আজকের পত্রিকা: আপনাদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা নতুন সরকার পেলাম। এই সরকার নিয়ে আপনারা কতটা আশাবাদী?
নুসরাত তাবাসসুম: এই সরকার নিয়ে আমরা পুরোপুরি আশাবাদী। কারণ এমনিতেই এ সরকার একটা বিপ্লবের মতো পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে ক্ষমতায় এসেছে। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের যে নিজস্ব ভাবমূর্তি এবং দেশের মানুষের প্রতি তাঁর প্রকাশভঙ্গি, তা অভিভাবকের মতো। তাঁর মধ্যে কোনো প্রকার শাসকসুলভ আচরণ দেখতে পাচ্ছি না। এ জন্য আমরা মনে করি, দেশ সঠিক পথে চলবে।
আজকের পত্রিকা: আপনাদের আন্দোলনের পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্কের একটা বড় ভূমিকা ছিল, কিন্তু অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে তাঁদের কোনো প্রতিনিধি না রাখার কারণ কী?
নুসরাত তাবাসসুম: বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্কের শিক্ষকেরা আমাদের আন্দোলনে অভিভাবক হিসেবে ছিলেন। আর এটা তাঁদের দায়িত্বই ছিল সন্তানতুল্য শিক্ষার্থীদের পাশে থাকার। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কাছ থেকে আমরা এ ধরনের ভূমিকাই আশা করেছি। তবে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে আমরা অনেকের নাম প্রস্তাব করেছিলাম। আবার অনেকে নিজে থেকেই থাকতে আগ্রহ দেখাননি। দেশে বিভিন্ন ক্ষেত্রে আরও অনেক যোগ্য ব্যক্তি আছেন। সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে, এই উপদেষ্টা প্যানেল যেভাবে নির্ধারণ করা হয়েছে, সেখানে সেই ব্যক্তির যোগ্যতা, আগের কাজের অভিজ্ঞতা এবং ভবিষ্যতে তাঁরা কীভাবে দায়িত্ব পালন করবেন, সেই বিবেচনা থেকে তাঁদের মনোনীত করা হয়েছে।
আরও একটা কথা বলতে চাই, আমাদের পক্ষ থেকে অনেকের নামই প্রস্তাব করা হয়েছিল। কিন্তু অনেকেই সরাসরি রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হওয়ার ইচ্ছা পোষণ করেননি। তবে জরুরি কথা হলো, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্কের কোনো শিক্ষকই নতুন সরকার গঠনের পর কোনো ধরনের প্রশ্ন বা আপত্তি তোলেননি। অন্তর্বর্তী সরকারে উপদেষ্টা যাঁরা হয়েছেন, সেটা সবার মতামতের ভিত্তিতেই নির্ধারিত হয়েছে।
আজকের পত্রিকা: সরকার গঠনের বেশ কিছু দিন হয়ে গেল। অন্তর্বর্তী সরকারের রূপরেখা দেশবাসী এখনো পেল না। অথচ এখন পর্যন্ত এসব বিষয়ে আপনারা স্পষ্ট পদক্ষেপ নেননি।
নুসরাত তাবাসসুম: এই অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের মাত্র ২৫ দিন হয়েছে। আর এটাও ঠিক যে এই সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে বেশ কয়েকটি প্রতিবিপ্লবী ঘটনার আশঙ্কার সঙ্গে লড়াই করতে হয়েছে। আবার আমাদের দেশের পূর্বাঞ্চলে ভয়াবহ বন্যার সঙ্গে লড়াই করতে হচ্ছে। তবে কাজগুলো করার জন্য একটা স্থিরতারও দরকার। সরকার কিন্তু সে সময়টুকু এখনো পায়নি। তারপরও আমি যতটুকু জানি, রাষ্ট্র সংস্কারের রূপরেখার কাজটি চলমান আছে। বন্যার দুর্যোগটা চলে গেলে আমরা সেটা দেখতে পাব।
আজকের পত্রিকা: আন্দোলন সফল হওয়ার পর দেশের মানুষ রাষ্ট্র সংস্কারের প্রত্যাশা করছে। সেটা কি এই সরকার করতে পারবে?
