রহমান মৃধা
১৯৯৫ সালের দিকে সুইডেনের শিল্পকারখানায় হিড়িক পড়ে গেল অটোমেশন ও আউটসোর্সিংয়ের ওপর।
এর মূলমন্ত্র ছিল হাইটেকের ব্যবহার শুরু করা আর লো-টেক এবং লো-টাচ দূর করা। সে আবার কী? ইন্ডাস্ট্রি সব সময় শীর্ষে থাকবে, প্রথম দিন থেকে, এটাই তখন সবার চিন্তাভাবনা। ম্যানুয়ালি যা তৈরি করা হতো, তা আউটসোর্সিং করা হবে। আর যেসব পণ্যমূল্য বিলিয়ন ডলারের বেশি, সেগুলোর প্রতি ফোকাস দিতে হবে। যার কারণে তখন ঘোষণা করা হয়েছিল—‘ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড লিন ম্যানুফ্যাকচারিং’ এবং ‘প্রোডাকশন প্ল্যানিং অ্যান্ড সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্ট’-এর ওপর গুরুত্ব দিতে হবে।
ইউরোপের সব ধনী দেশ দক্ষতা বৃদ্ধিসংক্রান্ত প্রশিক্ষণ যেমন—লিন ম্যানুফ্যাকচারিং সিস্টেম, ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইঞ্জিনিয়ারিং, গুড ম্যানুফ্যাকচারিং প্র্যাকটিস, কোয়ালিটি অ্যাসিউরেন্স সিস্টেম, প্রোডাকশন অপটিমাইজেশন, সেফটি ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড রিস্ক অ্যাসেসমেন্ট এবং সোশ্যাল কমপ্লায়েন্স নর্মস—এ বিষয়গুলোর ওপর প্রশিক্ষণ দিতে শুরু করল। আমি বিষয়টি পছন্দ করিনি তখন এবং রীতিমতো দ্বিমত পোষণ করি। কিন্তু কেউ আমার কথার তেমন গুরুত্ব দেয়নি সেদিন। কারণ সেই মিটিংয়ে সবাই ছিল ধনী দেশের নাগরিক, তাদের চিন্তা চেতনায় তারা মনে করে তারা যা জানে বা যে অভিজ্ঞতা তাদের রয়েছে তা আমার মতো দরিদ্র দেশের নাগরিকের নেই!
অনেক কোম্পানি তখন গুরুত্বপূর্ণ পণ্যগুলো ছাড়া বাকি সব উৎপাদন ধীরে ধীরে আউটসোর্সিং করাতে শুরু করে। যেমন—গ্লোবস, মাস্ক, গাউন, সিরিঞ্জ, পিপেট এসব আর সুইডেনে নয়, তৈরি হবে বিশ্বের অন্যান্য দেশে। যেসব দেশে দুর্নীতি, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং গণতন্ত্রের অভাব, মূলত সেই সব দেশেই তখন কম খরচে লো-টেক
পণ্য তৈরির জন্য আউটসোর্সিং শুরু হয়। সেই থেকে সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্টের গুরুত্ব বেড়ে যায় গোটা বিশ্বে।
