বিভুরঞ্জন সরকার
১৯৭১ সালে ৯ মাসের সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানকে পরাজিত করে স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অভ্যুদয় ঘটেছিল। একাত্তরের পরাজয় থেকে শিক্ষা না নিয়ে পাকিস্তান বাংলাদেশের বিরুদ্ধে বৈরিতা অব্যাহত রাখার নীতি নিয়েছে। একাত্তরের অন্যায়ের জন্য বাংলাদেশের কাছে ক্ষমা চাওয়ার ঔচিত্যবোধের পরিচয় দিতে কুণ্ঠিত পাকিস্তানকে এখন পেছনে ফেলে জিডিপির আকারের ভিত্তিতে বৃহৎ অর্থনীতির দেশের তালিকায় ৩৫তম অবস্থানে উঠে এসেছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের পাওনা ন্যায্য হিস্যা ফেরত দেওয়ার বিষয়টিও পাকিস্তান এড়িয়ে গেছে, কিন্তু বাংলাদেশকে ‘দাবায়ে’ রাখতে পারেনি পাকিস্তান। স্বাধীনতার ৫০ বছর পর এশিয়ার অন্যতম সেরা অর্থনীতির দেশ হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ। অর্থনৈতিক ও সামাজিক সব সূচকে পাকিস্তানের তুলনায় এগিয়ে আছে বাংলাদেশ। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেও বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সাফল্যের বিষয় আলোচিত হচ্ছে অনেক দিন ধরে। নিউইয়র্কভিত্তিক একটি জনপ্রিয় বিজনেস পোর্টাল কোয়ার্টজ ডটকম বলেছে, বিশ্ব অর্থনীতিতে অগ্রসরমাণ এশিয়ার অন্যতম প্রতিনিধিত্বশীল দেশ হচ্ছে বাংলাদেশ।
অথচ এখন পাকিস্তানের অবস্থা কী? গত ২৩ জানুয়ারি পাকিস্তানের অর্থনীতি দেউলিয়ার পথে উল্লেখ করে মার্কিন অর্থনৈতিক একটি সংবাদ সংস্থা যে চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করেছিল, তা যে কতটা সত্য, সেটা স্বীকার করেছেন দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রীও। ১৮ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের শিয়ালকোট শহরে একটি বেসরকারি কলেজের অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তৃতায় প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ বলেছেন, ‘আপনারা হয়তো শুনে থাকবেন যে দেশ দেনার দায়ে ডুবেছে। আর্থিক সংকট চরমে। যা শুনেছেন, তা একেবারে ঠিক। পাকিস্তান দেউলিয়া হওয়ার পথে হাঁটছে এমন নয়, দেউলিয়া হয়ে গেছে।’ মন্ত্রী আরও বলেছেন, ‘আমরা এক দেউলিয়া দেশের বাসিন্দা। লোকজন বলছে, পাকিস্তান দেউলিয়া হওয়ার পথে হাঁটছে এবং সেখানে আর্থিক সংকট চরমে। আসলে দেশ দেউলিয়া হয়ে গেছে। এবার আমাদের নিজের পায়ে দাঁড়াতে হবে।’
১৯ ফেব্রুয়ারি দেশটির প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম দ্য ডন-এ প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে, পাকিস্তানে এখন খাওয়ার পানি, আটা-ময়দার দামও লাগামছাড়া। সাধারণ মানুষের মাথায় হাত। পাকিস্তানে এক লিটার দুধের দাম ২৫০ টাকা। একসময় প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় যা থাকত, সেই মুরগির দামও সাধ্যের বাইরে। এক কেজি মুরগির মাংসের দাম ৭৮০ টাকা।
পাকিস্তানের মূল্যস্ফীতি রেকর্ড উচ্চতায় উঠেছে—৩৮ দশমিক ৪২ শতাংশ। কয়েক মাস ধরেই মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে পাকিস্তান সরকার নানা চেষ্টা করে গেলেও সফলতা পাচ্ছে না। আইএমএফের শর্ত মেনে নতুন করারোপ ও পেট্রলের মূল্যবৃদ্ধির জেরে মূল্যস্ফীতির সূচক এতটা উঠেছে যে ১৬ ফেব্রুয়ারি থেকেই পাকিস্তানে প্রতি লিটার পেট্রলের দাম ২২ টাকা ২০ পয়সা বেড়ে হয়েছে ২৭২ টাকা; যা সর্বকালের রেকর্ড। পাকিস্তানে খোলা দুধের দাম এখন প্রতি লিটার ২১০ রুপি।