নুসরাত তাবাসসুম: আমরা তো আশা করছি, এই সরকার অবশ্যই রাষ্ট্র সংস্কার করতে পারবে। আর ছাত্র-জনতার সহযোগিতামূলক মানসিকতা ও মনোভাব যদি থাকে তাহলে কেন এ সরকার তা করতে পারবে না? দেশের সব সেক্টরে যদি সবাই মিলে কাজ করা যায়, তাহলে খুব দ্রুততম সময়ের মধ্যে এসব করে ফেলা অসম্ভব নয়।
আজকের পত্রিকা: গত ৩ আগস্ট আপনারা যখন শহীদ মিনারে শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবি তুলেছিলেন, সে সময় আরও বলেছিলেন, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রাষ্ট্র সংস্কারের রূপরেখা ঘোষণা করবেন। কিন্তু আমরা এখনো সেটা দেখতে পেলাম না। কারণ কী?
নুসরাত তাবাসসুম: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে রাষ্ট্র সংস্কারের রূপরেখা দেওয়া হোক বা না হোক, তাদের কার্যক্রম কিন্তু দেশবাসী দেখতে পাচ্ছে। আমরা শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের প্রস্তাব পেশ করেছিলাম, সেটাকেই আপনারা রাষ্ট্র সংস্কারের প্রাথমিক রূপরেখা ধরে নিতে পারেন। তা ছাড়া, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে অবশ্যই রূপরেখা আসবে। আমরা দেশের জন্য কী কী কাজ করতে চাই, সেটা সে রূপরেখায় থাকবে। কিন্তু একটু সময় লাগবে। কারণ বর্তমানে দেশের অবস্থা খুবই অস্থিতিশীল। দেশে হঠাৎ করেই বন্যায় দুর্যোগ পরিস্থিতি তৈরি হলো, সেটা তো আমাদের হিসাবের মধ্যে ছিল না। এ সময়ে বন্যাদুর্গত মানুষের প্রাণ রক্ষা করাটা জরুরি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেই আমরা সে বিষয় নিয়ে পরিকল্পনা করে সেটা বাস্তবায়নের দিকে অগ্রসর হব।
আজকের পত্রিকা: আপনাদের উদ্যোগে নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের কোনো পরিকল্পনা আছে কি?
নুসরাত তাবাসসুম: আমরা জনগণের পক্ষ থেকে শুনতে পাচ্ছি, তাঁরা প্রত্যাশা করছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে একটা রাজনৈতিক দল গঠন করা হোক। জনগণের প্রত্যাশাকে আমরা স্যালুট জানাতে চাই। তাঁরা যে আমাদের প্রতি আশাবাদী হয়েছেন সে জন্য। তবে এখন আমরা অন্তর্বর্তী সরকারকে এবং তাদের রাষ্ট্র সংস্কারের সহযোগিতামূলক কার্যক্রমে বেশি মনোযোগ দিতে চাইছি। হয়তো ভবিষ্যতে রাজনৈতিক দল গঠনের বিষয়ে ভাবব। বর্তমানে সেটা নিয়ে আমরা ভাবছি না। আমাদের পরিকল্পনার মধ্যে আপাতত সেটা নেই।
আজকের পত্রিকা: বিগত সময়ের শাসন করা কোনো রাজনৈতিক দলই বাংলাদেশকে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে গঠনের উদ্যোগ গ্রহণ করেনি। আপনারা সেই দায়িত্ব না নিলে সেটা কে করবে?
নুসরাত তাবাসসুম: সেটা জনগণ পালন করবে।
আজকের পত্রিকা: একটু ব্যাখ্যা করবেন?
নুসরাত তাবাসসুম: আগের রাজনৈতিক দলগুলোর মতো অগণতান্ত্রিক কোনো কাজ হবে না বলে আমরা বিশ্বাস করি। কারণ কোনো দেশে গণ-অভ্যুত্থানের পরে কোনো রাজনৈতিক দলের পক্ষে রাজনীতি করাটা নিরঙ্কুশ থাকে না। জনগণকে জবাবদিহির মধ্যে থাকতে হয়। জনগণ যখন গণতন্ত্রের চর্চা শুরু করে, তখন এমনিতেই একটি দেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়ে যায়। আশা করছি, আমরা আমাদের দেশের মানুষকে সেই সুযোগটা করে দিতে পারব যে জনগণ গণতন্ত্রের চর্চা করতে পারবে।
আজকের পত্রিকা: গণতান্ত্রিক চর্চা শুরু করার জন্য বিগত সময়ের ব্যর্থ সংবিধান পরিবর্তনের ব্যাপার তো আছে।
নুসরাত তাবাসসুম: সংবিধানের পরিবর্তন, পরিমার্জন ও সংশোধন নিয়ে আমরা আলোচনা করছি। অবশ্যই উপকারী কোনো পরিবর্তন, পরিমার্জন আসবে। এই যে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হলো, সেটাও পরিমার্জনের অংশের কারণে হয়েছে।
আজকের পত্রিকা: দেশবাসী কি কাঙ্ক্ষিত রাষ্ট্র সংস্কারের ফল দেখতে পাবে বলে আপনারা মনে করেন?
