এ আর চন্দন, ঢাকা
পরপর দুদিন মুজিব-ইয়াহিয়া বৈঠকের পর পরবর্তী বৈঠকের কোনো সময় নির্ধারিত না হওয়ায় জনমনে উৎকণ্ঠা দেখা দেয়। একাত্তরের ১৮ মার্চ বৃহস্পতিবার কোনো বৈঠক হয়নি। দিনব্যাপী জনতার মিছিলের পর রাতে সরকারিভাবে ঘোষণা করা হয়, পরদিন শুক্রবার বেলা ১১টায় প্রেসিডেন্ট ভবনে আওয়ামী লীগপ্রধান শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের মধ্যে রাজনৈতিক সংকট নিয়ে তৃতীয় দফা আলোচনা হবে। পরদিন ঢাকার সব সংবাদপত্রে প্রথম পাতায় খবরটি ছাপা হয়।
নতুন বৈঠকের ঘোষণা আসার আগ পর্যন্ত জনতা তাদের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতীক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাসভবনে ভিড় জমিয়ে থাকে। দিনভর মিছিলের পর বিভিন্ন পর্যায়ে মানুষ স্বাধীনতাসংগ্রামের অবিসংবাদিত নেতার প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন জানাতে এলে বঙ্গবন্ধু সহকর্মীদের সঙ্গে আলোচনার ফাঁকে ফাঁকে বারবার উঠে এসে সমবেত জনতার উদ্দেশে সংক্ষিপ্ত ভাষণ দেন। তিনি বলেন, ‘বিদেশি বন্ধুরা দেখুন। আমার দেশের মানুষ প্রতিজ্ঞায় কী অটল। সংগ্রাম আর ত্যাগের মর্মে কত উজ্জীবিত, কার সাধ্য এদের রোখে।
স্বাধীনতার জন্য জীবনদানের অগ্নিশপথে দীপ্ত জাগ্রত জনতার এ জীবন জোয়ারকে, প্রচণ্ড গণবিস্ফোরণকে স্তব্ধ করতে পারে– এমন শক্তি মেশিনগানেরও আজ আর নেই।’ জনতার উদ্দেশে বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘বাংলার মানুষ তোমরা ঘরে ঘরে সংগ্রামী দুর্গ গড়ে তোল। আঘাত যদি আসে, প্রতিহত করো, পাল্টা আঘাত হানো।’ (দৈনিক ইত্তেফাক, ১৯ মার্চ ১৯৭১)
নিরস্ত্র বাঙালিদের ওপর পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর বর্বরোচিত হামলায় হতাহতের ঘটনা তদন্তে সামরিক সরকারের গঠন করা তদন্ত কমিশন প্রত্যাখ্যান করেন বঙ্গবন্ধু। তিনি ওই কমিশনকে কোনো সহযোগিতা না করতেও জনগণের প্রতি আহ্বান। এসবই উঠে আসে পরদিন ঢাকার সব সংবাদপত্রের প্রথম পাতায়। আজাদ পত্রিকার প্রধান শিরোনাম ছিল ‘তদন্ত কমিশন প্রত্যাখ্যান’। শোল্ডারে ছিল ‘বাংলাদেশের জনগণ সহযোগিতা করিবে না: মুজিব’। দৈনিক ইত্তেফাকের প্রধান শিরোনাম ছিল ‘এ গণবিস্ফোরণ মেশিনগানেও স্তব্ধ করা যাইবে না’। পাশে ছিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের তর্জনী উঁচানো একটি স্থিরচিত্র। তার ওপরে ছিল ‘আমি শেখ মুজিব বলছিঃ’।
