অর্চি হক, ঢাকা
‘৫ থেকে ৭ টাকা দিয়ে কেনা যায় একেক শিট কাগজ। এ রকম ২০-২৫টা শিট দিয়ে বানানো হয় নকল ভলিউম বই। ছেলে বা মেয়ের বিয়ের বৈধ বয়স না হলে সেই খাতাতেই বিয়ে লিপিবদ্ধ করা হয়। নিবন্ধন ফি নেওয়া হয় উচ্চহারে। দুই পরিবারের কেউই জানতে পারে না, বিয়েটি আইনসম্মতভাবে রেজিস্ট্রি হয়নি।’
সাতক্ষীরা জেলার বাল্যবিয়ে পরিস্থিতি প্রসঙ্গে কথা বলার সময় এ চিত্র তুলে ধরলেন ‘বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ কমিটি’ সদস্য সাকিবুর রহমান বাবলা। তিনিসহ এলাকার সংশ্লিষ্টদের বক্তব্য অনুযায়ী, দক্ষিণ-পশ্চিম সীমান্তের জেলাটিতে বাল্যবিয়ের অন্যতম হাতিয়ার এই ‘নকল ভলিউম বই’।
দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশেই সবচেয়ে বেশি বাল্যবিয়ে হয়। ইউনিসেফের গত বছরের তথ্যে বলা হয়, এ দেশে ৫১ শতাংশ নারীর বিয়ে হয় প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার আগেই। এমন প্রেক্ষাপটে দেশজুড়ে আজ সোমবার পালিত হচ্ছে, জাতীয় কন্যাশিশু দিবস। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য— ‘কন্যাশিশুর স্বপ্নে গড়ি আগামীর বাংলাদেশ’।
দেশে বাল্যবিয়ে বেশি যেসব জেলায় তার অন্যতম সাতক্ষীরা। কয়েকজন স্থানীয় মানবাধিকারকর্মী জানান, সাতক্ষীরার বিভিন্ন এলাকায় কাজির সহকারীরা নকল ভলিউম বই রাখেন। সরকারনির্ধারিত ফির চেয়ে বেশি টাকা নিয়ে তাঁরা বাল্যবিয়ে লিপিবদ্ধ করেন। বর বা কনে বিয়ের আইনসম্মত বয়সে পৌঁছলে কাজির প্রকৃত নিকাহ রেজিস্ট্রি খাতায় বিয়ের তথ্য তোলা হয়। এ রকম নকল ভলিউম বইয়ের পাতার একটি কপি আজকের পত্রিকার হাতে এসেছে। সেখানে দেওয়া তথ্য ও কনের জন্মনিবন্ধনপত্র মিলিয়ে দেখা যায়, মেয়েটির বয়স ১৮ হওয়ার আগেই বিয়ে নিবন্ধিত হয়েছে। বাল্যবিয়ে দেওয়ার দায়ে সংশ্লিষ্ট কাজির নামে বর্তমানে একাধিক মামলা চলমান।
নকল ভলিউম বইয়ের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শোয়াইব আহমাদ বলেন, ‘আমরা এ রকম কিছু অভিযোগ পেয়েছি। কাজি এবং তাঁদের সহকারীদের সাথে আমি বসেছিও। আমি বলেছি, এমন অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাঁদের লাইসেন্স বাতিল করা হবে। আমরা অবশ্যই ব্যবস্থা নেব।’
দশম শ্রেণি প্রায় ছাত্রীশূন্য
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলার আলীপুর আজিজিয়া দাখিল মাদ্রাসায় এ বছর দশম শ্রেণিতে একজনও মেয়ে নেই। অথচ এই ব্যাচটিই ষষ্ঠ শ্রেণিতে ২৪ জন মেয়ে ছিল। এই এলাকার আরেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান মাহমুদপুর গার্লস কলেজিয়েট স্কুলের দশম শ্রেণিতে এখন মাত্র ১০ জন ছাত্রী রয়েছে। ব্যাচটি ষষ্ঠ শ্রেণিতে থাকতে ছাত্রীসংখ্যা ছিল ৪২ জন।
স্থানীয় বাল্যবিয়ে প্রতিরোধ কমিটির সদস্য শরীফুল ইসলাম বলেন, ‘স্কুলগুলোতে ছাত্রী ঝরে পড়ার এই হার দেখেই বোঝা যায়, এই এলাকায় বাল্যবিয়ে কতটা প্রকট। কারণ মেয়েরা স্কুল ছাড়ার পর তাদের বিয়ে দেওয়া হয়।’
মাত্র ১২ বছর বয়সে বিয়ে দেওয়া হয়েছিল সদর উপজেলার আলীপুরের সুনীতিকে (ছদ্মনাম)। বিয়ে ভেঙে যাওয়া সুনীতির বয়স এখন ২৫-এর কোঠায়। আজকের পত্রিকাকে সুনীতি বলেন, ‘তখন স্বামী কিছু হইলেই শুধু মারত। এখনো আমার সারা গায়ে মাইরের দাগ।’
লবণাক্ততার বলি কিশোরীরা
সাতক্ষীরায় বাল্যবিয়ে বেশি হওয়ার অন্যতম কারণ হিসেবে অনেকে এলাকার পানিতে লবণাক্ততার উঁচু মাত্রাকে দায়ী করেন। বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের নীলডুমুরিয়া গ্রামের কিশোরী সানজিদা আক্তার বলল, ‘এখানকার পানিতে লবণ অনেক বেশি। লবণপানি ব্যবহার করার জন্য চেহারা নষ্ট হয়ে যায়। গায়ের রঙ কালো হয়ে যায়। তাই বয়স ১২-১৩ হলেই পাত্র দেখা শুরু হয়ে যায়।’
