হিলাল ফয়েজী
৭ জানুয়ারি। ২০২৪। ১৯৭১ সালে যে দেশটির স্বতন্ত্র মানচিত্র জন্ম নিল, সেই দেশটির দ্বাদশ জাতীয় সংসদের নির্বাচন। নির্বাচন হলো।ক্ষমতাসীনেরা বলল, সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনে আমরা জিতেছি। প্রধান বিরোধী পক্ষ বলল, দেশের অধিকাংশ মানুষ নির্বাচন বর্জন করেছে, অতএব আমরাই জিতেছি। এখন মহাকালের কাছে প্রশ্ন: কৌন জিতা, কৌন হারা!
দৈনন্দিন বাজারে আগুনের ধোঁয়া। গরিবেরা জান দিয়ে খেটে জীবন চালাচ্ছে। প্রোটিন তাদের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে। ৮ জানুয়ারি ২০২৪ পথে পথে ঘুরে ঘুরে আদমসন্তানদের দেখলাম, বনি আদম আমি একজনকেও নির্বাচন নিয়ে খুশি অথবা ব্যাজার দেখলাম না। সাধারণ মানুষ কথা বলছে না। তাদের মনের কথা কবি-সাহিত্যিক-কথাশিল্পীরা বুঝতে পারেন, মুখ্যু সুখ্যু তরল লেখক আমি মানুষের মনের অমৃত বা গরলের কিছুই বুঝি না।
মানুষ এমন বোবা হয়ে থাকবে না। অচিরেই অগ্নিগর্ভ সমাজ দাউ দাউ করে জ্বলে উঠবে। বন্ধু মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বললেন, আইয়ুব খান উন্নয়নের দশক পালনের সময়েই ধপাস পড়ে গ্যালো। এবারও এমনি হবে। আইয়ুব খান ফিল্ড মার্শাল গিল্ড পড়ে গেল, রাজপথে তখন মূলত মধ্য ও বামপন্থীরা। বর্তমান ক্ষমতাসীনেরা পড়ে গেলে রাজপথে কারা থাকবে, সে ধাঁধার উত্তর মেলেনি সেলিম-বক্তৃতা বয়ানে।
এদিকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ প্রথম অধিবেশনে নিমগ্ন। নারী সংরক্ষিত আসন পাকাপাকি। প্রধান বিরোধী দল বর্জনের অর্জনে বাহ্যত পুলকিত। তাদের মনের কথাও বুঝি না। তবে মাঠে সাধারণ বিরোধী সমর্থকেরা খুব খোশে আছে মনে হয় না।
বিরোধী বর্জন-কৌশলের চাওয়া ছিল, মানুষ ভোটবিমুখ, ভোটকেন্দ্রে যাবে না, পুরো ব্যাপারটি ফকফকা হয়ে যাবে বিশ্ববাজারে। এদিকে বিশেষত ক্ষমতাপ্রধান হঠাৎ এমন এক দাবার চাল দেবেন, অনেকেই চমকে এবং থমকে গেল। নিজ দলের লোকদের মুক্ত করে দিলেন।
অফিশিয়াল। আনঅফিশিয়াল। লেগে গেলে ধুম প্রতিদ্বন্দ্বিতা। একজন বিবেচক-বিশ্লেষক বললেন, এমন বুদ্ধির জন্য ক্ষমতাপ্রধানকে অবশ্যই নোবেলের চেয়েও বড় পুরস্কার দেওয়া উচিত এবং এই ফর্মুলা পৃথিবীর নানা দেশে রপ্তানিও করা যেতে পারে আমাদের জিআই স্বত্ব হিসেবে।
