পলাশ আহসান
নির্বাচনের দিনের খবরের কথা বলতে গিয়ে একটি গল্প বলি। গল্পটা সত্য। এটি একটি স্থানীয় নির্বাচনের। সময়টা ১৯৯৭ অথবা ৯৮। অনুষ্ঠিত হচ্ছিল সাতক্ষীরা পৌরসভা নির্বাচন। ভোট গণনা শেষ। রাত ৯টা। সব কেন্দ্রের ফলাফল সাংবাদিকদের কাছে পৌঁছে গেছে। প্রার্থীদের কাছে পৌঁছেছে আরও আগেই। চেয়ারম্যান পদে (চেয়ারম্যানরা তখনো মেয়র হননি)
কেন্দ্রগুলো থেকে পাওয়া ভোট যোগ করে জিতেছেন দলীয় সমর্থন না পাওয়া আওয়ামী লীগের একজন নেতা। দল যাঁকে সমর্থন দিয়েছিল তিনি হেরেছেন। প্রাথমিক ফলাফল তখনো ঘোষণা করেনি প্রশাসন। এমন সময় একটি টিভির স্ক্রলে খবর প্রচার হলো ‘সাতক্ষীরা পৌর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী এগিয়ে আছেন’।
সঙ্গে সঙ্গে শহরে বিক্ষোভ মিছিল। সেই সময়ের একজন সংসদ সদস্যের বাসার সামনে প্রতিবাদী অবস্থান নিলেন বিজয়ী প্রার্থীর সমর্থকেরা। অভিযোগ, তিনি প্রভাব খাটিয়ে নির্বাচনের ফলাফল ঘোরানোর চেষ্টা করছেন। কিছুক্ষণের মধ্যে ওই টিভিতে সংশোধনী প্রচার হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। অবশ্য ওই টিভির জেলা প্রতিনিধি ঠিক সংবাদটিই পাঠিয়েছিলেন। তার পরও কেন ভুল তথ্য? খোঁজ নিয়ে জানা গেল, যিনি স্ক্রলটি লিখেছেন তিনি ‘সাতক্ষীরা পৌর নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী এগিয়ে আছেন’ লিখতে গিয়ে ভুল করে ‘বিদ্রোহী’ শব্দটি মিস করেছেন।
সেদিন রাতেই জানা যায়, বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে তাঁর সমর্থকেরা ব্যাপক জ্বালাও-পোড়াও করার পরিকল্পনা করেছিলেন। সংশোধন করতে আরেকটু দেরি হলেই সেটা শুরু হতো। ভাগ্য ভালো সাতক্ষীরাবাসীর। ওই সময় ফেসবুক ছিল না। থাকলে আরও আগেই তাণ্ডব শুরু হয়ে যেত সন্দেহ নেই। নির্বাচন নিয়ে ভুল তথ্য প্রচার হলে পরিণাম কত ভয়াবহ হতে পারে, সেটি বোঝানোর জন্য ঘটনাটির উল্লেখ বললাম। ২২ বছর টেলিভিশনে কাজ করার পর বুঝতে পারি, নির্বাচনের দিন হাজারো তথ্যের ভিড়ে এ-জাতীয় ভুল হওয়ার আশঙ্কা কত বেশি। বেশি সতর্ক হওয়ার আরেকটি কারণ আছে। সেটি হচ্ছে, আমাদের নির্বাচনী তথ্যের ৯৫ শতাংশই তৈরি হয় রাজধানীর বাইরে। এখনো দুর্বল অবকাঠামোর কারণে তথ্য ভুল হওয়ার ঝুঁকি বেশি। মনে রাখা দরকার, এলাকা যত দুর্গম, সেই এলাকার তথ্যপ্রাপ্তি এবং পাঠানোর ঝুঁকি তত বেশি।