সাতক্ষীরায় নারী ও শিশুদের মাঝে সচেতনতা তৈরিতে কাজ করে বেসরকারি সংস্থা ব্রেকিং দ্যা সাইলেন্স। সংস্থাটির ডিরেক্টর (প্রোগ্রাম অ্যান্ড প্ল্যানিং) জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘লবনাক্ততাসহ নানা অজুহাত দেখিয়ে এখানকার অভিভাবকেরা তাদের সন্তানদের কম বয়সে বিয়ে দেয়।
বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে সচেতনতা সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন’
বাল্যবিয়ে প্রতিরোধ কমিটির তথ্য অনুযায়ী, সাতক্ষীরা জেলায় মেয়েদের বাল্যবিয়ের হার ৭০ শতাংশের বেশি।
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফাওজিয়া মোসলেম বলেন, ‘বাল্যবিয়ে মানে হলো একটি মেয়ের স্বপ্নকে কুঁড়িতেই বিনষ্ট করা অভিভাবকদের দায়িত্ব সন্তানদের বিকশিত হতে সাহায্য করা।’
‘৫ থেকে ৭ টাকা দিয়ে কেনা যায় একেক শিট কাগজ। এ রকম ২০-২৫টা শিট দিয়ে বানানো হয় নকল ভলিউম বই। ছেলে বা মেয়ের বিয়ের বৈধ বয়স না হলে সেই খাতাতেই বিয়ে লিপিবদ্ধ করা হয়। নিবন্ধন ফি নেওয়া হয় উচ্চহারে। দুই পরিবারের কেউই জানতে পারে না, বিয়েটি আইনসম্মতভাবে রেজিস্ট্রি হয়নি।’
সাতক্ষীরা জেলার বাল্যবিয়ে পরিস্থিতি প্রসঙ্গে কথা বলার সময় এ চিত্র তুলে ধরলেন ‘বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ কমিটি’ সদস্য সাকিবুর রহমান বাবলা। তিনিসহ এলাকার সংশ্লিষ্টদের বক্তব্য অনুযায়ী, দক্ষিণ-পশ্চিম সীমান্তের জেলাটিতে বাল্যবিয়ের অন্যতম হাতিয়ার এই ‘নকল ভলিউম বই’।
দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশেই সবচেয়ে বেশি বাল্যবিয়ে হয়। ইউনিসেফের গত বছরের তথ্যে বলা হয়, এ দেশে ৫১ শতাংশ নারীর বিয়ে হয় প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার আগেই। এমন প্রেক্ষাপটে দেশজুড়ে আজ সোমবার পালিত হচ্ছে, জাতীয় কন্যাশিশু দিবস। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য— ‘কন্যাশিশুর স্বপ্নে গড়ি আগামীর বাংলাদেশ’।
দেশে বাল্যবিয়ে বেশি যেসব জেলায় তার অন্যতম সাতক্ষীরা। কয়েকজন স্থানীয় মানবাধিকারকর্মী জানান, সাতক্ষীরার বিভিন্ন এলাকায় কাজির সহকারীরা নকল ভলিউম বই রাখেন। সরকারনির্ধারিত ফির চেয়ে বেশি টাকা নিয়ে তাঁরা বাল্যবিয়ে লিপিবদ্ধ করেন। বর বা কনে বিয়ের আইনসম্মত বয়সে পৌঁছলে কাজির প্রকৃত নিকাহ রেজিস্ট্রি খাতায় বিয়ের তথ্য তোলা হয়। এ রকম নকল ভলিউম বইয়ের পাতার একটি কপি আজকের পত্রিকার হাতে এসেছে। সেখানে দেওয়া তথ্য ও কনের জন্মনিবন্ধনপত্র মিলিয়ে দেখা যায়, মেয়েটির বয়স ১৮ হওয়ার আগেই বিয়ে নিবন্ধিত হয়েছে। বাল্যবিয়ে দেওয়ার দায়ে সংশ্লিষ্ট কাজির নামে বর্তমানে একাধিক মামলা চলমান।
নকল ভলিউম বইয়ের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শোয়াইব আহমাদ বলেন, ‘আমরা এ রকম কিছু অভিযোগ পেয়েছি। কাজি এবং তাঁদের সহকারীদের সাথে আমি বসেছিও। আমি বলেছি, এমন অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাঁদের লাইসেন্স বাতিল করা হবে। আমরা অবশ্যই ব্যবস্থা নেব।’
দশম শ্রেণি প্রায় ছাত্রীশূন্য
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলার আলীপুর আজিজিয়া দাখিল মাদ্রাসায় এ বছর দশম শ্রেণিতে একজনও মেয়ে নেই। অথচ এই ব্যাচটিই ষষ্ঠ শ্রেণিতে ২৪ জন মেয়ে ছিল। এই এলাকার আরেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান মাহমুদপুর গার্লস কলেজিয়েট স্কুলের দশম শ্রেণিতে এখন মাত্র ১০ জন ছাত্রী রয়েছে। ব্যাচটি ষষ্ঠ শ্রেণিতে থাকতে ছাত্রীসংখ্যা ছিল ৪২ জন।
