আশরাফুল আযম খান
নতুন শিক্ষাক্রমে শিক্ষার্থীরা শিখছে। শিখছে ভিন্নভাবে। আগের শ্রেণিকক্ষের চার দেয়ালটাই ছিল তাদের শিক্ষা আহরণের একমাত্র ক্ষেত্র। এখন পুরো পৃথিবীই তাদের শেখার জায়গা। নতুন শিক্ষাক্রমে তারা শিখছে শ্রেণিকক্ষে, শিক্ষকদের কাছ থেকে; শিখছে পরিবারে অভিভাবকদের কাজ দেখে। শিখছে পাশের বিভিন্ন পেশাজীবীর জীবন অভিজ্ঞতা থেকে, তাদের সঙ্গে প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণের মাধ্যমে।
শিক্ষা এখন কেবল স্মৃতি বা মুখস্থনির্ভর নয়, হাতে-কলমেলব্ধ অভিজ্ঞতাই এখন শিক্ষা। তারা এখন কেবল এককভাবে শিখছে না, শিখছে জোড়ায় সহপাঠীর সঙ্গে একাত্ম হয়ে, জোড়ায় জোড়ায়, দলগতভাবে। নিজে বলছে, অন্যের কথা শুনছে। দলীয় কাজে অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দিতে, অন্যের মত মেনে নিতে শিখছে। শিখন এখন শিক্ষককেন্দ্রিক নয়, শিক্ষার্থীকেন্দ্রিক।
শিখন কাজে ছাত্রছাত্রীরা আর পেসিভ সত্তা নয়, তারা সক্রিয় ও জীবন্ত সত্তা। তাই শিক্ষার নব নব পদ্ধতি এখন তাদের কাছে সমান আনন্দদায়ক আর অংশগ্রহণমূলক।
শিক্ষার্থীরা এখন বাসায়, শ্রেণিক্ষক্ষে বানাচ্ছে এআই প্রযুক্তিনির্ভর কমিউটারের সিমুলেশন, রোবট, বৈদ্যুতিক সার্কিট, গ্রিনহাউস, প্রাণিকুলের বাস্তুভিটা, আগামী দিনের বিকল্প জ্বালানির মডেল, জ্যামিতির নানা আকৃতি, নিজের ব্যবহৃত স্কেলসহ নানা বিষয়। শিখছে নিজের শ্রেণিকক্ষের পরিমাপ, নিজের প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামোর জ্যামিতিক ও গাণিতিক প্রকাশ। কী করে অন্যের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হয়, কী করে অপরিচিতজনের সঙ্গে মিশতে হয়, তাও শিখছে। শিখছে নিজেকে শিক্ষক, সমাজকর্মী, সাংবাদিক, ডাক্তার, ইমাম, কৃষক, দোকানদার, রাঁধুনী ইত্যাদি চরিত্রের নামভূমিকায়। তাদের শেখানো হচ্ছে সৃজনশীলতা আর স্বনির্ভরতা। তাদের শেখানো হচ্ছে নিজের কাজ নিজেই কীভাবে করতে হয় তার গুরুত্ব ও নানা কলাকৌশল। তারা শিখছে ভাষা, সাহিত্য, ইতিহাস, সমাজ, বিজ্ঞান, গণিত, ধর্ম-নৈতিকতা, শারীরিক শিক্ষা, ক্যারিয়ার ইত্যাদি বিষয়। কেবল রান্নাবান্না শিখছে না বা রাত জেগে কাগজ কেটে প্রজেক্ট তৈরি করছে না।
তথ্যপ্রযুক্তি, এআই, ন্যানো টেকনোলজি, বায়োটেকনোলজির প্রভাবে দুনিয়া যে দ্রুতগতিতে পাল্টাচ্ছে তাতে শিক্ষার্থীদের কতগুলো বিষয় শেখালেই যথেষ্ট নয়, কীভাবে বিষয়টি শিখতে হবে সেটা শেখানোই সবচেয়ে জরুরি। শিখনবস্তুর চেয়ে শিখন-শেখানোর কৌশলটিই এ সময়ে আর আগত সময়ের জন্য জরুরি। এ প্রক্রিয়ায় তারা অজানা ভবিষ্যতের জন্য নিজেকে প্রস্তত করতে পারবে, পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে পারবে। বর্তমান শিক্ষাক্রম সে দিকটিকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করছে।
