ইয়াহ্ইয়া মারুফ, সুনামগঞ্জ থেকে
দেখে যে কারও মনে হবে এটি একটি পুকুর। কোনোভাবেই বোঝার উপায় নেই, এখানে দেড় মাস আগেও বসতঘর ছিল। কিন্তু সে ঘরগুলো গেল কোথায়? হাতের ইশারায় জায়গাটি দেখিয়ে সেই প্রশ্নের উত্তর দিলেন রওশন আরা বেগম। জানালেন, ওই যে পানি দেখা যাচ্ছে, সেখানেই ঘর ছিল তাঁর। শুধু তিনি নন, মোট ১৬টি পরিবারের বাস ছিল সেখানে। গত ১৫ জুন রাতে বানের পানিতে সবকিছু ভেসে যায়। সেই যে মাথা গোঁজার ঠাঁই হারালেন, এখনো তা ফিরে পাননি।
রওশন আরা বেগম সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের জিরারগাঁও গ্রামের বাসিন্দা। তাঁর স্বামী বাচ্চু মিয়া আগে ফেরি করে শনপাপড়ি বেচতেন। এখন অসুস্থ, তাই কাজ করতে পারেন না। তিনি নিজেও স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত। চার ছেলের মধ্যে বড় ছেলে আলাদা থাকেন। ছোট দুই ছেলে এখনো শিক্ষার্থী। পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী মেজো ছেলে সেনাবাহিনীতে সৈনিক পদে চাকরি করেন। ছেলের চাকরির টাকায় কোনোভাবে সংসার চললেও ঘর করার উপায় নেই এই নারীর। সরকারের দেওয়া ১০ হাজার টাকায় হাঁড়িবাসন কিনে এখন অন্যের বাড়িতে আশ্রিত পুরো পরিবার।
রওশন আরার প্রতিবেশী বাকি ১৫টি পরিবারের অবস্থাও এ রকমই। এসব পরিবারের উপার্জনকারীরা দিনমজুর। কোনো রকমে খেয়ে বাঁচলেও মাথা গোঁজার ঠাঁই তৈরির সামর্থ্য নেই কারও। সবাই অন্যের বাড়িতে আশ্রিত।
শুধু জিরারগাঁও নয়, সুনামগঞ্জ জেলায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হাজারো পরিবারের এখন এমন অবস্থা। এসব পরিবারের অধিকাংশই দিনমজুরনির্ভর। যাঁরা নিজ বসতভিটায় আছেন, তাঁরা অর্থসংকটে মেরামত করতে পারছেন না। ভাঙাচোরা ঘরে দিন কোনোরকমে কেটে গেলেও রাতে চিন্তায় ঘুম আসে না। সাপ-বিচ্ছুর ভয়ে রাত কাটে তাঁদের।
সবচেয়ে বিপাকে রয়েছেন সীমান্তবর্তী দুর্গম এলাকার লোকজন। এসব এলাকায় কোনো ধরনের সহায়তা এখনো পৌঁছেনি। ফলে হাওর অধ্যুষিত সুনামগঞ্জের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত
মানুষেরা অমানবিক জীবনযাপন করছেন। খেয়ে না-খেয়ে কোনো রকমে দিনাতিপাত করলেও দুর্দশা কাটছে না। মাথা গোঁজার ঠাঁই না থাকায় দুশ্চিন্তায় হাজারো পরিবার।
