বেড়িবাঁধ ঘিরে পর্যটনের সম্ভাবনা

আব্বাস হোসেন, লক্ষ্মীপুর
প্রকাশ : ০১ অক্টোবর ২০২১, ০৭: ৪০
আপডেট : ০৩ অক্টোবর ২০২১, ১৭: ২৬

লক্ষ্মীপুরে চর আলেকজান্ডার বেড়িবাঁধের সৌন্দর্য দেখতে প্রতিদিনই ভিড় করছেন অসংখ্য দর্শনার্থী। সৌন্দর্যের কারণে জায়গাটিকে অনেকেই তুলনা করেন কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের সঙ্গে। এ বাঁধকে ঘিরে রয়েছে পর্যটনের ব্যাপক সম্ভাবনা।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, লক্ষ্মীপুর জেলা শহর থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার সড়কপথ পাড়ি দিয়ে যেতে হয় রামগতির আলেকজান্ডার বেড়িবাঁধে। প্রতিদিন ঢাকা, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, নোয়াখালী ও চাঁদপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে দল বেঁধে হাজারো দর্শনার্থী আসেন এখানে। কোনো উৎসব কিংবা বিশেষ দিনে এ বেড়িবাঁধে নামে দর্শনার্থীর ঢল।

এ বেড়িবাঁধ থেকে চোখে পড়ে বিশাল জলরাশি। মেঘনার জোয়ার-ভাটার খেলা চলে এ জলরাশিতে। এ নদীর উঁচু ঢেউয়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে নৌকায় মাছ শিকার করেন জেলেরা। সংগ্রামী জেলেদের ইলিশ ধরার কৌশল পর্যবেক্ষণ করতে পারেন দর্শনার্থীরা। মেঘনার মোহনা পরিদর্শন, নৌকা ভ্রমণ কিংবা নতুন জেগে ওঠা চর দর্শনার্থীদের দারুণভাবে আকর্ষণ করে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০১৪ সালে মেঘনায় ভয়াবহ ভাঙন দেখা দেয়। এ ভাঙন চলে আসে রামগতি উপজেলা পরিষদের কাছাকাছি। ঘরবাড়ি হারিয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা চলে যান অন্য জায়গায়। জনদাবি ওঠে মেঘনায় বাঁধ নির্মাণের। এ জন্য সড়ক অবরোধ, মানববন্ধন ও বিক্ষোভসহ নানা কর্মসূচি পালন করেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

অবশেষে ২০১৪ সালের আগস্টে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) বৈঠকে পাস হয় মেঘনার নদীর তীর রক্ষা বাঁধ নির্মাণ প্রকল্প। ১ হাজার ৩৪৯ কোটি টাকা ব্যয়ে এ বাঁধ নির্মাণ শুরু হয়। ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে শেষ হয় সাড়ে তিন কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এ বাঁধ নির্মাণের কাজ।

আবদুল খালেক, হাবিবুর রহমান সবুজ, কহিনুর বেগমসহ কয়েকজন দর্শনার্থী জানান, বেড়িবাঁধে সৌন্দর্যবর্ধনের পাশাপাশি পর্যটকদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা থাকলে আরও ভালো হতো। অনেক সময় ইভটিজিংয়ের শিকার হতে হয় নারীদের। এসব বিষয়ে প্রশাসন আরও কঠোর হলে বেড়িবাঁধটি হতে পারে সম্ভাবনাময় পর্যটন কেন্দ্র।

রামগতি পৌরসভার মেয়র মেজবাহ উদ্দিন মেজু বলেন, বর্তমান সরকার এ বেড়িবাঁধ নির্মাণ না করলে মানচিত্র থেকে হারিয়ে যেত রামগতি উপজেলা। এখন বেড়িবাঁধে পর্যটন নগরী গড়ে তোলার জন্য পৌরসভার পক্ষ থেকে কাজ চলছে।

লক্ষ্মীপুরের পুলিশ সুপার ড. এ এইচ এম কামরুজ্জামান বলেন, বেড়িবাঁধকে ঘিরে পর্যটকদের জন্য ব্যাপক নিরাপত্তার ব্যবস্থা রয়েছে। পর্যটকেরা যেন কোনো ধরনের হয়রানির শিকার না হন, সে দিকে পুলিশের নজর রয়েছে।

লক্ষ্মীপুরের জেলা প্রশাসক আনোয়ার হোছাইন আকন্দ বলছেন, চর আলেকজান্ডার বেড়িবাঁধটি পর্যটনের জন্য উপযোগী করা হচ্ছে। পর্যটন নগরী গড়ে তোলার জন্য একটি প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। ইতিমধ্যে কয়েক কোটি টাকা ব্যয়ে সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ করা হয়েছে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত