রবিউল আলম, ঢাকা
৪০তম বিসিএসের ফল যেন সমাজ-রাষ্ট্রে বদলে যাওয়া একটি চিত্র বড় করে সামনে আনল। সমাজে সম্মান-মর্যাদার সূচকে বদল এবং দেশের শিক্ষাব্যবস্থার সঙ্গে কর্মসংস্থানের বাস্তবতার ফারাক দেখিয়ে দিল চোখে আঙুল দিয়ে।
এই বিসিএসে পররাষ্ট্র, প্রশাসন, পুলিশসহ বেশ কয়েকটি ক্যাডারে প্রথম হয়েছেন দেশের বিভিন্ন প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে আসা শিক্ষার্থীরা। অথচ যোগ্যতাসম্পন্ন প্রার্থী না পাওয়ায় কারিগরি বা পেশাগত ক্যাডারের ২৫৬টি পদে কাউকে সুপারিশ করা সম্ভব হয়নি। এর অর্থ, যাঁরা প্রকৌশলসহ অন্যান্য কারিগরি বিষয়ে জ্ঞানার্জন করেছেন, তাঁরা সংশ্লিষ্ট পেশায় যেতে চাইছেন না। তাঁদের চাওয়া আমলাতন্ত্রের অংশ হওয়া। অথচ বিশেষায়িত শিক্ষায় শিক্ষিত করতে অন্যদের তুলনায় তাঁদের পেছনে বেশি ব্যয় করেছে রাষ্ট্র। চাওয়া-পাওয়ার হিসাব বদলে যাওয়ার এ ঘটনা এক দিনে হয়নি, কয়েক বছর ধরে আস্তে আস্তে হচ্ছে সমাজের মধ্য থেকে। কিন্তু কেন?
বিশেষায়িত পেশা বিশেষ করে ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ারিং ছেড়ে ভিন্ন ক্যাডারে আসা ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে যা জানা গেছে মোটা দাগে তা এমন– বিদ্যমান সামাজিক কাঠামোর জন্য তাঁরা এসব ক্যাডারে যুক্ত হচ্ছেন। সমাজে ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ারদের চেয়ে ম্যাজিস্ট্রেট, ডিসি, পুলিশ সুপারদের প্রভাব, সম্মান ও আর্থিক সুবিধা অনেক বেশি। ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার হয়ে বিভিন্ন কাজের জন্য তাঁদের শেষমেশ প্রশাসন ও পুলিশ ক্যাডারের দ্বারস্থ হতে হয়। অনেক সময় নিজেদের তুলনায় প্রশাসনে কর্মরত নিম্নপদস্থ কর্মকর্তার দ্বারাও ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়াররা নানা অবহেলার শিকার হন। একই সঙ্গে চাকরিতে প্রবেশ করে প্রশাসন ক্যাডারের লোকজন হয়ে যাচ্ছেন ইউএনও, ডিসি ও সচিব। ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ারদের কাজ করতে হয় তাঁদের নির্দেশনায়। সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গিও বৈষম্যমূলক; একজন ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার কোনো কারণে নিগ্রহের শিকার হলে সাড়াশব্দ নেই, অন্যদিকে পুলিশ-প্রশাসনের কারও দিকে আঙুল তুলতে হলে মানুষ সাতবার ভাবে।
বিশেষায়িত শিক্ষা নিয়েও সাধারণ ক্যাডারে আসার এগুলোই বড় কারণ। কিন্তু এখানে তো প্রতিযোগিতা সবার জন্য উন্মুক্ত। পরীক্ষাপদ্ধতির কারণে সেই প্রতিযোগিতায় বিশেষ সুবিধা পেয়ে যাচ্ছেন চিকিৎসা বা প্রকৌশলের শিক্ষার্থীরা। বিসিএসে প্রার্থীদের মধ্যে বড় ব্যবধানটা তৈরি হয়ে যায় লিখিত পরীক্ষায়। সাধারণ ক্যাডারে ৯০০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষার মধ্যে ইংরেজি, গাণিতিক যুক্তি ও মানসিক দক্ষতা এবং বিজ্ঞানে। চিকিৎসা-প্রকৌশলের শিক্ষার্থীরা এ বিষয়গুলোতে অন্যদের তুলনায় বেশি দক্ষ।