এসব হালকা বচনে ভারী বাস্তবতাকে এড়িয়ে যাওয়ার উপায় নেই। সেই ১৯৪৭ থেকে এই ২০২৪ পর্যন্ত আমাদের অঞ্চলের নির্বাচনে প্রকাশ্যে এভাবে আমেরিকা-চীন-রাশিয়া-ভারতের উত্তাপ-উদ্বেগ প্রকাশ সত্যি সত্যিই আমাদের উদ্বিগ্ন করে তুলেছিল। ১৯৭১-এ হিংস্র রাষ্ট্রশক্তির মদদে মুসলিম লীগ-জামায়াত মহল মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষ বাঙালিদের চির-নির্মূল করে দিতে চেয়েছিল। চীন-আমেরিকা তাদের পক্ষে ছিল। ভারত-রাশিয়া এক জোট হয়ে বাঙালিদের পাশে দাঁড়িয়েছিল। বাংলাদেশের জনগণের নিরঙ্কুশ অংশ ছিল মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষ।
একাত্তরের পরাজয় আমেরিকা, বিশেষত ইতিহাসের সবচেয়ে কুটিল চাণক্য কিসিঞ্জার মেনে নিতে পারেনি। প্রতিশোধ নিতে সময় নিয়েছিল মাত্র সাড়ে তিন বছর। বাঙালি জাতির মহানায়ককে সপরিবারে হত্যা করার মতো নৃশংসতা ওই বিশ্বশাসকদের ডাল-ভাত। ওরা তাই করেছে এবং মুক্তিযুদ্ধের মর্মবস্তুকে চিরতরে বিনষ্ট করার জন্য নানারূপ শক্তিকে ক্ষমতায় বসিয়েছে। সেই থেকে এ দেশে একাত্তর বনাম পঁচাত্তর যুদ্ধ চলছেই। নানারূপে।
আইয়ুব-ইয়াহিয়া-জিয়া-এরশাদ-মইন এই পাঁচ জেনারেলের শাসন এ দেশে কোনো গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান গড়তে দেয়নি। শুধু ১৯৭৫ নয়, ২০০৪-এ ওরা বর্তমান ক্ষমতাপ্রধানকে দলবলসহ হত্যা করার চূড়ান্ত আঘাত হেনেছিল। ওরা ফের যদি ক্ষমতায় আসে, তবে আরও ভয়ংকর রূপ ধারণ করবে, এই আশঙ্কায় দেশে প্রধান দুটি দলের ভেতর সমঝোতার আশা আসলে মরীচিকার মতোই।
২০০৮ থেকে ২০২৩। তিন-তিনবার বর্তমান ক্ষমতাসীনেরা শাসনক্ষমতা বজায় রাখতে সক্ষম হয়েছে মূলত রাষ্ট্রশক্তির সহায়তা পেয়েই।এটি বাস্তব সত্য। সুতরাং ২০২৪-এ যেন রাষ্ট্রশক্তি বর্তমান ক্ষমতাসীনদের পক্ষে কাজ না করে, সে জন্য বিরোধী পক্ষ ওয়াশিংটনে টন টন টংক ঢেলে টকিং করে প্রাথমিক সাফল্যও পেয়েছিল। রাষ্ট্রশক্তির বড় চাঁইদের ভিসা দেওয়া হবে না এমন ভীতি ছড়াল মার্কিন শাসকেরা।
স্যাংশন দিয়ে আমাদের পোশাকশিল্পকে অচল করে দেওয়া হবে—এই আতঙ্কে আমরা শঙ্কিত হয়ে পড়লাম। ওদিকে বিরোধী শক্তি তিন পাঁচা ১৫ বছর পর আবার ক্ষমতায় ফিরে আসবে এই সম্ভাবনায় বাঁধ ভাঙা জোয়ারের উচ্ছ্বাসে ঝাঁপিয়ে পড়ল বুঝিবা। মার্কিনি হাস দৌড়িয়ে, ঝাঁপাঝাঁপি-দাপাদাপি করে মহা-টেররিস্টের মতো দেশজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে দিল।