গত শনিবার থেকে টানা চার দিন সুনামগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলা ঘুরে বন্যাদুর্গত মানুষের এমন দুর্দশা চোখে পড়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ছাতক, দোয়ারাবাজার, তাহিরপুর, বিশ্বম্ভরপুর ও সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার মানুষ। এসব উপজেলা ও সুনামগঞ্জ পৌর শহরের নিচতলায় বসবাসকারী অধিকাংশ পরিবারের নতুন করে সবকিছু শুরু করতে হচ্ছে। বিছানাপত্র, পোশাক, হাঁড়িবাসনসহ সবই নতুন করে কিনতে হচ্ছে।
সুনামগঞ্জ শহরের হাজিপাড়া এলাকার বাসিন্দা শাহিন মিয়া বলেন, ‘জুলাই মাসের বেতন দিয়ে আসবাবপত্র, বিছানা, পোশাক কিনেছি। এখন নতুন করে সবকিছু জোগাড় করছি। বন্যায় বাসার সব মালামাল নষ্ট হয়ে গেছে।’
ছাতক উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের দুর্গম এলাকা বৈশাকান্দি গ্রাম। ওই গ্রামের বাসিন্দা বাউল মো. আক্কেল আলী জানান, বন্যায় তাঁর ঘরবাড়ি ভেঙে গেছে। ৬ ছেলে ও ৬ মেয়ে। ছেলেরাসহ তিনি দিনমজুরি করেন। বর্ষাকালে তেমন কাম-কাজ নেই। মাছ ধরে বিক্রি করেন। তাতে যা পান তা দিয়ে সংসার চালান। ঘর মেরামতের সামর্থ্যও নেই।
তাহিরপুর উপজেলার মান্দিয়াতা গ্রামে কথা হয় মাছ শিকারি মো. নুর আলমের সঙ্গে। তিনি বলেন,‘সকালে পান্তাভাত খেয়ে মাছ ধরতে যাই। সারা দিন মাছ ধরে বিক্রি করে যা পাই তা দিয়ে স্ত্রী-সন্তানের জন্য চাল, ডাল কিনে আনি। বন্যায় ঘরবাড়ি ভেঙে গেছে। এক মাস হলেও আমাদের কেউ কোনো সাহায্য করেনি। গরিবের জন্য কেউ নাই। মেম্বার-চেয়ারম্যান ভোটের সময় আসে, বিপদ-আপদে না।’
একই কথা বলেন বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার ভাতেরটেক দক্ষিণপাড়ার ফয়জুর রহমান। তিনি জানান, পানির স্রোত তাঁদের দুই ভাইয়ের ঘরবাড়ি ভাসিয়ে নিয়ে গেছে। অন্যের বাড়িতে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন। কত দিন থাকতে হবে তা জানেন না। কারণ, দিনমজুরি করে কোনোভাবে খেয়ে বাঁচলেও ঘর বানানো তাঁদের পক্ষে সম্ভব নয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা জানান, বেসরকারিভাবেও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা করা হচ্ছে। বিভিন্ন এনজিও সংস্থা ও ব্যক্তি উদ্যোগেও চলছে সাহায্য-সহযোগিতা। পর্যায়ক্রমে সবাইকে সরকারি সহায়তা দেওয়া হবে।
গতকাল সন্ধ্যায় সুনামগঞ্জের জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা জেলা প্রশাসক মহোদয়ের মাধ্যমে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর লিখেছি। ক্ষতিগ্রস্ত সবার তালিকা পাঠিয়েছি। বরাদ্দ এলে আমরা সঙ্গে সঙ্গে মানুষের কাছে পৌঁছে দেই। না এলে কী করব, বা কেমনে দেব?’