লাহোরে ১৫ কেজি আটার ব্যাগ বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৫০ রুপি। ইতিহাসে এই প্রথম পাকিস্তানে ২০ কেজি আটার বস্তার দাম হয়েছে ৩ হাজার রুপি। করাচি শহরে ১ কেজি আটার দাম ১৫০ রুপি। কয়েক সপ্তাহে সেখানে ২০ কেজি আটার বস্তার দাম বেড়েছে ৪০০ রুপি।
দেশের এই পরিস্থিতির জন্য পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) নেতা খাজা আসিফ সাবেক ইমরান খান সরকারকে দায়ী করে বলেছেন, ইমরানের সরকারের আমলেই দেশে ফের সন্ত্রাসবাদের আমদানি হয়েছে। সন্ত্রাসবাদ পাকিস্তানের ‘নিয়তি’ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বছরের শুরুতে ৩০ জানুয়ারি পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ খাইবার পাখতুনখাওয়ার পেশোয়ারের মসজিদে আত্মঘাতী হামলায় নিহতের সংখ্যা শতাধিক। পেশোয়ার পুলিশের সদর দপ্তরের মসজিদে চালানো এই হামলায় দেশটির জঙ্গিগোষ্ঠী তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান বা টিটিপি জড়িত বলে ধারণা করা হচ্ছে। নিহত ব্যক্তিদের বেশির ভাগই পুলিশ বাহিনীর সদস্য। হামলার সময় তাঁরা মসজিদে জোহরের নামাজ আদায় করছিলেন। এর এক দিন পরই পাঞ্জাব প্রদেশে পুলিশ স্টেশনে ঢুকে আবার হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা। টিটিপি আক্রমণ চালানোর জন্য আফগান অঞ্চলকে নিরাপদ আশ্রয় হিসেবে ব্যবহার করছে।
পাঠান মাদ্রাসাছাত্রদের ১৩টি সংগঠন মিলে ২০০৭ সালে বাইতুল্লাহ্ মেহ্সুদের নেতৃত্বে টিটিপি গঠিত হয়। টিটিপি আফগানিস্তানের তালেবানদের মতো পাকিস্তানের গণতান্ত্রিক সরকারকে উচ্ছেদ করে তালেবানি সরকার গঠন করতে চায়। আধুনিক শিক্ষাবিরোধী এই জঙ্গি সংগঠন ২০১৪ সালে পেশোয়ারের একটি স্কুলে হামলা চালিয়ে ১৫০ শিক্ষার্থীকে হত্যা করে।
আমেরিকার আশীর্বাদ এবং পাকিস্তানের সহযোগিতায় ১৯৯৬ সালে তালেবানরা প্রথম কাবুল দখল করে এবং তখন থেকে পাকিস্তান আফগান-তালেবানদের বন্ধু। পাকিস্তানের সমর্থনে প্রায় ২০ বছর পর ২০২১ সালে আবার ক্ষমতায় ফিরে এসেছে তালেবানরা। তালেবানদের বিজয়ের পর উল্লাসও করেছিল পাকিস্তান। পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান তালেবানদের কাবুল দখলকে ‘দাসত্বের শিকল’ ভাঙার সঙ্গে তুলনা করেছিলেন।
পাকিস্তানের ধারণা ছিল, তালেবান সরকার পাকিস্তানের ওপর নির্ভরশীল থাকবে, পাকিস্তানের পরামর্শে আফগান পররাষ্ট্রনীতি পরিচালিত হবে। কিন্তু বাস্তবে হয়েছে উল্টো। তালেবানের উত্থানকে স্বাগত জানিয়ে পাকিস্তান মূলত সন্ত্রাসবাদকে আলিঙ্গন করেছে। মার্কিন সেনা প্রত্যাহার করার পর আফগান সরকারের ওপর দেশটির প্রভাব বিস্তারের আকাঙ্ক্ষা ব্যর্থ হয়েছে।
