মহিউদ্দিন রানা ঈশ্বরগঞ্জ (ময়মনসিংহ)
পুব আকাশে সূর্য উঠেছে। নতুন একটা দিনের শুরু। কানে আসে হারমোনিয়ামে কিশোর-কিশোরীদের গানের রেওয়াজ। একটা সময় প্রায় দিনের শুরুটা হতো এভাবেই। কিন্তু সেই সময় গত হয়েছে। রেওয়াজ করার শব্দ আর আসে না। হারমোনিয়াম আর ঢোল-তবলার কদরও তেমন নেই। গিটার, ড্রামের মতো আধুনিক যন্ত্রের আধিপত্যে হারাতে বসেছে এসব লোকজ বাদ্যযন্ত্র।
এর সঙ্গে সঙ্গে বিলুপ্তির পথে ঐতিহ্যবাহী একটি পেশা—বাদ্যযন্ত্র মেরামতকারী বা কারিগর। বর্তমানে যে কয়জন এ পেশায় জীবিকা নির্বাহ করছেন, তাঁরাও আর বেশি দিন থাকছেন না। ১০-২০ বছর পর হয়তো শোনা যাবে, এ পেশা বলতে কিছুই নেই।
বয়স ৬০ ছুঁই ছুঁই। মেঝেতে হাঁটু গেড়ে বসে পুরোনো একটি তবলা মেরামত করছিলেন খগেন চন্দ্র। কিছুটা দূরে বসে আরেকটি নতুন তবলায় চামড়া লাগাচ্ছিলেন তাঁর ছেলে ১৮ বছরের জয় চন্দ্র।
ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ পৌর এলাকার ধামদী মহল্লার একটি ঘরে দেখা গেল বাবা-ছেলের তবলা বানানোর এ চিত্র। বর্তমান সময়ে এ দৃশ্য বিরলই বলা যেতে পারে।
ময়মনসিংহের এ বাবা-ছেলের বাড়ি টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার সহবতপুর গ্রামে। বছরখানেক হলো এখানে এসেছেন। এর আগে নিজেদের বাড়িতেই তাঁরা ঢোল-তবলা মেরামতের কাজ করতেন। বাবা যোগেশ চন্দ্র দাসের কাছে এ কাজ শিখেছেন খগেন। ২০ বছর বয়স থেকেই এ পেশায় যুক্ত তিনি। আর ছেলেকেও শিখিয়েছেন হাতে ধরে। নিয়ে এসেছেন এ পেশায়। খগেন বলেন, আধুনিক বাদ্যযন্ত্রের দাপটে হারিয়ে যাচ্ছে ঢোল-তবলাসহ লোকজ বাদ্যযন্ত্র। শুধু তা-ই নয়, একটা সময় গ্রাম-গঞ্জে জারি, পালা ও যাত্রাগানের ব্যাপক কদর ছিল। ঢোল, ডুগি, তবলা-বায়া, দোতারা, হারমোনিয়াম ছাড়া গানের আসরই জমত না। এখন সেখানে স্থান পেয়েছে ড্রাম ও গিটারসহ অন্যান্য উন্নত বাদ্যযন্ত্র। যে কারণে দেশীয় বাদ্যযন্ত্রের চাহিদা অনেকটাই কমে গেছে।
খগেন চন্দ্রের মুখে আক্ষেপের সুর, ‘দুবেলা-দুমুঠো খেয়ে বেঁচে থাকার জন্য বাড়িঘর ছেড়ে বাপ-ছেলে এখানে পড়ে আছি। কিন্তু বর্তমান ব্যবসার অবস্থা এতই খারাপ হয়েছে, বাসা আর দোকানভাড়া দিয়ে কোনো রকমে পেটে-ভাতে টিকে আছি।’
এক সপ্তাহ বসে থাকার পর সম্প্রতি একটি ঢোল মেরামতের কাজ পান খগেন। কাজ শেষ হলে মিলবে ১ হাজার টাকা। খরচ বাদ দিলে কতইবা থাকবে!
