শরিফুল হাসান
বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী এলাকায় মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর লড়াইয়ের তীব্রতা বেড়েছে। কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফ এবং বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে থেমে থেমে মর্টার শেল ও গুলির শব্দে স্থানীয়রা উদ্বিগ্ন।
নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার তমব্রু ও ঘুমধুমের কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দারা আতঙ্কে এলাকা ছেড়েছেন। সীমান্তের ওপার থেকে ছোড়া গুলিতে নাইক্ষ্যংছড়ির দুজন নিহত ও কয়েকজন আহত হয়েছেন। মর্টার শেল পড়ে এক বাংলাদেশির ঘরে আগুন ধরে গেছে।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সাতটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। একটি সড়কে যানবাহন চলাচলও সীমিত করা হয়েছে। অন্যদিকে বিদ্রোহীদের সঙ্গে তীব্র লড়াইয়ের মধ্যে গত দুদিনে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিজিপি) প্রায় এক শ সদস্য পালিয়ে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিয়েছেন। তাঁদের নিরস্ত্র করে হেফাজতে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে বিজিবি। এর মধ্যে আহতদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের সীমান্তের দৈর্ঘ্য প্রায় ২৮৩ কিলোমিটার। এর বড় অংশ পড়েছে বান্দরবান ও কক্সবাজারে; বিশেষ করে বঙ্গোপসাগরের তীর ঘেঁষে নির্মিত মেরিন ড্রাইভ দিয়ে কক্সবাজার থেকে উখিয়া হয়ে টেকনাফ পর্যন্ত যেতে মেরিন ড্রাইভের যে ৮০ কিলোমিটার সড়ক, এর খুব কাছেই মিয়ানমার। সে কারণেই কয়েক মাস ধরে মিয়ানমারজুড়ে গৃহযুদ্ধ আর সংঘাতের যে উত্তেজনা, তার ছোঁয়া পড়েছে বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোয়। এখানে সড়কের পাশের চা-দোকানগুলোয় গেলে মিয়ানমারের যুদ্ধের আলাপ কানে আসবে।
মিয়ানমারের ভবিষ্যতে কী হবে, কারা ক্ষমতা নেবে, সামরিক জান্তার কী হবে, ফের রোহিঙ্গারা আসবে কি না, সঙ্গে আরাকান কিংবা অন্য কেউ আসবে কি না—এমন নানা বিষয় নিয়ে সীমান্ত এলাকায় বসবাসরত মানুষজন যেমন ভাবছেন, তেমনি পরিস্থিতির ওপর রাখছেন এখানকার বিদেশিরাও, যাঁরা নানাভাবে মিয়ানমার থেকে ফেরত আসা রোহিঙ্গাদের কাজে যুক্ত। অবশ্য কেবল বান্দরবান, কক্সবাজার, রোহিঙ্গা ক্যাম্প কিংবা বাংলাদেশ নয়, দক্ষিণ এশিয়ার ভূ-রাজনীতির খবর যাঁরা রাখেন, তাঁদের চোখও এখন মিয়ানমারের দিকে।
১৯৪৮ সালে স্বাধীনতা লাভ করে মিয়ানমার। এরপর কয়েকটি নির্বাচন হলেও ১৯৬২ সাল থেকে নানাভাবে দেশটির ক্ষমতার নিয়ন্ত্রণে ছিল সেখানকার সামরিক জান্তারা। সর্বশেষ ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি সামরিক অভ্যুত্থানের পর দেশজুড়ে জান্তাবিরোধী বিক্ষোভ শুরু হয়।
সামরিক জান্তা কঠোর হাতে সেই বিদ্রোহ দমন করছে এবং হাজার হাজার তরুণ এতে প্রাণ হারান। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার বদলে সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে সশস্ত্র সংগ্রাম ছড়িয়ে পড়ে নানা প্রান্তে। এর মধ্যেই দেশটিতে জাতীয় ঐক্যের সরকার (এনইউজি) গঠিত হয়েছে, যাতে বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর সদস্যদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এনইউজি ঘোষণা করেছে, সামরিক জান্তাকে পরাজিত করে দেশে একটি ‘ফেডারেল ডেমোক্রেটিক ইউনিয়ন’ গঠন করা হবে এবং সেই লক্ষ্যে যুদ্ধ পরিচালনার জন্য ‘পিপলস ডিফেন্স ফোর্সেস’ সংগঠিত হয়েছে।