২০২০ সালের করোনাভাইরাসের শুরুতে টয়লেট পেপারের মতো পণ্যের অভাব দেখা দিয়েছিল সুইডেনে। করোনার কারণে যোগাযোগব্যবস্থার প্রচণ্ড সংকট দেখা দিয়েছিল। সুইডেনের হাসপাতালগুলো সেই প্রথমবারের মতো টের পেতে শুরু করেছিল, যা আমি বলেছিলাম সেদিন (১৯৯৫ সালে) সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্ট এবং আউটসোর্সিংয়ের মিটিংয়ে। সবকিছু সঠিকভাবে মনিটর করা হলেও ‘ক্রাইসিস’ পরিস্থিতিতে সমস্যার সমাধান করা কঠিন হবে। সে ক্ষেত্রে উচিত হবে না সবকিছু আউটসোর্সিং করা যতক্ষণ পর্যন্ত ম্যানেজমেন্টের সক্রিয় অংশগ্রহণ না থাকে।
টেক্সটাইল কোম্পানি হেন্নেস অ্যান্ড মৌরিৎজ (এইচ অ্যান্ড এম) তাদের উৎপাদন বাংলাদেশে রেখেছে বটে, তবে ম্যানেজমেন্ট এবং ডিজাইন তাদের দখলে রয়েছে বিধায় আউটসোর্সিং সত্ত্বেও তারা ভালো করছে আজ অবধি। করোনার কারণে ইউরোপে যে সমস্যাগুলো বেশি দেখা দিয়েছিল তা হলো, আউটসোর্সিংয়ের ফলে লো-টেক পণ্যগুলো তখন এদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে ছিল। সে ক্ষেত্রে চাহিদা অনুযায়ী সবকিছু সময়মতো পাওয়া যায়নি। তখন আউটসোর্সিংয়ের পূর্বেকার অবস্থায় ফিরে যাওয়া সম্ভব ছিল না। কারণ বৈশ্বিকভাবেই সুইডেন তখন অন্য দেশের সঙ্গে একে ওপরের ওপর নির্ভরশীল। একই সঙ্গে করোনার কারণে বিশ্বের রাজনীতিবিদেরা যেমন সীমানা বন্ধ করে দিয়েছিলেন, তাতে মনে হয় না আর কোনো দিন পৃথিবীর মানুষ ‘বিল্ডিং ট্রাস্ট বিল্ডিং গ্রোথ’ ধারণার ওপর বিশ্বাস করবে।
এখন প্রশ্ন—কী করণীয় থাকতে পারে ‘ক্রাইসিস’ সময় মোকাবিলা করার জন্য? মৌলিক চাহিদা, যা না হলেই নয়, সেই সব পণ্য অন্যের ওপর নির্ভর করলে চলবে না। তাই সেগুলো নিজেদেরই তৈরি করতে হবে। হোক না সেগুলো লো-টেক বা লো-টাচের। বিপদে যেন সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি না হয়, সেদিকে নজর দিতে হবে।
যেহেতু পরের ওপর শতভাগ বিশ্বাস করা কঠিন হয়ে উঠছে, সে ক্ষেত্রে নিজেদের দায়িত্ব নিতে হবে। তার জন্য দরকার দক্ষ ‘ম্যানেজমেন্ট’ এবং সুপরিকল্পিত ‘সিস্টেম’ চালু করা। একটি কোম্পানি, প্রতিষ্ঠান বা দেশ পরিচালনায় দরকার দক্ষ ‘ম্যানেজমেন্ট’, ‘সিস্টেম ইন প্লেস’, ‘ইমপ্লিমেন্টেশন’ এবং তার ‘বেস্ট প্র্যাকটিস’, সর্বোপরি ‘কারেন্ট গুড ম্যানুফ্যাকচারিং প্র্যাকটিস’, ‘ডকুমেন্টেশন’ এবং ‘ফলোআপ’।
এভাবে আমরা অনেক সমস্যার সমাধান করতে পারি, যদি আমরা জানি আমাদের লক্ষ্য এবং নীতি কী। কিন্তু এ ধরনের চিন্তা অনেকের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না, কারণ সময় নিজেই প্রস্তুত নয় এ রকম পরিবর্তনের জন্য। তবু ভাবতে ক্ষতি কী?
