জাহীদ রেজা নূর রূপপুর (পাবনা) থেকে ফিরে
উঁচু ভবনগুলোর উল্টো দিকে সারি সারি দোকানে বাংলার সঙ্গে রুশ নাম দেওয়া হয়েছে বাণিজ্যিক কারণেই। নাম দেখেই যেন রাশানরা বুঝতে পারেন, এই দোকানে কী পাওয়া যায়। আস্তে আস্তে নতুন ব্যবসায়ীরাও ঢুকছেন এই বাজারে। অর্থনীতি যে তার আপন নিয়মে কিছু পরিবর্তন নিয়ে আসে জীবনযাত্রায়, সেটা এখানে এলে টের পাওয়া যায়।
পাকশীর গ্রিন সিটির সামনে ‘রুস্কায়া মোদা’ বা ‘রাশিয়ান ফ্যাশন’ দোকানের নিচে দাঁড়িয়ে দুজন রুশ নাগরিক কথা বলছিলেন। আমরা যে চারজন বাঙালি এসেছি এখানে, তারা সবাই রাশিয়ায় পড়াশোনা করেছি। ফলে রুশ ভাষা আমাদের জন্য অবোধ্য কোনো ভাষা নয়। বন্ধু সুকান্ত মুখার্জি এগিয়ে যান তাঁদের দিকে। আমাদের সঙ্গে কথা বলার অনুরোধ জানালে সহাস্যে রাজি হয়ে যান তাঁরা। তাঁদের একজন রাশিয়ার ইভান, অন্যজন বেলারুশিয়ার সের্গেই।
রূপপুরে প্রতিদিন যে রুশ রূপকথার জন্ম হচ্ছে, এ আলোচনা তারই একটি অংশ। পরিচয়পর্বে আমাদের সঙ্গী একজন ডাক্তারি পড়ে এসেছেন শুনে জিজ্ঞেস করলেন ইভান, ‘কোন শহরে আপনি পড়েছেন?’
–ক্রাসনাদারে।
–আমার স্ত্রী পড়েছে ভলগাগ্রাদ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে। ড. পেত্রোভ ছিলেন সে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য।
–এখন তিনি কী করছেন?
–ও এখন একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে কাজ করে।
–তাহলে প্রশ্ন করতে হয়, আপনার স্ত্রী ওখানে আর আপনি এখানে কেন? কেন একসঙ্গে নয়?
–এখানে আসার ইচ্ছে ছিল আমার। মূল কারণ অবশ্যই অর্থনৈতিক। টাকা রোজগারের জন্য যেকোনো দেশে যাওয়া যেত। কিন্তু আমার মনে হলো, এ দেশে আসাই ভালো।
–কেনাকাটা করতে গিয়ে সমস্যা হয় না? আঙুরের দাম হয়তো ২০০ টাকা কেজি, আপনার কাছে চাইল ৩০০ টাকা। দরদাম করতে হয় না?
–হ্যাঁ, হ্যাঁ, দরদাম করতে হয়। পৃথিবীর সব দেশেই এই ধরনের ব্যক্তিমালিকানাধীন দোকানে দরদাম করতে হয়।
-রাশিয়ায় তো কালবাসা (একধরনের সসেজ), স্মিতানা (ঘন দই) ছাড়া জীবন অচল। এখানে সেগুলোর জন্য মন কাঁদে না?
ইভান বলেন, ‘আমাদের তো দুই বছর সেনাবাহিনীতে সময় কাটাতে হয়। সে সময় সব ধরনের কষ্ট সহ্য করে নেওয়ার অভ্যাস গড়ে তোলা হয়। তাই খাওয়া নিয়ে সমস্যা হয় না।’
তাঁর কথা টেনে নিয়ে আন্দ্রেই বলেন, ‘আমরা ভাগ্যবান। এখানে মাংস তো পাওয়া যাচ্ছে!’
-আপনারা কোথায় খান?
-পারমাণবিক কেন্দ্রের স্তালোবায়াতে (ক্যানটিন), ক্যাফেতে। এখানে কত কিছু খাই, গ্রিল মুরগি, শিঙাড়া, মুড়ি, ভেড়া, বিরিয়ানি...এখানে রুশ খাবারের পাশাপাশি স্থানীয় খাবার, চীনা খাবার পাওয়া যায়, যখন যা মন চায়, খাই।
-বাড়ির জন্য মন কাঁদে না?
