অরূপ রায়, সাভার
এক বছর আগেও যে জমিতে ধান চাষ হতো, সেখানে এখন হচ্ছে মাছ চাষ। কারণ, আবাদি জমির মাটি কেটে দেওয়া হয়েছে ইটভাটায়। আবার কারখানা স্থাপনেও দেওয়া হচ্ছে মাটি। ফসলের জমি কমে যাওয়ায় দিন দিন কৃষি উৎপাদন কমে যাচ্ছে। এই চিত্র ঢাকার কাছের জনপদ ধামরাই উপজেলার।
বছরখানেক আগেও উপজেলার সুতিপাড়া ইউনিয়নের বেলীশ্বর গ্রামের মজিদ ব্যাপারী তাঁর ৮০ শতাংশ জমিতে ধান চাষ করেছিলেন। এবার সেই জমিতে গিয়ে ধানের পরিবর্তে পাওয়া যায় পানি; যেখানে গ্রামের কয়েকজন তরুণ মাছ ধরছিলেন। মজিদ ব্যাপারীর জমি থেকে ১০০ ফুট দূরে একই ইউনিয়নের রক্ষিত গ্রামের মিয়াজ উদ্দিন তাঁর জমিতে বরাবরের মতো এবারও বোরো ধান চাষ করেছেন। তবে পাশের জমির মালিক মাটি বিক্রি করায় ধানসহ তাঁর জমি ভেঙে পড়ছে। মিয়াজ উদ্দিন বলেন, ‘পাশের জমির মাটি বিক্রি করার কারণে আমার জমি যেভাবে ভাইঙা পড়তাছে, তাতে আমারও মাটি বিক্রি কইরা দেওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় নাই। ভবিষ্যতে আইসা আর আমার জমিতে ধান পাইবেন না; দেখবেন পুকুরে মাছ ফাল পাড়তাছে।’
ঢাকা জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ধামরাইয়ে দুই শতাধিক ইটভাটা ও শতাধিক কারখানা রয়েছে। এসব ভাটা আর কারখানায় অন্তত ২ হাজার ৫০০ একর আবাদি জমি আটকে গেছে। আর ভাটা ও কারখানার মাটির জন্য কমেছে আরও কয়েক শ একর জমি। এভাবে প্রতিবছরই কয়েক শ বিঘা চাষের জমি কমে যাচ্ছে।
যদিও ধামরাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয়ে তথ্যের সঙ্গে বাস্তবতার মিল খুঁজে পাওয়া যায়নি। ওই কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১-২২ অর্থবছরে ধামরাইয়ে আবাদি জমির পরিমাণ ছিল ৫৫ হাজার ৫৮২ একর। আর ২০২২-২৩ অর্থবছরের জরিপ অনুযায়ী, ধামরাইয়ে আবাদি জমির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫৫ হাজার ৫৭৫ একরে। এই হিসাব অনুযায়ী, এক বছরে আবাদি জমি কমেছে মাত্র সাত একর। এর আগে কয়েক বছরের গড় তথ্য প্রায় একই। তবে কৃষকেরা ভিন্ন কথা বলছেন। বেলীশ্বর গ্রামের ব্যবসায়ী আবুল হোসেন বলেন, ‘কয়েক বছর আগে বাথুলি থেকে বউবাজার পর্যন্ত প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কের দুই পাশে ছিল সবুজের সমারোহ। প্রচুর ধান চাষ হতো এই এলাকায়। সেই সড়কের উভয় পাশে এখন চাষের জমি খুঁজে পাওয়াই মুশকিল। ইটভাটা আর বড় বড় খাদে ভরে গেছে কয়েক শ বিঘা চাষের জমি।’
তবে কৃষিজমি কমা নিয়ে সচেতনতা নেই। যেমন সপ্তাহখানেক আগে নান্নার ইউনিয়নের রঘুনাথপুর এলাকায় কৃষিজমি থেকে খননযন্ত্র (এক্সকাভেটর) দিয়ে মাটি কাটা হচ্ছিল। নান্নার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বাবুল মোল্লা কয়েক মাস ধরে ওই এলাকায় তাঁদের কয়েক একর জমি থেকে মাটি কেটে ইটভাটায় বিক্রি করছেন বলে জানান খননকাজের সঙ্গে যুক্ত শ্রমিকেরা।
পাশের জমির মাটি বিক্রি করার কারণে আমার জমি যেভাবে ভাইঙা পড়তাছে, তাতে আমারও মাটি বিক্রি কইরা দেওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় নাই। ভবিষ্যতে আইসা আর আমার জমিতে ধান পাইবেন না; দেখবেন পুকুরে মাছ ফাল পাড়তাছে।
মিয়াজ উদ্দিন, ধামরাইয়ের রক্ষিত গ্রামের বাসিন্দা