একই সময়ে জেলার সার্বিক বিষয় নিয়ে কথা বলতে চাইলে সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন মিটিংয়ের ব্যস্ততা দেখিয়ে এ ব্যাপারে কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
দেখে যে কারও মনে হবে এটি একটি পুকুর। কোনোভাবেই বোঝার উপায় নেই, এখানে দেড় মাস আগেও বসতঘর ছিল। কিন্তু সে ঘরগুলো গেল কোথায়? হাতের ইশারায় জায়গাটি দেখিয়ে সেই প্রশ্নের উত্তর দিলেন রওশন আরা বেগম। জানালেন, ওই যে পানি দেখা যাচ্ছে, সেখানেই ঘর ছিল তাঁর। শুধু তিনি নন, মোট ১৬টি পরিবারের বাস ছিল সেখানে। গত ১৫ জুন রাতে বানের পানিতে সবকিছু ভেসে যায়। সেই যে মাথা গোঁজার ঠাঁই হারালেন, এখনো তা ফিরে পাননি।
রওশন আরা বেগম সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের জিরারগাঁও গ্রামের বাসিন্দা। তাঁর স্বামী বাচ্চু মিয়া আগে ফেরি করে শনপাপড়ি বেচতেন। এখন অসুস্থ, তাই কাজ করতে পারেন না। তিনি নিজেও স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত। চার ছেলের মধ্যে বড় ছেলে আলাদা থাকেন। ছোট দুই ছেলে এখনো শিক্ষার্থী। পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী মেজো ছেলে সেনাবাহিনীতে সৈনিক পদে চাকরি করেন। ছেলের চাকরির টাকায় কোনোভাবে সংসার চললেও ঘর করার উপায় নেই এই নারীর। সরকারের দেওয়া ১০ হাজার টাকায় হাঁড়িবাসন কিনে এখন অন্যের বাড়িতে আশ্রিত পুরো পরিবার।
রওশন আরার প্রতিবেশী বাকি ১৫টি পরিবারের অবস্থাও এ রকমই। এসব পরিবারের উপার্জনকারীরা দিনমজুর। কোনো রকমে খেয়ে বাঁচলেও মাথা গোঁজার ঠাঁই তৈরির সামর্থ্য নেই কারও। সবাই অন্যের বাড়িতে আশ্রিত।
শুধু জিরারগাঁও নয়, সুনামগঞ্জ জেলায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হাজারো পরিবারের এখন এমন অবস্থা। এসব পরিবারের অধিকাংশই দিনমজুরনির্ভর। যাঁরা নিজ বসতভিটায় আছেন, তাঁরা অর্থসংকটে মেরামত করতে পারছেন না। ভাঙাচোরা ঘরে দিন কোনোরকমে কেটে গেলেও রাতে চিন্তায় ঘুম আসে না। সাপ-বিচ্ছুর ভয়ে রাত কাটে তাঁদের।
সবচেয়ে বিপাকে রয়েছেন সীমান্তবর্তী দুর্গম এলাকার লোকজন। এসব এলাকায় কোনো ধরনের সহায়তা এখনো পৌঁছেনি। ফলে হাওর অধ্যুষিত সুনামগঞ্জের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত
মানুষেরা অমানবিক জীবনযাপন করছেন। খেয়ে না-খেয়ে কোনো রকমে দিনাতিপাত করলেও দুর্দশা কাটছে না। মাথা গোঁজার ঠাঁই না থাকায় দুশ্চিন্তায় হাজারো পরিবার।
গত শনিবার থেকে টানা চার দিন সুনামগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলা ঘুরে বন্যাদুর্গত মানুষের এমন দুর্দশা চোখে পড়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ছাতক, দোয়ারাবাজার, তাহিরপুর, বিশ্বম্ভরপুর ও সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার মানুষ। এসব উপজেলা ও সুনামগঞ্জ পৌর শহরের নিচতলায় বসবাসকারী অধিকাংশ পরিবারের নতুন করে সবকিছু শুরু করতে হচ্ছে। বিছানাপত্র, পোশাক, হাঁড়িবাসনসহ সবই নতুন করে কিনতে হচ্ছে।
সুনামগঞ্জ শহরের হাজিপাড়া এলাকার বাসিন্দা শাহিন মিয়া বলেন, ‘জুলাই মাসের বেতন দিয়ে আসবাবপত্র, বিছানা, পোশাক কিনেছি। এখন নতুন করে সবকিছু জোগাড় করছি। বন্যায় বাসার সব মালামাল নষ্ট হয়ে গেছে।’
ছাতক উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের দুর্গম এলাকা বৈশাকান্দি গ্রাম। ওই গ্রামের বাসিন্দা বাউল মো. আক্কেল আলী জানান, বন্যায় তাঁর ঘরবাড়ি ভেঙে গেছে। ৬ ছেলে ও ৬ মেয়ে। ছেলেরাসহ তিনি দিনমজুরি করেন। বর্ষাকালে তেমন কাম-কাজ নেই। মাছ ধরে বিক্রি করেন। তাতে যা পান তা দিয়ে সংসার চালান। ঘর মেরামতের সামর্থ্যও নেই।