তারপর? ২৮ অক্টোবর ২০২৩ বাইডেনের ভুয়া প্রতিনিধিকে নিয়ে একজন জেনারেল অব. গেলেন বিরোধী সমাবেশে সরকার পতনের ঘোষণা জানাতে। দুজনেই জরাসন্ধের লৌহকপাটের আড়ালে এখন। পরের কাহিনি সবার জানা। ক্ষমতাসীন সত্য আর বিরোধী সত্যে পরস্পর গুঁতোগুঁতি করছে। নির্বাচনী ফলাফলের পর মার্কিন-জাপান-কোরিয়া-ইউরো-জাতিসংঘ আর ভারত-চীন-রাশিয়া কেউ ‘কষ্ট লুকাইয়া, কেউবা হাসিয়া হাসিয়া পৌনঃপুনিক ক্ষমতাসীনদের সহিত একসাথে কাজ করিবার বাসনাপত্র পেশ করিল। বিরোধী সমর্থকেরা টাস্কা খাইয়া গেল।’
এত কিছুর পরও দৃশ্যত বিরোধীপক্ষ এবারও হেরে গেল। এর মানে এই নয় যে ক্ষমতাসীনেরা জিতে গেল! ক্ষমতাসীনেরা অভাবনীয় অবকাঠামোগত উন্নয়ন ঘটিয়েছে। ওদিকে দেশে মূল্যবোধের অবক্ষয়ও ঘটেছে ভয়ংকরভাবে। ক্ষমতাসীনদের আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে রেখেছে দুর্নীতিবাজেরা। বড় বড় ব্যবসায়ীর সিন্ডি-বেড়াল (সিন্ডিকেট) এখন হালুম হাঁক দিচ্ছে। জনগণ অর্থনৈতিক উন্নয়ন চায়। জনগণ নৈতিক উন্নয়নও চায়। বাংলাদেশের গজিয়ে ওঠা পুঁজিবাদের নির্মম লোলুপতা বেড়েই চলেছে। ক্ষমতাসীনেরা কী ওদের হাতের পুতুল হবে, নাকি রাশ টেনে ধরতে সক্ষম হবে—এটাই এখন জটিল বড় প্রশ্ন।
আপাতত জিতেছে ক্ষমতাসীনেরা, প্রকৃত বিজয় আনতে শক্ত ব্যবস্থা না নিলে ক্ষমতাসীনদেরও হারতে হবে। দেশে নেমে আসবে বিকল্পে অন্ধকারের ভয়াবহ শক্তি। তখন আর বিদ্যমান টক শো গণতন্ত্রও থাকবে না।
অতএব জিততে হলে পাচার করা অর্থসম্পদ ফিরিয়ে আনতে হবে। সিন্ডিবেড়ালদের থামাতে হবে। জমিখেকো, নদী-নালা-খাল-বিল-বালু-বালিশখেকো প্রভৃতি খ্যাঁকশিয়ালদের দমন করতেই হবে। মুক্তিযুদ্ধের সাইন বোর্ড লাগিয়ে আকাম-কুকামে মুক্তিযুদ্ধ আবেদন হারাচ্ছে।
এভাবে চললে হারতেই হবে। অতএব জাগো বাংলাদেশ। জাগো একাত্তর নবশক্তিতে। ‘কৌন জিতা কৌন হারা’ শিরোনামে আজ এটুকুই বলা।
লেখক: বীর মুক্তিযোদ্ধা, রম্যলেখক
৭ জানুয়ারি। ২০২৪। ১৯৭১ সালে যে দেশটির স্বতন্ত্র মানচিত্র জন্ম নিল, সেই দেশটির দ্বাদশ জাতীয় সংসদের নির্বাচন। নির্বাচন হলো।ক্ষমতাসীনেরা বলল, সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনে আমরা জিতেছি। প্রধান বিরোধী পক্ষ বলল, দেশের অধিকাংশ মানুষ নির্বাচন বর্জন করেছে, অতএব আমরাই জিতেছি। এখন মহাকালের কাছে প্রশ্ন: কৌন জিতা, কৌন হারা!