বদলে যাওয়া সামাজিক চাওয়া-পাওয়া এবং বাছাই পদ্ধতির সুযোগ এবং এই দুইয়ের ফল বিশেষায়িত জ্ঞান নিয়ে সাধারণ ক্যাডারে যোগদান। ধীরে ধীরে এটাই হচ্ছে।বাংলাদেশ কর্ম কমিশন (পিএসসি) ৩৬তম বিসিএসে ২ হাজার ৩২৩ প্রার্থীকে ক্যাডার পদের জন্য সুপারিশ করে। এর মধ্যে প্রায় ৪ দশমিক ৩০ শতাংশ পদে চিকিৎসা, প্রকৌশল ও কৃষির মতো কারিগরি ডিগ্রিধারী প্রশাসন, পররাষ্ট্র বা পুলিশের মতো সাধারণ ক্যাডারে ঢুকেছেন। ৩৭তম বিসিএসে এই হার ৬ দশমিক শূন্য ৮ এবং ৩৮তম বিসিএসে ৭ দশমিক ৭১। ৩৯তম বিসিএস চিকিৎসকদের জন্য বিশেষ বিসিএস ছিল। এরপর সর্বশেষ ৪০তম বিসিএসে এই হারটা এখনো জানা যায়নি। তবে পররাষ্ট্র, পুলিশ ও প্রশাসনের মতো শীর্ষ সাধারণগুলোতে তাঁরা প্রথম হয়েছেন এবং সংখ্যায়ও তাঁদের উপস্থিতি অনেক বলে জানা যাচ্ছে।
তিন ক্যাডারে প্রথম হওয়া তিনজনের বক্তব্যটা শুনলে বোঝা যাবে ধীরে ধীরে এই বদলের কারণ। পররাষ্ট্র ক্যাডারে প্রথম হওয়া মোহাইমিনুল ইসলাম পড়াশোনা করেছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পানিসম্পদ প্রকৌশল বিভাগে। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘জীবন, চাকরির নিরাপত্তা, সামাজিক সম্মান ইত্যাদি বিষয়ে নতুন প্রেক্ষাপট তৈরি হয়েছে। অনেক সময় দেখা যায়, একজন প্রকৌশলীকে ইঞ্জিনিয়ারিং-বিষয়ক বড় কোনো সিদ্ধান্ত নিতেও প্রশাসনের কারও দ্বারস্থ হতে হচ্ছে। আবার কারিগরি কাজে বড় পরিবর্তন আনতে চাইলেও একজন ইঞ্জিনিয়ার নিজে তা পারেন না। নানা কাজে একজন প্রকৌশলীকে তাঁর চেয়ে নিম্নপদস্থ কর্মকর্তার পেছনে ঘুরতে হয়।’
পুলিশ ক্যাডারে প্রথম হয়েছেন খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) ইলেকট্রনিকস অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্র কাজী ফাইজুল করিম। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে একজন ইঞ্জিনিয়ার শুরুতে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা বেতন পান। আর আমি নিজে যে বিষয়ে পড়েছি, সেটার চাকরি এ দেশে নাই বললেই চলে। তাহলে আমি কেন সেই সেক্টরে থাকব? একজন ইঞ্জিনিয়ার যদি একজন ঠিকাদার দ্বারা নিগ্রহের শিকার হন, তাহলে কেন তিনি ইঞ্জিনিয়ারিং রেখে এদিকে আসবেন না? আন্তক্যাডার বৈষম্যও ক্যাডার পরিবর্তনের মূল একটা কারণ।’
