্রশাসক কার্যালয় এলাকা, ফায়ার সার্ভিস মোড়, সাধনার চৌমাথা, কালীবাড়ি রোড, পূর্বচাঁদকাঠি, থানা রোডসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় বিদ্যুতের খুঁটিতে ঝুঁকিপূর্ণভাবের ঝুলে রয়েছে এসব। অপরিকল্পিতভাবে এমনভাবে তার ঝুলে থাকায় শর্টসার্কিটে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ করেন পথচারী, স্থানীয় বাসিন্দা ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের মালিকেরা। কিন্তু ইন্টারনেট ও ডিশ ব্যবসায়ীরা প্রভাবশালী হওয়ায় তাঁদের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহস পান না।

পোস্ট অফিসের সামনে মোহাম্মদ আলী নামে ইন্টারনেট সংযোগকারী প্রতিষ্ঠানের এক কর্মচারী বলেন, ‘বৈদ্যুতিক খুঁটিতে এত তারের কারণে মাঝেমধ্যে কাজ করতে সমস্যা হয়। বোঝাই যায় না কোনটা কীসের তার। ফলে প্রায় সময় সামান্য শর্টসার্কিটে বিভিন্ন খুঁটিতে আগুন লেগে যায়।’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে টিঅ্যান্ডটির এক কর্মকর্তা বলেন, ‘টিঅ্যান্ডটি এমনিতেই লোকসানি রয়েছে। তাই টিঅ্যান্ডটির খুঁটি কে কোন কাজে ব্যবহার করছেন, তা খেয়াল রাখা সম্ভব হচ্ছে না।’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক কর্মকর্তা বলেন, ‘বিষয়টি স্পর্শকাতর। কারণ যাঁরা ডিশ ও ইন্টারনেট ব্যবসার সঙ্গে জড়িত, তাঁরা প্রভাবশালী। যদিও তাঁদের লাইসেন্স দেওয়ার সময় বলা হয়, সংযোগ দেওয়ার ক্ষেত্রে নিজস্ব খুঁটি ব্যবহার করতে হবে। কিন্তু এ নিয়ম তাঁরা মেনে চলে না।’

এ বিষয়ে ঝালকাঠি পৌরসভার পরিকল্পনাবিদ নাজমুল হাসান বলেন, ‘এ সমস্যা সমাধানে ভূগর্ভস্থ বৈদ্যুতিক সংযোগ দেওয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এ পরিকল্পনার বাস্তবায়ন হলে তখন তারের জঞ্জাল থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে।’