সাধারণত সাংবাদিকতার অবকাঠামো বলতে আমরা বুঝি তথ্য সংগ্রহ, প্রচার ও পাঠানোর সুবিধা। সেদিক দিয়ে রাজধানীর সাংবাদিকেরা এগিয়ে আছেন। আমাদের সাংবাদিকতায় রাজধানী এবং রাজধানীর বাইরের পার্থক্য মূলত এই অবকাঠামোগত কারণে। নির্বাচনী সাংবাদিকতায় এর প্রভাব সবচেয়ে বেশি চোখে পড়ে। কারণ, দুর্বল অবকাঠামো নিয়ে প্রায় পুরো কাজটিই করতে হয় রাজধানীর বাইরের সাংবাদিকদের। চাইলেই দেশের প্রত্যন্ত এলাকায় বেশি সুবিধা দিয়ে ঢাকার সাংবাদিক পাঠাতে পারে না গণমাধ্যমগুলো। আর নির্বাচনটি যদি হয় জাতীয় সংসদের, তাহলে তো কথাই নেই। অবকাঠামো সবল করা যাবে বড়জোর বিভাগীয় শহর পর্যন্ত। তাই ঢাকাসহ সাত বিভাগের বাইরে ঝুঁকির মুখে থাকল ৫৭ জেলা। প্রায় পাঁচ শ উপজেলা তো থাকলই।
নির্বাচনের দিনের সাংবাদিকতা একেবারে ভিন্ন। অগণিত ভোটকেন্দ্রের কারণে ওই দিনের তথ্য সংগ্রহ বেশির ভাগ সাংবাদিকের জন্যই চ্যালেঞ্জ। ইদানীং ওই দিনের সংবাদ লেখার চেয়ে বলাটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকদের জন্য তো বটেই, পত্রিকার সাংবাদিকদেরও সারা দিন তথ্য পাঠাতে হয় ফোনে। একটু ভুল বললেই সবকিছু ভেঙে পড়বে। কারণ, তখনো ভোট চলছে। ভোটের লাইনে দাঁড়িয়ে মানুষ। তাঁদের কানে রেডিও, বেশির ভাগের সামনে টেলিভিশন আর হাতে ইন্টারনেট।
সম্প্রতি রংপুর সিটি নির্বাচনে এ রকম একটি টিভি লাইভ দেখলাম। ভোট দিয়ে বের হয়ে একজন প্রার্থী বললেন, অন্য প্রার্থীরা এত দুর্বল যে তিনি চার গুণ বেশি ভোট পেয়ে জিতবেন। ফলাফলও তা-ই হলো। এখন তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী যদি অভিযোগ করেন তাঁর ওই বক্তব্য ফলাফলে প্রভাব ফেলেছে, তিনি কি খুব ভুল বলবেন? কারণ, তিনি কথাটি বলেন সকাল ১০টায়। নির্বাচন তখনো সাড়ে ছয় ঘণ্টা বাকি। প্রভাব ফেলার জন্য সাড়ে ছয় ঘণ্টা কি খুব কম সময়?