বঙ্গবন্ধুর ছবির নিচে দুই কলাম শিরোনাম ছিল ‘এ তদন্ত কমিশন চাই না’। দৈনিক পাকিস্তানের প্রধান শিরোনাম ছিল ‘এই কমিশন মানি না’। এর নিচে আরেকটি শিরোনাম ছিল ‘আঘাত করা হলে প্রতিঘাত করবো’।
এদিন অনেক বিদেশি সাংবাদিক বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে এসেছিলেন। পশ্চিম পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশে আরও সৈন্য আনা হচ্ছে, সে-সম্পর্কে বঙ্গবন্ধু কিছু জানেন কি না, বিদেশি এক সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, বাংলাদেশের কোথায় কি হয় না হয় সব খবরই তার জানা। (দৈনিক পাকিস্তান, ১৯ মার্চ ১৯৭১)
এদিন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও ওয়ালী ন্যাপপ্রধান খান আব্দুল ওয়ালী খান এক ঘণ্টার রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন। সেখানে পাকিস্তান ন্যাপের সভাপতি গাউস বক্স বেজেঞ্জোও ছিলেন। ইত্তেফাকে পরদিন প্রধান শিরোনামের নিচে এক কলাম শিরোনাম ছিল ‘মুজিব সকাশে ওয়ালি খান’। আজাদে শিরোনাম করা হয় ‘মুজিব-ওয়ালী সাক্ষাৎকার’। দৈনিক সংবাদে প্রধান শিরোনামের পাশে দুই নেতার ছবিসহ খবরটি ছাপা হয়।
অন্যান্য দিনের মতোই এদিনের অসহযোগ আন্দোলনের খবর পরদিন সব পত্রিকায় প্রথম পাতায় ছাপা হয়। দৈনিক পাকিস্তান ১৯ মার্চ এ-সংক্রান্ত খবরের শিরোনাম করেছিল ‘রাজপথেই জনতার দুর্বার মোর্চা গড়ে উঠেছে’।
ঢাকায় বিমানবাহিনীর সাবেক বাঙালি সৈনিকেরা স্বাধীনতাসংগ্রামের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে সংগ্রাম কমিটি গঠন করেন। (দৈনিক পাকিস্তান, ১৯ মার্চ ১৯৭১, পৃষ্ঠা-৫)
করাচিতে এদিন এক সংবাদ সম্মেলনে পিপিপিপ্রধান জুলফিকার আলী ভুট্টো বলেন, প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া শাসনতান্ত্রিক প্রশ্নে আলোচনার জন্য ঢাকায় আসার যে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন, তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেছেন। খবরটি পরদিন ইত্তেফাকে প্রথম পাতায় ছাপা হয় ‘ভুট্টো আসিতেছেন না...’ শিরোনামে। দৈনিক সংবাদে শিরোনাম ছিল ‘ঢাকায় গিয়া লাভ হইবে না: ভুট্টো’।
চট্টগ্রাম বন্দর অভিমুখে আসা গমভর্তি জাহাজ ‘ইরনা এলিজাবেথ’-এর গতিপথ পরিবর্তন করে করাচিতে নিয়ে যাওয়া হয়। ১৯ মার্চ ইত্তেফাকে প্রথম পাতায় খবরটি ছাপা হয় ‘গমবাহী আরেকটি জাহাজ গেল কোথায়?’ শিরোনামে। দৈনিক পাকিস্তানের শিরোনাম ছিল ‘মাল খালাস না করেই জাহাজগুলো করাচী ফেরত যাচ্ছে: কার নির্দেশে?’