পৃথিবী যে গতিতে বদলাচ্ছে এ সময়ে দাঁড়িয়ে আপনি বলতে পারবেন না আপনার যে ছেলে বা মেয়েটি এখন প্রথম শ্রেণিতে
পড়ছে, ২৫ বছর পর সে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, শিক্ষক, ব্যাংকার হবে। কারণ ধারণা করা হচ্ছে, আজ থেকে ২৫ বছর পর এখনকার অনেক পেশাই আর থাকবে না। এমনকি কোনো পেশাই বেশি দিন স্থায়ী হবে না। এ বাস্তবতায় এখন থেকেই শিক্ষার্থীদের কেবল কোনো একক বিষয় শেখানোর চেয়ে শেখার কলাকৌশল শেখানোটাই মুখ্য। শেখার মানসিকতা তৈরি করে লার্নিং-আনলার্নি-রিলার্নিং প্রক্রিয়ার সঙ্গে পরিচিত করানো গেলে তারা যেকোনো শিখনবস্তু আয়ত্ত করতে পারবে।
এ শিক্ষাক্রমের মূল লক্ষ্য হলো শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভবিষ্যতের জন্য প্রয়োজনীয় যোগ্যতাগুলোকে তৈরি করা। তাই অসংখ্য যোগ্যতা থেকে বিষয়ভিত্তিক কিছু যোগ্যতা চিহ্নিত ও সুনির্দিষ্ট করা হয়েছে, যা শিক্ষার্থীদের প্রাথমিক ধাপ থেকে থেকে অর্জন করে পরবর্তী ধাপে উঠতে হবে। যতই বড় শ্রেণিতে উঠবে ততই তাদের নির্দিষ্ট যোগ্যতাগুলোর উচ্চতর রূপ অর্জন করতে হবে।
এই যোগ্যতাগুলো অর্জিত হচ্ছে কি না তা বছরের মাঝে বা বছর শেষে যাচাই না করে প্রতিটি সেশনে (এখন আর ক্লাস বলা যাবে না) মূল্যায়ন করা হচ্ছে। এ মূল্যায়ন যেমন করছেন শিক্ষক, তেমনি শিক্ষার্থীরা একে অপরকে। এমনকি তার অভিভাবক বা কমিউনিটির লোকজন তাকে মূল্যায়ন করছে। দক্ষতার পারদর্শিতা অর্জিত না হলে মূল্যায়নের পর আবারও ব্যবস্থা নিতে হবে যেন অপূরণীয় দক্ষতাগুলো শিক্ষার্থীরা অর্জন করতে পারে। এ পদ্ধতিতে আগের মতো তাই বার্ষিক বা ষাণ্মাসিক পরীক্ষার গুরুত্ব থাকছে না। এর মানে এই নয় যে শিক্ষার্থীদের আর পরীক্ষা থাকছে না। পরীক্ষা থাকছে না বলে যাঁরা ভাবছেন বা প্রচার চালাচ্ছেন, তাঁদের জন্য তথ্য যে, এ পদ্ধতিতে ষাণ্মাসিক বা বছর শেষে পরীক্ষা তো থাকছেই বরং তার পাশাপাশি প্রতিদিনই মূল্যায়ন করা হচ্ছে শিক্ষার্থীর অগ্রগতি, অর্জন-অনর্জনকে। তবে এটিকে পরীক্ষা না বলে মূল্যায়ন বলা হচ্ছে। সে লক্ষ্যে পাঠ্যপুস্তক নতুনভাবে ঢেলে সাজানোর হয়েছে। আধুনিক শিক্ষার অ্যাপ্রোচে বছর শেষে পরীক্ষার চেয়ে এই ধারাবাহিক মূল্যায়নকে জগৎজোড়া গুরুত্ব দেওয়া হয়। এই মূল্যায়ন পদ্ধতিতে গ্রেড
