চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের ট্রেন-মাইক্রোবাস দুর্ঘটনাস্থলে রেললাইনের ধারে এখনো পড়ে আছে দুমড়েমুচড়ে যাওয়া মাইক্রোবাসটি। এখনো ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে কিছু জুতা-স্যান্ডেল, তাতে ছোপ ছোপ রক্তের দাগ।

উপজেলার খৈয়াছড়া ঝরনা এলাকার রেললাইনের লেভেল ক্রসিংয়ের আধা কিলোমিটার দক্ষিণে শোকের চিহ্ন নিয়ে পড়ে আছে এসব। স্থানীয় বাসিন্দারা ছুটে আসছেন মাইক্রোবাসটি একনজর দেখতে।

গতকাল শনিবার দুপুরে দুর্ঘটনাস্থলে গিয়ে এই অবস্থা দেখা যায়। দুর্ঘটনার পর লাশ উদ্ধার করে রেললাইনের পূর্ব পাশে মাইক্রোবাসটি রেখে যায় রেলওয়ে পুলিশ।

গত শুক্রবার খৈয়াছড়া ঝরনা রেলগেটে পর্যটকবাহী মাইক্রোবাসের সঙ্গে ট্রেনের ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটে। এতে মাইক্রোবাসের ১১ যাত্রী নিহত হওয়ার ঘটনা স্থানীয় বাসিন্দাদের এখনো শোকে মুহ্যমান করে রেখেছে।

স্থানীয় বাসিন্দা সাকলাইন মোস্তাক জানান, ‘দুর্ঘটনার মাইক্রোবাসটি এখন শুধুই শোকের চিহ্ন। ১১টি তরতাজা তরুণ অকালে ঝরে গেল। গাড়িটি হয়তো আবার সচল হবে, কিন্তু চালকসহ ১১ যাত্রী খাটিয়ায় করে চিরদিনের জন্য চলে গেছে, তারা আর ফিরবে না।’

এদিকে দুর্ঘটনার জন্য মাইক্রোবাস চালক ও গেটম্যানের গাফিলতিকে দায়ী করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

দোকানদার জসিম উদ্দিন জানান, দুর্ঘটনার সময় চারজন যাত্রী মাইক্রোবাস থেকে ছিটকে পড়ে বেঁচে যান। স্থানীয়দের সহায়তায় চিকিৎসা পেয়ে তাঁরা এখন আশঙ্কামুক্ত। তিনি আরও বলেন, ‘যদি ট্রেনের ধাক্কায় মাইক্রোবাসটি রেললাইনের বাইরে ছিটকে পড়ত, তাতে হয়তো সব যাত্রীর বেঁচে যাওয়ার সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু ট্রেন যখন হিঁচড়ে মাইক্রোবাসটি আধা কিলোমিটার নিয়ে যায়। তখন যাত্রীদের মৃত্যুযন্ত্রণা কত কষ্টকর ছিল, ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না।’

সাকলাইন মোস্তাক আক্ষেপ করে বলেন, ‘এভাবে আর কত জীবন অকালে চলে গেলে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের হুঁশ হবে? দায়সারাভাবে গেটম্যান দিয়ে কত জীবন কেড়ে নেবে? কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের টনক নড়ে। তারপর সব স্বাভাবিক হয়ে যায়। মানুষ ভুলে যায়। কোনো সমাধান হয় না।’

গত শুক্রবার বেলা দেড়টার দিকে মিরসরাইয়ের খৈয়াছড়া ঝরনা এলাকায় রেললাইনের লেভেল ক্রসিং পার হওয়ার সময় মহানগর প্রভাতী ট্রেন দুর্ঘটনায় ১১ পর্যটক নিহত হয়েছেন।