মিয়ানমারের সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এক জোট হয়েছে সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মি (এএ), মিয়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স আর্মি (এমএনডিএএ) ও তাং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি (টিএনএলএ)। জোটটি পরিচিতি পেয়েছে ‘থ্রি ব্রাদার্স অ্যালায়েন্স’ নামে। তারা একসঙ্গে মিলে সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে ‘অপারেশন ১০২৭’ নামের একটি অভিযান শুরু করেছে গত ২৭ অক্টোবর থেকে।
বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর সমন্বয়ে গঠিত সশস্ত্র এই গোষ্ঠীর সঙ্গে লড়াইয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে জান্তা সরকারের সেনাবাহিনী (তাতমাদো) একের পর এক পরাজয়ের মুখে পড়ছে।
রাজধানী নেপিডো এবং প্রধান শহর ইয়াঙ্গুন শান্ত থাকলেও মিয়ানমারের বিভিন্ন এলাকায় সংঘাত ছড়িয়ে পড়েছে। এই সময়ের মধ্যে বিদ্রোহীদের কাছে অন্তত ৩৫টি শহরের নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে জান্তা বাহিনী। প্রায় প্রতিদিনই বিদ্রোহীরা বিভিন্ন অঞ্চলে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করছে। থাইল্যান্ডে নির্বাসিত মিয়ানমারের নাগরিকদের পরিচালিত সংবাদমাধ্যম ইরাবতী জানিয়েছে, মিয়ানমারের সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী দ্য ইউনাইটেড ওয়া স্টেট পার্টি (ইউডব্লিউএসপি) শান রাজ্যের হোপাং শহরে চলতি মাসের শুরুর দিকে নিজস্ব প্রশাসনিক ব্যবস্থা চালু করেছে। এই রাজ্যে সশস্ত্র গোষ্ঠীটি জান্তা বাহিনীর কাছ থেকে দুটি শহর দখল করে নিয়েছে। ইরাবতীর সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের সীমান্তসংলগ্ন মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে দেশটির সেনাবাহিনীর আরেকটি ব্যাটালিয়নের ঘাঁটি দখলে নিয়েছেন আরাকান আর্মির যোদ্ধারা।
জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের দপ্তর (ওএইচসিএইচআর) গত সপ্তাহে তাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, রাখাইন রাজ্যে জান্তা বাহিনীর সঙ্গে বিদ্রোহী আরাকান আর্মির লড়াইয়ে অন্তত ১২ জন রোহিঙ্গা নিহত হয়েছে।
বিদ্রোহী ও জান্তা বাহিনীর সংঘর্ষের জেরে গত অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ছয় শ মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। ঘর ছেড়েছে অসংখ্য মানুষ। চলতি গৃহযুদ্ধের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো ইতিহাসে এই প্রথমবারের মতো বামার-জনতার একাংশও সামরিক জান্তা বা তাতমাদোর বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরেছে। ফলে সামরিক জান্তাপ্রধান মিন অং হ্লাইং প্রচণ্ড চাপে আছেন।