তাহিরপুর উপজেলার মান্দিয়াতা গ্রামে কথা হয় মাছ শিকারি মো. নুর আলমের সঙ্গে। তিনি বলেন,‘সকালে পান্তাভাত খেয়ে মাছ ধরতে যাই। সারা দিন মাছ ধরে বিক্রি করে যা পাই তা দিয়ে স্ত্রী-সন্তানের জন্য চাল, ডাল কিনে আনি। বন্যায় ঘরবাড়ি ভেঙে গেছে। এক মাস হলেও আমাদের কেউ কোনো সাহায্য করেনি। গরিবের জন্য কেউ নাই। মেম্বার-চেয়ারম্যান ভোটের সময় আসে, বিপদ-আপদে না।’
একই কথা বলেন বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার ভাতেরটেক দক্ষিণপাড়ার ফয়জুর রহমান। তিনি জানান, পানির স্রোত তাঁদের দুই ভাইয়ের ঘরবাড়ি ভাসিয়ে নিয়ে গেছে। অন্যের বাড়িতে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন। কত দিন থাকতে হবে তা জানেন না। কারণ, দিনমজুরি করে কোনোভাবে খেয়ে বাঁচলেও ঘর বানানো তাঁদের পক্ষে সম্ভব নয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা জানান, বেসরকারিভাবেও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা করা হচ্ছে। বিভিন্ন এনজিও সংস্থা ও ব্যক্তি উদ্যোগেও চলছে সাহায্য-সহযোগিতা। পর্যায়ক্রমে সবাইকে সরকারি সহায়তা দেওয়া হবে।
গতকাল সন্ধ্যায় সুনামগঞ্জের জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা জেলা প্রশাসক মহোদয়ের মাধ্যমে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর লিখেছি। ক্ষতিগ্রস্ত সবার তালিকা পাঠিয়েছি। বরাদ্দ এলে আমরা সঙ্গে সঙ্গে মানুষের কাছে পৌঁছে দেই। না এলে কী করব, বা কেমনে দেব?’
একই সময়ে জেলার সার্বিক বিষয় নিয়ে কথা বলতে চাইলে সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন মিটিংয়ের ব্যস্ততা দেখিয়ে এ ব্যাপারে কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
জমির মালিক হযরত শাহ্ আলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। তবে ওই জমিতে ৩৯১টি দোকান নির্মাণ করে কয়েক বছর ধরে ভাড়া নিচ্ছে হযরত শাহ্ আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজ। দোকানগুলোর ভাড়া থেকে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ৭০ লাখ টাকা ভ্যাটও দেওয়া হয়নি। বিষয়টি উঠে এসেছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) তদন্তে।
৪ দিন আগেকুড়িগ্রাম পৌর শহরে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী ছোট ভাই নিহত ও বড় ভাই আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে মৎস্য খামারের কাছে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
৮ দিন আগেবৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগের মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১৮ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত শনিবার রাতে ও গতকাল রোববার তাঁরা গ্রেপ্তার হন।
৮ দিন আগেএক অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটেছে শিল্পকলা একাডেমিতে। শিল্পকলা একাডেমির তিনটি হলেই কিছুদিন আগেও নাটক চলত। নাট্যকর্মীদের সৃজনশীলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটত সেখানে। বহু পরিশ্রমে মাসের পর মাস নিজের খেয়ে, নিজের গাড়িভাড়া দিয়ে নাট্যকর্মীরা একেবারেই স্বেচ্ছাশ্রমে একটি শিল্প তিপ্পান্ন বছর ধরে গড়ে তুলেছেন। শিল্পকলা একাডেমি এখন
১১ দিন আগে