নওগাঁয় বাসশ্রমিক ও অটোরিকশাচালকের দ্বন্দ্বের জেরে পূর্বঘোষণা ছাড়াই বালুডাঙ্গা কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল থেকে অভ্যন্তরীণ সব পথে বাস চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এই ঘোষণার ৯ ঘণ্টা পর বাস চলাচল আবারও শুরু হয়েছে। এর আগে সকাল থেকে হঠাৎ বাস বন্ধের ঘোষণায় যাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে পড়ে।

জানা গেছে, গতকাল বুধবার সকাল ৬টায় অভ্যন্তরীণ রুটে বাস চলাচল বন্ধ ঘোষণা করে জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়ন এবং জেলা সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপ। যদিও বাসশ্রমিক ও অটোরিকশাচালকের দ্বন্দ্বে গত মঙ্গলবার বিকেল ৫টায় বাস বন্ধের ডাক দেওয়া হয়েছে বলেও কেউ কেউ দাবি করেছেন। এ ঘটনায় গতকাল দুপুরে প্রশাসন, বাসমালিক, শ্রমিকসংগঠন ও অটোরিকশা সমিতির নেতাদের সঙ্গে বৈঠক হয়। বৈঠকে বাস চালুর সিদ্ধান্তে আসেন শ্রমিকনেতারা। এরপর বেলা আড়াইটা থেকে বাস চলাচল শুরু হয়।

বাসশ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার বিকেলে একটি বাস টার্মিনালে ঢোকার সময় সড়কের পাশে অটোরিকশা দাঁড়িয়ে থাকায় যানজটের সৃষ্টি হয়। ওই সময় বাসচালক অটোরিকশা সরিয়ে নিতে বললে কয়েকজন অটোরিকশাচালক বাসের চালক ও তাঁর সহকারীকে কিলঘুষি মারেন। এর প্রতিবাদে অনির্দিষ্টকালের জন্য বাস চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়। তাঁদের দাবি ছিল, টার্মিনালের চারপাশে অবৈধ যান চলাচল বন্ধ এবং মোটরশ্রমিককে মারধরের ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের শাস্তি।

গতকাল সকাল ১০টায় বালুডাঙ্গা বাস টার্মিনালে গিয়ে দেখা যায়, টার্মিনাল থেকে কোনো প্রকার বাস চলাচল করছে না। বাসগুলো সারিবদ্ধ করে রাখা হয়েছে। চালক ও শ্রমিকেরা অলস সময় পার করছেন। বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা যাত্রীরা দীর্ঘ সময় অনিশ্চয়তার মধ্যে অপেক্ষা করছিল। অনেকে জরুরি প্রয়োজনে বেরিয়েও বিফল হয়ে বাড়ি ফিরছে। আবার কেউ কেউ বিকল্প পথে গন্তব্যের উদ্দেশে রওনা হয়েছে।

সে সময় যাত্রীরা অভিযোগ করে বলেন, এমনিতেই বাস চলাচল না করা মানেই যাত্রীদের দুর্ভোগ। পূর্বঘোষণা না থাকায় বাস টার্মিনালে গিয়ে মানুষ ভোগান্তির শিকার হচ্ছে।

বগুড়া থেকে আসা জাহিদুর রহমান বলেন, ধামইরহাট যাওয়ার জন্য গতকাল বাস টার্মিনালে আসেন তিনি। কিন্তু বাস চলাচল না করায় গন্তব্যে যাওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়ে।

বাসচালক মামুনুর রহমান বলেন, টার্মিনালের চারপাশে অবৈধ যান চলাচলের জন্য খুব সমস্যা হয়। অনেক সময় দুর্ঘটনাও ঘটে। তাঁর দাবি, টার্মিনালের এই অংশে যাতে কোনো অবৈধ যান চলাচল করতে না পারে।

মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আজাহার হোসেন বলেন, গতকাল দুপুরে বাসশ্রমিক ও অটোরিকশাচালকের দ্বন্দ্ব নিরসনে এক বৈঠকে বসা হয়। এ সময় সদর থানা-পুলিশ, ট্রাফিক পরিদর্শক (টিআই) ও উভয় পক্ষের মালিক-শ্রমিকনেতারা উপস্থিত ছিলেন। আলোচনার পর ফের বাস চলাচলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

জেলা অটোরিকশা মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক দুলাল মণ্ডল বলেন, ‘দুই পক্ষের মধ্যে কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সেখানে আমাদের শ্রমিকেরাও আহত হয়েছেন। এটা খুবই সামান্য ঘটনা। পরে বৈঠকে বসে বিষয়টি সমাধান করা হয়েছে।’