বাংলাদেশের নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদের সঙ্গে ঢাকায় চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েনের বৈঠকেও রোহিঙ্গাদের বিষয়টি উঠে এসেছে। গত ২৮ জানুয়ারির ওই বৈঠকের পর চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন সাংবাদিকদের বলেন, ‘রাখাইনের নিরাপত্তা পরিস্থিতি ও প্রত্যাবাসন নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি। আমরা এটাও জানি, প্রত্যাবাসন এখন কিছুটা সমস্যার মুখে পড়েছে। রাখাইনে সেনাবাহিনী ও আরাকান আর্মির সংঘাত বন্ধ করে অস্ত্রবিরতির জন্য আমরা মধ্যস্থতা করছি। রাখাইনে অস্ত্রবিরতি প্রতিষ্ঠা হলে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে আবার আলোচনার পথ সুগম হবে।’
এর আগে ২৭ জানুয়ারি নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের একটি পার্লামেন্টের প্রতিনিধিদল সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে এলে সেখানেও রোহিঙ্গাদের বিষয়টি উঠে আসে। মিয়ানমারের বর্তমান পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গারা আবার বাংলাদেশে প্রবেশের চেষ্টা করলে তাদের আশ্রয় দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে হাছান মাহমুদ সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘মানবতার কারণে রোহিঙ্গাদের তখন স্থান দিয়েছিলাম। যে রোহিঙ্গারা আমাদের দেশে এসেছে, তাদের কারণে আমাদের নানা সমস্যা তৈরি হয়েছে।
এটি নিয়ে আমরা ব্রিটিশ পার্লামেন্ট দলের সঙ্গে কথা বলেছি। আমাদের এখানে নিরাপত্তা ও পরিবেশগত সমস্যা তৈরি হয়েছে। শিবিরগুলো উগ্রবাদ এবং সন্ত্রাসী গোষ্ঠী বিস্তারের উর্বর ক্ষেত্র হয়ে উঠেছে। আমাদের দেশ জনবহুল, রোহিঙ্গাদের জন্য আমরা ভারাক্রান্ত। প্রতিবছর ৩০ হাজার করে নতুন রোহিঙ্গা সন্তান জন্মগ্রহণ করে। মিয়ানমারের পরিস্থিতি উত্তরণের মাধ্যমে এই সমস্যা সমাধান সম্ভব।’
ভূরাজনীতির বিষয়াদি ছাড়াও মিয়ানমার ও রাখাইনে কী ঘটে, তাতে বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় রোহিঙ্গাদের এই প্রত্যাবাসন। ২০২১ সালের ৩ জুন মিয়ানমারের জাতীয় ঐক্যের সরকার (এনইউজি) ‘পলিসি পজিশন অন দ্য রোহিঙ্গা ইন রাখাইন স্টেট’ নামে একটি অবস্থানপত্র প্রকাশ করেছে, যেখানে প্রথমবারের মতো রোহিঙ্গাদের ‘রোহিঙ্গা’ নামে সম্বোধন করেছে।
মিয়ানমারের চলমান সংকট নিয়ে ৩১ জানুয়ারি বাংলাদেশের নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির সাউথ এশিয়ান ইনস্টিটিউট অব পলিসি অ্যান্ড গভর্ন্যান্সের (এসআইপিজি) সেন্টার ফর পিস স্টাডিজ (সিপিএস) ‘মিয়ানমারের বর্তমান সংকট এবং প্রতিবেশী অঞ্চলে এর প্রভাব’ শীর্ষক একটি সেমিনারের আয়োজন করে। ওই সেমিনারে অনলাইনে যোগ দিয়ে মিয়ানমারের জাতীয় ঐক্য সরকার প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র ও উপদেষ্টা কিয়াও জাও বলেন, রোহিঙ্গাদের পূর্ণ নাগরিকত্ব এবং অন্যান্য অধিকারসহ প্রকৃত প্রত্যাবাসন চায় মিয়ানমারের জাতীয় ঐক্য সরকার (এনইউজি)। তিনি বলেন, ‘জাতীয় ঐক্য সরকার সামরিক জান্তার পতন ঘটাবে। আমরা একটি ফেডারেল গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠন করব।’
রোহিঙ্গাদের বিষয়ে মিয়ানমারের জাতীয় সরকারের বক্তব্য অবশ্যই আশাব্যঞ্জক। কিন্তু মিয়ানমারের মতোই অনিশ্চিত রোহিঙ্গাদের ভবিষ্যৎ।