যদিও নির্বাচনের দিনের সাংবাদিকতা এখন অনেক এগিয়েছে। পাঁচ বছর আগেও আমরা রিপোর্টারের ফোনে দেওয়া তথ্যের ওপর নির্ভর করতাম। সরাসরি দর্শকদের সঙ্গে যুক্ত হওয়াও হতে পারে, আবার ফোনে শুনে লিখে নেওয়াও হতে পারে। ছবি দেখানোর জন্য অপেক্ষা করতে হতো ঘণ্টার পর ঘণ্টা। এখন বিভাগীয় শহর তো আছেই, জেলা এমনকি উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকা থেকে সরাসরি নির্বাচনী সংবাদ প্রচার করা সম্ভব। সে ক্ষেত্রে নির্ভুল তথ্য সংগ্রহ করে, স্পষ্ট করে বলতে পারলেই উতরে যাবেন সাংবাদিক।
নির্বাচনের দিনে সবচেয়ে বড় ঝুঁকি শুরু হয় ভোট গণনা শুরু হওয়ার এক ঘণ্টা পর থেকেই। অফিস থেকে ফোনের পর ফোন, নানা কেন্দ্র থেকে তথ্য সংগ্রহের ব্যস্ততা। আসতে থাকে প্রার্থীদের এজেন্টদের ফোন। এর মধ্যেই নির্ভুলভাবে কাজটি করতে হয় সাংবাদিকদের। তাঁর মূল কাজ হয়, কোনো কেন্দ্রের ফল পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সেটি অফিসকে জানিয়ে দেওয়া। ইদানীং যে বিষয়টি সবচেয়ে বড় সমস্যা হয়ে দেখা দিয়েছে সেটি হচ্ছে, গণমাধ্যমগুলোর অন্ধ প্রতিযোগিতা। কেউ হয়তো তথ্য অফিসকে জানানোর জন্য কেন্দ্রপ্রধানের ঘোষণার অপেক্ষা করছেন। এর মধ্যে আরেকজন ভোটকেন্দ্রের পোলিং এজেন্টদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য যোগ করে দিয়ে দিয়েছেন। অতএব তিনি এগিয়ে যাচ্ছেন আরেকজনের চেয়ে। এই অসুস্থ প্রতিযোগিতায় টিকতে যে যেভাবে পারছেন, তথ্য পাঠাচ্ছেন।
এর সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পাওয়া তথ্য। সেটি পাওয়া যায় আরও দ্রুত। এখানে ঠিক তথ্যের সঙ্গে থাকে মনগড়া তথ্য। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ব্যবহার শেখার আগে অপব্যবহার শিখে গেছে আমাদের দেশের বহু মানুষ। তারা যার যার স্বার্থে ব্যবহারের জন্য তথ্য প্রচার করে। খণ্ডিত তথ্য দেয়। অনেক সাংবাদিক সেই তথ্য না বুঝেই পাঠিয়ে দেন। এতে ভুল হলে গণমাধ্যমগুলো সংশোধনী হয়তো দেয়। কিন্তু তাতে কখনো কখনো বিপর্যয় এড়ানো যায় না। ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করি, নির্ভরযোগ্য সূত্র ছাড়া কোনো গণমাধ্যমের উচিত নয় নির্বাচনী ফলাফল দেওয়া। দরকার হলে দেরি হোক।
কেউ কেউ বলতে পারেন নির্ভরযোগ্য সূত্র তো আছেই, জেলা নিয়ন্ত্রণকক্ষ। কিন্তু নিয়ন্ত্রণকক্ষের তথ্য দেওয়ার যে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা, সেই জটিলতার দুর্ভোগে পড়তে চান না বেশির ভাগ সাংবাদিক। তাই শুধু সাংবাদিকদের দেওয়ার জন্য একটা তথ্যকেন্দ্র থাকতেই পারে। এটি সরকার নিয়ন্ত্রিত না হলেই ভালো। প্রয়োজনে জেলায় জেলায় সাংবাদিকেরাই ওই এক দিনের জন্য একটি তথ্যকেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করতে পারেন। তারাই কেন্দ্রে কেন্দ্রে ঠিক করতে পারেন বিশ্বাসযোগ্য তথ্যদাতা। এক জায়গা থেকে তথ্য এলে ভুল যে হবে না, তা বলছি না। তবে তথ্যবিভ্রাট যে হবে না, সেটা বেশ জোর দিয়েই বলা যায়।
