শিহাব আহমেদ
স্বামীর কারণে নিষিদ্ধ
একসময় বিটিভি ও বেতারে নিয়মিত গাইতাম। হঠাৎ করেই আমাকে ডাকা বন্ধ হয়ে যায়। প্রথম প্রথম ভাবতাম, নতুন শিল্পীরা আসছে, তাদেরও সুযোগ দিতে হবে। আমাকেও হয়তো ডাকা হবে। কিন্তু আমাকে ডাকে না। অনুষ্ঠানে নাম থাকলেও শেষ পর্যন্ত কেটে দেওয়া হয়। একদিন বিটিভির প্রধানকে বললাম, ‘আমাকে নিতে হবে না। শুধু জানতে চাই, কে আমাকে ডাকতে নিষেধ করেছে, আর কারণটা কী?’ তিনি আমাকে বলেন, ‘আপনাকে কেন বাদ দেওয়া হবে?’ তিনি বিষয়টা এড়িয়ে যান। একসময় জানতে পারি, নিষিদ্ধ হওয়ার কারণ আমি নই, আমার স্বামী। আমার স্বামী ড. রফিকুল মোহামেদ কোনো এক সময়ে কোনো জেলার ডিসি ছিলেন। তাই মনে করা হতো, তিনি বিরোধী দলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। সরকারি চাকরি করে তিনি যদি কোনো অন্যায় করেন, তাহলে সে শাস্তি তিনি পাবেন। শিল্পীকে কেন শাস্তি দেওয়া হলো।
সরকারি অনুষ্ঠানে নাম কেটে দেওয়া
বাংলাদেশ থেকে সাংস্কৃতিক দল প্যারিসে যাবে অনুষ্ঠান করতে। আমাকে জানানো হলো, আমার নাম আছে। প্যারিসের রাষ্ট্রদূত ও তাঁর স্ত্রীও আমাকে ফোন করে বললেন, ‘আপনাকে কিন্তু আসতে হবে।’ পুরো প্রস্তুতি নেওয়ার পর দেখি, আমার কাছে আর ফোন আসে না। পরে আমাকে জানানো হয়, আপনার নাম কাটা গেছে। দুবাইয়ে এক সরকারি অনুষ্ঠানের জন্য পাসপোর্ট জমা দিতে বলার দুদিন পর আমাকে জানানো হলো, অনুষ্ঠান স্থগিত হয়েছে। পরে দেখি অনেকেই সেই অনুষ্ঠানে পারফর্ম করে এসেছে। এমন আরও অনেক ঘটনা আছে।
অনুষ্ঠান থেকে কেঁদে বের হয়েছি
শিল্পকলা নিয়েও বাজে অভিজ্ঞতা আছে আমার। অনেক বছর আগে আর্মি স্টেডিয়ামে শিল্পকলার একটি অনুষ্ঠান ছিল। সেখানে বিগত সরকারের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। অনুষ্ঠানের আগের দিন রিহার্সালের সময় দেখি, শিল্পকলার শীর্ষস্থানীয়রা তাঁদের কাছের মানুষদের প্রথম সারিতে দাঁড় করিয়ে দিলেন। আমাকে আর আবিদা সুলতানাকে দিলেন ১০০ জনের পেছনে এক কোনায়। পরের দিন আমি শিল্পকলার প্রধান ও তাঁর সঙ্গীদের হাসতে হাসতে বললাম, ‘মাঝখানে যাঁরা দাঁড়িয়ে আছেন, তাঁরা কারা? এত দিন আমরা কি তাহলে ঘাস কাটলাম?’ এরপর আমাকে তাঁরা অকথ্য ভাষায় গালাগালি শুরু করলেন। তাঁদের ব্যবহারে আমি স্তব্ধ হয়ে গেলাম, ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকলাম।
আমার চোখ দিয়ে টপটপ করে পানি পড়ছে। সেই অবস্থায় সোহরাব নামের একজন আমার চোখের সামনে আঙুল তাক করে চিৎকার করে বলে, ‘অত বড় চোখ দিয়ে আমাকে খেয়ে ফেলবেন নাকি?’ এমন অবস্থায় (রেজওয়ানা চৌধুরী) বন্যা আপার একজন শিক্ষার্থী এসে বলে, ‘ভেরি গুড, একদম উচিত শিক্ষা দিয়েছেন।’ সেদিন আমার হার্ট অ্যাটাক হওয়ার মতো অবস্থা হয়েছিল। এরপর আমাকে বলে, ‘চলে যান।’ কিন্তু বুঝতে পারছিলাম, প্রোগ্রাম শেষ করে না গেলে আমার আরও ক্ষতি হতে পারে। আমাকে উল্টো দোষ দেওয়া হবে। তাই চোখের পানি ফেলতে ফেলতে শেষ সারিতে কোনায় গিয়ে দাঁড়ালাম। দেয়ালের সঙ্গে মাথা ঠেকিয়ে কাঁদতে কাঁদতে গানে ঠোঁট মেলালাম। এর পর থেকে আর কোনো দিন শিল্পকলার পথে পা দিইনি। আমাকেও কোনো অনুষ্ঠানে ডাকা হয়নি।
১৫ বছর পর বিটিভি ও বেতারে গাওয়া