আর প্রশাসনে প্রথম হওয়া একই বিশ্ববিদ্যালয়ের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, ‘এর আগে আমি দুইটা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেছি। সেগুলোর তুলনায় প্রশাসন ক্যাডারের জবে সিকিউরিটি বেশি।’ এদিকে সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া শিক্ষার্থীরাও আবার এ নিয়ে নাখোশ। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বিভাগের শিক্ষার্থী নোমান হাসান বলেন, ‘দেখা যাচ্ছে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ে অনেকে প্রশাসনে আসছেন। কিন্তু যাঁরা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে পড়াশোনা করেছেন, স্বাভাবিকভাবে তাঁরাই এ বিষয়ে বেশি জানবেন। কাজেই যিনি যে বিষয়ে দক্ষ, তাঁকে সেই জায়গায় স্থান করে দিতে হবে, তা না হলে সেটা দেশেরই ক্ষতি।’
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সচিব ড. ফেরদৌস জামান বলেন, ‘বিশেষায়িত বিষয়ে পড়লেও আসলে পেশার পছন্দ ব্যক্তির ইচ্ছের ওপর নির্ভর করে। প্রকৌশলী বা চিকিৎসকেরা যখন দেখেন তাঁরা বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন এবং তাঁর ক্যাডার থেকে সর্বোচ্চ স্থানে যাওয়া যাচ্ছে না, তখন তাঁরা সেখানে থাকবেন কেন? এ জন্য বিশেষায়িত শিক্ষা নিয়েও চাকরির সময় তাঁরা পুলিশ-প্রশাসনের মতো সাধারণ ক্যাডারে ঝুঁকছেন।’
বিশেষায়িত পেশা ছেড়ে সাধারণ ক্যাডারে আসার বিষয়টিকে নেতিবাচক হিসেবে দেখছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান মামুন। তিনি বলেন, ‘সমস্যাটা আছে গোড়ায়। প্রকৌশলী-চিকিৎসকেরা কেন ক্ষমতার জন্য প্রশাসন, পুলিশ কিংবা পররাষ্ট্র—এসব ক্যাডারে ঝুঁকছেন, সেটা ভাবতে হবে। চিকিৎসা বা প্রকৌশলী হয়ে যখন তাঁরা দেখেন সমাজে তাঁর মূল্য নেই, তখন তিনি স্বাভাবিকভাবেই ক্ষমতাশালী ও বেশি সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার জন্য সাধারণ ক্যাডারে যাবেন। মূল সমস্যা হলো আমাদের রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা।’
৪০তম বিসিএসের ফল যেন সমাজ-রাষ্ট্রে বদলে যাওয়া একটি চিত্র বড় করে সামনে আনল। সমাজে সম্মান-মর্যাদার সূচকে বদল এবং দেশের শিক্ষাব্যবস্থার সঙ্গে কর্মসংস্থানের বাস্তবতার ফারাক দেখিয়ে দিল চোখে আঙুল দিয়ে।
এই বিসিএসে পররাষ্ট্র, প্রশাসন, পুলিশসহ বেশ কয়েকটি ক্যাডারে প্রথম হয়েছেন দেশের বিভিন্ন প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে আসা শিক্ষার্থীরা। অথচ যোগ্যতাসম্পন্ন প্রার্থী না পাওয়ায় কারিগরি বা পেশাগত ক্যাডারের ২৫৬টি পদে কাউকে সুপারিশ করা সম্ভব হয়নি। এর অর্থ, যাঁরা প্রকৌশলসহ অন্যান্য কারিগরি বিষয়ে জ্ঞানার্জন করেছেন, তাঁরা সংশ্লিষ্ট পেশায় যেতে চাইছেন না। তাঁদের চাওয়া আমলাতন্ত্রের অংশ হওয়া। অথচ বিশেষায়িত শিক্ষায় শিক্ষিত করতে অন্যদের তুলনায় তাঁদের পেছনে বেশি ব্যয় করেছে রাষ্ট্র। চাওয়া-পাওয়ার হিসাব বদলে যাওয়ার এ ঘটনা এক দিনে হয়নি, কয়েক বছর ধরে আস্তে আস্তে হচ্ছে সমাজের মধ্য থেকে। কিন্তু কেন?