ইভান বলেন, ‘এটা আমাদের ব্যক্তিগত ব্যাপার।’ বলে হাসতে থাকেন। আন্দ্রেই বলেন, ‘হ্যাঁ, হ্যাঁ, মন তো কাঁদেই।’
আন্দ্রেই বললেন, ‘আমি আমার লেখা একটা কবিতা পড়তে চাই।’ বলে শুরু করলেন কবিতা পাঠ। বড় কবিতা। তার শুরুটা এই রকম:
কল্পনার মতোই গল্পটা আমার
স্বপ্ন দেখেছিলাম রাতে
উড়ে যাচ্ছি আমি
অনেক ওপরে আকাশের কাছাকাছি ওঠার পর
টের পেলাম ডানা খুলে গেছে
এরপর ধীরে ধীরে পতনের শুরু
চারদিকে নিস্তব্ধ নীরবতা
কেউ শুনতে পাচ্ছিল না
আমি চিৎকার করে বলছিলাম, ‘বাঁচাও বাঁচাও’।
কবিতার নির্যাস হয় না, পুরোটা শুনে ব্যঞ্জনাটা ধরতে হয়। আন্দ্রেই-এর কবিতায় ফুটে উঠছিল একজন শান্তিবাদী মানুষের আর্তি। ‘স্বপ্ন নিয়ে বাঁচতে হলে ডানা হারিয়ো না’—এই ছিল মোদ্দা কথা। এটাই নাকি আন্দ্রেইয়ের স্বপ্ন।
তখন পড়ন্ত বিকেল। বাজার এলাকায় রুশদের আনাগোনা বেড়ে গেছে। ফলের দোকানের দিকে যাচ্ছেন অনেকে। দূর থেকেই বোঝা যাচ্ছে, সেখানে দরদাম করা হচ্ছে। বাঙালি বিক্রেতা অবলীলায় কথা বলে যাচ্ছেন রুশদের সঙ্গে। দু-একটা রুশ শব্দ ভেসে আসছে। দেখা যাচ্ছে, আঙুর, আপেল, নাশপাতি, ডালিমের প্রতি রুশদের আগ্রহ বেশি। আর মাল্টা-কমলা তো ওদের প্রাণপ্রিয় ফল। সেগুলোও বিকোচ্ছে দেদার।
একটু একটু করে বোঝা যাচ্ছে, রুশদের খাদ্যাভ্যাসের ব্যাপারটা মাথায় রেখে রেস্তোরাঁগুলো সাজিয়েছে তাদের মেন্যু, ফলের দোকানগুলো আনছে ফল, সবজির দোকানে আলু, গাজর, ফুলকপি, বাঁধাকপির আধিক্য।
খাদ্যাভ্যাস একটা দারুণ ব্যাপার। আমরা যখন রাশিয়ায় গিয়েছিলাম, তখন ওদের মসলাহীন খাবার দেখে থমকে দাঁড়াতাম। প্রথম প্রথম তা মুখ দিয়ে পেটে নামত না। তারপর একসময় সে খাবারের স্বাদ বুঝতে শিখলাম। এখানে এসেও মসলার প্রাবল্যে বাঙালি খাবারের ব্যাপারে বিস্ময় জাগে রাশানদের। তবে ধীরে ধীরে মসলার সঙ্গে পরিচিত হয়। তবে মূলত বাড়িতে যখন রান্না করে, তখন নিজেদের খাবারের দিকেই মনোযোগী হয়। রেস্তোরাঁয় খেতে গেলে বেছে নেয় সেই খাবারের ঘরগুলো, যেখানে মিলবে তাদের পছন্দের খাবার।
প্রজেক্টের মধ্যে ‘পাপা রোমা’ নামে দুটো রেস্তোরাঁ ছিল। সেখানে শেফ হিসেবে কাজ করতেন মো. আলমগীর। একটি প্রতিষ্ঠানের এমডি আর নিজের ভাই ওয়েস্টিনের শেফের কাছে শিখে নিয়েছিলেন রুশ রান্না। পরে এক বন্ধুর সঙ্গে মিলে গ্রিন সিটিতে ‘হেলদি ফুড’ নামে একটি রেস্তোরাঁ দিয়েছেন। তাঁর ৯৫ শতাংশ অতিথিই রাশান। রুশ খাবারের মধ্যে বোর্শ, এগ সালাদ, ভেনিগ্রেৎ সালাদ, খারচো, পিলমিনি রান্না করেন। রুশদের প্রিয় কাৎলেত আর প্লোফও বাদ যায় না। গ্রিল চিকেন করেন রাশান স্টাইলে। গ্রিল চিকেনগুলো আকারে বড়। ঢাকায় যে ছোট ছোট ব্রয়লার মুরগি দিয়ে গ্রিল চিকেন তৈরি করা হয়, তাতে রুশদের মন ভরে না। তারা বিক্রেতাকে বলে, ‘বালশোই দাভাই। নি নাদা ওস্ত্রি।’ অর্থাৎ ‘বড়টা দাও, ঝাল দিয়ো না।’ বাঙালিরা খেতে এলে তাদের জন্য ঝাল-মসলা আলাদা দেওয়া হয়।