পরপর দুদিন মুজিব-ইয়াহিয়া বৈঠকের পর পরবর্তী বৈঠকের কোনো সময় নির্ধারিত না হওয়ায় জনমনে উৎকণ্ঠা দেখা দেয়। একাত্তরের ১৮ মার্চ বৃহস্পতিবার কোনো বৈঠক হয়নি। দিনব্যাপী জনতার মিছিলের পর রাতে সরকারিভাবে ঘোষণা করা হয়, পরদিন শুক্রবার বেলা ১১টায় প্রেসিডেন্ট ভবনে আওয়ামী লীগপ্রধান শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের মধ্যে রাজনৈতিক সংকট নিয়ে তৃতীয় দফা আলোচনা হবে। পরদিন ঢাকার সব সংবাদপত্রে প্রথম পাতায় খবরটি ছাপা হয়।
নতুন বৈঠকের ঘোষণা আসার আগ পর্যন্ত জনতা তাদের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতীক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাসভবনে ভিড় জমিয়ে থাকে। দিনভর মিছিলের পর বিভিন্ন পর্যায়ে মানুষ স্বাধীনতাসংগ্রামের অবিসংবাদিত নেতার প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন জানাতে এলে বঙ্গবন্ধু সহকর্মীদের সঙ্গে আলোচনার ফাঁকে ফাঁকে বারবার উঠে এসে সমবেত জনতার উদ্দেশে সংক্ষিপ্ত ভাষণ দেন। তিনি বলেন, ‘বিদেশি বন্ধুরা দেখুন। আমার দেশের মানুষ প্রতিজ্ঞায় কী অটল। সংগ্রাম আর ত্যাগের মর্মে কত উজ্জীবিত, কার সাধ্য এদের রোখে।
স্বাধীনতার জন্য জীবনদানের অগ্নিশপথে দীপ্ত জাগ্রত জনতার এ জীবন জোয়ারকে, প্রচণ্ড গণবিস্ফোরণকে স্তব্ধ করতে পারে– এমন শক্তি মেশিনগানেরও আজ আর নেই।’ জনতার উদ্দেশে বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘বাংলার মানুষ তোমরা ঘরে ঘরে সংগ্রামী দুর্গ গড়ে তোল। আঘাত যদি আসে, প্রতিহত করো, পাল্টা আঘাত হানো।’ (দৈনিক ইত্তেফাক, ১৯ মার্চ ১৯৭১)
নিরস্ত্র বাঙালিদের ওপর পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর বর্বরোচিত হামলায় হতাহতের ঘটনা তদন্তে সামরিক সরকারের গঠন করা তদন্ত কমিশন প্রত্যাখ্যান করেন বঙ্গবন্ধু। তিনি ওই কমিশনকে কোনো সহযোগিতা না করতেও জনগণের প্রতি আহ্বান। এসবই উঠে আসে পরদিন ঢাকার সব সংবাদপত্রের প্রথম পাতায়। আজাদ পত্রিকার প্রধান শিরোনাম ছিল ‘তদন্ত কমিশন প্রত্যাখ্যান’। শোল্ডারে ছিল ‘বাংলাদেশের জনগণ সহযোগিতা করিবে না: মুজিব’। দৈনিক ইত্তেফাকের প্রধান শিরোনাম ছিল ‘এ গণবিস্ফোরণ মেশিনগানেও স্তব্ধ করা যাইবে না’। পাশে ছিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের তর্জনী উঁচানো একটি স্থিরচিত্র। তার ওপরে ছিল ‘আমি শেখ মুজিব বলছিঃ’।
বঙ্গবন্ধুর ছবির নিচে দুই কলাম শিরোনাম ছিল ‘এ তদন্ত কমিশন চাই না’। দৈনিক পাকিস্তানের প্রধান শিরোনাম ছিল ‘এই কমিশন মানি না’। এর নিচে আরেকটি শিরোনাম ছিল ‘আঘাত করা হলে প্রতিঘাত করবো’।
এদিন অনেক বিদেশি সাংবাদিক বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে এসেছিলেন। পশ্চিম পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশে আরও সৈন্য আনা হচ্ছে, সে-সম্পর্কে বঙ্গবন্ধু কিছু জানেন কি না, বিদেশি এক সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, বাংলাদেশের কোথায় কি হয় না হয় সব খবরই তার জানা। (দৈনিক পাকিস্তান, ১৯ মার্চ ১৯৭১)