বিশেষায়িত পেশা বিশেষ করে ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ারিং ছেড়ে ভিন্ন ক্যাডারে আসা ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে যা জানা গেছে মোটা দাগে তা এমন– বিদ্যমান সামাজিক কাঠামোর জন্য তাঁরা এসব ক্যাডারে যুক্ত হচ্ছেন। সমাজে ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ারদের চেয়ে ম্যাজিস্ট্রেট, ডিসি, পুলিশ সুপারদের প্রভাব, সম্মান ও আর্থিক সুবিধা অনেক বেশি। ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার হয়ে বিভিন্ন কাজের জন্য তাঁদের শেষমেশ প্রশাসন ও পুলিশ ক্যাডারের দ্বারস্থ হতে হয়। অনেক সময় নিজেদের তুলনায় প্রশাসনে কর্মরত নিম্নপদস্থ কর্মকর্তার দ্বারাও ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়াররা নানা অবহেলার শিকার হন। একই সঙ্গে চাকরিতে প্রবেশ করে প্রশাসন ক্যাডারের লোকজন হয়ে যাচ্ছেন ইউএনও, ডিসি ও সচিব। ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ারদের কাজ করতে হয় তাঁদের নির্দেশনায়। সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গিও বৈষম্যমূলক; একজন ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার কোনো কারণে নিগ্রহের শিকার হলে সাড়াশব্দ নেই, অন্যদিকে পুলিশ-প্রশাসনের কারও দিকে আঙুল তুলতে হলে মানুষ সাতবার ভাবে।
বিশেষায়িত শিক্ষা নিয়েও সাধারণ ক্যাডারে আসার এগুলোই বড় কারণ। কিন্তু এখানে তো প্রতিযোগিতা সবার জন্য উন্মুক্ত। পরীক্ষাপদ্ধতির কারণে সেই প্রতিযোগিতায় বিশেষ সুবিধা পেয়ে যাচ্ছেন চিকিৎসা বা প্রকৌশলের শিক্ষার্থীরা। বিসিএসে প্রার্থীদের মধ্যে বড় ব্যবধানটা তৈরি হয়ে যায় লিখিত পরীক্ষায়। সাধারণ ক্যাডারে ৯০০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষার মধ্যে ইংরেজি, গাণিতিক যুক্তি ও মানসিক দক্ষতা এবং বিজ্ঞানে। চিকিৎসা-প্রকৌশলের শিক্ষার্থীরা এ বিষয়গুলোতে অন্যদের তুলনায় বেশি দক্ষ।
বদলে যাওয়া সামাজিক চাওয়া-পাওয়া এবং বাছাই পদ্ধতির সুযোগ এবং এই দুইয়ের ফল বিশেষায়িত জ্ঞান নিয়ে সাধারণ ক্যাডারে যোগদান। ধীরে ধীরে এটাই হচ্ছে।বাংলাদেশ কর্ম কমিশন (পিএসসি) ৩৬তম বিসিএসে ২ হাজার ৩২৩ প্রার্থীকে ক্যাডার পদের জন্য সুপারিশ করে। এর মধ্যে প্রায় ৪ দশমিক ৩০ শতাংশ পদে চিকিৎসা, প্রকৌশল ও কৃষির মতো কারিগরি ডিগ্রিধারী প্রশাসন, পররাষ্ট্র বা পুলিশের মতো সাধারণ ক্যাডারে ঢুকেছেন। ৩৭তম বিসিএসে এই হার ৬ দশমিক শূন্য ৮ এবং ৩৮তম বিসিএসে ৭ দশমিক ৭১। ৩৯তম বিসিএস চিকিৎসকদের জন্য বিশেষ বিসিএস ছিল। এরপর সর্বশেষ ৪০তম বিসিএসে এই হারটা এখনো জানা যায়নি। তবে পররাষ্ট্র, পুলিশ ও প্রশাসনের মতো শীর্ষ সাধারণগুলোতে তাঁরা প্রথম হয়েছেন এবং সংখ্যায়ও তাঁদের উপস্থিতি অনেক বলে জানা যাচ্ছে।
তিন ক্যাডারে প্রথম হওয়া তিনজনের বক্তব্যটা শুনলে বোঝা যাবে ধীরে ধীরে এই বদলের কারণ। পররাষ্ট্র ক্যাডারে প্রথম হওয়া মোহাইমিনুল ইসলাম পড়াশোনা করেছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পানিসম্পদ প্রকৌশল বিভাগে। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘জীবন, চাকরির নিরাপত্তা, সামাজিক সম্মান ইত্যাদি বিষয়ে নতুন প্রেক্ষাপট তৈরি হয়েছে। অনেক সময় দেখা যায়, একজন প্রকৌশলীকে ইঞ্জিনিয়ারিং-বিষয়ক বড় কোনো সিদ্ধান্ত নিতেও প্রশাসনের কারও দ্বারস্থ হতে হচ্ছে। আবার কারিগরি কাজে বড় পরিবর্তন আনতে চাইলেও একজন ইঞ্জিনিয়ার নিজে তা পারেন না। নানা কাজে একজন প্রকৌশলীকে তাঁর চেয়ে নিম্নপদস্থ কর্মকর্তার পেছনে ঘুরতে হয়।’
পুলিশ ক্যাডারে প্রথম হয়েছেন খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) ইলেকট্রনিকস অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্র কাজী ফাইজুল করিম। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে একজন ইঞ্জিনিয়ার শুরুতে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা বেতন পান। আর আমি নিজে যে বিষয়ে পড়েছি, সেটার চাকরি এ দেশে নাই বললেই চলে। তাহলে আমি কেন সেই সেক্টরে থাকব? একজন ইঞ্জিনিয়ার যদি একজন ঠিকাদার দ্বারা নিগ্রহের শিকার হন, তাহলে কেন তিনি ইঞ্জিনিয়ারিং রেখে এদিকে আসবেন না? আন্তক্যাডার বৈষম্যও ক্যাডার পরিবর্তনের মূল একটা কারণ।’