কে না জানে, রুশদের প্রিয় খাবার বোর্শ। কালো রুটি দিয়ে বোর্শের মজাই আলাদা। হাড়সহ গরুর মাংস, বাঁধাকপি, বিট, আলু, ক্যাপসিকাম, গাজর আর টমেটো দিয়ে তৈরি এই খাবারটি খুবই শক্তিদায়ক। মো. আলমগীর সেই রান্নাটা খুব ভালো করেন বলে অনেক রাশানই তাঁর নিয়মিত খদ্দের। মো. আলমগীররা এখানে রুশ খাবারের জন্য কারখানাও বানিয়েছেন, যেখানে লুলিয়া কাবাব, পিলমিনি, বার্গারের বানসহ নানা কিছুই তৈরি করেন। গ্রিন সিটির ভেতরে যে দোকান রয়েছে, সেখানেও পাওয়া যায় প্যাকেটজাত এই খাবারগুলো।
অর্থনীতির চাহিদা আর জোগানের সূত্রটা যে খাঁটি, সে কথা এখানে এসে আরেকবার মনে হয়। আমরা এগিয়ে যাই একটা ফলের দোকানের দিকে। এরপর যাব একটা ফ্যাশন হাউসে, একটু আগেই কয়েকজনকে সেখানে ঢুকতে দেখেছি।
উঁচু ভবনগুলোর উল্টো দিকে সারি সারি দোকানে বাংলার সঙ্গে রুশ নাম দেওয়া হয়েছে বাণিজ্যিক কারণেই। নাম দেখেই যেন রাশানরা বুঝতে পারেন, এই দোকানে কী পাওয়া যায়। আস্তে আস্তে নতুন ব্যবসায়ীরাও ঢুকছেন এই বাজারে। অর্থনীতি যে তার আপন নিয়মে কিছু পরিবর্তন নিয়ে আসে জীবনযাত্রায়, সেটা এখানে এলে টের পাওয়া যায়।
পাকশীর গ্রিন সিটির সামনে ‘রুস্কায়া মোদা’ বা ‘রাশিয়ান ফ্যাশন’ দোকানের নিচে দাঁড়িয়ে দুজন রুশ নাগরিক কথা বলছিলেন। আমরা যে চারজন বাঙালি এসেছি এখানে, তারা সবাই রাশিয়ায় পড়াশোনা করেছি। ফলে রুশ ভাষা আমাদের জন্য অবোধ্য কোনো ভাষা নয়। বন্ধু সুকান্ত মুখার্জি এগিয়ে যান তাঁদের দিকে। আমাদের সঙ্গে কথা বলার অনুরোধ জানালে সহাস্যে রাজি হয়ে যান তাঁরা। তাঁদের একজন রাশিয়ার ইভান, অন্যজন বেলারুশিয়ার সের্গেই।
রূপপুরে প্রতিদিন যে রুশ রূপকথার জন্ম হচ্ছে, এ আলোচনা তারই একটি অংশ। পরিচয়পর্বে আমাদের সঙ্গী একজন ডাক্তারি পড়ে এসেছেন শুনে জিজ্ঞেস করলেন ইভান, ‘কোন শহরে আপনি পড়েছেন?’
–ক্রাসনাদারে।
–আমার স্ত্রী পড়েছে ভলগাগ্রাদ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে। ড. পেত্রোভ ছিলেন সে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য।
–এখন তিনি কী করছেন?
–ও এখন একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে কাজ করে।
–তাহলে প্রশ্ন করতে হয়, আপনার স্ত্রী ওখানে আর আপনি এখানে কেন? কেন একসঙ্গে নয়?
–এখানে আসার ইচ্ছে ছিল আমার। মূল কারণ অবশ্যই অর্থনৈতিক। টাকা রোজগারের জন্য যেকোনো দেশে যাওয়া যেত। কিন্তু আমার মনে হলো, এ দেশে আসাই ভালো।
–কেনাকাটা করতে গিয়ে সমস্যা হয় না? আঙুরের দাম হয়তো ২০০ টাকা কেজি, আপনার কাছে চাইল ৩০০ টাকা। দরদাম করতে হয় না?