১৯৯৫ সালের দিকে সুইডেনের শিল্পকারখানায় হিড়িক পড়ে গেল অটোমেশন ও আউটসোর্সিংয়ের ওপর।
এর মূলমন্ত্র ছিল হাইটেকের ব্যবহার শুরু করা আর লো-টেক এবং লো-টাচ দূর করা। সে আবার কী? ইন্ডাস্ট্রি সব সময় শীর্ষে থাকবে, প্রথম দিন থেকে, এটাই তখন সবার চিন্তাভাবনা। ম্যানুয়ালি যা তৈরি করা হতো, তা আউটসোর্সিং করা হবে। আর যেসব পণ্যমূল্য বিলিয়ন ডলারের বেশি, সেগুলোর প্রতি ফোকাস দিতে হবে। যার কারণে তখন ঘোষণা করা হয়েছিল—‘ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড লিন ম্যানুফ্যাকচারিং’ এবং ‘প্রোডাকশন প্ল্যানিং অ্যান্ড সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্ট’-এর ওপর গুরুত্ব দিতে হবে।
ইউরোপের সব ধনী দেশ দক্ষতা বৃদ্ধিসংক্রান্ত প্রশিক্ষণ যেমন—লিন ম্যানুফ্যাকচারিং সিস্টেম, ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইঞ্জিনিয়ারিং, গুড ম্যানুফ্যাকচারিং প্র্যাকটিস, কোয়ালিটি অ্যাসিউরেন্স সিস্টেম, প্রোডাকশন অপটিমাইজেশন, সেফটি ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড রিস্ক অ্যাসেসমেন্ট এবং সোশ্যাল কমপ্লায়েন্স নর্মস—এ বিষয়গুলোর ওপর প্রশিক্ষণ দিতে শুরু করল। আমি বিষয়টি পছন্দ করিনি তখন এবং রীতিমতো দ্বিমত পোষণ করি। কিন্তু কেউ আমার কথার তেমন গুরুত্ব দেয়নি সেদিন। কারণ সেই মিটিংয়ে সবাই ছিল ধনী দেশের নাগরিক, তাদের চিন্তা চেতনায় তারা মনে করে তারা যা জানে বা যে অভিজ্ঞতা তাদের রয়েছে তা আমার মতো দরিদ্র দেশের নাগরিকের নেই!
অনেক কোম্পানি তখন গুরুত্বপূর্ণ পণ্যগুলো ছাড়া বাকি সব উৎপাদন ধীরে ধীরে আউটসোর্সিং করাতে শুরু করে। যেমন—গ্লোবস, মাস্ক, গাউন, সিরিঞ্জ, পিপেট এসব আর সুইডেনে নয়, তৈরি হবে বিশ্বের অন্যান্য দেশে। যেসব দেশে দুর্নীতি, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং গণতন্ত্রের অভাব, মূলত সেই সব দেশেই তখন কম খরচে লো-টেক
পণ্য তৈরির জন্য আউটসোর্সিং শুরু হয়। সেই থেকে সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্টের গুরুত্ব বেড়ে যায় গোটা বিশ্বে।
২০২০ সালের করোনাভাইরাসের শুরুতে টয়লেট পেপারের মতো পণ্যের অভাব দেখা দিয়েছিল সুইডেনে। করোনার কারণে যোগাযোগব্যবস্থার প্রচণ্ড সংকট দেখা দিয়েছিল। সুইডেনের হাসপাতালগুলো সেই প্রথমবারের মতো টের পেতে শুরু করেছিল, যা আমি বলেছিলাম সেদিন (১৯৯৫ সালে) সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্ট এবং আউটসোর্সিংয়ের মিটিংয়ে। সবকিছু সঠিকভাবে মনিটর করা হলেও ‘ক্রাইসিস’ পরিস্থিতিতে সমস্যার সমাধান করা কঠিন হবে। সে ক্ষেত্রে উচিত হবে না সবকিছু আউটসোর্সিং করা যতক্ষণ পর্যন্ত ম্যানেজমেন্টের সক্রিয় অংশগ্রহণ না থাকে।