সন্ত্রাসী তৎপরতা বন্ধ করার উপায় যেমন পাকিস্তান পাচ্ছে না, তেমনি অর্থনৈতিক সংকটও এখন চরমে। বর্তমানে দেশটিতে বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চয় তলানিতে। এই পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের মন্ত্রীই সে দেশকে ‘দেউলিয়া’ ঘোষণা করলেন। পাকিস্তানে মূল্যবৃদ্ধি আকাশচুম্বী। বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভও প্রায় শেষ। নতুন করে ঋণ দিতে চাইছে না আইএমএফসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা। এই পরিস্থিতিতে দেশের অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় সরকারি ব্যয় হ্রাস করে কৃচ্ছ্রসাধনের নীতি ঘোষণাসহ বিনা বেতনে কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ এবং তাঁর দল পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজের (পিএমএল-এন) মন্ত্রীরা।
প্রবল অর্থসংকট মোকাবিলায় এরই মধ্যে সরকারি কর্মীদের বেতন কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির জোট সরকার। মন্ত্রী এবং পার্লামেন্ট সদস্যদের বেতন ও ভাতায় কেন কোপ পড়বে না, সে প্রশ্নও তুলেছিল সে দেশের প্রধান বিরোধী দল পিটিআই এবং কয়েকটি সংবাদমাধ্যম।
এই পরিস্থিতিতে ১৫ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শাহবাজসহ পিএমএল-এনের ১২ জন পূর্ণ মন্ত্রী এবং ৩ জন প্রতিমন্ত্রী বিনা বেতনে কাজ করার সিদ্ধান্ত নেন। যদিও জোট সরকারের আরেক গুরুত্বপূর্ণ দল আসিফ আলী জারদারি ও বিলাওয়াল ভুট্টোর পিপিপি এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি।
অন্যদিকে কাঁচামাল আমদানিতে সীমাবদ্ধতা এবং বন্দরে আটকে থাকা কনটেইনার ছাড় করাতে দেরি হওয়ায় পাকিস্তানে যেকোনো সময় দক্ষিণ কোরিয়ার কোম্পানিগুলোর কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
সম্প্রতি দ্য ডনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে কোরিয়া ট্রেড-ইনভেস্টমেন্ট প্রোমোশন এজেন্সির জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা এবং লোকাল চেম্বার অব কোরিয়ার বিনিয়োগকারীরা জানিয়েছেন, কাঁচামাল আমদানিতে লেটার অব ক্রেডিট খুলতে না পারার কারণে তাঁদের কোম্পানিগুলোর কয়েক মিলিয়ন ডলার ক্ষতি হচ্ছে।
পাকিস্তানের অর্থনীতি এখন ডলারসংকটে ভুগছে, যে কারণে প্রায় সব ধরনের আমদানি সীমাবদ্ধ হয়ে গেছে। বর্তমানে পাকিস্তানের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ রয়েছে ৩ দশমিক ১৯ বিলিয়ন ডলার, যা দিয়ে ২০ দিনের আমদানি ব্যয়ও মেটানো যাবে না।
২০২২ সালের পুরোটাই পাকিস্তানে বৈদেশিক মুদ্রার সংকট ছিল। ২০২৩-এর শুরুতে এসে পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়েছে। জ্বালানি সংকট মোকাবিলায় ২০২২ সালের মাঝামাঝি রাত ৯টার মধ্যে বাজার, শপিং মল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল। এমনকি দেশের অর্থনীতি বাঁচাতে পরিকল্পনামন্ত্রী দেশবাসীকে দৈনিক চা-পানের পরিমাণ ১ বা ২ কাপ কমানোর অনুরোধ জানিয়ে বলেছিলেন, আমরা ধার করে চা আমদানি করছি। ২০২২ সালে ৬০০ মিলিয়ন ডলার মূল্যমানের চা আমদানি করে পাকিস্তান বিশ্বের শীর্ষ চা আমদানিকারক দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