বা নম্বরপ্রাপ্তির চেয়ে শিক্ষার্থীর কাঙ্ক্ষিত যোগ্যতা বা দক্ষতা অর্জনের দিকটিকে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হয়। সে কারণেই আশা করা
যেতে পারে, নব প্রবর্তিত শিক্ষাক্রমের বাস্তবায়ন সফল ও সুচারুভাবে করা গেলে প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থার উপজাত রোগ যেমন কোচিং বা প্রাইভেট টিউশনিনির্ভরতা, গাইডবই নির্ভরশীলতা, এ প্লাসপ্রাপ্তির অসুস্থ প্রতিযোগিতা কমে আসবে।
নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নের মূল নায়ক শিক্ষক। শিক্ষকদের যথাযথ প্রেষণা, প্রশিক্ষণ, প্রণোদনা দিলে এর সাফল্য প্রত্যাশা
করা যায়। কেবল ওপর থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করে বা নামকাওয়াস্তে প্রশিক্ষণ দিয়ে কর্তব্য শেষ করলে এটি যে ব্যর্থ হবে, তা
সহজে অনুমেয়। এ ব্যবস্থা চালু হলে কোচিং বা টিউশনিনির্ভর শিক্ষকদের আয়ে টান পড়বে বলে অনেকে এর বাস্তবায়ন নাও
চাইতে পারেন। এ ক্ষেত্রেও সব পর্যায়ের শিক্ষকদের জীবনের আর্থিক নিশ্চয়তা নিশ্চিত করা ছাড়া এ সুফল মিলবে না। পৃথিবীর ১৩৭ দেশে শিক্ষকদের সুযোগ-সুবিধার তালিকায় বাংলাদেশের শিক্ষকদের সুবিধার অবস্থান ১৩৪তম, যা এই এর বাস্তবায়নের প্রতিকূল।
গার্মেন্টসকর্মীদের ন্যূনতম মজুরির চেয়েও কম বেতনে দেশের অনেক শিক্ষককে জীবন নির্বাহ করতে হয়। তাই তো হরহামেশাই শিক্ষকদের অনলাইনে মধু বেঁচে খেজুর বেঁচে জীবন চালাতে হয়। শিক্ষকদের পাশাপাশি অভিভাবকদের এ শিক্ষাক্রমের সুফল ও করণীয় জ্ঞাত করার প্রয়োজন আছে। ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপপ্রচার, ভুল তথ্য এর সুফল সম্বন্ধে অভিভাবকদের সন্দিগ্ধ করে তুলেছে।
গত আড়াই দশকের শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা, শিক্ষাবিজ্ঞান অধ্যয়নসূত্রে আমি নব প্রবর্তিত শিক্ষাক্রমের এই মর্ম অনুধাবন করছি। যাঁরা এর বিরোধিতা করছেন, তাঁরা খণ্ডিত জেনে বা না-জেনেই বিরোধিতা করছেন। অথবা অন্য কোনো উদ্দেশ্যে। আমাদের
স্বাভাবিক প্রবণতা এই যে আমরা না জানলেও জানার ভান করি। কাজের চেয়ে কথা বলি বেশি।
নতুন শিক্ষাক্রমে শিক্ষার্থীরা শিখছে। শিখছে ভিন্নভাবে। আগের শ্রেণিকক্ষের চার দেয়ালটাই ছিল তাদের শিক্ষা আহরণের একমাত্র ক্ষেত্র। এখন পুরো পৃথিবীই তাদের শেখার জায়গা। নতুন শিক্ষাক্রমে তারা শিখছে শ্রেণিকক্ষে, শিক্ষকদের কাছ থেকে; শিখছে পরিবারে অভিভাবকদের কাজ দেখে। শিখছে পাশের বিভিন্ন পেশাজীবীর জীবন অভিজ্ঞতা থেকে, তাদের সঙ্গে প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণের মাধ্যমে।
