জাহীদ রেজা নূর, রূপপুর (পাবনা) থেকে ফিরে
নানা রঙের মানুষের দেখা পেয়েছি রূপপুরে। যে গ্রিনসিটির বড় বড় ভবন নিয়ে ছিল আমাদের কৌতূহল, সেখানেও একদিন দিব্যি ঢুকে পড়া গেল। আগে থেকেই একটি ফ্ল্যাটের কয়েকজন এবং পাশের ফ্ল্যাটের এক তরুণী সেখানে অপেক্ষা করছিলেন আমাদের জন্য। লিফটে চড়ে সেই ফ্ল্যাটে ঢোকার পর আমাদের বরণ করে নেওয়া হলো চকলেট দিয়ে। ‘মস্কো’ লেখা লাল চকলেটের বাক্সটা বুঝিয়ে দিল আমরা এখন রুশ আতিথেয়তার স্বাদ পাচ্ছি। এরপর বলা হলো, চায়ের পানি ফুটছে। চায়ের নাম ‘ইভান’। জারের আমলে এই চা খুব জনপ্রিয় ছিল। বিপ্লবের পর এর উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। এখন আবার পাওয়া যাচ্ছে। চা খেতে হবে মধু দিয়ে। এই মধুও এসেছে রাশিয়া থেকে। রুটিতে ক্যাভিয়ের। এ যেন রাশিয়ার কোনো শহরে বসে আছি আমরা।
আলেক্সান্দর, ভাসিলি, আলেক্সেই, মাক্সিম আর ভিক্তোরিয়া। এঁরা সবাই এসেছেন রোস্তভ নামের শহর থেকে। রাশিয়ার দক্ষিণের শহর রোস্তভ। বলা হয় ‘রোস্তভ না দানু’ অর্থাৎ ‘ডন নদীর তীরে রোস্তভ’। আমাদের মনে পড়ে যায়, মিখাইল শোলোখভের ‘তিখি দোন’ বা ‘প্রশান্ত ডন’ উপন্যাসের কথা। এই রোস্তভ নিয়েই তিনি লিখেছিলেন তাঁর অমর উপন্যাসটি।
সবচেয়ে বেশি কথা বলছিলেন ভাসিলি। তবে মাক্সিমও খুলে দিয়েছিলেন কথার ঝাঁপি। আলেক্সেই আর ভিক্তোরিয়া কথা বলেছেন কম, তবে যা বলেছেন, তা-ও খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। প্রায় ঘণ্টা দেড়েকের আড্ডায় কত বিষয়েই-না কথা হলো!
মাক্সিম বলছিলেন বাংলাদেশের আবহাওয়া নিয়ে। সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি যখন এ দেশে এসেছিলেন, তখন রীতিমতো ঘামছিলেন। আর্দ্রতা বেশি। কথা টেনে নিয়ে ভাসিলি বলেন, ‘ঘেমেছি বললে ভুল হবে। গরমে ঘেমে-নেয়ে উঠেছি।’
মাক্সিম আবার বলেন, ‘প্রথম যখন এসেছি, তখন এই এলাকার বাঙালিরা আমাদের দিকে তাকাত অবাক চোখে। বুঝিনি প্রথমে। পরে বুঝেছি, আমরা শ্বেতাঙ্গ বলে। পরে সব ঠিক হয়ে যায়। বাসে যখন প্রথম ঢাকা থেকে এসেছি, তখন দেখেছি পথেঘাটে অনেক মানুষ। অবাক হয়েছি, কী করে এত মানুষ এখানে বাস করে। পায়ে পা লেগে তো হোঁচট খাওয়ার কথা। কিন্তু সে রকম কিছু তো হচ্ছে না। এরপর আপনাদের দেশটা ভালোবাসা শুরু করলাম। একেবারে অন্য রকম সহজ রকম বিশ্বাসী মানুষজন এখানে বাস করে।’