চরম অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যেও পাকিস্তানে কানাডার টিম হরটন্স কফি শপ বিলাসবহুল লাহোর শপিং মলে শাখা খুলে বিরাট সাফল্য পেয়েছে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে ভোক্তারা কফি বা প্যাস্ট্রির স্বাদ নিচ্ছেন। একজন মেডিকেল শিক্ষার্থী সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, যাঁরা কফি খেতে আসছেন, তাঁদের কাছে উচ্চমূল্য কোনো বিষয় নয়। পাকিস্তানের ধনী মানুষ আরও ধনী হচ্ছে, গরিব আরও গরিব হচ্ছে এবং মধ্যবিত্তরা দুর্দশায় আছে।
বাংলাদেশের অবস্থা কেমন? স্বল্পোন্নত দেশের কাতার থেকে মধ্যম আয়ের দেশে উঠে আসার ক্ষেত্রে মাথাপিছু জাতীয় আয়, মানবসম্পদ উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা সূচকের অন্তত দুটি পূরণ করতে হয়। স্বল্পোন্নত দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশই প্রথম দেশ হিসেবে তিনটি সূচকের সব কটি পূরণ করে পরবর্তী ধাপে উন্নীত হয়েছে, যা আমাদের জন্য গর্বের বিষয়। ২০২২ সালের সূচক অনুযায়ী বাংলাদেশ এখন বিশ্বের ৩৫তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ। ব্রিটেনের অর্থনৈতিক গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর ইকোনমিকস অ্যান্ড বিজনেস রিসার্চ তাদের সর্বশেষ এক রিপোর্টে জানায়, ২০৩০ সাল নাগাদ বাংলাদেশ ২৫তম অর্থনীতির দেশ হবে। এ ছাড়া অন্যান্য অর্থনৈতিক জরিপের ভবিষ্যদ্বাণী অনুযায়ী, বাংলাদেশ ২০৪৩ সাল নাগাদ ২১তম শক্তিশালী অর্থনৈতিক দেশ হতে যাচ্ছে। মাথাপিছু আয়ের হিসাবে প্রায় চার বছর আগেই পাকিস্তানকে অতিক্রম করেছে বাংলাদেশ। ২০২১-২২ অর্থবছরে পাকিস্তানের মাথাপিছু আয় ছিল ১ হাজার ১০০ ডলার। ওই একই বছর বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় বেড়ে দাঁড়ায় ২ হাজার ৮২৪ ডলার। করোনার মধ্যেও বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় বেড়েছে ৯ শতাংশ। অন্যদিকে বর্তমানে পাকিস্তানের মাথাপিছু আয় ১ হাজার ৫৪৩ ডলার।
এই যে পাকিস্তানকে পেছনে ফেলে বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়া, এটা নিশ্চয়ই স্বস্তির। কিন্তু একই সঙ্গে সতর্কতারও বিষয় অবশ্যই। পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী দেশটির দেউলিয়া হওয়ার জন্য ক্ষমতাচক্র, আমলাতন্ত্র, রাজনীতিবিদ–সবাইকে দায়ী করে বলেছেন, ৩৩ বছর তিনি পাকিস্তানের সংসদ সদস্য। এর মধ্যে ৩২ বছর ধরেই তিনি রাজনীতির অবক্ষয় দেখছেন।
আমাদের রাজনীতি কি অবক্ষয়ের ধারা থেকে মুক্ত? রাজনীতিতে সেতু তৈরি করতে না পারার কথা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের নিজেই বলেছেন।
বিভুরঞ্জন সরকার, জ্যেষ্ঠ সহকারী সম্পাদক আজকের পত্রিকা
১৯৭১ সালে ৯ মাসের সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানকে পরাজিত করে স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অভ্যুদয় ঘটেছিল। একাত্তরের পরাজয় থেকে শিক্ষা না নিয়ে পাকিস্তান বাংলাদেশের বিরুদ্ধে বৈরিতা অব্যাহত রাখার নীতি নিয়েছে। একাত্তরের অন্যায়ের জন্য বাংলাদেশের কাছে ক্ষমা চাওয়ার ঔচিত্যবোধের পরিচয় দিতে কুণ্ঠিত পাকিস্তানকে এখন পেছনে ফেলে জিডিপির আকারের ভিত্তিতে বৃহৎ অর্থনীতির দেশের তালিকায় ৩৫তম অবস্থানে উঠে এসেছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের পাওনা ন্যায্য হিস্যা ফেরত দেওয়ার বিষয়টিও পাকিস্তান এড়িয়ে গেছে, কিন্তু বাংলাদেশকে ‘দাবায়ে’ রাখতে পারেনি পাকিস্তান। স্বাধীনতার ৫০ বছর পর এশিয়ার অন্যতম সেরা অর্থনীতির দেশ হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ। অর্থনৈতিক ও সামাজিক সব সূচকে পাকিস্তানের তুলনায় এগিয়ে আছে বাংলাদেশ। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেও বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সাফল্যের বিষয় আলোচিত হচ্ছে অনেক দিন ধরে। নিউইয়র্কভিত্তিক একটি জনপ্রিয় বিজনেস পোর্টাল কোয়ার্টজ ডটকম বলেছে, বিশ্ব অর্থনীতিতে অগ্রসরমাণ এশিয়ার অন্যতম প্রতিনিধিত্বশীল দেশ হচ্ছে বাংলাদেশ।
অথচ এখন পাকিস্তানের অবস্থা কী? গত ২৩ জানুয়ারি পাকিস্তানের অর্থনীতি দেউলিয়ার পথে উল্লেখ করে মার্কিন অর্থনৈতিক একটি সংবাদ সংস্থা যে চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করেছিল, তা যে কতটা সত্য, সেটা স্বীকার করেছেন দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রীও। ১৮ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের শিয়ালকোট শহরে একটি বেসরকারি কলেজের অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তৃতায় প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ বলেছেন, ‘আপনারা হয়তো শুনে থাকবেন যে দেশ দেনার দায়ে ডুবেছে। আর্থিক সংকট চরমে। যা শুনেছেন, তা একেবারে ঠিক। পাকিস্তান দেউলিয়া হওয়ার পথে হাঁটছে এমন নয়, দেউলিয়া হয়ে গেছে।’ মন্ত্রী আরও বলেছেন, ‘আমরা এক দেউলিয়া দেশের বাসিন্দা। লোকজন বলছে, পাকিস্তান দেউলিয়া হওয়ার পথে হাঁটছে এবং সেখানে আর্থিক সংকট চরমে। আসলে দেশ দেউলিয়া হয়ে গেছে। এবার আমাদের নিজের পায়ে দাঁড়াতে হবে।’
১৯ ফেব্রুয়ারি দেশটির প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম দ্য ডন-এ প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে, পাকিস্তানে এখন খাওয়ার পানি, আটা-ময়দার দামও লাগামছাড়া। সাধারণ মানুষের মাথায় হাত। পাকিস্তানে এক লিটার দুধের দাম ২৫০ টাকা। একসময় প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় যা থাকত, সেই মুরগির দামও সাধ্যের বাইরে। এক কেজি মুরগির মাংসের দাম ৭৮০ টাকা।
পাকিস্তানের মূল্যস্ফীতি রেকর্ড উচ্চতায় উঠেছে—৩৮ দশমিক ৪২ শতাংশ। কয়েক মাস ধরেই মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে পাকিস্তান সরকার নানা চেষ্টা করে গেলেও সফলতা পাচ্ছে না। আইএমএফের শর্ত মেনে নতুন করারোপ ও পেট্রলের মূল্যবৃদ্ধির জেরে মূল্যস্ফীতির সূচক এতটা উঠেছে যে ১৬ ফেব্রুয়ারি থেকেই পাকিস্তানে প্রতি লিটার পেট্রলের দাম ২২ টাকা ২০ পয়সা বেড়ে হয়েছে ২৭২ টাকা; যা সর্বকালের রেকর্ড। পাকিস্তানে খোলা দুধের দাম এখন প্রতি লিটার ২১০ রুপি।
লাহোরে ১৫ কেজি আটার ব্যাগ বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৫০ রুপি। ইতিহাসে এই প্রথম পাকিস্তানে ২০ কেজি আটার বস্তার দাম হয়েছে ৩ হাজার রুপি। করাচি শহরে ১ কেজি আটার দাম ১৫০ রুপি। কয়েক সপ্তাহে সেখানে ২০ কেজি আটার বস্তার দাম বেড়েছে ৪০০ রুপি।