এর আগে ২০১৭ সালের আগস্ট-সেপ্টেম্বরে মিয়ানমার সেনাদের দ্বারা সংঘটিত গণহত্যার মুখে আট লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। তাদের প্রত্যাবাসনের জন্য ওই বছরেরই নভেম্বরে তড়িঘড়ি করে মিয়ানমারের সঙ্গে একটি দ্বিপক্ষীয় চুক্তি করে বাংলাদেশ। এরপর ৮ লাখ ২৯ হাজার ৩৬ রোহিঙ্গার তালিকা মিয়ানমারকে হস্তান্তর করে বাংলাদেশ। ‘যাচাই-বাছাই’-এর পর তা থেকে ৬২ হাজার ২৮৫ ব্যক্তির তথ্য নিশ্চিত করে মিয়ানমার। কিন্তু সাত বছরে একজন রোহিঙ্গাও প্রত্যাবাসিত হয়নি।
বর্তমানে উখিয়া ও টেকনাফের ৩৩টি আশ্রয়শিবিরে নিবন্ধিত রোহিঙ্গার সংখ্যা সাড়ে ১২ লাখ। এর মধ্যে আশ্রয়শিবিরে ৬ থেকে ১৪ বছর বয়সী শিশুর সংখ্যাই ৫ লাখ। প্রতিবছর ক্যাম্পে নতুন করে ৩০ হাজার শিশু যুক্ত হচ্ছে। বিয়েও হচ্ছে ব্যাপক হারে। এভাবে নতুন-পুরোনো মিলে প্রতিদিন রোহিঙ্গার সংখ্যা বাড়ছেই। ফলে সব রোহিঙ্গাকে ফিরতে কত সময় লাগবে—জানা নেই কারও। তারপরও কাল থেকেই যদি রোহিঙ্গারা মিয়ানমারে ফিরতে শুরু করে, তাহলে ১২ লাখ রোহিঙ্গার ফিরতে কত দিন লাগবে?
চলুন, অঙ্কটা মেলানোর চেষ্টা করি। ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে মিয়ানমার ও বাংলাদেশের মধ্যকার চুক্তি অনুযায়ী, প্রতিদিন ৩০০ রোহিঙ্গাকে ফেরত নেওয়ার কথা। সে অনুযায়ী, কাল থেকে যদি অব্যাহতভাবে বছরের ৩৬৫ দিন ৩০০ করে রোহিঙ্গা ফেরে, তাহলে বছরে ফিরবে ১ লাখ। এই হিসাবে ১২ লাখ লোকের ফিরতে লাগবে অন্তত ১২ বছর। সাপ্তাহিক ছুটির কারণে সপ্তাহের দুদিন যদি প্রত্যাবাসন বন্ধ থাকে, তাহলে সময় লাগবে ১৫ বছর। আর যদি দিনে ৩০০-র বদলে ২০০ জন করে ফেরে, তাহলে সময় লাগবে প্রায় ২৪ বছর। কিন্তু এই সময়ে নতুন করে কত শিশুর জন্ম হবে?
এই জটিলতায় যদি যোগ হয় এমন বাস্তবতা যে সাত বছরে একজনও ফেরেনি, কবে ফিরবে কেউ জানে না, এমনকি আদৌ ফিরবে কি না, তা-ও জানা নেই, তাহলে সামনে আসে কেবলই এক অনিশ্চয়তা। আর সেই অনিশ্চয়তায় সামনে দাঁড়িয়ে ১২ লাখ রোহিঙ্গা এবং বাংলাদেশও। বর্তমান যুদ্ধ পরিস্থিতি উত্তেজনা বাড়ালেও অনিশ্চয়তা কমায়নি এতটুকুও; বরং নতুন করে আরও অনুপ্রবেশের আশঙ্কা আছে। শুধু রোহিঙ্গারা নয়, আরাকানের রাখাইনরাও আসতে পারে। যেহেতু প্রতিবেশী বদলানোর সুযোগ থাকে না। কাজেই সামনের দিনগুলোতে মিয়ানমারের পরিস্থিতি বুঝে সিদ্ধান্ত নিতে হবে বাংলাদেশকে।
লেখক: কলামিস্ট
বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী এলাকায় মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর লড়াইয়ের তীব্রতা বেড়েছে। কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফ এবং বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে থেমে থেমে মর্টার শেল ও গুলির শব্দে স্থানীয়রা উদ্বিগ্ন।
নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার তমব্রু ও ঘুমধুমের কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দারা আতঙ্কে এলাকা ছেড়েছেন। সীমান্তের ওপার থেকে ছোড়া গুলিতে নাইক্ষ্যংছড়ির দুজন নিহত ও কয়েকজন আহত হয়েছেন। মর্টার শেল পড়ে এক বাংলাদেশির ঘরে আগুন ধরে গেছে।