যোগাযোগ করা হলে বাবুল মোল্লা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ধামরাইয়ে সবাই কৃষিজমির মাটি বিক্রি করছেন; তাই আমিও করছি।’
সাভারের আইনজীবী সোহেল আল মামুন বলেন, ‘জমির শ্রেণি পরিবর্তন ও ইটভাটার জন্য মাটি কাটাতে হলে জেলা প্রশাসকের অনুমতির প্রয়োজন হয়। ধামরাইয়ের ইটভাটার মালিক অথবা মাটি ব্যবসায়ীরা এই নিয়ম মানেন না। এরপরও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। এর ফলে কৃষিজমি থেকে দেদার মাটি কেটে নিচ্ছেন একশ্রেণির ব্যবসায়ী।’
ধামরাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আরিফুর রহমান বলেন, কৃষিজমির মাটি বিক্রি ও কাটা বন্ধে জনসাধারণকে সচেতন করার পাশাপাশি প্রশাসনকে অবহিত করা হয়। প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাঝেমধ্যে ব্যবস্থাও নেওয়া হয়। এরপরও কৃষিজমির মাটি কাটা বন্ধ করা যাচ্ছে না।
এক বছর আগেও যে জমিতে ধান চাষ হতো, সেখানে এখন হচ্ছে মাছ চাষ। কারণ, আবাদি জমির মাটি কেটে দেওয়া হয়েছে ইটভাটায়। আবার কারখানা স্থাপনেও দেওয়া হচ্ছে মাটি। ফসলের জমি কমে যাওয়ায় দিন দিন কৃষি উৎপাদন কমে যাচ্ছে। এই চিত্র ঢাকার কাছের জনপদ ধামরাই উপজেলার।
বছরখানেক আগেও উপজেলার সুতিপাড়া ইউনিয়নের বেলীশ্বর গ্রামের মজিদ ব্যাপারী তাঁর ৮০ শতাংশ জমিতে ধান চাষ করেছিলেন। এবার সেই জমিতে গিয়ে ধানের পরিবর্তে পাওয়া যায় পানি; যেখানে গ্রামের কয়েকজন তরুণ মাছ ধরছিলেন। মজিদ ব্যাপারীর জমি থেকে ১০০ ফুট দূরে একই ইউনিয়নের রক্ষিত গ্রামের মিয়াজ উদ্দিন তাঁর জমিতে বরাবরের মতো এবারও বোরো ধান চাষ করেছেন। তবে পাশের জমির মালিক মাটি বিক্রি করায় ধানসহ তাঁর জমি ভেঙে পড়ছে। মিয়াজ উদ্দিন বলেন, ‘পাশের জমির মাটি বিক্রি করার কারণে আমার জমি যেভাবে ভাইঙা পড়তাছে, তাতে আমারও মাটি বিক্রি কইরা দেওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় নাই। ভবিষ্যতে আইসা আর আমার জমিতে ধান পাইবেন না; দেখবেন পুকুরে মাছ ফাল পাড়তাছে।’
ঢাকা জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ধামরাইয়ে দুই শতাধিক ইটভাটা ও শতাধিক কারখানা রয়েছে। এসব ভাটা আর কারখানায় অন্তত ২ হাজার ৫০০ একর আবাদি জমি আটকে গেছে। আর ভাটা ও কারখানার মাটির জন্য কমেছে আরও কয়েক শ একর জমি। এভাবে প্রতিবছরই কয়েক শ বিঘা চাষের জমি কমে যাচ্ছে।
যদিও ধামরাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয়ে তথ্যের সঙ্গে বাস্তবতার মিল খুঁজে পাওয়া যায়নি। ওই কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১-২২ অর্থবছরে ধামরাইয়ে আবাদি জমির পরিমাণ ছিল ৫৫ হাজার ৫৮২ একর। আর ২০২২-২৩ অর্থবছরের জরিপ অনুযায়ী, ধামরাইয়ে আবাদি জমির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫৫ হাজার ৫৭৫ একরে। এই হিসাব অনুযায়ী, এক বছরে আবাদি জমি কমেছে মাত্র সাত একর। এর আগে কয়েক বছরের গড় তথ্য প্রায় একই। তবে কৃষকেরা ভিন্ন কথা বলছেন। বেলীশ্বর গ্রামের ব্যবসায়ী আবুল হোসেন বলেন, ‘কয়েক বছর আগে বাথুলি থেকে বউবাজার পর্যন্ত প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কের দুই পাশে ছিল সবুজের সমারোহ। প্রচুর ধান চাষ হতো এই এলাকায়। সেই সড়কের উভয় পাশে এখন চাষের জমি খুঁজে পাওয়াই মুশকিল। ইটভাটা আর বড় বড় খাদে ভরে গেছে কয়েক শ বিঘা চাষের জমি।’