দৈনন্দিন বাজারে আগুনের ধোঁয়া। গরিবেরা জান দিয়ে খেটে জীবন চালাচ্ছে। প্রোটিন তাদের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে। ৮ জানুয়ারি ২০২৪ পথে পথে ঘুরে ঘুরে আদমসন্তানদের দেখলাম, বনি আদম আমি একজনকেও নির্বাচন নিয়ে খুশি অথবা ব্যাজার দেখলাম না। সাধারণ মানুষ কথা বলছে না। তাদের মনের কথা কবি-সাহিত্যিক-কথাশিল্পীরা বুঝতে পারেন, মুখ্যু সুখ্যু তরল লেখক আমি মানুষের মনের অমৃত বা গরলের কিছুই বুঝি না।
মানুষ এমন বোবা হয়ে থাকবে না। অচিরেই অগ্নিগর্ভ সমাজ দাউ দাউ করে জ্বলে উঠবে। বন্ধু মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বললেন, আইয়ুব খান উন্নয়নের দশক পালনের সময়েই ধপাস পড়ে গ্যালো। এবারও এমনি হবে। আইয়ুব খান ফিল্ড মার্শাল গিল্ড পড়ে গেল, রাজপথে তখন মূলত মধ্য ও বামপন্থীরা। বর্তমান ক্ষমতাসীনেরা পড়ে গেলে রাজপথে কারা থাকবে, সে ধাঁধার উত্তর মেলেনি সেলিম-বক্তৃতা বয়ানে।
এদিকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ প্রথম অধিবেশনে নিমগ্ন। নারী সংরক্ষিত আসন পাকাপাকি। প্রধান বিরোধী দল বর্জনের অর্জনে বাহ্যত পুলকিত। তাদের মনের কথাও বুঝি না। তবে মাঠে সাধারণ বিরোধী সমর্থকেরা খুব খোশে আছে মনে হয় না।
বিরোধী বর্জন-কৌশলের চাওয়া ছিল, মানুষ ভোটবিমুখ, ভোটকেন্দ্রে যাবে না, পুরো ব্যাপারটি ফকফকা হয়ে যাবে বিশ্ববাজারে। এদিকে বিশেষত ক্ষমতাপ্রধান হঠাৎ এমন এক দাবার চাল দেবেন, অনেকেই চমকে এবং থমকে গেল। নিজ দলের লোকদের মুক্ত করে দিলেন।
অফিশিয়াল। আনঅফিশিয়াল। লেগে গেলে ধুম প্রতিদ্বন্দ্বিতা। একজন বিবেচক-বিশ্লেষক বললেন, এমন বুদ্ধির জন্য ক্ষমতাপ্রধানকে অবশ্যই নোবেলের চেয়েও বড় পুরস্কার দেওয়া উচিত এবং এই ফর্মুলা পৃথিবীর নানা দেশে রপ্তানিও করা যেতে পারে আমাদের জিআই স্বত্ব হিসেবে।
এসব হালকা বচনে ভারী বাস্তবতাকে এড়িয়ে যাওয়ার উপায় নেই। সেই ১৯৪৭ থেকে এই ২০২৪ পর্যন্ত আমাদের অঞ্চলের নির্বাচনে প্রকাশ্যে এভাবে আমেরিকা-চীন-রাশিয়া-ভারতের উত্তাপ-উদ্বেগ প্রকাশ সত্যি সত্যিই আমাদের উদ্বিগ্ন করে তুলেছিল। ১৯৭১-এ হিংস্র রাষ্ট্রশক্তির মদদে মুসলিম লীগ-জামায়াত মহল মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষ বাঙালিদের চির-নির্মূল করে দিতে চেয়েছিল। চীন-আমেরিকা তাদের পক্ষে ছিল। ভারত-রাশিয়া এক জোট হয়ে বাঙালিদের পাশে দাঁড়িয়েছিল। বাংলাদেশের জনগণের নিরঙ্কুশ অংশ ছিল মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষ।
