মির্জা গালিব, ঢাকা
আমি ঠিক সত্যিকারের মির্জা গালিবের মতো নই যে কাবাবের খোঁজে আমাকে দিল্লি-লক্ষ্ণৌ চষে বেরোতে হবে। আমি ভেতো বাঙালি। ভাত-ডাল-মাছ আর সবজি হলেই হলো। তবে হ্যাঁ, যে খাবার খাব সেটা সুস্বাদু হওয়া চাই-ই চাই। আর এই ঢাকা শহরে উড়ন্ত দামের দিনে সুস্বাদু খাবার? সে স্বর্গীয় বস্তুই বটে—মেলা ভার।
উদ্ধার করলেন বাইকার মাহবুব। একবার গুলশান পেরিয়ে কোনো এক গলি দিয়ে যাওয়ার সময় কানে কানে বলেছিলেন, ‘ভাই, এই হোটেলটার খাবার না… উফ!’ বুঝলাম আসতে হবে। কোনো এক স্বর্ণালি সকালে ঘুম থেকে উঠেই সিদ্ধান্ত নিয়ে নিলাম ‘উফ’ রেস্তোরাঁয় খেতে যাব। এরপর যথাসময়ে গুলশান-১-এর উদ্দেশ্যে বাইকে উড়াল দিলাম আমরা। পুলিশ প্লাজা পেরিয়ে লেকের ওপর যে ছোট্ট ব্রিজ, এক টানে সেটা পেরিয়ে, সোজা চৌরাস্তাটা চিরে দিয়ে ঢুকে গেলাম দক্ষিণ বাড্ডার দারোগাবাড়ি মোড়ে। দারোগা ব্যাপারটার সঙ্গে একটা জবরদস্ত মুডের সম্পর্ক জড়িত থাকে। খাবারের সঙ্গেও। সে জন্যই মনে হলো, নাম আর স্থান মাহাত্ম্য উপচে পড়েছে এখানে। বাইক দাঁড়াল রাস্তার সঙ্গে লাগোয়া এক ‘দেখে মন খারাপ করা’ রেস্তোরাঁর সামনে। বুঝলাম নামতে হবে।
ভেতরে উঁকি দিতেই দেখা গেল, দারোগাবাড়ি মোড়ের জামান রেস্টুরেন্টের ডান দিকের কোনায় এক টেবিলে চারজন পুলিশ কনস্টেবল খেতে বসেছেন। বাকি টেবিলগুলোও অকুপাইড। হাত ধুয়ে মিনিট দু-এক দাঁড়িয়ে একটা টেবিল দখল করে বসে পড়লাম। একজন এসে জানতে চাইলেন কী খাব। কী কী আছে জিজ্ঞেস করতেই তিনি সুর করে আওড়ে গেলেন, ‘ডাউল, ভাজি, শুঁটকি ভর্তা, ধুন্দুল ভর্তা, ডাউল ভর্তা, মাছ ভর্তা, ডিম ভর্তা, রুই, ফলি, ছোট মাছ, মুরগির কালা ভুনা, গরুর ঝাল ফ্রাই,…।’ থামাতেই হলো। মুরগির কালা ভুনা? গরুর ঝাল ফ্রাই? এবার একটা হাসি দিয়ে তিনি বললেন, উল্টায়া লন স্যার। নিলাম। বললাম, শুঁটকি ভর্তা আর মাছ ভর্তা দেন। ওটা কি টাকি মাছ? তিনি বললেন, না। বড় মাছ।
মেলামাইনের প্লেটে সাদা ভাত। তার ওপর এক ফালি লেবু আর একটা কাঁচা মরিচ। সঙ্গে প্রায় কালো হয়ে যাওয়া শুঁটকি আর মাছ ভর্তা। এরপর ফলি মাছের ঝোল। বহুদিন খাই না বলে শুনেই অর্ডার দিলাম। এরপর ধীরে-সুস্থে এল করলা ও কলমি শাকের ভাজা, ডিম ভর্তা। দেখতে দেখতে উড়ে গেল সব। পুরো রেস্তোরাঁয় তখন শপিং মলে চানরাতের ভিড়। সমস্যা একটাই, তেলটা একটু বেশি ঢেলেছে তরকারিতে। তা ছাড়া সব ঠিক আছে। ঝাল-লবণ একটু বেশি। রাস্তার পাশের রেস্তোরাঁয় যেমন থাকে।
খাওয়া শেষে দেখা হলো মালিকের বড় ছেলে মো. ইমরানের সঙ্গে। জানালেন, পাঁচ বছরের মতো চলছে তাঁদের দোকান। তবে এটি আগে ছিল তেজগাঁও আড়ংয়ের আশপাশ কোথাও। বছর দুই হলো দক্ষিণ বাড্ডার দারোগাবাড়ি মোড়ে। জানতে চাইলাম, কত টাকা হলে দুপুরের খাওয়া হয়। বললেন, চল্লিশ টাকা ভাই। চল্লিশ টাকায় ভরপুর লাঞ্চ। বিস্মিত হলাম। তিনি জানালেন, একটা ভর্তা বিশ টাকা। তবে দুইটা বা বেশি নিলে দশ টাকা করে নেওয়া হয়। ভাত, ডাল, ভর্তায় ভরপুর খাওয়া যায়। আর মাছের দাম আকারভেদে পঞ্চাশ টাকা থেকে সত্তর টাকা। তাজ্জব না হয়ে পার যায় না এসব শুনে। আকারভেদে মাছের দাম; তাও এক শ টাকার নিচে!