স্থানীয় বাল্যবিয়ে প্রতিরোধ কমিটির সদস্য শরীফুল ইসলাম বলেন, ‘স্কুলগুলোতে ছাত্রী ঝরে পড়ার এই হার দেখেই বোঝা যায়, এই এলাকায় বাল্যবিয়ে কতটা প্রকট। কারণ মেয়েরা স্কুল ছাড়ার পর তাদের বিয়ে দেওয়া হয়।’
মাত্র ১২ বছর বয়সে বিয়ে দেওয়া হয়েছিল সদর উপজেলার আলীপুরের সুনীতিকে (ছদ্মনাম)। বিয়ে ভেঙে যাওয়া সুনীতির বয়স এখন ২৫-এর কোঠায়। আজকের পত্রিকাকে সুনীতি বলেন, ‘তখন স্বামী কিছু হইলেই শুধু মারত। এখনো আমার সারা গায়ে মাইরের দাগ।’
লবণাক্ততার বলি কিশোরীরা
সাতক্ষীরায় বাল্যবিয়ে বেশি হওয়ার অন্যতম কারণ হিসেবে অনেকে এলাকার পানিতে লবণাক্ততার উঁচু মাত্রাকে দায়ী করেন। বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের নীলডুমুরিয়া গ্রামের কিশোরী সানজিদা আক্তার বলল, ‘এখানকার পানিতে লবণ অনেক বেশি। লবণপানি ব্যবহার করার জন্য চেহারা নষ্ট হয়ে যায়। গায়ের রঙ কালো হয়ে যায়। তাই বয়স ১২-১৩ হলেই পাত্র দেখা শুরু হয়ে যায়।’
সাতক্ষীরায় নারী ও শিশুদের মাঝে সচেতনতা তৈরিতে কাজ করে বেসরকারি সংস্থা ব্রেকিং দ্যা সাইলেন্স। সংস্থাটির ডিরেক্টর (প্রোগ্রাম অ্যান্ড প্ল্যানিং) জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘লবনাক্ততাসহ নানা অজুহাত দেখিয়ে এখানকার অভিভাবকেরা তাদের সন্তানদের কম বয়সে বিয়ে দেয়।
বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে সচেতনতা সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন’
বাল্যবিয়ে প্রতিরোধ কমিটির তথ্য অনুযায়ী, সাতক্ষীরা জেলায় মেয়েদের বাল্যবিয়ের হার ৭০ শতাংশের বেশি।
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফাওজিয়া মোসলেম বলেন, ‘বাল্যবিয়ে মানে হলো একটি মেয়ের স্বপ্নকে কুঁড়িতেই বিনষ্ট করা অভিভাবকদের দায়িত্ব সন্তানদের বিকশিত হতে সাহায্য করা।’
জমির মালিক হযরত শাহ্ আলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। তবে ওই জমিতে ৩৯১টি দোকান নির্মাণ করে কয়েক বছর ধরে ভাড়া নিচ্ছে হযরত শাহ্ আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজ। দোকানগুলোর ভাড়া থেকে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ৭০ লাখ টাকা ভ্যাটও দেওয়া হয়নি। বিষয়টি উঠে এসেছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) তদন্তে।
১ দিন আগেকুড়িগ্রাম পৌর শহরে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী ছোট ভাই নিহত ও বড় ভাই আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে মৎস্য খামারের কাছে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
৪ দিন আগেবৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগের মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১৮ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত শনিবার রাতে ও গতকাল রোববার তাঁরা গ্রেপ্তার হন।
৪ দিন আগেএক অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটেছে শিল্পকলা একাডেমিতে। শিল্পকলা একাডেমির তিনটি হলেই কিছুদিন আগেও নাটক চলত। নাট্যকর্মীদের সৃজনশীলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটত সেখানে। বহু পরিশ্রমে মাসের পর মাস নিজের খেয়ে, নিজের গাড়িভাড়া দিয়ে নাট্যকর্মীরা একেবারেই স্বেচ্ছাশ্রমে একটি শিল্প তিপ্পান্ন বছর ধরে গড়ে তুলেছেন। শিল্পকলা একাডেমি এখন
৮ দিন আগে