নির্বাচনের দিনের খবরের কথা বলতে গিয়ে একটি গল্প বলি। গল্পটা সত্য। এটি একটি স্থানীয় নির্বাচনের। সময়টা ১৯৯৭ অথবা ৯৮। অনুষ্ঠিত হচ্ছিল সাতক্ষীরা পৌরসভা নির্বাচন। ভোট গণনা শেষ। রাত ৯টা। সব কেন্দ্রের ফলাফল সাংবাদিকদের কাছে পৌঁছে গেছে। প্রার্থীদের কাছে পৌঁছেছে আরও আগেই। চেয়ারম্যান পদে (চেয়ারম্যানরা তখনো মেয়র হননি)
কেন্দ্রগুলো থেকে পাওয়া ভোট যোগ করে জিতেছেন দলীয় সমর্থন না পাওয়া আওয়ামী লীগের একজন নেতা। দল যাঁকে সমর্থন দিয়েছিল তিনি হেরেছেন। প্রাথমিক ফলাফল তখনো ঘোষণা করেনি প্রশাসন। এমন সময় একটি টিভির স্ক্রলে খবর প্রচার হলো ‘সাতক্ষীরা পৌর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী এগিয়ে আছেন’।
সঙ্গে সঙ্গে শহরে বিক্ষোভ মিছিল। সেই সময়ের একজন সংসদ সদস্যের বাসার সামনে প্রতিবাদী অবস্থান নিলেন বিজয়ী প্রার্থীর সমর্থকেরা। অভিযোগ, তিনি প্রভাব খাটিয়ে নির্বাচনের ফলাফল ঘোরানোর চেষ্টা করছেন। কিছুক্ষণের মধ্যে ওই টিভিতে সংশোধনী প্রচার হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। অবশ্য ওই টিভির জেলা প্রতিনিধি ঠিক সংবাদটিই পাঠিয়েছিলেন। তার পরও কেন ভুল তথ্য? খোঁজ নিয়ে জানা গেল, যিনি স্ক্রলটি লিখেছেন তিনি ‘সাতক্ষীরা পৌর নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী এগিয়ে আছেন’ লিখতে গিয়ে ভুল করে ‘বিদ্রোহী’ শব্দটি মিস করেছেন।
সেদিন রাতেই জানা যায়, বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে তাঁর সমর্থকেরা ব্যাপক জ্বালাও-পোড়াও করার পরিকল্পনা করেছিলেন। সংশোধন করতে আরেকটু দেরি হলেই সেটা শুরু হতো। ভাগ্য ভালো সাতক্ষীরাবাসীর। ওই সময় ফেসবুক ছিল না। থাকলে আরও আগেই তাণ্ডব শুরু হয়ে যেত সন্দেহ নেই। নির্বাচন নিয়ে ভুল তথ্য প্রচার হলে পরিণাম কত ভয়াবহ হতে পারে, সেটি বোঝানোর জন্য ঘটনাটির উল্লেখ বললাম। ২২ বছর টেলিভিশনে কাজ করার পর বুঝতে পারি, নির্বাচনের দিন হাজারো তথ্যের ভিড়ে এ-জাতীয় ভুল হওয়ার আশঙ্কা কত বেশি। বেশি সতর্ক হওয়ার আরেকটি কারণ আছে। সেটি হচ্ছে, আমাদের নির্বাচনী তথ্যের ৯৫ শতাংশই তৈরি হয় রাজধানীর বাইরে। এখনো দুর্বল অবকাঠামোর কারণে তথ্য ভুল হওয়ার ঝুঁকি বেশি। মনে রাখা দরকার, এলাকা যত দুর্গম, সেই এলাকার তথ্যপ্রাপ্তি এবং পাঠানোর ঝুঁকি তত বেশি।
সাধারণত সাংবাদিকতার অবকাঠামো বলতে আমরা বুঝি তথ্য সংগ্রহ, প্রচার ও পাঠানোর সুবিধা। সেদিক দিয়ে রাজধানীর সাংবাদিকেরা এগিয়ে আছেন। আমাদের সাংবাদিকতায় রাজধানী এবং রাজধানীর বাইরের পার্থক্য মূলত এই অবকাঠামোগত কারণে। নির্বাচনী সাংবাদিকতায় এর প্রভাব সবচেয়ে বেশি চোখে পড়ে। কারণ, দুর্বল অবকাঠামো নিয়ে প্রায় পুরো কাজটিই করতে হয় রাজধানীর বাইরের সাংবাদিকদের। চাইলেই দেশের প্রত্যন্ত এলাকায় বেশি সুবিধা দিয়ে ঢাকার সাংবাদিক পাঠাতে পারে না গণমাধ্যমগুলো। আর নির্বাচনটি যদি হয় জাতীয় সংসদের, তাহলে তো কথাই নেই। অবকাঠামো সবল করা যাবে বড়জোর বিভাগীয় শহর পর্যন্ত। তাই ঢাকাসহ সাত বিভাগের বাইরে ঝুঁকির মুখে থাকল ৫৭ জেলা। প্রায় পাঁচ শ উপজেলা তো থাকলই।