নুসরাত তাবাসসুম: আমি মনে করি এর মধ্যে দেশবাসী রাষ্ট্র সংস্কারের কার্যক্রম দেখতে শুরু করে দিয়েছে। কারণ এর আগে দেশবাসী কখনো দেখেনি, বন্যা বলুন বা অন্য কোনো দুর্যোগের সময় সরকারের পক্ষ থেকে এত দ্রুত সময়ের মধ্যে ত্রাণ কার্যক্রম করতে পেরেছিল। এবারের বন্যায় এ সরকার সেটা নিতে পেরেছে। তা ছাড়া, আপনি একটু খেয়াল করলেই বুঝতে পারবেন, জনগণ যেভাবে সরকার গঠনের পরপরই তাদের দাবি-দাওয়া তুলতে পারছে এবং উপদেষ্টাদের কাছে যেতে পারছে, এসবও এর আগে কখনো সম্ভব হয়নি। এ ঘটনাগুলোই বলে দিচ্ছে রাষ্ট্র সংস্কারের কাজ শুরু হয়ে গেছে।
আজকের পত্রিকা: আমাদের একটা পূর্ব অভিজ্ঞতা আছে, এরশাদের পতনের পরও কিন্তু জনগণের প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। কী বলবেন?
নুসরাত তাবাসসুম: নব্বইয়ের গণ-অভ্যুত্থানের সঙ্গে ২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থানের একটা বড় পার্থক্য আছে। নব্বইয়ের গণ-অভ্যুত্থানের পরে জনগণ রাষ্ট্র সংস্কার বা পরিবর্তনের কাজগুলো রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর ভরসা করে নিশ্চিন্তে ছেড়ে দিয়েছিল। আর ২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থানের পর রাষ্ট্র সংস্কারের কাজ জনগণ নিজের হাতে তুলে নিয়েছে। এ জন্য আমি বলব, দেখতে পাবেন কি পাবেন না, সেটা ভবিষ্যতের জন্য রেখে দেওয়ার দরকার নেই। রাষ্ট্র সংস্কারের কাজ ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে এবং জনগণ নিজেই সেই দায়িত্ব হাতে নিয়েছে সরকারের সঙ্গে সহযোগিতাপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে।
আজকের পত্রিকা: জনগণ যে সহযোগিতা করছে, সেটা কীভাবে?
নুসরাত তাবাসসুম: বিগত সরকারের পতনের দিন ৫ আগস্ট থেকে দেশে কোনো প্রশাসন ছিল না। সেদিন থেকে শিক্ষার্থীরা ঢাকা শহরের ট্রাফিক ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণের কাজ নিজ দায়িত্বে হাতে নিয়েছে। এর আগে কখনো দেশবাসী এ ধরনের দৃশ্য দেখতে পায়নি। আবার বন্যার পরে ত্রাণ কার্যক্রমেও কি সাধারণ জনগণের অংশগ্রহণ দেশবাসী দেখতে পেয়েছে এর আগে? জনগণ কিন্তু এখনো রাজপথে আছে। জনগণ তাদের দাবি-দাওয়া নিয়ে রাজপথে সোচ্চার আছে। আমি মনে করি, এ ধরনের ঘটনাগুলোই রাষ্ট্র সংস্কারের প্রথম ধাপ।
আজকের পত্রিকা: আপনাদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা নতুন সরকার পেলাম। এই সরকার নিয়ে আপনারা কতটা আশাবাদী?
নুসরাত তাবাসসুম: এই সরকার নিয়ে আমরা পুরোপুরি আশাবাদী। কারণ এমনিতেই এ সরকার একটা বিপ্লবের মতো পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে ক্ষমতায় এসেছে। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের যে নিজস্ব ভাবমূর্তি এবং দেশের মানুষের প্রতি তাঁর প্রকাশভঙ্গি, তা অভিভাবকের মতো। তাঁর মধ্যে কোনো প্রকার শাসকসুলভ আচরণ দেখতে পাচ্ছি না। এ জন্য আমরা মনে করি, দেশ সঠিক পথে চলবে।
আজকের পত্রিকা: আপনাদের আন্দোলনের পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্কের একটা বড় ভূমিকা ছিল, কিন্তু অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে তাঁদের কোনো প্রতিনিধি না রাখার কারণ কী?