শিক্ষা এখন কেবল স্মৃতি বা মুখস্থনির্ভর নয়, হাতে-কলমেলব্ধ অভিজ্ঞতাই এখন শিক্ষা। তারা এখন কেবল এককভাবে শিখছে না, শিখছে জোড়ায় সহপাঠীর সঙ্গে একাত্ম হয়ে, জোড়ায় জোড়ায়, দলগতভাবে। নিজে বলছে, অন্যের কথা শুনছে। দলীয় কাজে অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দিতে, অন্যের মত মেনে নিতে শিখছে। শিখন এখন শিক্ষককেন্দ্রিক নয়, শিক্ষার্থীকেন্দ্রিক।
শিখন কাজে ছাত্রছাত্রীরা আর পেসিভ সত্তা নয়, তারা সক্রিয় ও জীবন্ত সত্তা। তাই শিক্ষার নব নব পদ্ধতি এখন তাদের কাছে সমান আনন্দদায়ক আর অংশগ্রহণমূলক।
শিক্ষার্থীরা এখন বাসায়, শ্রেণিক্ষক্ষে বানাচ্ছে এআই প্রযুক্তিনির্ভর কমিউটারের সিমুলেশন, রোবট, বৈদ্যুতিক সার্কিট, গ্রিনহাউস, প্রাণিকুলের বাস্তুভিটা, আগামী দিনের বিকল্প জ্বালানির মডেল, জ্যামিতির নানা আকৃতি, নিজের ব্যবহৃত স্কেলসহ নানা বিষয়। শিখছে নিজের শ্রেণিকক্ষের পরিমাপ, নিজের প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামোর জ্যামিতিক ও গাণিতিক প্রকাশ। কী করে অন্যের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হয়, কী করে অপরিচিতজনের সঙ্গে মিশতে হয়, তাও শিখছে। শিখছে নিজেকে শিক্ষক, সমাজকর্মী, সাংবাদিক, ডাক্তার, ইমাম, কৃষক, দোকানদার, রাঁধুনী ইত্যাদি চরিত্রের নামভূমিকায়। তাদের শেখানো হচ্ছে সৃজনশীলতা আর স্বনির্ভরতা। তাদের শেখানো হচ্ছে নিজের কাজ নিজেই কীভাবে করতে হয় তার গুরুত্ব ও নানা কলাকৌশল। তারা শিখছে ভাষা, সাহিত্য, ইতিহাস, সমাজ, বিজ্ঞান, গণিত, ধর্ম-নৈতিকতা, শারীরিক শিক্ষা, ক্যারিয়ার ইত্যাদি বিষয়। কেবল রান্নাবান্না শিখছে না বা রাত জেগে কাগজ কেটে প্রজেক্ট তৈরি করছে না।
তথ্যপ্রযুক্তি, এআই, ন্যানো টেকনোলজি, বায়োটেকনোলজির প্রভাবে দুনিয়া যে দ্রুতগতিতে পাল্টাচ্ছে তাতে শিক্ষার্থীদের কতগুলো বিষয় শেখালেই যথেষ্ট নয়, কীভাবে বিষয়টি শিখতে হবে সেটা শেখানোই সবচেয়ে জরুরি। শিখনবস্তুর চেয়ে শিখন-শেখানোর কৌশলটিই এ সময়ে আর আগত সময়ের জন্য জরুরি। এ প্রক্রিয়ায় তারা অজানা ভবিষ্যতের জন্য নিজেকে প্রস্তত করতে পারবে, পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে পারবে। বর্তমান শিক্ষাক্রম সে দিকটিকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করছে।
