চয়ন বিকাশ ভদ্র
আমাদের দেশের পাহাড়ি এলাকায়, নদীর ধারে, ঝোপে বা জঙ্গলে অনেক বুনো উদ্ভিদ জন্মে। তাদের কারও কারও সুন্দর ফুল হয়, কিন্তু কখনো কি ভেবে দেখেছেন, এই সব উদ্ভিদ অনেক সময় অপার সম্ভাবনার কথা জানিয়ে দেয় আমাদের! হ্যাঁ, প্রকৃতি এমনই।
হঠাৎ কখনো রাস্তার পাশে যদি উজ্জ্বল বেগুনি রঙের একটি ফুল চোখে পড়ে, একঝলক তাকিয়ে থাকবেন। ভাববেন, এই অঞ্চলে চায়ের চাষ সম্ভব! উত্তরবঙ্গের বিস্তৃত অঞ্চলে এ ফুল চোখে পড়েছিল বলে এখন পঞ্চগড় ও ঠাকুরগাঁও অঞ্চলে চায়ের চাষ হচ্ছে। না, এটি গল্প নয়; এটি প্রমাণিত, যে অঞ্চলে ফুলসহ উদ্ভিদটি জন্মায়, সেই অঞ্চলে চা-চাষের অপার সম্ভাবনা থাকে। তাই একে চায়ের ইনডেক্স প্ল্যান্ট বলা হয়।
আপনারা অনেকেই সিলেট, ভাওয়াল, মধুপুরের গড়, শেরপুরের গজনি, কর্ণঝোরা, নেত্রকোনার বিজয়পুর ইত্যাদি এলাকায় এই উদ্ভিদের ফুল দেখে থাকতে পারেন। বাংলাদেশের টেকনাফ, বান্দরবান এলাকায় এর বেশ কয়েকটি জাত দেখা যায়।
ফুলটি হয়তো অনেকের চেনা। এর অনেক স্থানীয় নামের একটি হলো লুটকি। আর ইংরেজি নামের মধ্যে মালাবার মেলাস্টোম, ইন্ডিয়ান রডোডেন্ড্রন উল্লেখযোগ্য। এ ফুলের গাছ গুল্ম ও ঝোপ আকারের উদ্ভিদ। এ গুল্ম প্রায় দুই মিটার পর্যন্ত উঁচু হয়। পাতা দেখতে অনেকটা তেজপাতার মতো। তাই এর আরেক নাম বন তেজপাতা। ফল খাওয়ার পর দাঁত ও জিহ্বা বেগুনি রঙে রঙিন হয়ে যায়। তাই এ ফুলের নাম হয়েছে দাঁতরাঙা। বৈজ্ঞানিক নাম মেলাস্টোমা মালাবাথ্রিকাম, গোত্র মেলাস্টোমাটেসি।
দাঁতরাঙার ফল পাকলে ফেটে যায় এবং ভেতরের কালো শাঁস ফাটা অংশ দিয়ে বের হয়ে আসে। এর ফল পাকলে খেতে মিষ্টি-তিতা স্বাদের হয়।
এ ফুলের রং উজ্জ্বল বেগুনি। উদ্ভিদ রোমশ। পাতায় শিরাবিন্যাস সমান্তরাল। সারা বছরই ফুল ফোটে। শাখার আগায় থোকায় থোকায় ফুল হয়। তা আকারে বেশ বড়। পাপড়ির রং বেগুনি। তবে ফুল গন্ধহীন। ডিম্বাকার পাকা ফল পাখি ও প্রজাপতির খাবার।
দাঁতরাঙার অনেক ঔষধি গুণ আছে। এ গাছের পাতায় আছে আলফা-এমাইরিন, বেটুলিনিক অ্যাসিড এবং কোয়েরসেটিন জাতীয় ফ্ল্যাভোনয়েড। এ ছাড়া ফুলে আছে নারিঞ্জেনিন, কেইম্পফেরল, কেউম্পফেরল-৩-ও, ডি-গ্লুকোসাইড এবং কেইম্পফেরল-৩-ও, ডি-গ্লুকোসাইড প্রভৃতি। এ গাছের পাতায় স্যাপোনিন, ট্রাইটারপিন ও স্টেরয়েড পাওয়া যায়। হৃদ্রোগ ও প্রদাহ প্রতিরোধে এই গাছ কার্যকর ওষুধ। ডায়রিয়া, আমাশয়, আলসার ও অর্শরোগের চিকিৎসায় এর ব্যবহার খুবই জনপ্রিয়। এ ছাড়া ক্ষত নিরাময়, উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ, দাঁতব্যথা, সন্তান প্রসব-পরবর্তী জরায়ুর জটিলতা, চর্মরোগ ও রক্ত অর্শে এর ব্যবহার হয়ে থাকে। বমিরোধক এবং জোঁকের কামড় থেকে রক্ত বন্ধ করতেও এর ব্যবহার দেখা যায়।