খগেন-জয়ের জন্য মাসিক হিসাবটা আরও জটিল। কিছুদিন আগে নতুন ঢোল বানানোর একটি অর্ডার পান তাঁরা। সেখান থেকে পাবেন ৩ হাজার টাকা। তাতে খরচেই চলে যায় ২ হাজারের মতো। ‘এই হলো ইনকাম! বর্তমান সময়ে এই সামান্য আয় দিয়ে কীভাবে চলব বলেন?’ -এই প্রশ্ন রাখলেন খগেন।
দুরবস্থার আভাস পেয়েছিলেন অনেক আগেই। কিন্তু শেষ বয়সে এসে খগেন এই পেশা ছাড়বেন কীভাবে! জীবনসংগ্রামে টিকে থাকা খুব কঠিন হলেও বাবার পেশাটাকে ধরে রাখতে চান তিনি। তবে ছেলে জয় আর বেশি দিন এই পেশায় থাকবেন না।
এ নিয়ে কথা হয় স্থানীয় সংগীত একাডেমি সপ্তসুরের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক বাউল আব্দুর রশিদ সরকারের সঙ্গে। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, এখনকার ছেলে-মেয়েদের লোকজ বাদ্যযন্ত্র বাজানো শেখার প্রতি তেমন আগ্রহ নেই। একটা সময়ে আদি এই ঐতিহ্যটা একেবারেই হারিয়ে যাবে।
পুব আকাশে সূর্য উঠেছে। নতুন একটা দিনের শুরু। কানে আসে হারমোনিয়ামে কিশোর-কিশোরীদের গানের রেওয়াজ। একটা সময় প্রায় দিনের শুরুটা হতো এভাবেই। কিন্তু সেই সময় গত হয়েছে। রেওয়াজ করার শব্দ আর আসে না। হারমোনিয়াম আর ঢোল-তবলার কদরও তেমন নেই। গিটার, ড্রামের মতো আধুনিক যন্ত্রের আধিপত্যে হারাতে বসেছে এসব লোকজ বাদ্যযন্ত্র।
এর সঙ্গে সঙ্গে বিলুপ্তির পথে ঐতিহ্যবাহী একটি পেশা—বাদ্যযন্ত্র মেরামতকারী বা কারিগর। বর্তমানে যে কয়জন এ পেশায় জীবিকা নির্বাহ করছেন, তাঁরাও আর বেশি দিন থাকছেন না। ১০-২০ বছর পর হয়তো শোনা যাবে, এ পেশা বলতে কিছুই নেই।
বয়স ৬০ ছুঁই ছুঁই। মেঝেতে হাঁটু গেড়ে বসে পুরোনো একটি তবলা মেরামত করছিলেন খগেন চন্দ্র। কিছুটা দূরে বসে আরেকটি নতুন তবলায় চামড়া লাগাচ্ছিলেন তাঁর ছেলে ১৮ বছরের জয় চন্দ্র।
ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ পৌর এলাকার ধামদী মহল্লার একটি ঘরে দেখা গেল বাবা-ছেলের তবলা বানানোর এ চিত্র। বর্তমান সময়ে এ দৃশ্য বিরলই বলা যেতে পারে।
ময়মনসিংহের এ বাবা-ছেলের বাড়ি টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার সহবতপুর গ্রামে। বছরখানেক হলো এখানে এসেছেন। এর আগে নিজেদের বাড়িতেই তাঁরা ঢোল-তবলা মেরামতের কাজ করতেন। বাবা যোগেশ চন্দ্র দাসের কাছে এ কাজ শিখেছেন খগেন। ২০ বছর বয়স থেকেই এ পেশায় যুক্ত তিনি। আর ছেলেকেও শিখিয়েছেন হাতে ধরে। নিয়ে এসেছেন এ পেশায়। খগেন বলেন, আধুনিক বাদ্যযন্ত্রের দাপটে হারিয়ে যাচ্ছে ঢোল-তবলাসহ লোকজ বাদ্যযন্ত্র। শুধু তা-ই নয়, একটা সময় গ্রাম-গঞ্জে জারি, পালা ও যাত্রাগানের ব্যাপক কদর ছিল। ঢোল, ডুগি, তবলা-বায়া, দোতারা, হারমোনিয়াম ছাড়া গানের আসরই জমত না। এখন সেখানে স্থান পেয়েছে ড্রাম ও গিটারসহ অন্যান্য উন্নত বাদ্যযন্ত্র। যে কারণে দেশীয় বাদ্যযন্ত্রের চাহিদা অনেকটাই কমে গেছে।