ভাসিলি আর মাক্সিমের মধ্যে কথা বলার প্রতিযোগিতা শুরু হয়। একজন বলেন, ‘রুশ ভাষায় প্রবাদ আছে: খারাপ জাতি বলে কিছু নেই, আছে খারাপ মানুষ। সব জাতিতেই ভালো-মন্দ মানুষ আছে।’ তারপর মজা করে বলেন, ‘আপনাদের দেশের মানুষ খুব সংস্কৃতিমান। হয়তো রুশরা এসে সেখানে কিছুটা অসংস্কৃত করে তুলেছে তাঁদের।’ বলে হাসতে থাকেন তিনি। তারপর বলেন, ‘মজা করার জন্যই বলা।’
ভাসিলি বলেন, ‘আমরা বাজে গালাগাল করতে অভ্যস্ত। এখানে তো সে রকম দেখি না।’
এবার প্রতিবাদ করতে হয়। ‘কী যে বলেন। আমাদের এখানেও রাশিয়ার মতো বাজে গালাগাল আছে। মানুষ করেও। সব দেশেই আছে।’
মাক্সিম বলেন, ‘তার মানে, আমরা হয়তো গালিটা বুঝি না।’
‘সরল মানুষজন হয়তো গালাগাল করে না। গরম কেটে যাচ্ছে। এখন তো ভোরে কম্বল গায়ে দিতে হয়।’
এবার আলেক্সান্দর বুঝিয়ে বলেন, কেন তাঁরা এখানে এসেছেন। ‘এখন দেশে কম কাজ। টাকা আয় করা কঠিন। তাই দেশের বাইরে কাজের জন্য যাচ্ছে মানুষ। আমরাও সে রকম কারণেই এসেছি এখানে। রাশিয়ায় এখন সাধারণ জনগণের সঙ্গে বড়লোকদের পার্থক্যটা অনেক বেশি।’
ভিক্তোরিয়া এই দেশে এসে প্রথমে ধাক্কা খেয়েছেন। পরে কোয়ারেন্টিনের সময় ভেবেছেন, ‘এ কোথায় এলাম! ফিরে যাব রাশিয়ায়।’ পরে অবশ্য অভ্যাস হয়ে গেল।
এবার একটা বড় ধরনের রসিকতা করেন তাঁরা। ‘তবে আপনাদের ট্রাফিক সিস্টেম নিয়ে কিছু বলব না।’ গম্ভীর হয়ে বলেন মাক্সিম।
‘বলার কী আছে, কোনো সিস্টেমই তো নেই!’ বলেন ভাসিলি।
হাইওয়েতে নিয়ম না-মানা বাসের দিকে ইঙ্গিত করে মাক্সিম বলেন, ‘দ্বিতীয়বার যখন আসি, তখন ঢাকা থেকে বাসে বসেছি। আমার পাশে একজন রাশান, যে নতুন এসেছে। আমি তো নরম বালিশে মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়েছি। ঘুম থেকে উঠে দেখি, ছেলেটা শক্ত কাঠের মতো সামনের হাতল ধরে বসে আছে! ও তো জানে না, বাস চলবে নিজের মতো, কোনো আইন না-মেনে। হাহাহা!’