টেক্সটাইল কোম্পানি হেন্নেস অ্যান্ড মৌরিৎজ (এইচ অ্যান্ড এম) তাদের উৎপাদন বাংলাদেশে রেখেছে বটে, তবে ম্যানেজমেন্ট এবং ডিজাইন তাদের দখলে রয়েছে বিধায় আউটসোর্সিং সত্ত্বেও তারা ভালো করছে আজ অবধি। করোনার কারণে ইউরোপে যে সমস্যাগুলো বেশি দেখা দিয়েছিল তা হলো, আউটসোর্সিংয়ের ফলে লো-টেক পণ্যগুলো তখন এদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে ছিল। সে ক্ষেত্রে চাহিদা অনুযায়ী সবকিছু সময়মতো পাওয়া যায়নি। তখন আউটসোর্সিংয়ের পূর্বেকার অবস্থায় ফিরে যাওয়া সম্ভব ছিল না। কারণ বৈশ্বিকভাবেই সুইডেন তখন অন্য দেশের সঙ্গে একে ওপরের ওপর নির্ভরশীল। একই সঙ্গে করোনার কারণে বিশ্বের রাজনীতিবিদেরা যেমন সীমানা বন্ধ করে দিয়েছিলেন, তাতে মনে হয় না আর কোনো দিন পৃথিবীর মানুষ ‘বিল্ডিং ট্রাস্ট বিল্ডিং গ্রোথ’ ধারণার ওপর বিশ্বাস করবে।
এখন প্রশ্ন—কী করণীয় থাকতে পারে ‘ক্রাইসিস’ সময় মোকাবিলা করার জন্য? মৌলিক চাহিদা, যা না হলেই নয়, সেই সব পণ্য অন্যের ওপর নির্ভর করলে চলবে না। তাই সেগুলো নিজেদেরই তৈরি করতে হবে। হোক না সেগুলো লো-টেক বা লো-টাচের। বিপদে যেন সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি না হয়, সেদিকে নজর দিতে হবে।
যেহেতু পরের ওপর শতভাগ বিশ্বাস করা কঠিন হয়ে উঠছে, সে ক্ষেত্রে নিজেদের দায়িত্ব নিতে হবে। তার জন্য দরকার দক্ষ ‘ম্যানেজমেন্ট’ এবং সুপরিকল্পিত ‘সিস্টেম’ চালু করা। একটি কোম্পানি, প্রতিষ্ঠান বা দেশ পরিচালনায় দরকার দক্ষ ‘ম্যানেজমেন্ট’, ‘সিস্টেম ইন প্লেস’, ‘ইমপ্লিমেন্টেশন’ এবং তার ‘বেস্ট প্র্যাকটিস’, সর্বোপরি ‘কারেন্ট গুড ম্যানুফ্যাকচারিং প্র্যাকটিস’, ‘ডকুমেন্টেশন’ এবং ‘ফলোআপ’।
এভাবে আমরা অনেক সমস্যার সমাধান করতে পারি, যদি আমরা জানি আমাদের লক্ষ্য এবং নীতি কী। কিন্তু এ ধরনের চিন্তা অনেকের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না, কারণ সময় নিজেই প্রস্তুত নয় এ রকম পরিবর্তনের জন্য। তবু ভাবতে ক্ষতি কী?
জমির মালিক হযরত শাহ্ আলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। তবে ওই জমিতে ৩৯১টি দোকান নির্মাণ করে কয়েক বছর ধরে ভাড়া নিচ্ছে হযরত শাহ্ আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজ। দোকানগুলোর ভাড়া থেকে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ৭০ লাখ টাকা ভ্যাটও দেওয়া হয়নি। বিষয়টি উঠে এসেছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) তদন্তে।
১ দিন আগেকুড়িগ্রাম পৌর শহরে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী ছোট ভাই নিহত ও বড় ভাই আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে মৎস্য খামারের কাছে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
৫ দিন আগেবৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগের মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১৮ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত শনিবার রাতে ও গতকাল রোববার তাঁরা গ্রেপ্তার হন।
৫ দিন আগেএক অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটেছে শিল্পকলা একাডেমিতে। শিল্পকলা একাডেমির তিনটি হলেই কিছুদিন আগেও নাটক চলত। নাট্যকর্মীদের সৃজনশীলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটত সেখানে। বহু পরিশ্রমে মাসের পর মাস নিজের খেয়ে, নিজের গাড়িভাড়া দিয়ে নাট্যকর্মীরা একেবারেই স্বেচ্ছাশ্রমে একটি শিল্প তিপ্পান্ন বছর ধরে গড়ে তুলেছেন। শিল্পকলা একাডেমি এখন
৮ দিন আগে