নুসরাত তাবাসসুম: বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্কের শিক্ষকেরা আমাদের আন্দোলনে অভিভাবক হিসেবে ছিলেন। আর এটা তাঁদের দায়িত্বই ছিল সন্তানতুল্য শিক্ষার্থীদের পাশে থাকার। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কাছ থেকে আমরা এ ধরনের ভূমিকাই আশা করেছি। তবে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে আমরা অনেকের নাম প্রস্তাব করেছিলাম। আবার অনেকে নিজে থেকেই থাকতে আগ্রহ দেখাননি। দেশে বিভিন্ন ক্ষেত্রে আরও অনেক যোগ্য ব্যক্তি আছেন। সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে, এই উপদেষ্টা প্যানেল যেভাবে নির্ধারণ করা হয়েছে, সেখানে সেই ব্যক্তির যোগ্যতা, আগের কাজের অভিজ্ঞতা এবং ভবিষ্যতে তাঁরা কীভাবে দায়িত্ব পালন করবেন, সেই বিবেচনা থেকে তাঁদের মনোনীত করা হয়েছে।
আরও একটা কথা বলতে চাই, আমাদের পক্ষ থেকে অনেকের নামই প্রস্তাব করা হয়েছিল। কিন্তু অনেকেই সরাসরি রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হওয়ার ইচ্ছা পোষণ করেননি। তবে জরুরি কথা হলো, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্কের কোনো শিক্ষকই নতুন সরকার গঠনের পর কোনো ধরনের প্রশ্ন বা আপত্তি তোলেননি। অন্তর্বর্তী সরকারে উপদেষ্টা যাঁরা হয়েছেন, সেটা সবার মতামতের ভিত্তিতেই নির্ধারিত হয়েছে।
আজকের পত্রিকা: সরকার গঠনের বেশ কিছু দিন হয়ে গেল। অন্তর্বর্তী সরকারের রূপরেখা দেশবাসী এখনো পেল না। অথচ এখন পর্যন্ত এসব বিষয়ে আপনারা স্পষ্ট পদক্ষেপ নেননি।
নুসরাত তাবাসসুম: এই অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের মাত্র ২৫ দিন হয়েছে। আর এটাও ঠিক যে এই সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে বেশ কয়েকটি প্রতিবিপ্লবী ঘটনার আশঙ্কার সঙ্গে লড়াই করতে হয়েছে। আবার আমাদের দেশের পূর্বাঞ্চলে ভয়াবহ বন্যার সঙ্গে লড়াই করতে হচ্ছে। তবে কাজগুলো করার জন্য একটা স্থিরতারও দরকার। সরকার কিন্তু সে সময়টুকু এখনো পায়নি। তারপরও আমি যতটুকু জানি, রাষ্ট্র সংস্কারের রূপরেখার কাজটি চলমান আছে। বন্যার দুর্যোগটা চলে গেলে আমরা সেটা দেখতে পাব।
আজকের পত্রিকা: আন্দোলন সফল হওয়ার পর দেশের মানুষ রাষ্ট্র সংস্কারের প্রত্যাশা করছে। সেটা কি এই সরকার করতে পারবে?
নুসরাত তাবাসসুম: আমরা তো আশা করছি, এই সরকার অবশ্যই রাষ্ট্র সংস্কার করতে পারবে। আর ছাত্র-জনতার সহযোগিতামূলক মানসিকতা ও মনোভাব যদি থাকে তাহলে কেন এ সরকার তা করতে পারবে না? দেশের সব সেক্টরে যদি সবাই মিলে কাজ করা যায়, তাহলে খুব দ্রুততম সময়ের মধ্যে এসব করে ফেলা অসম্ভব নয়।
আজকের পত্রিকা: গত ৩ আগস্ট আপনারা যখন শহীদ মিনারে শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবি তুলেছিলেন, সে সময় আরও বলেছিলেন, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রাষ্ট্র সংস্কারের রূপরেখা ঘোষণা করবেন। কিন্তু আমরা এখনো সেটা দেখতে পেলাম না। কারণ কী?