দীর্ঘ ১৫ বছর পর আবার বিটিভি ও বেতারে গাইলাম। শিল্পী তৈরিতে এ প্রতিষ্ঠান দুটির ভূমিকা অনেক। আমাদের সংগীতের আঁতুড়ঘর বিটিভি ও বাংলাদেশ বেতার। এখানে অনুষ্ঠান করেই আমাদের পরিচিতি এসেছে। এখানে আবার গাইতে পেরে ভীষণ ভালো লাগছে।
সবার আগে গান
সব সময় গানকেই প্রাধান্য দিয়েছি। গানের চর্চা ছাড়া আর কিছু করিনি। ওপরে ওঠার লোভে কখনো ছুটিনি। পরিবার থেকে আমরা এভাবেই বড় হয়েছি। আমি অল্পতেই সন্তুষ্ট। তাই এত নিগ্রহের পরেও আমাকে দমাতে পারেনি। গানটাকে সাধনা করেছি বলেই কখনো অন্য প্রস্তাবের দিকে তাকাইনি। রাজনীতিতে জড়াইনি। সিনেমার নায়িকা হওয়ার প্রস্তাব এসেছিল, রাজি হইনি।
শিল্পীদের ভাগ করতে নেই
শিল্পীদের কোনো কিছু দিয়ে ভাগ করতে নেই। অনেক দেশেই দেখবেন, তারা শিল্পীদের লালনপালন করে, কারণ, শিল্পীদের যেন পেটের চিন্তা করতে না হয়, কাজের জন্য ছুটতে না হয়। শিল্পীরা যেন সাধনায় সময় দিতে পারে, শিল্প ও সংস্কৃতিকে সমৃদ্ধ করতে পারে।
স্বামীর কারণে নিষিদ্ধ
একসময় বিটিভি ও বেতারে নিয়মিত গাইতাম। হঠাৎ করেই আমাকে ডাকা বন্ধ হয়ে যায়। প্রথম প্রথম ভাবতাম, নতুন শিল্পীরা আসছে, তাদেরও সুযোগ দিতে হবে। আমাকেও হয়তো ডাকা হবে। কিন্তু আমাকে ডাকে না। অনুষ্ঠানে নাম থাকলেও শেষ পর্যন্ত কেটে দেওয়া হয়। একদিন বিটিভির প্রধানকে বললাম, ‘আমাকে নিতে হবে না। শুধু জানতে চাই, কে আমাকে ডাকতে নিষেধ করেছে, আর কারণটা কী?’ তিনি আমাকে বলেন, ‘আপনাকে কেন বাদ দেওয়া হবে?’ তিনি বিষয়টা এড়িয়ে যান। একসময় জানতে পারি, নিষিদ্ধ হওয়ার কারণ আমি নই, আমার স্বামী। আমার স্বামী ড. রফিকুল মোহামেদ কোনো এক সময়ে কোনো জেলার ডিসি ছিলেন। তাই মনে করা হতো, তিনি বিরোধী দলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। সরকারি চাকরি করে তিনি যদি কোনো অন্যায় করেন, তাহলে সে শাস্তি তিনি পাবেন। শিল্পীকে কেন শাস্তি দেওয়া হলো।
সরকারি অনুষ্ঠানে নাম কেটে দেওয়া
বাংলাদেশ থেকে সাংস্কৃতিক দল প্যারিসে যাবে অনুষ্ঠান করতে। আমাকে জানানো হলো, আমার নাম আছে। প্যারিসের রাষ্ট্রদূত ও তাঁর স্ত্রীও আমাকে ফোন করে বললেন, ‘আপনাকে কিন্তু আসতে হবে।’ পুরো প্রস্তুতি নেওয়ার পর দেখি, আমার কাছে আর ফোন আসে না। পরে আমাকে জানানো হয়, আপনার নাম কাটা গেছে। দুবাইয়ে এক সরকারি অনুষ্ঠানের জন্য পাসপোর্ট জমা দিতে বলার দুদিন পর আমাকে জানানো হলো, অনুষ্ঠান স্থগিত হয়েছে। পরে দেখি অনেকেই সেই অনুষ্ঠানে পারফর্ম করে এসেছে। এমন আরও অনেক ঘটনা আছে।
অনুষ্ঠান থেকে কেঁদে বের হয়েছি
শিল্পকলা নিয়েও বাজে অভিজ্ঞতা আছে আমার। অনেক বছর আগে আর্মি স্টেডিয়ামে শিল্পকলার একটি অনুষ্ঠান ছিল। সেখানে বিগত সরকারের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। অনুষ্ঠানের আগের দিন রিহার্সালের সময় দেখি, শিল্পকলার শীর্ষস্থানীয়রা তাঁদের কাছের মানুষদের প্রথম সারিতে দাঁড় করিয়ে দিলেন। আমাকে আর আবিদা সুলতানাকে দিলেন ১০০ জনের পেছনে এক কোনায়। পরের দিন আমি শিল্পকলার প্রধান ও তাঁর সঙ্গীদের হাসতে হাসতে বললাম, ‘মাঝখানে যাঁরা দাঁড়িয়ে আছেন, তাঁরা কারা? এত দিন আমরা কি তাহলে ঘাস কাটলাম?’ এরপর আমাকে তাঁরা অকথ্য ভাষায় গালাগালি শুরু করলেন। তাঁদের ব্যবহারে আমি স্তব্ধ হয়ে গেলাম, ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকলাম।