আলেক্সেই একবারই বলেন, ‘আপনাদের দেশের খাবারগুলো ভালো। কিন্তু ঝাল ভীষণ।’
আড্ডাটা জমে ওঠে। আলোচনায় আসেন পুশকিন, আল্লা পুগাচিওভা। আসে নানা ধরনের সিনেমার নাম। ফাঁকে ফাঁকে চা খাওয়া হয়। ইভান নামের চা খুবই সুস্বাদু। মধু দিয়ে চা খাওয়ার সেই ঐতিহ্য আমাদের রাশিয়ার স্মৃতি মনে করিয়ে দেয়।
আমরা চলে আসি বিদ্যুৎকেন্দ্রে কর্মরত বাঙালিদের কাছে। তাঁরা তাঁদের মতো করে বিদ্যুৎকেন্দ্রের ব্যাপারে কথা বলেন। তারেকুল ইসলাম ভুঁইয়া আছেন টিসিইএল কোম্পানিতে মেকানিক্যাল কো-অর্ডিনেটর হিসেবে। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে থেকেই স্পেন, রাশিয়া, ফ্রান্সের কোম্পানিগুলোর বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কাজ করতে ভালো লাগে। এই পাওয়ার প্ল্যান্টের কারণেই যুক্তরাজ্য বা কানাডায় স্থায়ী হওয়ার চেষ্টা করেছিলেন যাঁরা, তাঁরা ফিরে এসে এখানে কাজ করেছেন, এটাও ভালো লাগে। একসময় বিদেশকে মনে করা হতো স্বর্গ। পাওয়ার প্ল্যান্ট প্রমাণ করে, আমাদের প্রযুক্তি এগিয়ে যাচ্ছে, আমাদের দেশ এগিয়ে যাচ্ছে।’
আমিনুল ইসলামের এটাই প্রথম চাকরি। তিনি যখন বলেন, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে কাজ করেন, তখন দেখেন, মানুষের চোখের চাহনি পাল্টে যায়। রূপপুরকে এক কথায় চেনে। এখানকার কাজের ধরন নিয়ে উচ্ছ্বসিত তিনি। বলেন, ‘গুণগতমান এমনভাবে রক্ষা করা হয় যে, কাজটা খারাপ হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। প্রতিটি কাজের ডকুমেন্টেশন হয়। ইনস্পেকশন হয়। পুরো বাংলাদেশে যদি এই প্রক্রিয়ায় ইনস্পেকশন হতো, তাহলে বাংলাদেশের উন্নয়নকাজগুলো হতো টেকসই। তাহলে দু-তিন বছরের মধ্যেই তৈরি রাস্তাঘাট বা কলকারখানা ভেঙে পড়ত না।’
টিসিইএল-এর নির্বাহী পরিচালক রেজাউল হক বলেন, ‘রূপপুরে পাঁচ বছরে আর্থসামাজিক অবস্থার অনেক পরিবর্তন হয়েছে। এখন হার্ডিঞ্জ ব্রিজ বা লালন সেতুর দিকে গেলে দেখা যাবে, অসংখ্য মানুষ জায়গাটিকে অবসর বিনোদনের জায়গা হিসেবে বেছে নিয়েছেন। এখানে ব্যবসা গড়ে উঠেছে। ২২টা বড় ভবন তৈরি হয়েছে। একটা ২৫ তলা ভবনও হচ্ছে। রাশিয়া থেকে পড়াশোনা করে আসা প্রকৌশলীরা চাকরি করছেন এখানে। অনুবাদক হিসেবেও কাজ করছেন অনেকে। প্রথম যখন এখানে আসি, কোনো ফলের দোকান ছিল না। এখন শয়ে শয়ে ফলের দোকান। মানুষ অর্থনৈতিক প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে।’
ঝলমলে হয়ে ওঠা গ্রিনসিটিতে নতুন রূপকথা লেখা হচ্ছে। এ যেন স্মার্টফোনের যুগে মানুষে-মানুষে সম্প্রীতির এক রোমাঞ্চকর লোককাহিনি।