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সাতটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। একটি সড়কে যানবাহন চলাচলও সীমিত করা হয়েছে। অন্যদিকে বিদ্রোহীদের সঙ্গে তীব্র লড়াইয়ের মধ্যে গত দুদিনে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিজিপি) প্রায় এক শ সদস্য পালিয়ে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিয়েছেন। তাঁদের নিরস্ত্র করে হেফাজতে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে বিজিবি। এর মধ্যে আহতদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের সীমান্তের দৈর্ঘ্য প্রায় ২৮৩ কিলোমিটার। এর বড় অংশ পড়েছে বান্দরবান ও কক্সবাজারে; বিশেষ করে বঙ্গোপসাগরের তীর ঘেঁষে নির্মিত মেরিন ড্রাইভ দিয়ে কক্সবাজার থেকে উখিয়া হয়ে টেকনাফ পর্যন্ত যেতে মেরিন ড্রাইভের যে ৮০ কিলোমিটার সড়ক, এর খুব কাছেই মিয়ানমার। সে কারণেই কয়েক মাস ধরে মিয়ানমারজুড়ে গৃহযুদ্ধ আর সংঘাতের যে উত্তেজনা, তার ছোঁয়া পড়েছে বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোয়। এখানে সড়কের পাশের চা-দোকানগুলোয় গেলে মিয়ানমারের যুদ্ধের আলাপ কানে আসবে।
মিয়ানমারের ভবিষ্যতে কী হবে, কারা ক্ষমতা নেবে, সামরিক জান্তার কী হবে, ফের রোহিঙ্গারা আসবে কি না, সঙ্গে আরাকান কিংবা অন্য কেউ আসবে কি না—এমন নানা বিষয় নিয়ে সীমান্ত এলাকায় বসবাসরত মানুষজন যেমন ভাবছেন, তেমনি পরিস্থিতির ওপর রাখছেন এখানকার বিদেশিরাও, যাঁরা নানাভাবে মিয়ানমার থেকে ফেরত আসা রোহিঙ্গাদের কাজে যুক্ত। অবশ্য কেবল বান্দরবান, কক্সবাজার, রোহিঙ্গা ক্যাম্প কিংবা বাংলাদেশ নয়, দক্ষিণ এশিয়ার ভূ-রাজনীতির খবর যাঁরা রাখেন, তাঁদের চোখও এখন মিয়ানমারের দিকে।
১৯৪৮ সালে স্বাধীনতা লাভ করে মিয়ানমার। এরপর কয়েকটি নির্বাচন হলেও ১৯৬২ সাল থেকে নানাভাবে দেশটির ক্ষমতার নিয়ন্ত্রণে ছিল সেখানকার সামরিক জান্তারা। সর্বশেষ ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি সামরিক অভ্যুত্থানের পর দেশজুড়ে জান্তাবিরোধী বিক্ষোভ শুরু হয়।
সামরিক জান্তা কঠোর হাতে সেই বিদ্রোহ দমন করছে এবং হাজার হাজার তরুণ এতে প্রাণ হারান। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার বদলে সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে সশস্ত্র সংগ্রাম ছড়িয়ে পড়ে নানা প্রান্তে। এর মধ্যেই দেশটিতে জাতীয় ঐক্যের সরকার (এনইউজি) গঠিত হয়েছে, যাতে বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর সদস্যদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এনইউজি ঘোষণা করেছে, সামরিক জান্তাকে পরাজিত করে দেশে একটি ‘ফেডারেল ডেমোক্রেটিক ইউনিয়ন’ গঠন করা হবে এবং সেই লক্ষ্যে যুদ্ধ পরিচালনার জন্য ‘পিপলস ডিফেন্স ফোর্সেস’ সংগঠিত হয়েছে।
মিয়ানমারের সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এক জোট হয়েছে সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মি (এএ), মিয়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স আর্মি (এমএনডিএএ) ও তাং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি (টিএনএলএ)। জোটটি পরিচিতি পেয়েছে ‘থ্রি ব্রাদার্স অ্যালায়েন্স’ নামে। তারা একসঙ্গে মিলে সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে ‘অপারেশন ১০২৭’ নামের একটি অভিযান শুরু করেছে গত ২৭ অক্টোবর থেকে।
বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর সমন্বয়ে গঠিত সশস্ত্র এই গোষ্ঠীর সঙ্গে লড়াইয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে জান্তা সরকারের সেনাবাহিনী (তাতমাদো) একের পর এক পরাজয়ের মুখে পড়ছে।
রাজধানী নেপিডো এবং প্রধান শহর ইয়াঙ্গুন শান্ত থাকলেও মিয়ানমারের বিভিন্ন এলাকায় সংঘাত ছড়িয়ে পড়েছে। এই সময়ের মধ্যে বিদ্রোহীদের কাছে অন্তত ৩৫টি শহরের নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে জান্তা বাহিনী। প্রায় প্রতিদিনই বিদ্রোহীরা বিভিন্ন অঞ্চলে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করছে। থাইল্যান্ডে নির্বাসিত মিয়ানমারের নাগরিকদের পরিচালিত সংবাদমাধ্যম ইরাবতী জানিয়েছে, মিয়ানমারের সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী দ্য ইউনাইটেড ওয়া স্টেট পার্টি (ইউডব্লিউএসপি) শান রাজ্যের হোপাং শহরে চলতি মাসের শুরুর দিকে নিজস্ব প্রশাসনিক ব্যবস্থা চালু করেছে। এই রাজ্যে সশস্ত্র গোষ্ঠীটি জান্তা বাহিনীর কাছ থেকে দুটি শহর দখল করে নিয়েছে। ইরাবতীর সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের সীমান্তসংলগ্ন মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে দেশটির সেনাবাহিনীর আরেকটি ব্যাটালিয়নের ঘাঁটি দখলে নিয়েছেন আরাকান আর্মির যোদ্ধারা।
জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের দপ্তর (ওএইচসিএইচআর) গত সপ্তাহে তাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, রাখাইন রাজ্যে জান্তা বাহিনীর সঙ্গে বিদ্রোহী আরাকান আর্মির লড়াইয়ে অন্তত ১২ জন রোহিঙ্গা নিহত হয়েছে।
বিদ্রোহী ও জান্তা বাহিনীর সংঘর্ষের জেরে গত অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ছয় শ মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। ঘর ছেড়েছে অসংখ্য মানুষ। চলতি গৃহযুদ্ধের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো ইতিহাসে এই প্রথমবারের মতো বামার-জনতার একাংশও সামরিক জান্তা বা তাতমাদোর বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরেছে। ফলে সামরিক জান্তাপ্রধান মিন অং হ্লাইং প্রচণ্ড চাপে আছেন।
বাংলাদেশের নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদের সঙ্গে ঢাকায় চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েনের বৈঠকেও রোহিঙ্গাদের বিষয়টি উঠে এসেছে। গত ২৮ জানুয়ারির ওই বৈঠকের পর চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন সাংবাদিকদের বলেন, ‘রাখাইনের নিরাপত্তা পরিস্থিতি ও প্রত্যাবাসন নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি। আমরা এটাও জানি, প্রত্যাবাসন এখন কিছুটা সমস্যার মুখে পড়েছে। রাখাইনে সেনাবাহিনী ও আরাকান আর্মির সংঘাত বন্ধ করে অস্ত্রবিরতির জন্য আমরা মধ্যস্থতা করছি। রাখাইনে অস্ত্রবিরতি প্রতিষ্ঠা হলে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে আবার আলোচনার পথ সুগম হবে।’
এর আগে ২৭ জানুয়ারি নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের একটি পার্লামেন্টের প্রতিনিধিদল সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে এলে সেখানেও রোহিঙ্গাদের বিষয়টি উঠে আসে। মিয়ানমারের বর্তমান পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গারা আবার বাংলাদেশে প্রবেশের চেষ্টা করলে তাদের আশ্রয় দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে হাছান মাহমুদ সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘মানবতার কারণে রোহিঙ্গাদের তখন স্থান দিয়েছিলাম। যে রোহিঙ্গারা আমাদের দেশে এসেছে, তাদের কারণে আমাদের নানা সমস্যা তৈরি হয়েছে।