তবে কৃষিজমি কমা নিয়ে সচেতনতা নেই। যেমন সপ্তাহখানেক আগে নান্নার ইউনিয়নের রঘুনাথপুর এলাকায় কৃষিজমি থেকে খননযন্ত্র (এক্সকাভেটর) দিয়ে মাটি কাটা হচ্ছিল। নান্নার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বাবুল মোল্লা কয়েক মাস ধরে ওই এলাকায় তাঁদের কয়েক একর জমি থেকে মাটি কেটে ইটভাটায় বিক্রি করছেন বলে জানান খননকাজের সঙ্গে যুক্ত শ্রমিকেরা।
পাশের জমির মাটি বিক্রি করার কারণে আমার জমি যেভাবে ভাইঙা পড়তাছে, তাতে আমারও মাটি বিক্রি কইরা দেওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় নাই। ভবিষ্যতে আইসা আর আমার জমিতে ধান পাইবেন না; দেখবেন পুকুরে মাছ ফাল পাড়তাছে।
মিয়াজ উদ্দিন, ধামরাইয়ের রক্ষিত গ্রামের বাসিন্দা
যোগাযোগ করা হলে বাবুল মোল্লা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ধামরাইয়ে সবাই কৃষিজমির মাটি বিক্রি করছেন; তাই আমিও করছি।’
সাভারের আইনজীবী সোহেল আল মামুন বলেন, ‘জমির শ্রেণি পরিবর্তন ও ইটভাটার জন্য মাটি কাটাতে হলে জেলা প্রশাসকের অনুমতির প্রয়োজন হয়। ধামরাইয়ের ইটভাটার মালিক অথবা মাটি ব্যবসায়ীরা এই নিয়ম মানেন না। এরপরও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। এর ফলে কৃষিজমি থেকে দেদার মাটি কেটে নিচ্ছেন একশ্রেণির ব্যবসায়ী।’
ধামরাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আরিফুর রহমান বলেন, কৃষিজমির মাটি বিক্রি ও কাটা বন্ধে জনসাধারণকে সচেতন করার পাশাপাশি প্রশাসনকে অবহিত করা হয়। প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাঝেমধ্যে ব্যবস্থাও নেওয়া হয়। এরপরও কৃষিজমির মাটি কাটা বন্ধ করা যাচ্ছে না।
জমির মালিক হযরত শাহ্ আলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। তবে ওই জমিতে ৩৯১টি দোকান নির্মাণ করে কয়েক বছর ধরে ভাড়া নিচ্ছে হযরত শাহ্ আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজ। দোকানগুলোর ভাড়া থেকে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ৭০ লাখ টাকা ভ্যাটও দেওয়া হয়নি। বিষয়টি উঠে এসেছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের (ডিআইএ) তদন্তে।
১ দিন আগেকুড়িগ্রাম পৌর শহরে বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী ছোট ভাই নিহত ও বড় ভাই আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে মৎস্য খামারের কাছে কুড়িগ্রাম-চিলমারী সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
৪ দিন আগেবৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগের মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১৮ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত শনিবার রাতে ও গতকাল রোববার তাঁরা গ্রেপ্তার হন।
৪ দিন আগেএক অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটেছে শিল্পকলা একাডেমিতে। শিল্পকলা একাডেমির তিনটি হলেই কিছুদিন আগেও নাটক চলত। নাট্যকর্মীদের সৃজনশীলতার বহিঃপ্রকাশ ঘটত সেখানে। বহু পরিশ্রমে মাসের পর মাস নিজের খেয়ে, নিজের গাড়িভাড়া দিয়ে নাট্যকর্মীরা একেবারেই স্বেচ্ছাশ্রমে একটি শিল্প তিপ্পান্ন বছর ধরে গড়ে তুলেছেন। শিল্পকলা একাডেমি এখন
৮ দিন আগে