ফুল ফুটলে প্রজাপতি ফুলের মধু খায় আর ফল পাকলে খায় ফলের রস, যার ভেতরে থাকে চিনি।
লেখক: সহযোগী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান, উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগ, মুমিনুন্নিসা সরকারি মহিলা কলেজ, ময়মনসিংহ
আমাদের দেশের পাহাড়ি এলাকায়, নদীর ধারে, ঝোপে বা জঙ্গলে অনেক বুনো উদ্ভিদ জন্মে। তাদের কারও কারও সুন্দর ফুল হয়, কিন্তু কখনো কি ভেবে দেখেছেন, এই সব উদ্ভিদ অনেক সময় অপার সম্ভাবনার কথা জানিয়ে দেয় আমাদের! হ্যাঁ, প্রকৃতি এমনই।
হঠাৎ কখনো রাস্তার পাশে যদি উজ্জ্বল বেগুনি রঙের একটি ফুল চোখে পড়ে, একঝলক তাকিয়ে থাকবেন। ভাববেন, এই অঞ্চলে চায়ের চাষ সম্ভব! উত্তরবঙ্গের বিস্তৃত অঞ্চলে এ ফুল চোখে পড়েছিল বলে এখন পঞ্চগড় ও ঠাকুরগাঁও অঞ্চলে চায়ের চাষ হচ্ছে। না, এটি গল্প নয়; এটি প্রমাণিত, যে অঞ্চলে ফুলসহ উদ্ভিদটি জন্মায়, সেই অঞ্চলে চা-চাষের অপার সম্ভাবনা থাকে। তাই একে চায়ের ইনডেক্স প্ল্যান্ট বলা হয়।
আপনারা অনেকেই সিলেট, ভাওয়াল, মধুপুরের গড়, শেরপুরের গজনি, কর্ণঝোরা, নেত্রকোনার বিজয়পুর ইত্যাদি এলাকায় এই উদ্ভিদের ফুল দেখে থাকতে পারেন। বাংলাদেশের টেকনাফ, বান্দরবান এলাকায় এর বেশ কয়েকটি জাত দেখা যায়।
ফুলটি হয়তো অনেকের চেনা। এর অনেক স্থানীয় নামের একটি হলো লুটকি। আর ইংরেজি নামের মধ্যে মালাবার মেলাস্টোম, ইন্ডিয়ান রডোডেন্ড্রন উল্লেখযোগ্য। এ ফুলের গাছ গুল্ম ও ঝোপ আকারের উদ্ভিদ। এ গুল্ম প্রায় দুই মিটার পর্যন্ত উঁচু হয়। পাতা দেখতে অনেকটা তেজপাতার মতো। তাই এর আরেক নাম বন তেজপাতা। ফল খাওয়ার পর দাঁত ও জিহ্বা বেগুনি রঙে রঙিন হয়ে যায়। তাই এ ফুলের নাম হয়েছে দাঁতরাঙা। বৈজ্ঞানিক নাম মেলাস্টোমা মালাবাথ্রিকাম, গোত্র মেলাস্টোমাটেসি।
দাঁতরাঙার ফল পাকলে ফেটে যায় এবং ভেতরের কালো শাঁস ফাটা অংশ দিয়ে বের হয়ে আসে। এর ফল পাকলে খেতে মিষ্টি-তিতা স্বাদের হয়।
এ ফুলের রং উজ্জ্বল বেগুনি। উদ্ভিদ রোমশ। পাতায় শিরাবিন্যাস সমান্তরাল। সারা বছরই ফুল ফোটে। শাখার আগায় থোকায় থোকায় ফুল হয়। তা আকারে বেশ বড়। পাপড়ির রং বেগুনি। তবে ফুল গন্ধহীন। ডিম্বাকার পাকা ফল পাখি ও প্রজাপতির খাবার।