দেশের এই পরিস্থিতির জন্য পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) নেতা খাজা আসিফ সাবেক ইমরান খান সরকারকে দায়ী করে বলেছেন, ইমরানের সরকারের আমলেই দেশে ফের সন্ত্রাসবাদের আমদানি হয়েছে। সন্ত্রাসবাদ পাকিস্তানের ‘নিয়তি’ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বছরের শুরুতে ৩০ জানুয়ারি পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ খাইবার পাখতুনখাওয়ার পেশোয়ারের মসজিদে আত্মঘাতী হামলায় নিহতের সংখ্যা শতাধিক। পেশোয়ার পুলিশের সদর দপ্তরের মসজিদে চালানো এই হামলায় দেশটির জঙ্গিগোষ্ঠী তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান বা টিটিপি জড়িত বলে ধারণা করা হচ্ছে। নিহত ব্যক্তিদের বেশির ভাগই পুলিশ বাহিনীর সদস্য। হামলার সময় তাঁরা মসজিদে জোহরের নামাজ আদায় করছিলেন। এর এক দিন পরই পাঞ্জাব প্রদেশে পুলিশ স্টেশনে ঢুকে আবার হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা। টিটিপি আক্রমণ চালানোর জন্য আফগান অঞ্চলকে নিরাপদ আশ্রয় হিসেবে ব্যবহার করছে।
পাঠান মাদ্রাসাছাত্রদের ১৩টি সংগঠন মিলে ২০০৭ সালে বাইতুল্লাহ্ মেহ্সুদের নেতৃত্বে টিটিপি গঠিত হয়। টিটিপি আফগানিস্তানের তালেবানদের মতো পাকিস্তানের গণতান্ত্রিক সরকারকে উচ্ছেদ করে তালেবানি সরকার গঠন করতে চায়। আধুনিক শিক্ষাবিরোধী এই জঙ্গি সংগঠন ২০১৪ সালে পেশোয়ারের একটি স্কুলে হামলা চালিয়ে ১৫০ শিক্ষার্থীকে হত্যা করে।
আমেরিকার আশীর্বাদ এবং পাকিস্তানের সহযোগিতায় ১৯৯৬ সালে তালেবানরা প্রথম কাবুল দখল করে এবং তখন থেকে পাকিস্তান আফগান-তালেবানদের বন্ধু। পাকিস্তানের সমর্থনে প্রায় ২০ বছর পর ২০২১ সালে আবার ক্ষমতায় ফিরে এসেছে তালেবানরা। তালেবানদের বিজয়ের পর উল্লাসও করেছিল পাকিস্তান। পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান তালেবানদের কাবুল দখলকে ‘দাসত্বের শিকল’ ভাঙার সঙ্গে তুলনা করেছিলেন।
পাকিস্তানের ধারণা ছিল, তালেবান সরকার পাকিস্তানের ওপর নির্ভরশীল থাকবে, পাকিস্তানের পরামর্শে আফগান পররাষ্ট্রনীতি পরিচালিত হবে। কিন্তু বাস্তবে হয়েছে উল্টো। তালেবানের উত্থানকে স্বাগত জানিয়ে পাকিস্তান মূলত সন্ত্রাসবাদকে আলিঙ্গন করেছে। মার্কিন সেনা প্রত্যাহার করার পর আফগান সরকারের ওপর দেশটির প্রভাব বিস্তারের আকাঙ্ক্ষা ব্যর্থ হয়েছে।
সন্ত্রাসী তৎপরতা বন্ধ করার উপায় যেমন পাকিস্তান পাচ্ছে না, তেমনি অর্থনৈতিক সংকটও এখন চরমে। বর্তমানে দেশটিতে বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চয় তলানিতে। এই পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের মন্ত্রীই সে দেশকে ‘দেউলিয়া’ ঘোষণা করলেন। পাকিস্তানে মূল্যবৃদ্ধি আকাশচুম্বী। বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভও প্রায় শেষ। নতুন করে ঋণ দিতে চাইছে না আইএমএফসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা। এই পরিস্থিতিতে দেশের অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় সরকারি ব্যয় হ্রাস করে কৃচ্ছ্রসাধনের নীতি ঘোষণাসহ বিনা বেতনে কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ এবং তাঁর দল পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজের (পিএমএল-এন) মন্ত্রীরা।