রান্না মোটামুটি ভালো আর দামে সস্তা বলে দারোগাবাড়ির এই জামান রেস্টুরেন্ট জমে গেছে বেশ।
আমি ঠিক সত্যিকারের মির্জা গালিবের মতো নই যে কাবাবের খোঁজে আমাকে দিল্লি-লক্ষ্ণৌ চষে বেরোতে হবে। আমি ভেতো বাঙালি। ভাত-ডাল-মাছ আর সবজি হলেই হলো। তবে হ্যাঁ, যে খাবার খাব সেটা সুস্বাদু হওয়া চাই-ই চাই। আর এই ঢাকা শহরে উড়ন্ত দামের দিনে সুস্বাদু খাবার? সে স্বর্গীয় বস্তুই বটে—মেলা ভার।
উদ্ধার করলেন বাইকার মাহবুব। একবার গুলশান পেরিয়ে কোনো এক গলি দিয়ে যাওয়ার সময় কানে কানে বলেছিলেন, ‘ভাই, এই হোটেলটার খাবার না… উফ!’ বুঝলাম আসতে হবে। কোনো এক স্বর্ণালি সকালে ঘুম থেকে উঠেই সিদ্ধান্ত নিয়ে নিলাম ‘উফ’ রেস্তোরাঁয় খেতে যাব। এরপর যথাসময়ে গুলশান-১-এর উদ্দেশ্যে বাইকে উড়াল দিলাম আমরা। পুলিশ প্লাজা পেরিয়ে লেকের ওপর যে ছোট্ট ব্রিজ, এক টানে সেটা পেরিয়ে, সোজা চৌরাস্তাটা চিরে দিয়ে ঢুকে গেলাম দক্ষিণ বাড্ডার দারোগাবাড়ি মোড়ে। দারোগা ব্যাপারটার সঙ্গে একটা জবরদস্ত মুডের সম্পর্ক জড়িত থাকে। খাবারের সঙ্গেও। সে জন্যই মনে হলো, নাম আর স্থান মাহাত্ম্য উপচে পড়েছে এখানে। বাইক দাঁড়াল রাস্তার সঙ্গে লাগোয়া এক ‘দেখে মন খারাপ করা’ রেস্তোরাঁর সামনে। বুঝলাম নামতে হবে।
ভেতরে উঁকি দিতেই দেখা গেল, দারোগাবাড়ি মোড়ের জামান রেস্টুরেন্টের ডান দিকের কোনায় এক টেবিলে চারজন পুলিশ কনস্টেবল খেতে বসেছেন। বাকি টেবিলগুলোও অকুপাইড। হাত ধুয়ে মিনিট দু-এক দাঁড়িয়ে একটা টেবিল দখল করে বসে পড়লাম। একজন এসে জানতে চাইলেন কী খাব। কী কী আছে জিজ্ঞেস করতেই তিনি সুর করে আওড়ে গেলেন, ‘ডাউল, ভাজি, শুঁটকি ভর্তা, ধুন্দুল ভর্তা, ডাউল ভর্তা, মাছ ভর্তা, ডিম ভর্তা, রুই, ফলি, ছোট মাছ, মুরগির কালা ভুনা, গরুর ঝাল ফ্রাই,…।’ থামাতেই হলো। মুরগির কালা ভুনা? গরুর ঝাল ফ্রাই? এবার একটা হাসি দিয়ে তিনি বললেন, উল্টায়া লন স্যার। নিলাম। বললাম, শুঁটকি ভর্তা আর মাছ ভর্তা দেন। ওটা কি টাকি মাছ? তিনি বললেন, না। বড় মাছ।
মেলামাইনের প্লেটে সাদা ভাত। তার ওপর এক ফালি লেবু আর একটা কাঁচা মরিচ। সঙ্গে প্রায় কালো হয়ে যাওয়া শুঁটকি আর মাছ ভর্তা। এরপর ফলি মাছের ঝোল। বহুদিন খাই না বলে শুনেই অর্ডার দিলাম। এরপর ধীরে-সুস্থে এল করলা ও কলমি শাকের ভাজা, ডিম ভর্তা। দেখতে দেখতে উড়ে গেল সব। পুরো রেস্তোরাঁয় তখন শপিং মলে চানরাতের ভিড়। সমস্যা একটাই, তেলটা একটু বেশি ঢেলেছে তরকারিতে। তা ছাড়া সব ঠিক আছে। ঝাল-লবণ একটু বেশি। রাস্তার পাশের রেস্তোরাঁয় যেমন থাকে।
