নারায়ণগঞ্জ শহরের যোগাযোগব্যবস্থা উন্নত ও আধুনিক করতে নতুন মহাপরিকল্পনা হাতে নিতে যাচ্ছে সিটি করপোরেশন। এতে যানজট মোকাবিলায় সিটি করপোরেশন এলাকায় এলআরটি (লাইট রেল ট্রানজিট) নির্মাণের প্রস্তাব পাওয়া গেছে, যা শহরের সঙ্গে বন্দর এবং সিদ্ধিরগঞ্জকে যুক্ত করবে। একই সঙ্গে শহরের দুই নম্বর রেলগেট থেকে কমলাপুর পর্যন্ত সড়ক নির্মাণের প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়েছে।

মহাপরিকল্পনা নিয়ে গত বুধবার সিটি করপোরেশনের নগর ভবনে অংশীদার প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে আলোচনা সভা হয়। এতে অংশ নেয় সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর, বিআইডব্লিউটিএ, বিআরটিএ, এলজিইডি, জেলা প্রশাসন, জেলা পুলিশসহ একাধিক সংস্থা। এতে সড়ক ও রেলের পাশাপাশি নৌপথেও যাত্রী পরিবহনের প্রস্তাব উঠে আসে। সড়ক কমলাপুর পর্যন্ত সম্প্রসারণ সম্ভব না হলেও যতটা সম্ভব ঢাকার কাছাকাছি পর্যন্ত নির্মাণের বাস্তবতা পর্যালোচনার নির্দেশ দিয়েছেন সিটি মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী।

সিটি করপোরেশন সূত্র বলছে, নারায়ণগঞ্জ শহরের একমাত্র রাস্তা বঙ্গবন্ধু সড়ক। স্বাধীনতার পর এই শহরের ভেতর আর কোনো নতুন রাস্তা নির্মাণ হয়নি। শহরের প্রবেশমুখ এবং শহর থেকে বের হওয়ার পথগুলো সম্প্রসারিত হলেও ভেতরের অবস্থা রয়ে গেছে আগের মতোই। পাশের বিভিন্ন ভবনের কারণে সড়ক সম্প্রসারণ করাও অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ ছাড়া ইজিবাইক, ভাসমান দোকান, অনিয়ন্ত্রিত ট্রাফিক ব্যবস্থা সমস্যাকে আরও জটিল করে তুলছে।

অনুষ্ঠানে মেয়র আইভী জানান, চাষাঢ়া থেকে কমলাপুর পর্যন্ত সড়ক নির্মাণে জোর দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি শহরের ভেতর এলআরটি নির্মাণ করতে হবে। একই সঙ্গে শীতলক্ষ্যা দিয়ে বন্দরের মদনগঞ্জ থেকে কাঁচপুর পর্যন্ত নদীপথে যাত্রীসেবা পরিচালনা করা গেলে সড়কের ওপর চাপ কমবে।

যানজটের বিষয়ে সড়ক ও জনপথের নির্বাহী প্রকৌশলী শাহানা ফেরদৌস বলেন, ‘পরিকল্পনা রয়েছে চাষাঢ়া মোড়ের আগেই একটি ফ্লাইওভার নির্মাণ করে সাইনবোর্ডমুখী সড়ক ও আদমজী সড়কে সংযোগ দেওয়া। তাহলে মূল নারায়ণগঞ্জ শহরে যানবাহনের চাপ কিছুটা কমবে।’

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে সিটি করপোরেশনের নগর পরিকল্পনাবিদ মঈনুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা প্রস্তাবগুলো গুরুত্বসহকারে নিয়েছি। এগুলো নিয়ে প্রতিটি অংশীদার প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলাদাভাবে বসব। তারপর সমন্বয়ের মাধ্যমে আগামী ৮ মাসের মধ্যে নারায়ণগঞ্জের পরিবহন মাস্টারপ্ল্যান দাঁড় করানোর সর্বোচ্চ 
চেষ্টা করা হবে।’