পৃথিবী যে গতিতে বদলাচ্ছে এ সময়ে দাঁড়িয়ে আপনি বলতে পারবেন না আপনার যে ছেলে বা মেয়েটি এখন প্রথম শ্রেণিতে
পড়ছে, ২৫ বছর পর সে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, শিক্ষক, ব্যাংকার হবে। কারণ ধারণা করা হচ্ছে, আজ থেকে ২৫ বছর পর এখনকার অনেক পেশাই আর থাকবে না। এমনকি কোনো পেশাই বেশি দিন স্থায়ী হবে না। এ বাস্তবতায় এখন থেকেই শিক্ষার্থীদের কেবল কোনো একক বিষয় শেখানোর চেয়ে শেখার কলাকৌশল শেখানোটাই মুখ্য। শেখার মানসিকতা তৈরি করে লার্নিং-আনলার্নি-রিলার্নিং প্রক্রিয়ার সঙ্গে পরিচিত করানো গেলে তারা যেকোনো শিখনবস্তু আয়ত্ত করতে পারবে।
এ শিক্ষাক্রমের মূল লক্ষ্য হলো শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভবিষ্যতের জন্য প্রয়োজনীয় যোগ্যতাগুলোকে তৈরি করা। তাই অসংখ্য যোগ্যতা থেকে বিষয়ভিত্তিক কিছু যোগ্যতা চিহ্নিত ও সুনির্দিষ্ট করা হয়েছে, যা শিক্ষার্থীদের প্রাথমিক ধাপ থেকে থেকে অর্জন করে পরবর্তী ধাপে উঠতে হবে। যতই বড় শ্রেণিতে উঠবে ততই তাদের নির্দিষ্ট যোগ্যতাগুলোর উচ্চতর রূপ অর্জন করতে হবে।
এই যোগ্যতাগুলো অর্জিত হচ্ছে কি না তা বছরের মাঝে বা বছর শেষে যাচাই না করে প্রতিটি সেশনে (এখন আর ক্লাস বলা যাবে না) মূল্যায়ন করা হচ্ছে। এ মূল্যায়ন যেমন করছেন শিক্ষক, তেমনি শিক্ষার্থীরা একে অপরকে। এমনকি তার অভিভাবক বা কমিউনিটির লোকজন তাকে মূল্যায়ন করছে। দক্ষতার পারদর্শিতা অর্জিত না হলে মূল্যায়নের পর আবারও ব্যবস্থা নিতে হবে যেন অপূরণীয় দক্ষতাগুলো শিক্ষার্থীরা অর্জন করতে পারে। এ পদ্ধতিতে আগের মতো তাই বার্ষিক বা ষাণ্মাসিক পরীক্ষার গুরুত্ব থাকছে না। এর মানে এই নয় যে শিক্ষার্থীদের আর পরীক্ষা থাকছে না। পরীক্ষা থাকছে না বলে যাঁরা ভাবছেন বা প্রচার চালাচ্ছেন, তাঁদের জন্য তথ্য যে, এ পদ্ধতিতে ষাণ্মাসিক বা বছর শেষে পরীক্ষা তো থাকছেই বরং তার পাশাপাশি প্রতিদিনই মূল্যায়ন করা হচ্ছে শিক্ষার্থীর অগ্রগতি, অর্জন-অনর্জনকে। তবে এটিকে পরীক্ষা না বলে মূল্যায়ন বলা হচ্ছে। সে লক্ষ্যে পাঠ্যপুস্তক নতুনভাবে ঢেলে সাজানোর হয়েছে। আধুনিক শিক্ষার অ্যাপ্রোচে বছর শেষে পরীক্ষার চেয়ে এই ধারাবাহিক মূল্যায়নকে জগৎজোড়া গুরুত্ব দেওয়া হয়। এই মূল্যায়ন পদ্ধতিতে গ্রেড
বা নম্বরপ্রাপ্তির চেয়ে শিক্ষার্থীর কাঙ্ক্ষিত যোগ্যতা বা দক্ষতা অর্জনের দিকটিকে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হয়। সে কারণেই আশা করা