প্রবল অর্থসংকট মোকাবিলায় এরই মধ্যে সরকারি কর্মীদের বেতন কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির জোট সরকার। মন্ত্রী এবং পার্লামেন্ট সদস্যদের বেতন ও ভাতায় কেন কোপ পড়বে না, সে প্রশ্নও তুলেছিল সে দেশের প্রধান বিরোধী দল পিটিআই এবং কয়েকটি সংবাদমাধ্যম।
এই পরিস্থিতিতে ১৫ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শাহবাজসহ পিএমএল-এনের ১২ জন পূর্ণ মন্ত্রী এবং ৩ জন প্রতিমন্ত্রী বিনা বেতনে কাজ করার সিদ্ধান্ত নেন। যদিও জোট সরকারের আরেক গুরুত্বপূর্ণ দল আসিফ আলী জারদারি ও বিলাওয়াল ভুট্টোর পিপিপি এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি।
অন্যদিকে কাঁচামাল আমদানিতে সীমাবদ্ধতা এবং বন্দরে আটকে থাকা কনটেইনার ছাড় করাতে দেরি হওয়ায় পাকিস্তানে যেকোনো সময় দক্ষিণ কোরিয়ার কোম্পানিগুলোর কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
সম্প্রতি দ্য ডনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে কোরিয়া ট্রেড-ইনভেস্টমেন্ট প্রোমোশন এজেন্সির জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা এবং লোকাল চেম্বার অব কোরিয়ার বিনিয়োগকারীরা জানিয়েছেন, কাঁচামাল আমদানিতে লেটার অব ক্রেডিট খুলতে না পারার কারণে তাঁদের কোম্পানিগুলোর কয়েক মিলিয়ন ডলার ক্ষতি হচ্ছে।
পাকিস্তানের অর্থনীতি এখন ডলারসংকটে ভুগছে, যে কারণে প্রায় সব ধরনের আমদানি সীমাবদ্ধ হয়ে গেছে। বর্তমানে পাকিস্তানের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ রয়েছে ৩ দশমিক ১৯ বিলিয়ন ডলার, যা দিয়ে ২০ দিনের আমদানি ব্যয়ও মেটানো যাবে না।
২০২২ সালের পুরোটাই পাকিস্তানে বৈদেশিক মুদ্রার সংকট ছিল। ২০২৩-এর শুরুতে এসে পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়েছে। জ্বালানি সংকট মোকাবিলায় ২০২২ সালের মাঝামাঝি রাত ৯টার মধ্যে বাজার, শপিং মল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল। এমনকি দেশের অর্থনীতি বাঁচাতে পরিকল্পনামন্ত্রী দেশবাসীকে দৈনিক চা-পানের পরিমাণ ১ বা ২ কাপ কমানোর অনুরোধ জানিয়ে বলেছিলেন, আমরা ধার করে চা আমদানি করছি। ২০২২ সালে ৬০০ মিলিয়ন ডলার মূল্যমানের চা আমদানি করে পাকিস্তান বিশ্বের শীর্ষ চা আমদানিকারক দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
চরম অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যেও পাকিস্তানে কানাডার টিম হরটন্স কফি শপ বিলাসবহুল লাহোর শপিং মলে শাখা খুলে বিরাট সাফল্য পেয়েছে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে ভোক্তারা কফি বা প্যাস্ট্রির স্বাদ নিচ্ছেন। একজন মেডিকেল শিক্ষার্থী সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, যাঁরা কফি খেতে আসছেন, তাঁদের কাছে উচ্চমূল্য কোনো বিষয় নয়। পাকিস্তানের ধনী মানুষ আরও ধনী হচ্ছে, গরিব আরও গরিব হচ্ছে এবং মধ্যবিত্তরা দুর্দশায় আছে।