এদিন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও ওয়ালী ন্যাপপ্রধান খান আব্দুল ওয়ালী খান এক ঘণ্টার রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন। সেখানে পাকিস্তান ন্যাপের সভাপতি গাউস বক্স বেজেঞ্জোও ছিলেন। ইত্তেফাকে পরদিন প্রধান শিরোনামের নিচে এক কলাম শিরোনাম ছিল ‘মুজিব সকাশে ওয়ালি খান’। আজাদে শিরোনাম করা হয় ‘মুজিব-ওয়ালী সাক্ষাৎকার’। দৈনিক সংবাদে প্রধান শিরোনামের পাশে দুই নেতার ছবিসহ খবরটি ছাপা হয়।
অন্যান্য দিনের মতোই এদিনের অসহযোগ আন্দোলনের খবর পরদিন সব পত্রিকায় প্রথম পাতায় ছাপা হয়। দৈনিক পাকিস্তান ১৯ মার্চ এ-সংক্রান্ত খবরের শিরোনাম করেছিল ‘রাজপথেই জনতার দুর্বার মোর্চা গড়ে উঠেছে’।
ঢাকায় বিমানবাহিনীর সাবেক বাঙালি সৈনিকেরা স্বাধীনতাসংগ্রামের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে সংগ্রাম কমিটি গঠন করেন। (দৈনিক পাকিস্তান, ১৯ মার্চ ১৯৭১, পৃষ্ঠা-৫)
করাচিতে এদিন এক সংবাদ সম্মেলনে পিপিপিপ্রধান জুলফিকার আলী ভুট্টো বলেন, প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া শাসনতান্ত্রিক প্রশ্নে আলোচনার জন্য ঢাকায় আসার যে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন, তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেছেন। খবরটি পরদিন ইত্তেফাকে প্রথম পাতায় ছাপা হয় ‘ভুট্টো আসিতেছেন না...’ শিরোনামে। দৈনিক সংবাদে শিরোনাম ছিল ‘ঢাকায় গিয়া লাভ হইবে না: ভুট্টো’।
চট্টগ্রাম বন্দর অভিমুখে আসা গমভর্তি জাহাজ ‘ইরনা এলিজাবেথ’-এর গতিপথ পরিবর্তন করে করাচিতে নিয়ে যাওয়া হয়। ১৯ মার্চ ইত্তেফাকে প্রথম পাতায় খবরটি ছাপা হয় ‘গমবাহী আরেকটি জাহাজ গেল কোথায়?’ শিরোনামে। দৈনিক পাকিস্তানের শিরোনাম ছিল ‘মাল খালাস না করেই জাহাজগুলো করাচী ফেরত যাচ্ছে: কার নির্দেশে?’
জমির মালিক হযরত শাহ্ আলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। তবে ওই জমিতে ৩৯১টি দোকান নির্মাণ করে কয়েক বছর ধরে ভাড়া নিচ্ছে হযরত শাহ্ আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজ। দোকানগুলোর ভাড়া থেকে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ৭০ লাখ টাকা ভ্যাটও দেওয়া হয়নি। বিষয়টি উঠে এসেছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) তদন্তে।
১ দিন আগেকুড়িগ্রাম পৌর শহরে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী ছোট ভাই নিহত ও বড় ভাই আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে মৎস্য খামারের কাছে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
৫ দিন আগেবৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগের মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১৮ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত শনিবার রাতে ও গতকাল রোববার তাঁরা গ্রেপ্তার হন।
৫ দিন আগেএক অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটেছে শিল্পকলা একাডেমিতে। শিল্পকলা একাডেমির তিনটি হলেই কিছুদিন আগেও নাটক চলত। নাট্যকর্মীদের সৃজনশীলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটত সেখানে। বহু পরিশ্রমে মাসের পর মাস নিজের খেয়ে, নিজের গাড়িভাড়া দিয়ে নাট্যকর্মীরা একেবারেই স্বেচ্ছাশ্রমে একটি শিল্প তিপ্পান্ন বছর ধরে গড়ে তুলেছেন। শিল্পকলা একাডেমি এখন
৮ দিন আগে