নির্বাচনের দিনের সাংবাদিকতা একেবারে ভিন্ন। অগণিত ভোটকেন্দ্রের কারণে ওই দিনের তথ্য সংগ্রহ বেশির ভাগ সাংবাদিকের জন্যই চ্যালেঞ্জ। ইদানীং ওই দিনের সংবাদ লেখার চেয়ে বলাটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকদের জন্য তো বটেই, পত্রিকার সাংবাদিকদেরও সারা দিন তথ্য পাঠাতে হয় ফোনে। একটু ভুল বললেই সবকিছু ভেঙে পড়বে। কারণ, তখনো ভোট চলছে। ভোটের লাইনে দাঁড়িয়ে মানুষ। তাঁদের কানে রেডিও, বেশির ভাগের সামনে টেলিভিশন আর হাতে ইন্টারনেট।
সম্প্রতি রংপুর সিটি নির্বাচনে এ রকম একটি টিভি লাইভ দেখলাম। ভোট দিয়ে বের হয়ে একজন প্রার্থী বললেন, অন্য প্রার্থীরা এত দুর্বল যে তিনি চার গুণ বেশি ভোট পেয়ে জিতবেন। ফলাফলও তা-ই হলো। এখন তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী যদি অভিযোগ করেন তাঁর ওই বক্তব্য ফলাফলে প্রভাব ফেলেছে, তিনি কি খুব ভুল বলবেন? কারণ, তিনি কথাটি বলেন সকাল ১০টায়। নির্বাচন তখনো সাড়ে ছয় ঘণ্টা বাকি। প্রভাব ফেলার জন্য সাড়ে ছয় ঘণ্টা কি খুব কম সময়?
যদিও নির্বাচনের দিনের সাংবাদিকতা এখন অনেক এগিয়েছে। পাঁচ বছর আগেও আমরা রিপোর্টারের ফোনে দেওয়া তথ্যের ওপর নির্ভর করতাম। সরাসরি দর্শকদের সঙ্গে যুক্ত হওয়াও হতে পারে, আবার ফোনে শুনে লিখে নেওয়াও হতে পারে। ছবি দেখানোর জন্য অপেক্ষা করতে হতো ঘণ্টার পর ঘণ্টা। এখন বিভাগীয় শহর তো আছেই, জেলা এমনকি উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকা থেকে সরাসরি নির্বাচনী সংবাদ প্রচার করা সম্ভব। সে ক্ষেত্রে নির্ভুল তথ্য সংগ্রহ করে, স্পষ্ট করে বলতে পারলেই উতরে যাবেন সাংবাদিক।
নির্বাচনের দিনে সবচেয়ে বড় ঝুঁকি শুরু হয় ভোট গণনা শুরু হওয়ার এক ঘণ্টা পর থেকেই। অফিস থেকে ফোনের পর ফোন, নানা কেন্দ্র থেকে তথ্য সংগ্রহের ব্যস্ততা। আসতে থাকে প্রার্থীদের এজেন্টদের ফোন। এর মধ্যেই নির্ভুলভাবে কাজটি করতে হয় সাংবাদিকদের। তাঁর মূল কাজ হয়, কোনো কেন্দ্রের ফল পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সেটি অফিসকে জানিয়ে দেওয়া। ইদানীং যে বিষয়টি সবচেয়ে বড় সমস্যা হয়ে দেখা দিয়েছে সেটি হচ্ছে, গণমাধ্যমগুলোর অন্ধ প্রতিযোগিতা। কেউ হয়তো তথ্য অফিসকে জানানোর জন্য কেন্দ্রপ্রধানের ঘোষণার অপেক্ষা করছেন। এর মধ্যে আরেকজন ভোটকেন্দ্রের পোলিং এজেন্টদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য যোগ করে দিয়ে দিয়েছেন। অতএব তিনি এগিয়ে যাচ্ছেন আরেকজনের চেয়ে। এই অসুস্থ প্রতিযোগিতায় টিকতে যে যেভাবে পারছেন, তথ্য পাঠাচ্ছেন।