এটি নিয়ে আমরা ব্রিটিশ পার্লামেন্ট দলের সঙ্গে কথা বলেছি। আমাদের এখানে নিরাপত্তা ও পরিবেশগত সমস্যা তৈরি হয়েছে। শিবিরগুলো উগ্রবাদ এবং সন্ত্রাসী গোষ্ঠী বিস্তারের উর্বর ক্ষেত্র হয়ে উঠেছে। আমাদের দেশ জনবহুল, রোহিঙ্গাদের জন্য আমরা ভারাক্রান্ত। প্রতিবছর ৩০ হাজার করে নতুন রোহিঙ্গা সন্তান জন্মগ্রহণ করে। মিয়ানমারের পরিস্থিতি উত্তরণের মাধ্যমে এই সমস্যা সমাধান সম্ভব।’
ভূরাজনীতির বিষয়াদি ছাড়াও মিয়ানমার ও রাখাইনে কী ঘটে, তাতে বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় রোহিঙ্গাদের এই প্রত্যাবাসন। ২০২১ সালের ৩ জুন মিয়ানমারের জাতীয় ঐক্যের সরকার (এনইউজি) ‘পলিসি পজিশন অন দ্য রোহিঙ্গা ইন রাখাইন স্টেট’ নামে একটি অবস্থানপত্র প্রকাশ করেছে, যেখানে প্রথমবারের মতো রোহিঙ্গাদের ‘রোহিঙ্গা’ নামে সম্বোধন করেছে।
মিয়ানমারের চলমান সংকট নিয়ে ৩১ জানুয়ারি বাংলাদেশের নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির সাউথ এশিয়ান ইনস্টিটিউট অব পলিসি অ্যান্ড গভর্ন্যান্সের (এসআইপিজি) সেন্টার ফর পিস স্টাডিজ (সিপিএস) ‘মিয়ানমারের বর্তমান সংকট এবং প্রতিবেশী অঞ্চলে এর প্রভাব’ শীর্ষক একটি সেমিনারের আয়োজন করে। ওই সেমিনারে অনলাইনে যোগ দিয়ে মিয়ানমারের জাতীয় ঐক্য সরকার প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র ও উপদেষ্টা কিয়াও জাও বলেন, রোহিঙ্গাদের পূর্ণ নাগরিকত্ব এবং অন্যান্য অধিকারসহ প্রকৃত প্রত্যাবাসন চায় মিয়ানমারের জাতীয় ঐক্য সরকার (এনইউজি)। তিনি বলেন, ‘জাতীয় ঐক্য সরকার সামরিক জান্তার পতন ঘটাবে। আমরা একটি ফেডারেল গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠন করব।’
রোহিঙ্গাদের বিষয়ে মিয়ানমারের জাতীয় সরকারের বক্তব্য অবশ্যই আশাব্যঞ্জক। কিন্তু মিয়ানমারের মতোই অনিশ্চিত রোহিঙ্গাদের ভবিষ্যৎ।
এর আগে ২০১৭ সালের আগস্ট-সেপ্টেম্বরে মিয়ানমার সেনাদের দ্বারা সংঘটিত গণহত্যার মুখে আট লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। তাদের প্রত্যাবাসনের জন্য ওই বছরেরই নভেম্বরে তড়িঘড়ি করে মিয়ানমারের সঙ্গে একটি দ্বিপক্ষীয় চুক্তি করে বাংলাদেশ। এরপর ৮ লাখ ২৯ হাজার ৩৬ রোহিঙ্গার তালিকা মিয়ানমারকে হস্তান্তর করে বাংলাদেশ। ‘যাচাই-বাছাই’-এর পর তা থেকে ৬২ হাজার ২৮৫ ব্যক্তির তথ্য নিশ্চিত করে মিয়ানমার। কিন্তু সাত বছরে একজন রোহিঙ্গাও প্রত্যাবাসিত হয়নি।
বর্তমানে উখিয়া ও টেকনাফের ৩৩টি আশ্রয়শিবিরে নিবন্ধিত রোহিঙ্গার সংখ্যা সাড়ে ১২ লাখ। এর মধ্যে আশ্রয়শিবিরে ৬ থেকে ১৪ বছর বয়সী শিশুর সংখ্যাই ৫ লাখ। প্রতিবছর ক্যাম্পে নতুন করে ৩০ হাজার শিশু যুক্ত হচ্ছে। বিয়েও হচ্ছে ব্যাপক হারে। এভাবে নতুন-পুরোনো মিলে প্রতিদিন রোহিঙ্গার সংখ্যা বাড়ছেই। ফলে সব রোহিঙ্গাকে ফিরতে কত সময় লাগবে—জানা নেই কারও। তারপরও কাল থেকেই যদি রোহিঙ্গারা মিয়ানমারে ফিরতে শুরু করে, তাহলে ১২ লাখ রোহিঙ্গার ফিরতে কত দিন লাগবে?