–হ্যাঁ, হ্যাঁ, দরদাম করতে হয়। পৃথিবীর সব দেশেই এই ধরনের ব্যক্তিমালিকানাধীন দোকানে দরদাম করতে হয়।
-রাশিয়ায় তো কালবাসা (একধরনের সসেজ), স্মিতানা (ঘন দই) ছাড়া জীবন অচল। এখানে সেগুলোর জন্য মন কাঁদে না?
ইভান বলেন, ‘আমাদের তো দুই বছর সেনাবাহিনীতে সময় কাটাতে হয়। সে সময় সব ধরনের কষ্ট সহ্য করে নেওয়ার অভ্যাস গড়ে তোলা হয়। তাই খাওয়া নিয়ে সমস্যা হয় না।’
তাঁর কথা টেনে নিয়ে আন্দ্রেই বলেন, ‘আমরা ভাগ্যবান। এখানে মাংস তো পাওয়া যাচ্ছে!’
-আপনারা কোথায় খান?
-পারমাণবিক কেন্দ্রের স্তালোবায়াতে (ক্যানটিন), ক্যাফেতে। এখানে কত কিছু খাই, গ্রিল মুরগি, শিঙাড়া, মুড়ি, ভেড়া, বিরিয়ানি...এখানে রুশ খাবারের পাশাপাশি স্থানীয় খাবার, চীনা খাবার পাওয়া যায়, যখন যা মন চায়, খাই।
-বাড়ির জন্য মন কাঁদে না?
ইভান বলেন, ‘এটা আমাদের ব্যক্তিগত ব্যাপার।’ বলে হাসতে থাকেন। আন্দ্রেই বলেন, ‘হ্যাঁ, হ্যাঁ, মন তো কাঁদেই।’
আন্দ্রেই বললেন, ‘আমি আমার লেখা একটা কবিতা পড়তে চাই।’ বলে শুরু করলেন কবিতা পাঠ। বড় কবিতা। তার শুরুটা এই রকম:
কল্পনার মতোই গল্পটা আমার
স্বপ্ন দেখেছিলাম রাতে
উড়ে যাচ্ছি আমি
অনেক ওপরে আকাশের কাছাকাছি ওঠার পর
টের পেলাম ডানা খুলে গেছে
এরপর ধীরে ধীরে পতনের শুরু
চারদিকে নিস্তব্ধ নীরবতা
কেউ শুনতে পাচ্ছিল না
আমি চিৎকার করে বলছিলাম, ‘বাঁচাও বাঁচাও’।
কবিতার নির্যাস হয় না, পুরোটা শুনে ব্যঞ্জনাটা ধরতে হয়। আন্দ্রেই-এর কবিতায় ফুটে উঠছিল একজন শান্তিবাদী মানুষের আর্তি। ‘স্বপ্ন নিয়ে বাঁচতে হলে ডানা হারিয়ো না’—এই ছিল মোদ্দা কথা। এটাই নাকি আন্দ্রেইয়ের স্বপ্ন।
তখন পড়ন্ত বিকেল। বাজার এলাকায় রুশদের আনাগোনা বেড়ে গেছে। ফলের দোকানের দিকে যাচ্ছেন অনেকে। দূর থেকেই বোঝা যাচ্ছে, সেখানে দরদাম করা হচ্ছে। বাঙালি বিক্রেতা অবলীলায় কথা বলে যাচ্ছেন রুশদের সঙ্গে। দু-একটা রুশ শব্দ ভেসে আসছে। দেখা যাচ্ছে, আঙুর, আপেল, নাশপাতি, ডালিমের প্রতি রুশদের আগ্রহ বেশি। আর মাল্টা-কমলা তো ওদের প্রাণপ্রিয় ফল। সেগুলোও বিকোচ্ছে দেদার।
একটু একটু করে বোঝা যাচ্ছে, রুশদের খাদ্যাভ্যাসের ব্যাপারটা মাথায় রেখে রেস্তোরাঁগুলো সাজিয়েছে তাদের মেন্যু, ফলের দোকানগুলো আনছে ফল, সবজির দোকানে আলু, গাজর, ফুলকপি, বাঁধাকপির আধিক্য।
খাদ্যাভ্যাস একটা দারুণ ব্যাপার। আমরা যখন রাশিয়ায় গিয়েছিলাম, তখন ওদের মসলাহীন খাবার দেখে থমকে দাঁড়াতাম। প্রথম প্রথম তা মুখ দিয়ে পেটে নামত না। তারপর একসময় সে খাবারের স্বাদ বুঝতে শিখলাম। এখানে এসেও মসলার প্রাবল্যে বাঙালি খাবারের ব্যাপারে বিস্ময় জাগে রাশানদের। তবে ধীরে ধীরে মসলার সঙ্গে পরিচিত হয়। তবে মূলত বাড়িতে যখন রান্না করে, তখন নিজেদের খাবারের দিকেই মনোযোগী হয়। রেস্তোরাঁয় খেতে গেলে বেছে নেয় সেই খাবারের ঘরগুলো, যেখানে মিলবে তাদের পছন্দের খাবার।