একাত্তরের পরাজয় আমেরিকা, বিশেষত ইতিহাসের সবচেয়ে কুটিল চাণক্য কিসিঞ্জার মেনে নিতে পারেনি। প্রতিশোধ নিতে সময় নিয়েছিল মাত্র সাড়ে তিন বছর। বাঙালি জাতির মহানায়ককে সপরিবারে হত্যা করার মতো নৃশংসতা ওই বিশ্বশাসকদের ডাল-ভাত। ওরা তাই করেছে এবং মুক্তিযুদ্ধের মর্মবস্তুকে চিরতরে বিনষ্ট করার জন্য নানারূপ শক্তিকে ক্ষমতায় বসিয়েছে। সেই থেকে এ দেশে একাত্তর বনাম পঁচাত্তর যুদ্ধ চলছেই। নানারূপে।
আইয়ুব-ইয়াহিয়া-জিয়া-এরশাদ-মইন এই পাঁচ জেনারেলের শাসন এ দেশে কোনো গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান গড়তে দেয়নি। শুধু ১৯৭৫ নয়, ২০০৪-এ ওরা বর্তমান ক্ষমতাপ্রধানকে দলবলসহ হত্যা করার চূড়ান্ত আঘাত হেনেছিল। ওরা ফের যদি ক্ষমতায় আসে, তবে আরও ভয়ংকর রূপ ধারণ করবে, এই আশঙ্কায় দেশে প্রধান দুটি দলের ভেতর সমঝোতার আশা আসলে মরীচিকার মতোই।
২০০৮ থেকে ২০২৩। তিন-তিনবার বর্তমান ক্ষমতাসীনেরা শাসনক্ষমতা বজায় রাখতে সক্ষম হয়েছে মূলত রাষ্ট্রশক্তির সহায়তা পেয়েই।এটি বাস্তব সত্য। সুতরাং ২০২৪-এ যেন রাষ্ট্রশক্তি বর্তমান ক্ষমতাসীনদের পক্ষে কাজ না করে, সে জন্য বিরোধী পক্ষ ওয়াশিংটনে টন টন টংক ঢেলে টকিং করে প্রাথমিক সাফল্যও পেয়েছিল। রাষ্ট্রশক্তির বড় চাঁইদের ভিসা দেওয়া হবে না এমন ভীতি ছড়াল মার্কিন শাসকেরা।
স্যাংশন দিয়ে আমাদের পোশাকশিল্পকে অচল করে দেওয়া হবে—এই আতঙ্কে আমরা শঙ্কিত হয়ে পড়লাম। ওদিকে বিরোধী শক্তি তিন পাঁচা ১৫ বছর পর আবার ক্ষমতায় ফিরে আসবে এই সম্ভাবনায় বাঁধ ভাঙা জোয়ারের উচ্ছ্বাসে ঝাঁপিয়ে পড়ল বুঝিবা। মার্কিনি হাস দৌড়িয়ে, ঝাঁপাঝাঁপি-দাপাদাপি করে মহা-টেররিস্টের মতো দেশজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে দিল।
তারপর? ২৮ অক্টোবর ২০২৩ বাইডেনের ভুয়া প্রতিনিধিকে নিয়ে একজন জেনারেল অব. গেলেন বিরোধী সমাবেশে সরকার পতনের ঘোষণা জানাতে। দুজনেই জরাসন্ধের লৌহকপাটের আড়ালে এখন। পরের কাহিনি সবার জানা। ক্ষমতাসীন সত্য আর বিরোধী সত্যে পরস্পর গুঁতোগুঁতি করছে। নির্বাচনী ফলাফলের পর মার্কিন-জাপান-কোরিয়া-ইউরো-জাতিসংঘ আর ভারত-চীন-রাশিয়া কেউ ‘কষ্ট লুকাইয়া, কেউবা হাসিয়া হাসিয়া পৌনঃপুনিক ক্ষমতাসীনদের সহিত একসাথে কাজ করিবার বাসনাপত্র পেশ করিল। বিরোধী সমর্থকেরা টাস্কা খাইয়া গেল।’