খগেন চন্দ্রের মুখে আক্ষেপের সুর, ‘দুবেলা-দুমুঠো খেয়ে বেঁচে থাকার জন্য বাড়িঘর ছেড়ে বাপ-ছেলে এখানে পড়ে আছি। কিন্তু বর্তমান ব্যবসার অবস্থা এতই খারাপ হয়েছে, বাসা আর দোকানভাড়া দিয়ে কোনো রকমে পেটে-ভাতে টিকে আছি।’
এক সপ্তাহ বসে থাকার পর সম্প্রতি একটি ঢোল মেরামতের কাজ পান খগেন। কাজ শেষ হলে মিলবে ১ হাজার টাকা। খরচ বাদ দিলে কতইবা থাকবে!
খগেন-জয়ের জন্য মাসিক হিসাবটা আরও জটিল। কিছুদিন আগে নতুন ঢোল বানানোর একটি অর্ডার পান তাঁরা। সেখান থেকে পাবেন ৩ হাজার টাকা। তাতে খরচেই চলে যায় ২ হাজারের মতো। ‘এই হলো ইনকাম! বর্তমান সময়ে এই সামান্য আয় দিয়ে কীভাবে চলব বলেন?’ -এই প্রশ্ন রাখলেন খগেন।
দুরবস্থার আভাস পেয়েছিলেন অনেক আগেই। কিন্তু শেষ বয়সে এসে খগেন এই পেশা ছাড়বেন কীভাবে! জীবনসংগ্রামে টিকে থাকা খুব কঠিন হলেও বাবার পেশাটাকে ধরে রাখতে চান তিনি। তবে ছেলে জয় আর বেশি দিন এই পেশায় থাকবেন না।
এ নিয়ে কথা হয় স্থানীয় সংগীত একাডেমি সপ্তসুরের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক বাউল আব্দুর রশিদ সরকারের সঙ্গে। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, এখনকার ছেলে-মেয়েদের লোকজ বাদ্যযন্ত্র বাজানো শেখার প্রতি তেমন আগ্রহ নেই। একটা সময়ে আদি এই ঐতিহ্যটা একেবারেই হারিয়ে যাবে।
জমির মালিক হযরত শাহ্ আলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। তবে ওই জমিতে ৩৯১টি দোকান নির্মাণ করে কয়েক বছর ধরে ভাড়া নিচ্ছে হযরত শাহ্ আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজ। দোকানগুলোর ভাড়া থেকে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ৭০ লাখ টাকা ভ্যাটও দেওয়া হয়নি। বিষয়টি উঠে এসেছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) তদন্তে।
২ দিন আগেকুড়িগ্রাম পৌর শহরে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী ছোট ভাই নিহত ও বড় ভাই আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে মৎস্য খামারের কাছে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
৫ দিন আগেবৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগের মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১৮ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত শনিবার রাতে ও গতকাল রোববার তাঁরা গ্রেপ্তার হন।
৫ দিন আগেএক অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটেছে শিল্পকলা একাডেমিতে। শিল্পকলা একাডেমির তিনটি হলেই কিছুদিন আগেও নাটক চলত। নাট্যকর্মীদের সৃজনশীলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটত সেখানে। বহু পরিশ্রমে মাসের পর মাস নিজের খেয়ে, নিজের গাড়িভাড়া দিয়ে নাট্যকর্মীরা একেবারেই স্বেচ্ছাশ্রমে একটি শিল্প তিপ্পান্ন বছর ধরে গড়ে তুলেছেন। শিল্পকলা একাডেমি এখন
৯ দিন আগে