নুসরাত তাবাসসুম: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে রাষ্ট্র সংস্কারের রূপরেখা দেওয়া হোক বা না হোক, তাদের কার্যক্রম কিন্তু দেশবাসী দেখতে পাচ্ছে। আমরা শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের প্রস্তাব পেশ করেছিলাম, সেটাকেই আপনারা রাষ্ট্র সংস্কারের প্রাথমিক রূপরেখা ধরে নিতে পারেন। তা ছাড়া, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে অবশ্যই রূপরেখা আসবে। আমরা দেশের জন্য কী কী কাজ করতে চাই, সেটা সে রূপরেখায় থাকবে। কিন্তু একটু সময় লাগবে। কারণ বর্তমানে দেশের অবস্থা খুবই অস্থিতিশীল। দেশে হঠাৎ করেই বন্যায় দুর্যোগ পরিস্থিতি তৈরি হলো, সেটা তো আমাদের হিসাবের মধ্যে ছিল না। এ সময়ে বন্যাদুর্গত মানুষের প্রাণ রক্ষা করাটা জরুরি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেই আমরা সে বিষয় নিয়ে পরিকল্পনা করে সেটা বাস্তবায়নের দিকে অগ্রসর হব।
আজকের পত্রিকা: আপনাদের উদ্যোগে নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের কোনো পরিকল্পনা আছে কি?
নুসরাত তাবাসসুম: আমরা জনগণের পক্ষ থেকে শুনতে পাচ্ছি, তাঁরা প্রত্যাশা করছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে একটা রাজনৈতিক দল গঠন করা হোক। জনগণের প্রত্যাশাকে আমরা স্যালুট জানাতে চাই। তাঁরা যে আমাদের প্রতি আশাবাদী হয়েছেন সে জন্য। তবে এখন আমরা অন্তর্বর্তী সরকারকে এবং তাদের রাষ্ট্র সংস্কারের সহযোগিতামূলক কার্যক্রমে বেশি মনোযোগ দিতে চাইছি। হয়তো ভবিষ্যতে রাজনৈতিক দল গঠনের বিষয়ে ভাবব। বর্তমানে সেটা নিয়ে আমরা ভাবছি না। আমাদের পরিকল্পনার মধ্যে আপাতত সেটা নেই।
আজকের পত্রিকা: বিগত সময়ের শাসন করা কোনো রাজনৈতিক দলই বাংলাদেশকে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে গঠনের উদ্যোগ গ্রহণ করেনি। আপনারা সেই দায়িত্ব না নিলে সেটা কে করবে?
নুসরাত তাবাসসুম: সেটা জনগণ পালন করবে।
আজকের পত্রিকা: একটু ব্যাখ্যা করবেন?
নুসরাত তাবাসসুম: আগের রাজনৈতিক দলগুলোর মতো অগণতান্ত্রিক কোনো কাজ হবে না বলে আমরা বিশ্বাস করি। কারণ কোনো দেশে গণ-অভ্যুত্থানের পরে কোনো রাজনৈতিক দলের পক্ষে রাজনীতি করাটা নিরঙ্কুশ থাকে না। জনগণকে জবাবদিহির মধ্যে থাকতে হয়। জনগণ যখন গণতন্ত্রের চর্চা শুরু করে, তখন এমনিতেই একটি দেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়ে যায়। আশা করছি, আমরা আমাদের দেশের মানুষকে সেই সুযোগটা করে দিতে পারব যে জনগণ গণতন্ত্রের চর্চা করতে পারবে।
আজকের পত্রিকা: গণতান্ত্রিক চর্চা শুরু করার জন্য বিগত সময়ের ব্যর্থ সংবিধান পরিবর্তনের ব্যাপার তো আছে।
নুসরাত তাবাসসুম: সংবিধানের পরিবর্তন, পরিমার্জন ও সংশোধন নিয়ে আমরা আলোচনা করছি। অবশ্যই উপকারী কোনো পরিবর্তন, পরিমার্জন আসবে। এই যে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হলো, সেটাও পরিমার্জনের অংশের কারণে হয়েছে।
আজকের পত্রিকা: দেশবাসী কি কাঙ্ক্ষিত রাষ্ট্র সংস্কারের ফল দেখতে পাবে বলে আপনারা মনে করেন?