যেতে পারে, নব প্রবর্তিত শিক্ষাক্রমের বাস্তবায়ন সফল ও সুচারুভাবে করা গেলে প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থার উপজাত রোগ যেমন কোচিং বা প্রাইভেট টিউশনিনির্ভরতা, গাইডবই নির্ভরশীলতা, এ প্লাসপ্রাপ্তির অসুস্থ প্রতিযোগিতা কমে আসবে।
নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নের মূল নায়ক শিক্ষক। শিক্ষকদের যথাযথ প্রেষণা, প্রশিক্ষণ, প্রণোদনা দিলে এর সাফল্য প্রত্যাশা
করা যায়। কেবল ওপর থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করে বা নামকাওয়াস্তে প্রশিক্ষণ দিয়ে কর্তব্য শেষ করলে এটি যে ব্যর্থ হবে, তা
সহজে অনুমেয়। এ ব্যবস্থা চালু হলে কোচিং বা টিউশনিনির্ভর শিক্ষকদের আয়ে টান পড়বে বলে অনেকে এর বাস্তবায়ন নাও
চাইতে পারেন। এ ক্ষেত্রেও সব পর্যায়ের শিক্ষকদের জীবনের আর্থিক নিশ্চয়তা নিশ্চিত করা ছাড়া এ সুফল মিলবে না। পৃথিবীর ১৩৭ দেশে শিক্ষকদের সুযোগ-সুবিধার তালিকায় বাংলাদেশের শিক্ষকদের সুবিধার অবস্থান ১৩৪তম, যা এই এর বাস্তবায়নের প্রতিকূল।
গার্মেন্টসকর্মীদের ন্যূনতম মজুরির চেয়েও কম বেতনে দেশের অনেক শিক্ষককে জীবন নির্বাহ করতে হয়। তাই তো হরহামেশাই শিক্ষকদের অনলাইনে মধু বেঁচে খেজুর বেঁচে জীবন চালাতে হয়। শিক্ষকদের পাশাপাশি অভিভাবকদের এ শিক্ষাক্রমের সুফল ও করণীয় জ্ঞাত করার প্রয়োজন আছে। ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপপ্রচার, ভুল তথ্য এর সুফল সম্বন্ধে অভিভাবকদের সন্দিগ্ধ করে তুলেছে।
গত আড়াই দশকের শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা, শিক্ষাবিজ্ঞান অধ্যয়নসূত্রে আমি নব প্রবর্তিত শিক্ষাক্রমের এই মর্ম অনুধাবন করছি। যাঁরা এর বিরোধিতা করছেন, তাঁরা খণ্ডিত জেনে বা না-জেনেই বিরোধিতা করছেন। অথবা অন্য কোনো উদ্দেশ্যে। আমাদের
স্বাভাবিক প্রবণতা এই যে আমরা না জানলেও জানার ভান করি। কাজের চেয়ে কথা বলি বেশি।
ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
৩৬ মিনিট আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
৪২ মিনিট আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
১ ঘণ্টা আগেসপ্তাহখানেক আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অনেকের ওয়াল বিষাদময় হয়ে উঠেছিল ফুলের মতো ছোট্ট শিশু মুনতাহাকে হত্যার ঘটনায়। ৫ বছর বয়সী সিলেটের এই শিশুকে অপহরণের পর হত্যা করে লাশ গুম করতে ডোবায় ফেলে রাখা হয়েছিল। প্রতিবেশী গৃহশিক্ষকের পরিকল্পনায় অপহরণের পর তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়...
২ ঘণ্টা আগে