এর সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পাওয়া তথ্য। সেটি পাওয়া যায় আরও দ্রুত। এখানে ঠিক তথ্যের সঙ্গে থাকে মনগড়া তথ্য। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ব্যবহার শেখার আগে অপব্যবহার শিখে গেছে আমাদের দেশের বহু মানুষ। তারা যার যার স্বার্থে ব্যবহারের জন্য তথ্য প্রচার করে। খণ্ডিত তথ্য দেয়। অনেক সাংবাদিক সেই তথ্য না বুঝেই পাঠিয়ে দেন। এতে ভুল হলে গণমাধ্যমগুলো সংশোধনী হয়তো দেয়। কিন্তু তাতে কখনো কখনো বিপর্যয় এড়ানো যায় না। ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করি, নির্ভরযোগ্য সূত্র ছাড়া কোনো গণমাধ্যমের উচিত নয় নির্বাচনী ফলাফল দেওয়া। দরকার হলে দেরি হোক।
কেউ কেউ বলতে পারেন নির্ভরযোগ্য সূত্র তো আছেই, জেলা নিয়ন্ত্রণকক্ষ। কিন্তু নিয়ন্ত্রণকক্ষের তথ্য দেওয়ার যে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা, সেই জটিলতার দুর্ভোগে পড়তে চান না বেশির ভাগ সাংবাদিক। তাই শুধু সাংবাদিকদের দেওয়ার জন্য একটা তথ্যকেন্দ্র থাকতেই পারে। এটি সরকার নিয়ন্ত্রিত না হলেই ভালো। প্রয়োজনে জেলায় জেলায় সাংবাদিকেরাই ওই এক দিনের জন্য একটি তথ্যকেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করতে পারেন। তারাই কেন্দ্রে কেন্দ্রে ঠিক করতে পারেন বিশ্বাসযোগ্য তথ্যদাতা। এক জায়গা থেকে তথ্য এলে ভুল যে হবে না, তা বলছি না। তবে তথ্যবিভ্রাট যে হবে না, সেটা বেশ জোর দিয়েই বলা যায়।
জমির মালিক হযরত শাহ্ আলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। তবে ওই জমিতে ৩৯১টি দোকান নির্মাণ করে কয়েক বছর ধরে ভাড়া নিচ্ছে হযরত শাহ্ আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজ। দোকানগুলোর ভাড়া থেকে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ৭০ লাখ টাকা ভ্যাটও দেওয়া হয়নি। বিষয়টি উঠে এসেছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) তদন্তে।
১ দিন আগেকুড়িগ্রাম পৌর শহরে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী ছোট ভাই নিহত ও বড় ভাই আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে মৎস্য খামারের কাছে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
৫ দিন আগেবৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগের মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১৮ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত শনিবার রাতে ও গতকাল রোববার তাঁরা গ্রেপ্তার হন।
৫ দিন আগেএক অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটেছে শিল্পকলা একাডেমিতে। শিল্পকলা একাডেমির তিনটি হলেই কিছুদিন আগেও নাটক চলত। নাট্যকর্মীদের সৃজনশীলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটত সেখানে। বহু পরিশ্রমে মাসের পর মাস নিজের খেয়ে, নিজের গাড়িভাড়া দিয়ে নাট্যকর্মীরা একেবারেই স্বেচ্ছাশ্রমে একটি শিল্প তিপ্পান্ন বছর ধরে গড়ে তুলেছেন। শিল্পকলা একাডেমি এখন
৯ দিন আগে