চলুন, অঙ্কটা মেলানোর চেষ্টা করি। ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে মিয়ানমার ও বাংলাদেশের মধ্যকার চুক্তি অনুযায়ী, প্রতিদিন ৩০০ রোহিঙ্গাকে ফেরত নেওয়ার কথা। সে অনুযায়ী, কাল থেকে যদি অব্যাহতভাবে বছরের ৩৬৫ দিন ৩০০ করে রোহিঙ্গা ফেরে, তাহলে বছরে ফিরবে ১ লাখ। এই হিসাবে ১২ লাখ লোকের ফিরতে লাগবে অন্তত ১২ বছর। সাপ্তাহিক ছুটির কারণে সপ্তাহের দুদিন যদি প্রত্যাবাসন বন্ধ থাকে, তাহলে সময় লাগবে ১৫ বছর। আর যদি দিনে ৩০০-র বদলে ২০০ জন করে ফেরে, তাহলে সময় লাগবে প্রায় ২৪ বছর। কিন্তু এই সময়ে নতুন করে কত শিশুর জন্ম হবে?
এই জটিলতায় যদি যোগ হয় এমন বাস্তবতা যে সাত বছরে একজনও ফেরেনি, কবে ফিরবে কেউ জানে না, এমনকি আদৌ ফিরবে কি না, তা-ও জানা নেই, তাহলে সামনে আসে কেবলই এক অনিশ্চয়তা। আর সেই অনিশ্চয়তায় সামনে দাঁড়িয়ে ১২ লাখ রোহিঙ্গা এবং বাংলাদেশও। বর্তমান যুদ্ধ পরিস্থিতি উত্তেজনা বাড়ালেও অনিশ্চয়তা কমায়নি এতটুকুও; বরং নতুন করে আরও অনুপ্রবেশের আশঙ্কা আছে। শুধু রোহিঙ্গারা নয়, আরাকানের রাখাইনরাও আসতে পারে। যেহেতু প্রতিবেশী বদলানোর সুযোগ থাকে না। কাজেই সামনের দিনগুলোতে মিয়ানমারের পরিস্থিতি বুঝে সিদ্ধান্ত নিতে হবে বাংলাদেশকে।
লেখক: কলামিস্ট
জমির মালিক হযরত শাহ্ আলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। তবে ওই জমিতে ৩৯১টি দোকান নির্মাণ করে কয়েক বছর ধরে ভাড়া নিচ্ছে হযরত শাহ্ আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজ। দোকানগুলোর ভাড়া থেকে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ৭০ লাখ টাকা ভ্যাটও দেওয়া হয়নি। বিষয়টি উঠে এসেছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) তদন্তে।
১ দিন আগেকুড়িগ্রাম পৌর শহরে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী ছোট ভাই নিহত ও বড় ভাই আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে মৎস্য খামারের কাছে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
৫ দিন আগেবৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগের মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১৮ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত শনিবার রাতে ও গতকাল রোববার তাঁরা গ্রেপ্তার হন।
৫ দিন আগেএক অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটেছে শিল্পকলা একাডেমিতে। শিল্পকলা একাডেমির তিনটি হলেই কিছুদিন আগেও নাটক চলত। নাট্যকর্মীদের সৃজনশীলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটত সেখানে। বহু পরিশ্রমে মাসের পর মাস নিজের খেয়ে, নিজের গাড়িভাড়া দিয়ে নাট্যকর্মীরা একেবারেই স্বেচ্ছাশ্রমে একটি শিল্প তিপ্পান্ন বছর ধরে গড়ে তুলেছেন। শিল্পকলা একাডেমি এখন
৮ দিন আগে