আমার চোখ দিয়ে টপটপ করে পানি পড়ছে। সেই অবস্থায় সোহরাব নামের একজন আমার চোখের সামনে আঙুল তাক করে চিৎকার করে বলে, ‘অত বড় চোখ দিয়ে আমাকে খেয়ে ফেলবেন নাকি?’ এমন অবস্থায় (রেজওয়ানা চৌধুরী) বন্যা আপার একজন শিক্ষার্থী এসে বলে, ‘ভেরি গুড, একদম উচিত শিক্ষা দিয়েছেন।’ সেদিন আমার হার্ট অ্যাটাক হওয়ার মতো অবস্থা হয়েছিল। এরপর আমাকে বলে, ‘চলে যান।’ কিন্তু বুঝতে পারছিলাম, প্রোগ্রাম শেষ করে না গেলে আমার আরও ক্ষতি হতে পারে। আমাকে উল্টো দোষ দেওয়া হবে। তাই চোখের পানি ফেলতে ফেলতে শেষ সারিতে কোনায় গিয়ে দাঁড়ালাম। দেয়ালের সঙ্গে মাথা ঠেকিয়ে কাঁদতে কাঁদতে গানে ঠোঁট মেলালাম। এর পর থেকে আর কোনো দিন শিল্পকলার পথে পা দিইনি। আমাকেও কোনো অনুষ্ঠানে ডাকা হয়নি।
১৫ বছর পর বিটিভি ও বেতারে গাওয়া
দীর্ঘ ১৫ বছর পর আবার বিটিভি ও বেতারে গাইলাম। শিল্পী তৈরিতে এ প্রতিষ্ঠান দুটির ভূমিকা অনেক। আমাদের সংগীতের আঁতুড়ঘর বিটিভি ও বাংলাদেশ বেতার। এখানে অনুষ্ঠান করেই আমাদের পরিচিতি এসেছে। এখানে আবার গাইতে পেরে ভীষণ ভালো লাগছে।
সবার আগে গান
সব সময় গানকেই প্রাধান্য দিয়েছি। গানের চর্চা ছাড়া আর কিছু করিনি। ওপরে ওঠার লোভে কখনো ছুটিনি। পরিবার থেকে আমরা এভাবেই বড় হয়েছি। আমি অল্পতেই সন্তুষ্ট। তাই এত নিগ্রহের পরেও আমাকে দমাতে পারেনি। গানটাকে সাধনা করেছি বলেই কখনো অন্য প্রস্তাবের দিকে তাকাইনি। রাজনীতিতে জড়াইনি। সিনেমার নায়িকা হওয়ার প্রস্তাব এসেছিল, রাজি হইনি।
শিল্পীদের ভাগ করতে নেই
শিল্পীদের কোনো কিছু দিয়ে ভাগ করতে নেই। অনেক দেশেই দেখবেন, তারা শিল্পীদের লালনপালন করে, কারণ, শিল্পীদের যেন পেটের চিন্তা করতে না হয়, কাজের জন্য ছুটতে না হয়। শিল্পীরা যেন সাধনায় সময় দিতে পারে, শিল্প ও সংস্কৃতিকে সমৃদ্ধ করতে পারে।
জমির মালিক হযরত শাহ্ আলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। তবে ওই জমিতে ৩৯১টি দোকান নির্মাণ করে কয়েক বছর ধরে ভাড়া নিচ্ছে হযরত শাহ্ আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজ। দোকানগুলোর ভাড়া থেকে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ৭০ লাখ টাকা ভ্যাটও দেওয়া হয়নি। বিষয়টি উঠে এসেছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) তদন্তে।
১ দিন আগেকুড়িগ্রাম পৌর শহরে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী ছোট ভাই নিহত ও বড় ভাই আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে মৎস্য খামারের কাছে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
৫ দিন আগেবৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগের মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১৮ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত শনিবার রাতে ও গতকাল রোববার তাঁরা গ্রেপ্তার হন।
৫ দিন আগেএক অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটেছে শিল্পকলা একাডেমিতে। শিল্পকলা একাডেমির তিনটি হলেই কিছুদিন আগেও নাটক চলত। নাট্যকর্মীদের সৃজনশীলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটত সেখানে। বহু পরিশ্রমে মাসের পর মাস নিজের খেয়ে, নিজের গাড়িভাড়া দিয়ে নাট্যকর্মীরা একেবারেই স্বেচ্ছাশ্রমে একটি শিল্প তিপ্পান্ন বছর ধরে গড়ে তুলেছেন। শিল্পকলা একাডেমি এখন
৮ দিন আগে