নুসরাত তাবাসসুম: আমি মনে করি এর মধ্যে দেশবাসী রাষ্ট্র সংস্কারের কার্যক্রম দেখতে শুরু করে দিয়েছে। কারণ এর আগে দেশবাসী কখনো দেখেনি, বন্যা বলুন বা অন্য কোনো দুর্যোগের সময় সরকারের পক্ষ থেকে এত দ্রুত সময়ের মধ্যে ত্রাণ কার্যক্রম করতে পেরেছিল। এবারের বন্যায় এ সরকার সেটা নিতে পেরেছে। তা ছাড়া, আপনি একটু খেয়াল করলেই বুঝতে পারবেন, জনগণ যেভাবে সরকার গঠনের পরপরই তাদের দাবি-দাওয়া তুলতে পারছে এবং উপদেষ্টাদের কাছে যেতে পারছে, এসবও এর আগে কখনো সম্ভব হয়নি। এ ঘটনাগুলোই বলে দিচ্ছে রাষ্ট্র সংস্কারের কাজ শুরু হয়ে গেছে।
আজকের পত্রিকা: আমাদের একটা পূর্ব অভিজ্ঞতা আছে, এরশাদের পতনের পরও কিন্তু জনগণের প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। কী বলবেন?
নুসরাত তাবাসসুম: নব্বইয়ের গণ-অভ্যুত্থানের সঙ্গে ২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থানের একটা বড় পার্থক্য আছে। নব্বইয়ের গণ-অভ্যুত্থানের পরে জনগণ রাষ্ট্র সংস্কার বা পরিবর্তনের কাজগুলো রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর ভরসা করে নিশ্চিন্তে ছেড়ে দিয়েছিল। আর ২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থানের পর রাষ্ট্র সংস্কারের কাজ জনগণ নিজের হাতে তুলে নিয়েছে। এ জন্য আমি বলব, দেখতে পাবেন কি পাবেন না, সেটা ভবিষ্যতের জন্য রেখে দেওয়ার দরকার নেই। রাষ্ট্র সংস্কারের কাজ ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে এবং জনগণ নিজেই সেই দায়িত্ব হাতে নিয়েছে সরকারের সঙ্গে সহযোগিতাপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে।
আজকের পত্রিকা: জনগণ যে সহযোগিতা করছে, সেটা কীভাবে?
নুসরাত তাবাসসুম: বিগত সরকারের পতনের দিন ৫ আগস্ট থেকে দেশে কোনো প্রশাসন ছিল না। সেদিন থেকে শিক্ষার্থীরা ঢাকা শহরের ট্রাফিক ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণের কাজ নিজ দায়িত্বে হাতে নিয়েছে। এর আগে কখনো দেশবাসী এ ধরনের দৃশ্য দেখতে পায়নি। আবার বন্যার পরে ত্রাণ কার্যক্রমেও কি সাধারণ জনগণের অংশগ্রহণ দেশবাসী দেখতে পেয়েছে এর আগে? জনগণ কিন্তু এখনো রাজপথে আছে। জনগণ তাদের দাবি-দাওয়া নিয়ে রাজপথে সোচ্চার আছে। আমি মনে করি, এ ধরনের ঘটনাগুলোই রাষ্ট্র সংস্কারের প্রথম ধাপ।
জমির মালিক হযরত শাহ্ আলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। তবে ওই জমিতে ৩৯১টি দোকান নির্মাণ করে কয়েক বছর ধরে ভাড়া নিচ্ছে হযরত শাহ্ আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজ। দোকানগুলোর ভাড়া থেকে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ৭০ লাখ টাকা ভ্যাটও দেওয়া হয়নি। বিষয়টি উঠে এসেছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) তদন্তে।
১ দিন আগেকুড়িগ্রাম পৌর শহরে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী ছোট ভাই নিহত ও বড় ভাই আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে মৎস্য খামারের কাছে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
৫ দিন আগেবৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগের মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১৮ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত শনিবার রাতে ও গতকাল রোববার তাঁরা গ্রেপ্তার হন।
৫ দিন আগেএক অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটেছে শিল্পকলা একাডেমিতে। শিল্পকলা একাডেমির তিনটি হলেই কিছুদিন আগেও নাটক চলত। নাট্যকর্মীদের সৃজনশীলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটত সেখানে। বহু পরিশ্রমে মাসের পর মাস নিজের খেয়ে, নিজের গাড়িভাড়া দিয়ে নাট্যকর্মীরা একেবারেই স্বেচ্ছাশ্রমে একটি শিল্প তিপ্পান্ন বছর ধরে গড়ে তুলেছেন। শিল্পকলা একাডেমি এখন
৮ দিন আগে