আর প্রশাসনে প্রথম হওয়া একই বিশ্ববিদ্যালয়ের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, ‘এর আগে আমি দুইটা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেছি। সেগুলোর তুলনায় প্রশাসন ক্যাডারের জবে সিকিউরিটি বেশি।’ এদিকে সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া শিক্ষার্থীরাও আবার এ নিয়ে নাখোশ। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বিভাগের শিক্ষার্থী নোমান হাসান বলেন, ‘দেখা যাচ্ছে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ে অনেকে প্রশাসনে আসছেন। কিন্তু যাঁরা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে পড়াশোনা করেছেন, স্বাভাবিকভাবে তাঁরাই এ বিষয়ে বেশি জানবেন। কাজেই যিনি যে বিষয়ে দক্ষ, তাঁকে সেই জায়গায় স্থান করে দিতে হবে, তা না হলে সেটা দেশেরই ক্ষতি।’
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সচিব ড. ফেরদৌস জামান বলেন, ‘বিশেষায়িত বিষয়ে পড়লেও আসলে পেশার পছন্দ ব্যক্তির ইচ্ছের ওপর নির্ভর করে। প্রকৌশলী বা চিকিৎসকেরা যখন দেখেন তাঁরা বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন এবং তাঁর ক্যাডার থেকে সর্বোচ্চ স্থানে যাওয়া যাচ্ছে না, তখন তাঁরা সেখানে থাকবেন কেন? এ জন্য বিশেষায়িত শিক্ষা নিয়েও চাকরির সময় তাঁরা পুলিশ-প্রশাসনের মতো সাধারণ ক্যাডারে ঝুঁকছেন।’
বিশেষায়িত পেশা ছেড়ে সাধারণ ক্যাডারে আসার বিষয়টিকে নেতিবাচক হিসেবে দেখছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান মামুন। তিনি বলেন, ‘সমস্যাটা আছে গোড়ায়। প্রকৌশলী-চিকিৎসকেরা কেন ক্ষমতার জন্য প্রশাসন, পুলিশ কিংবা পররাষ্ট্র—এসব ক্যাডারে ঝুঁকছেন, সেটা ভাবতে হবে। চিকিৎসা বা প্রকৌশলী হয়ে যখন তাঁরা দেখেন সমাজে তাঁর মূল্য নেই, তখন তিনি স্বাভাবিকভাবেই ক্ষমতাশালী ও বেশি সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার জন্য সাধারণ ক্যাডারে যাবেন। মূল সমস্যা হলো আমাদের রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা।’
জমির মালিক হযরত শাহ্ আলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। তবে ওই জমিতে ৩৯১টি দোকান নির্মাণ করে কয়েক বছর ধরে ভাড়া নিচ্ছে হযরত শাহ্ আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজ। দোকানগুলোর ভাড়া থেকে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ৭০ লাখ টাকা ভ্যাটও দেওয়া হয়নি। বিষয়টি উঠে এসেছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) তদন্তে।
১ দিন আগেকুড়িগ্রাম পৌর শহরে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী ছোট ভাই নিহত ও বড় ভাই আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে মৎস্য খামারের কাছে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
৫ দিন আগেবৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগের মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১৮ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত শনিবার রাতে ও গতকাল রোববার তাঁরা গ্রেপ্তার হন।
৫ দিন আগেএক অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটেছে শিল্পকলা একাডেমিতে। শিল্পকলা একাডেমির তিনটি হলেই কিছুদিন আগেও নাটক চলত। নাট্যকর্মীদের সৃজনশীলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটত সেখানে। বহু পরিশ্রমে মাসের পর মাস নিজের খেয়ে, নিজের গাড়িভাড়া দিয়ে নাট্যকর্মীরা একেবারেই স্বেচ্ছাশ্রমে একটি শিল্প তিপ্পান্ন বছর ধরে গড়ে তুলেছেন। শিল্পকলা একাডেমি এখন
৯ দিন আগে