নানা রঙের মানুষের দেখা পেয়েছি রূপপুরে। যে গ্রিনসিটির বড় বড় ভবন নিয়ে ছিল আমাদের কৌতূহল, সেখানেও একদিন দিব্যি ঢুকে পড়া গেল। আগে থেকেই একটি ফ্ল্যাটের কয়েকজন এবং পাশের ফ্ল্যাটের এক তরুণী সেখানে অপেক্ষা করছিলেন আমাদের জন্য। লিফটে চড়ে সেই ফ্ল্যাটে ঢোকার পর আমাদের বরণ করে নেওয়া হলো চকলেট দিয়ে। ‘মস্কো’ লেখা লাল চকলেটের বাক্সটা বুঝিয়ে দিল আমরা এখন রুশ আতিথেয়তার স্বাদ পাচ্ছি। এরপর বলা হলো, চায়ের পানি ফুটছে। চায়ের নাম ‘ইভান’। জারের আমলে এই চা খুব জনপ্রিয় ছিল। বিপ্লবের পর এর উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। এখন আবার পাওয়া যাচ্ছে। চা খেতে হবে মধু দিয়ে। এই মধুও এসেছে রাশিয়া থেকে। রুটিতে ক্যাভিয়ের। এ যেন রাশিয়ার কোনো শহরে বসে আছি আমরা।
আলেক্সান্দর, ভাসিলি, আলেক্সেই, মাক্সিম আর ভিক্তোরিয়া। এঁরা সবাই এসেছেন রোস্তভ নামের শহর থেকে। রাশিয়ার দক্ষিণের শহর রোস্তভ। বলা হয় ‘রোস্তভ না দানু’ অর্থাৎ ‘ডন নদীর তীরে রোস্তভ’। আমাদের মনে পড়ে যায়, মিখাইল শোলোখভের ‘তিখি দোন’ বা ‘প্রশান্ত ডন’ উপন্যাসের কথা। এই রোস্তভ নিয়েই তিনি লিখেছিলেন তাঁর অমর উপন্যাসটি।
সবচেয়ে বেশি কথা বলছিলেন ভাসিলি। তবে মাক্সিমও খুলে দিয়েছিলেন কথার ঝাঁপি। আলেক্সেই আর ভিক্তোরিয়া কথা বলেছেন কম, তবে যা বলেছেন, তা-ও খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। প্রায় ঘণ্টা দেড়েকের আড্ডায় কত বিষয়েই-না কথা হলো!
মাক্সিম বলছিলেন বাংলাদেশের আবহাওয়া নিয়ে। সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি যখন এ দেশে এসেছিলেন, তখন রীতিমতো ঘামছিলেন। আর্দ্রতা বেশি। কথা টেনে নিয়ে ভাসিলি বলেন, ‘ঘেমেছি বললে ভুল হবে। গরমে ঘেমে-নেয়ে উঠেছি।’
মাক্সিম আবার বলেন, ‘প্রথম যখন এসেছি, তখন এই এলাকার বাঙালিরা আমাদের দিকে তাকাত অবাক চোখে। বুঝিনি প্রথমে। পরে বুঝেছি, আমরা শ্বেতাঙ্গ বলে। পরে সব ঠিক হয়ে যায়। বাসে যখন প্রথম ঢাকা থেকে এসেছি, তখন দেখেছি পথেঘাটে অনেক মানুষ। অবাক হয়েছি, কী করে এত মানুষ এখানে বাস করে। পায়ে পা লেগে তো হোঁচট খাওয়ার কথা। কিন্তু সে রকম কিছু তো হচ্ছে না। এরপর আপনাদের দেশটা ভালোবাসা শুরু করলাম। একেবারে অন্য রকম সহজ রকম বিশ্বাসী মানুষজন এখানে বাস করে।’
ভাসিলি আর মাক্সিমের মধ্যে কথা বলার প্রতিযোগিতা শুরু হয়। একজন বলেন, ‘রুশ ভাষায় প্রবাদ আছে: খারাপ জাতি বলে কিছু নেই, আছে খারাপ মানুষ। সব জাতিতেই ভালো-মন্দ মানুষ আছে।’ তারপর মজা করে বলেন, ‘আপনাদের দেশের মানুষ খুব সংস্কৃতিমান। হয়তো রুশরা এসে সেখানে কিছুটা অসংস্কৃত করে তুলেছে তাঁদের।’ বলে হাসতে থাকেন তিনি। তারপর বলেন, ‘মজা করার জন্যই বলা।’
ভাসিলি বলেন, ‘আমরা বাজে গালাগাল করতে অভ্যস্ত। এখানে তো সে রকম দেখি না।’