এত কিছুর পরও দৃশ্যত বিরোধীপক্ষ এবারও হেরে গেল। এর মানে এই নয় যে ক্ষমতাসীনেরা জিতে গেল! ক্ষমতাসীনেরা অভাবনীয় অবকাঠামোগত উন্নয়ন ঘটিয়েছে। ওদিকে দেশে মূল্যবোধের অবক্ষয়ও ঘটেছে ভয়ংকরভাবে। ক্ষমতাসীনদের আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে রেখেছে দুর্নীতিবাজেরা। বড় বড় ব্যবসায়ীর সিন্ডি-বেড়াল (সিন্ডিকেট) এখন হালুম হাঁক দিচ্ছে। জনগণ অর্থনৈতিক উন্নয়ন চায়। জনগণ নৈতিক উন্নয়নও চায়। বাংলাদেশের গজিয়ে ওঠা পুঁজিবাদের নির্মম লোলুপতা বেড়েই চলেছে। ক্ষমতাসীনেরা কী ওদের হাতের পুতুল হবে, নাকি রাশ টেনে ধরতে সক্ষম হবে—এটাই এখন জটিল বড় প্রশ্ন।
আপাতত জিতেছে ক্ষমতাসীনেরা, প্রকৃত বিজয় আনতে শক্ত ব্যবস্থা না নিলে ক্ষমতাসীনদেরও হারতে হবে। দেশে নেমে আসবে বিকল্পে অন্ধকারের ভয়াবহ শক্তি। তখন আর বিদ্যমান টক শো গণতন্ত্রও থাকবে না।
অতএব জিততে হলে পাচার করা অর্থসম্পদ ফিরিয়ে আনতে হবে। সিন্ডিবেড়ালদের থামাতে হবে। জমিখেকো, নদী-নালা-খাল-বিল-বালু-বালিশখেকো প্রভৃতি খ্যাঁকশিয়ালদের দমন করতেই হবে। মুক্তিযুদ্ধের সাইন বোর্ড লাগিয়ে আকাম-কুকামে মুক্তিযুদ্ধ আবেদন হারাচ্ছে।
এভাবে চললে হারতেই হবে। অতএব জাগো বাংলাদেশ। জাগো একাত্তর নবশক্তিতে। ‘কৌন জিতা কৌন হারা’ শিরোনামে আজ এটুকুই বলা।
লেখক: বীর মুক্তিযোদ্ধা, রম্যলেখক
জমির মালিক হযরত শাহ্ আলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। তবে ওই জমিতে ৩৯১টি দোকান নির্মাণ করে কয়েক বছর ধরে ভাড়া নিচ্ছে হযরত শাহ্ আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজ। দোকানগুলোর ভাড়া থেকে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ৭০ লাখ টাকা ভ্যাটও দেওয়া হয়নি। বিষয়টি উঠে এসেছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) তদন্তে।
১ দিন আগেকুড়িগ্রাম পৌর শহরে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী ছোট ভাই নিহত ও বড় ভাই আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে মৎস্য খামারের কাছে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
৫ দিন আগেবৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগের মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১৮ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত শনিবার রাতে ও গতকাল রোববার তাঁরা গ্রেপ্তার হন।
৫ দিন আগেএক অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটেছে শিল্পকলা একাডেমিতে। শিল্পকলা একাডেমির তিনটি হলেই কিছুদিন আগেও নাটক চলত। নাট্যকর্মীদের সৃজনশীলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটত সেখানে। বহু পরিশ্রমে মাসের পর মাস নিজের খেয়ে, নিজের গাড়িভাড়া দিয়ে নাট্যকর্মীরা একেবারেই স্বেচ্ছাশ্রমে একটি শিল্প তিপ্পান্ন বছর ধরে গড়ে তুলেছেন। শিল্পকলা একাডেমি এখন
৮ দিন আগে