দাঁতরাঙার অনেক ঔষধি গুণ আছে। এ গাছের পাতায় আছে আলফা-এমাইরিন, বেটুলিনিক অ্যাসিড এবং কোয়েরসেটিন জাতীয় ফ্ল্যাভোনয়েড। এ ছাড়া ফুলে আছে নারিঞ্জেনিন, কেইম্পফেরল, কেউম্পফেরল-৩-ও, ডি-গ্লুকোসাইড এবং কেইম্পফেরল-৩-ও, ডি-গ্লুকোসাইড প্রভৃতি। এ গাছের পাতায় স্যাপোনিন, ট্রাইটারপিন ও স্টেরয়েড পাওয়া যায়। হৃদ্রোগ ও প্রদাহ প্রতিরোধে এই গাছ কার্যকর ওষুধ। ডায়রিয়া, আমাশয়, আলসার ও অর্শরোগের চিকিৎসায় এর ব্যবহার খুবই জনপ্রিয়। এ ছাড়া ক্ষত নিরাময়, উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ, দাঁতব্যথা, সন্তান প্রসব-পরবর্তী জরায়ুর জটিলতা, চর্মরোগ ও রক্ত অর্শে এর ব্যবহার হয়ে থাকে। বমিরোধক এবং জোঁকের কামড় থেকে রক্ত বন্ধ করতেও এর ব্যবহার দেখা যায়।
ফুল ফুটলে প্রজাপতি ফুলের মধু খায় আর ফল পাকলে খায় ফলের রস, যার ভেতরে থাকে চিনি।
লেখক: সহযোগী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান, উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগ, মুমিনুন্নিসা সরকারি মহিলা কলেজ, ময়মনসিংহ
জমির মালিক হযরত শাহ্ আলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। তবে ওই জমিতে ৩৯১টি দোকান নির্মাণ করে কয়েক বছর ধরে ভাড়া নিচ্ছে হযরত শাহ্ আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজ। দোকানগুলোর ভাড়া থেকে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ৭০ লাখ টাকা ভ্যাটও দেওয়া হয়নি। বিষয়টি উঠে এসেছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) তদন্তে।
১ দিন আগেকুড়িগ্রাম পৌর শহরে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী ছোট ভাই নিহত ও বড় ভাই আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে মৎস্য খামারের কাছে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
৫ দিন আগেবৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগের মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১৮ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত শনিবার রাতে ও গতকাল রোববার তাঁরা গ্রেপ্তার হন।
৫ দিন আগেএক অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটেছে শিল্পকলা একাডেমিতে। শিল্পকলা একাডেমির তিনটি হলেই কিছুদিন আগেও নাটক চলত। নাট্যকর্মীদের সৃজনশীলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটত সেখানে। বহু পরিশ্রমে মাসের পর মাস নিজের খেয়ে, নিজের গাড়িভাড়া দিয়ে নাট্যকর্মীরা একেবারেই স্বেচ্ছাশ্রমে একটি শিল্প তিপ্পান্ন বছর ধরে গড়ে তুলেছেন। শিল্পকলা একাডেমি এখন
৯ দিন আগে