এবার প্রতিবাদ করতে হয়। ‘কী যে বলেন। আমাদের এখানেও রাশিয়ার মতো বাজে গালাগাল আছে। মানুষ করেও। সব দেশেই আছে।’
মাক্সিম বলেন, ‘তার মানে, আমরা হয়তো গালিটা বুঝি না।’
‘সরল মানুষজন হয়তো গালাগাল করে না। গরম কেটে যাচ্ছে। এখন তো ভোরে কম্বল গায়ে দিতে হয়।’
এবার আলেক্সান্দর বুঝিয়ে বলেন, কেন তাঁরা এখানে এসেছেন। ‘এখন দেশে কম কাজ। টাকা আয় করা কঠিন। তাই দেশের বাইরে কাজের জন্য যাচ্ছে মানুষ। আমরাও সে রকম কারণেই এসেছি এখানে। রাশিয়ায় এখন সাধারণ জনগণের সঙ্গে বড়লোকদের পার্থক্যটা অনেক বেশি।’
ভিক্তোরিয়া এই দেশে এসে প্রথমে ধাক্কা খেয়েছেন। পরে কোয়ারেন্টিনের সময় ভেবেছেন, ‘এ কোথায় এলাম! ফিরে যাব রাশিয়ায়।’ পরে অবশ্য অভ্যাস হয়ে গেল।
এবার একটা বড় ধরনের রসিকতা করেন তাঁরা। ‘তবে আপনাদের ট্রাফিক সিস্টেম নিয়ে কিছু বলব না।’ গম্ভীর হয়ে বলেন মাক্সিম।
‘বলার কী আছে, কোনো সিস্টেমই তো নেই!’ বলেন ভাসিলি।
হাইওয়েতে নিয়ম না-মানা বাসের দিকে ইঙ্গিত করে মাক্সিম বলেন, ‘দ্বিতীয়বার যখন আসি, তখন ঢাকা থেকে বাসে বসেছি। আমার পাশে একজন রাশান, যে নতুন এসেছে। আমি তো নরম বালিশে মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়েছি। ঘুম থেকে উঠে দেখি, ছেলেটা শক্ত কাঠের মতো সামনের হাতল ধরে বসে আছে! ও তো জানে না, বাস চলবে নিজের মতো, কোনো আইন না-মেনে। হাহাহা!’
আলেক্সেই একবারই বলেন, ‘আপনাদের দেশের খাবারগুলো ভালো। কিন্তু ঝাল ভীষণ।’
আড্ডাটা জমে ওঠে। আলোচনায় আসেন পুশকিন, আল্লা পুগাচিওভা। আসে নানা ধরনের সিনেমার নাম। ফাঁকে ফাঁকে চা খাওয়া হয়। ইভান নামের চা খুবই সুস্বাদু। মধু দিয়ে চা খাওয়ার সেই ঐতিহ্য আমাদের রাশিয়ার স্মৃতি মনে করিয়ে দেয়।
আমরা চলে আসি বিদ্যুৎকেন্দ্রে কর্মরত বাঙালিদের কাছে। তাঁরা তাঁদের মতো করে বিদ্যুৎকেন্দ্রের ব্যাপারে কথা বলেন। তারেকুল ইসলাম ভুঁইয়া আছেন টিসিইএল কোম্পানিতে মেকানিক্যাল কো-অর্ডিনেটর হিসেবে। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে থেকেই স্পেন, রাশিয়া, ফ্রান্সের কোম্পানিগুলোর বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কাজ করতে ভালো লাগে। এই পাওয়ার প্ল্যান্টের কারণেই যুক্তরাজ্য বা কানাডায় স্থায়ী হওয়ার চেষ্টা করেছিলেন যাঁরা, তাঁরা ফিরে এসে এখানে কাজ করেছেন, এটাও ভালো লাগে। একসময় বিদেশকে মনে করা হতো স্বর্গ। পাওয়ার প্ল্যান্ট প্রমাণ করে, আমাদের প্রযুক্তি এগিয়ে যাচ্ছে, আমাদের দেশ এগিয়ে যাচ্ছে।’