প্রজেক্টের মধ্যে ‘পাপা রোমা’ নামে দুটো রেস্তোরাঁ ছিল। সেখানে শেফ হিসেবে কাজ করতেন মো. আলমগীর। একটি প্রতিষ্ঠানের এমডি আর নিজের ভাই ওয়েস্টিনের শেফের কাছে শিখে নিয়েছিলেন রুশ রান্না। পরে এক বন্ধুর সঙ্গে মিলে গ্রিন সিটিতে ‘হেলদি ফুড’ নামে একটি রেস্তোরাঁ দিয়েছেন। তাঁর ৯৫ শতাংশ অতিথিই রাশান। রুশ খাবারের মধ্যে বোর্শ, এগ সালাদ, ভেনিগ্রেৎ সালাদ, খারচো, পিলমিনি রান্না করেন। রুশদের প্রিয় কাৎলেত আর প্লোফও বাদ যায় না। গ্রিল চিকেন করেন রাশান স্টাইলে। গ্রিল চিকেনগুলো আকারে বড়। ঢাকায় যে ছোট ছোট ব্রয়লার মুরগি দিয়ে গ্রিল চিকেন তৈরি করা হয়, তাতে রুশদের মন ভরে না। তারা বিক্রেতাকে বলে, ‘বালশোই দাভাই। নি নাদা ওস্ত্রি।’ অর্থাৎ ‘বড়টা দাও, ঝাল দিয়ো না।’ বাঙালিরা খেতে এলে তাদের জন্য ঝাল-মসলা আলাদা দেওয়া হয়।
কে না জানে, রুশদের প্রিয় খাবার বোর্শ। কালো রুটি দিয়ে বোর্শের মজাই আলাদা। হাড়সহ গরুর মাংস, বাঁধাকপি, বিট, আলু, ক্যাপসিকাম, গাজর আর টমেটো দিয়ে তৈরি এই খাবারটি খুবই শক্তিদায়ক। মো. আলমগীর সেই রান্নাটা খুব ভালো করেন বলে অনেক রাশানই তাঁর নিয়মিত খদ্দের। মো. আলমগীররা এখানে রুশ খাবারের জন্য কারখানাও বানিয়েছেন, যেখানে লুলিয়া কাবাব, পিলমিনি, বার্গারের বানসহ নানা কিছুই তৈরি করেন। গ্রিন সিটির ভেতরে যে দোকান রয়েছে, সেখানেও পাওয়া যায় প্যাকেটজাত এই খাবারগুলো।
অর্থনীতির চাহিদা আর জোগানের সূত্রটা যে খাঁটি, সে কথা এখানে এসে আরেকবার মনে হয়। আমরা এগিয়ে যাই একটা ফলের দোকানের দিকে। এরপর যাব একটা ফ্যাশন হাউসে, একটু আগেই কয়েকজনকে সেখানে ঢুকতে দেখেছি।
জমির মালিক হযরত শাহ্ আলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। তবে ওই জমিতে ৩৯১টি দোকান নির্মাণ করে কয়েক বছর ধরে ভাড়া নিচ্ছে হযরত শাহ্ আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজ। দোকানগুলোর ভাড়া থেকে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ৭০ লাখ টাকা ভ্যাটও দেওয়া হয়নি। বিষয়টি উঠে এসেছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) তদন্তে।
২ দিন আগেকুড়িগ্রাম পৌর শহরে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী ছোট ভাই নিহত ও বড় ভাই আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে মৎস্য খামারের কাছে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
৫ দিন আগেবৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগের মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১৮ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত শনিবার রাতে ও গতকাল রোববার তাঁরা গ্রেপ্তার হন।
৫ দিন আগেএক অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটেছে শিল্পকলা একাডেমিতে। শিল্পকলা একাডেমির তিনটি হলেই কিছুদিন আগেও নাটক চলত। নাট্যকর্মীদের সৃজনশীলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটত সেখানে। বহু পরিশ্রমে মাসের পর মাস নিজের খেয়ে, নিজের গাড়িভাড়া দিয়ে নাট্যকর্মীরা একেবারেই স্বেচ্ছাশ্রমে একটি শিল্প তিপ্পান্ন বছর ধরে গড়ে তুলেছেন। শিল্পকলা একাডেমি এখন
৯ দিন আগে