খাওয়া শেষে দেখা হলো মালিকের বড় ছেলে মো. ইমরানের সঙ্গে। জানালেন, পাঁচ বছরের মতো চলছে তাঁদের দোকান। তবে এটি আগে ছিল তেজগাঁও আড়ংয়ের আশপাশ কোথাও। বছর দুই হলো দক্ষিণ বাড্ডার দারোগাবাড়ি মোড়ে। জানতে চাইলাম, কত টাকা হলে দুপুরের খাওয়া হয়। বললেন, চল্লিশ টাকা ভাই। চল্লিশ টাকায় ভরপুর লাঞ্চ। বিস্মিত হলাম। তিনি জানালেন, একটা ভর্তা বিশ টাকা। তবে দুইটা বা বেশি নিলে দশ টাকা করে নেওয়া হয়। ভাত, ডাল, ভর্তায় ভরপুর খাওয়া যায়। আর মাছের দাম আকারভেদে পঞ্চাশ টাকা থেকে সত্তর টাকা। তাজ্জব না হয়ে পার যায় না এসব শুনে। আকারভেদে মাছের দাম; তাও এক শ টাকার নিচে!
রান্না মোটামুটি ভালো আর দামে সস্তা বলে দারোগাবাড়ির এই জামান রেস্টুরেন্ট জমে গেছে বেশ।
জমির মালিক হযরত শাহ্ আলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। তবে ওই জমিতে ৩৯১টি দোকান নির্মাণ করে কয়েক বছর ধরে ভাড়া নিচ্ছে হযরত শাহ্ আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজ। দোকানগুলোর ভাড়া থেকে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ৭০ লাখ টাকা ভ্যাটও দেওয়া হয়নি। বিষয়টি উঠে এসেছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) তদন্তে।
২ দিন আগেকুড়িগ্রাম পৌর শহরে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী ছোট ভাই নিহত ও বড় ভাই আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে মৎস্য খামারের কাছে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
৫ দিন আগেবৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগের মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১৮ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত শনিবার রাতে ও গতকাল রোববার তাঁরা গ্রেপ্তার হন।
৫ দিন আগেএক অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটেছে শিল্পকলা একাডেমিতে। শিল্পকলা একাডেমির তিনটি হলেই কিছুদিন আগেও নাটক চলত। নাট্যকর্মীদের সৃজনশীলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটত সেখানে। বহু পরিশ্রমে মাসের পর মাস নিজের খেয়ে, নিজের গাড়িভাড়া দিয়ে নাট্যকর্মীরা একেবারেই স্বেচ্ছাশ্রমে একটি শিল্প তিপ্পান্ন বছর ধরে গড়ে তুলেছেন। শিল্পকলা একাডেমি এখন
৯ দিন আগে