আমিনুল ইসলামের এটাই প্রথম চাকরি। তিনি যখন বলেন, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে কাজ করেন, তখন দেখেন, মানুষের চোখের চাহনি পাল্টে যায়। রূপপুরকে এক কথায় চেনে। এখানকার কাজের ধরন নিয়ে উচ্ছ্বসিত তিনি। বলেন, ‘গুণগতমান এমনভাবে রক্ষা করা হয় যে, কাজটা খারাপ হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। প্রতিটি কাজের ডকুমেন্টেশন হয়। ইনস্পেকশন হয়। পুরো বাংলাদেশে যদি এই প্রক্রিয়ায় ইনস্পেকশন হতো, তাহলে বাংলাদেশের উন্নয়নকাজগুলো হতো টেকসই। তাহলে দু-তিন বছরের মধ্যেই তৈরি রাস্তাঘাট বা কলকারখানা ভেঙে পড়ত না।’
টিসিইএল-এর নির্বাহী পরিচালক রেজাউল হক বলেন, ‘রূপপুরে পাঁচ বছরে আর্থসামাজিক অবস্থার অনেক পরিবর্তন হয়েছে। এখন হার্ডিঞ্জ ব্রিজ বা লালন সেতুর দিকে গেলে দেখা যাবে, অসংখ্য মানুষ জায়গাটিকে অবসর বিনোদনের জায়গা হিসেবে বেছে নিয়েছেন। এখানে ব্যবসা গড়ে উঠেছে। ২২টা বড় ভবন তৈরি হয়েছে। একটা ২৫ তলা ভবনও হচ্ছে। রাশিয়া থেকে পড়াশোনা করে আসা প্রকৌশলীরা চাকরি করছেন এখানে। অনুবাদক হিসেবেও কাজ করছেন অনেকে। প্রথম যখন এখানে আসি, কোনো ফলের দোকান ছিল না। এখন শয়ে শয়ে ফলের দোকান। মানুষ অর্থনৈতিক প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে।’
ঝলমলে হয়ে ওঠা গ্রিনসিটিতে নতুন রূপকথা লেখা হচ্ছে। এ যেন স্মার্টফোনের যুগে মানুষে-মানুষে সম্প্রীতির এক রোমাঞ্চকর লোককাহিনি।
জমির মালিক হযরত শাহ্ আলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। তবে ওই জমিতে ৩৯১টি দোকান নির্মাণ করে কয়েক বছর ধরে ভাড়া নিচ্ছে হযরত শাহ্ আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজ। দোকানগুলোর ভাড়া থেকে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ৭০ লাখ টাকা ভ্যাটও দেওয়া হয়নি। বিষয়টি উঠে এসেছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) তদন্তে।
২ দিন আগেকুড়িগ্রাম পৌর শহরে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী ছোট ভাই নিহত ও বড় ভাই আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে মৎস্য খামারের কাছে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
৫ দিন আগেবৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগের মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১৮ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত শনিবার রাতে ও গতকাল রোববার তাঁরা গ্রেপ্তার হন।
৫ দিন আগেএক অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটেছে শিল্পকলা একাডেমিতে। শিল্পকলা একাডেমির তিনটি হলেই কিছুদিন আগেও নাটক চলত। নাট্যকর্মীদের সৃজনশীলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটত সেখানে। বহু পরিশ্রমে মাসের পর মাস নিজের খেয়ে, নিজের গাড়িভাড়া দিয়ে নাট্যকর্মীরা একেবারেই স্বেচ্ছাশ্রমে একটি শিল্প তিপ্পান্ন বছর ধরে গড়ে তুলেছেন। শিল্পকলা একাডেমি এখন
৯ দিন আগে