বাংলাদেশের অবস্থা কেমন? স্বল্পোন্নত দেশের কাতার থেকে মধ্যম আয়ের দেশে উঠে আসার ক্ষেত্রে মাথাপিছু জাতীয় আয়, মানবসম্পদ উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা সূচকের অন্তত দুটি পূরণ করতে হয়। স্বল্পোন্নত দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশই প্রথম দেশ হিসেবে তিনটি সূচকের সব কটি পূরণ করে পরবর্তী ধাপে উন্নীত হয়েছে, যা আমাদের জন্য গর্বের বিষয়। ২০২২ সালের সূচক অনুযায়ী বাংলাদেশ এখন বিশ্বের ৩৫তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ। ব্রিটেনের অর্থনৈতিক গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর ইকোনমিকস অ্যান্ড বিজনেস রিসার্চ তাদের সর্বশেষ এক রিপোর্টে জানায়, ২০৩০ সাল নাগাদ বাংলাদেশ ২৫তম অর্থনীতির দেশ হবে। এ ছাড়া অন্যান্য অর্থনৈতিক জরিপের ভবিষ্যদ্বাণী অনুযায়ী, বাংলাদেশ ২০৪৩ সাল নাগাদ ২১তম শক্তিশালী অর্থনৈতিক দেশ হতে যাচ্ছে। মাথাপিছু আয়ের হিসাবে প্রায় চার বছর আগেই পাকিস্তানকে অতিক্রম করেছে বাংলাদেশ। ২০২১-২২ অর্থবছরে পাকিস্তানের মাথাপিছু আয় ছিল ১ হাজার ১০০ ডলার। ওই একই বছর বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় বেড়ে দাঁড়ায় ২ হাজার ৮২৪ ডলার। করোনার মধ্যেও বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় বেড়েছে ৯ শতাংশ। অন্যদিকে বর্তমানে পাকিস্তানের মাথাপিছু আয় ১ হাজার ৫৪৩ ডলার।
এই যে পাকিস্তানকে পেছনে ফেলে বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়া, এটা নিশ্চয়ই স্বস্তির। কিন্তু একই সঙ্গে সতর্কতারও বিষয় অবশ্যই। পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী দেশটির দেউলিয়া হওয়ার জন্য ক্ষমতাচক্র, আমলাতন্ত্র, রাজনীতিবিদ–সবাইকে দায়ী করে বলেছেন, ৩৩ বছর তিনি পাকিস্তানের সংসদ সদস্য। এর মধ্যে ৩২ বছর ধরেই তিনি রাজনীতির অবক্ষয় দেখছেন।
আমাদের রাজনীতি কি অবক্ষয়ের ধারা থেকে মুক্ত? রাজনীতিতে সেতু তৈরি করতে না পারার কথা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের নিজেই বলেছেন।
বিভুরঞ্জন সরকার, জ্যেষ্ঠ সহকারী সম্পাদক আজকের পত্রিকা
জমির মালিক হযরত শাহ্ আলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। তবে ওই জমিতে ৩৯১টি দোকান নির্মাণ করে কয়েক বছর ধরে ভাড়া নিচ্ছে হযরত শাহ্ আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজ। দোকানগুলোর ভাড়া থেকে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ৭০ লাখ টাকা ভ্যাটও দেওয়া হয়নি। বিষয়টি উঠে এসেছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) তদন্তে।
১ দিন আগেকুড়িগ্রাম পৌর শহরে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী ছোট ভাই নিহত ও বড় ভাই আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে মৎস্য খামারের কাছে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
৫ দিন আগেবৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগের মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১৮ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত শনিবার রাতে ও গতকাল রোববার তাঁরা গ্রেপ্তার হন।
৫ দিন আগেএক অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটেছে শিল্পকলা একাডেমিতে। শিল্পকলা একাডেমির তিনটি হলেই কিছুদিন আগেও নাটক চলত। নাট্যকর্মীদের সৃজনশীলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটত সেখানে। বহু পরিশ্রমে মাসের পর মাস নিজের খেয়ে, নিজের গাড়িভাড়া দিয়ে নাট্যকর্মীরা একেবারেই স্বেচ্ছাশ্রমে একটি শিল্প তিপ্পান্ন বছর ধরে গড়ে তুলেছেন। শিল্পকলা একাডেমি এখন
৮ দিন আগে